১৮ মার্চ ২০১৫

বিপ্লবী সতীশ পাকড়াশী



১৯০৫-০৬ সাল। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে উদ্বেলিত সারা বাংলা।সতীশ যখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তখন তাঁদের পাড়া গ্রামেও 'অনুশীলন সমিতি' গঠিত হয়। পূর্ণ স্বাধীনতা লাভই সমিতির উদ্দেশ্য। সতীশের স্কুলের প্রায় অর্ধেক ছাত্র 'অনুশীলন সমিতি'র সভ্য। সতীশ জঙ্গলাকীর্ণ আম-কাঁঠাল ও বাঁশ বাগানে বন্ধুদের সঙ্গে লাঠিখেলা ও কুচকাওয়াজ করতেন। আর স্কুল ছুটির পরে অতি সংগোপনে নোট বইয়ে লিখে রাখা লাঠি খেলার সাংকেতিক ফরমূলা (সংকেতশব্দ) মুখস্থ করতেন। কিন্তু সেই লাঠি আসলে লাঠি নয়, তলোয়ার। আর বড় লাঠি হল বন্দুক ও বেয়নেট। প্রকাশ্যে লাঠি ও ছুরি খেলার পিছনে তলোয়ার ও বন্দুকের লড়াই প্রশিক্ষণ দেয়া হত।
সতীশ পাকড়াশীর পুরো নাম সতীশ চন্দ্র পাকড়াশী। তিনি জন্মেছিলেন ১৮৯১ সালে বর্তমান বাংলাদেশের নরসিংদি জেলার মাধবদি গ্রামে।তাঁর বাবা জগদীশ চন্দ্র পাকড়াশী আর মা মৃণালিনী পাকড়াশী। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে, বাবার কাছে। তারপর প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে ঢাকার সাটিরপাড়া হাইস্কুলে ভর্তি হন।
তাঁর বয়স সতের বছর। এসময় তাঁর এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।
১৯১২ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি মাধবদিতে নিজ গ্রামের বাড়িতে আসেন। সেখান থেকে গুপ্ত সমিতি তাঁকে মাদারিপুর মহকুমায় বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার জন্য পাঠায়। তিনি পালং থানার ভড্ডাগ্রামের মধ্যে ইংরাজি স্কুলের শিক্ষকরূপে যোগদান করেন। এই স্কুলে চাকুরী নেওয়ার পিছনে তাঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল গোপনে গোপনে বিপ্লবী দলে সদস্য যুক্ত করা। মাদারিপুর মহকুমায় বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার পর ১৯১৩ সালে তাঁকে ঢাকা থেকে নাটোরে পাঠানো হয়। সেখানেও তিনি বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলেন। এরপর তাঁকে রংপুর জেলার কুড়িগ্রাম মহকুমার সংগঠকের দায়িত্ব দেয়া হয়। কুড়িগ্রাম থেকে তাঁকে কলকাতার সংগঠনের দায়িত্বে পাঠানো হয়।
১৯১৩ সালে রাজাবাজার বোমা মামলার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে তাঁর ও আরো কয়েকজন বিপ্লবীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এসময় তাঁরা বরানগরে আশ্রয় নেন। এখানে আত্মগোপনকালে তিনি রাসবিহারী বসুর সান্নিধ্যে আসেন। এসময় তিনি বরানগরে গোপনে বিপ্লবী দলের সাথে মিলিত হন। ওই সময় তিনি খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছেন। একটি রুটি কিনে খেয়ে সারাদিন কাটিয়েছেন। অনেক দিন না খেয়েও বিপ্লবী দলের কর্মকান্ড চালিয়েছেন। এসময় তিনি ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হন। একটু সুস্থ হওয়ার পর তাঁকে দিনাজপুরের বিপ্লবী সংগঠনের কাজে পাঠানো হয়। ওই সময় অসুস্থ মহারাজ ত্রৈলক্য চক্রবর্তীর সাথে তিনি পুরী, ভুবনেশ্বরে যান এবং উভয়ে চিকিৎসা নেন। ভুবনেশ্বরে থাকার সময় ১৯১৪ সালের ৪ আগস্ট প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। এই সংবাদ শুনে তাঁরা সেখান থেকে দিনাজপুরে ফিরে আসেন। সতীশ পাকড়াশী উত্তরবঙ্গের দিনাজপুরে বিপ্লবী কাজ শুরু করেন। এরপর দিনাজপুর থেকে তাঁকে মালদহে দলের কাজে পাঠানো হয়।
১৯১৪ সালে বিপ্লবী দলের একটি 'এ্যাকশন'-এ যোগদানের জন্য তিনি কলকাতা মুসলমানপাড়া লেনে যান। সেখানে সতীশ পাকড়াশীসহ বিপ্লবী দলের ৪/৫ জন সদস্য ২৫ নভেম্বর আইবি পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্টকে হত্যা করার দায়িত্ব নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সুপারিনটেনডেন্টের বৈঠকখানায় বোমা নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু একটু ভুলের কারণে তাঁদের নিক্ষিপ্ত বোমায় তাঁরা নিজেরাই আহত হন। সতীশ পাকড়াশী গুরুতরভাবে আহত হন। রাজশাহী সায়েন্স কলেজের ছাত্ররা তাঁকে তাঁদের হোস্টেলে আশ্রয় দেন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তাঁর নামে ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে।
১৯১৫ সালে বিপ্লবী কাজকর্মের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন দেখা দেয়। অর্থ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন স্থানে বিপ্লবীরা ডাকাতি করে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালায়। সতীশ পাকড়াশীসহ বিপ্লবী দলের সদস্যরা নাটোর মহকুমার ধারাইল গ্রামে ধনী সুদখোর মহাজনের বাড়ি থেকে ডাকাতি করে ২৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন।
স্বদেশী ও সশস্ত্র বিপ্লববাদীদের দমন করার জন্য ১৯১৭ সালে হাজার হাজার যুবককে ইংরেজ সরকার ভারতরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার করে। দেশব্যাপী খানাতল্লাসি ও গ্রেপ্তার চলতে থাকে অব্যাহতভাবে। উত্তরবঙ্গের গোপন ডেরা থেকে সতীশ পাকড়াশী ও তাঁর সঙ্গীরা আসামের গৌহাটিতে গোপন আস্তানা গড়ে তোলেন। গৌহাটি শহরের আটগাঁও ফ্যান্সিবাজারের গোপন আস্তানায় ও আরনক্যই পাহাড়ে তাঁরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরূপে বাস করতে থাকেন। কিন্তু গোয়েন্দারা খবর পেয়ে যায়। সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী বিপ্লবীদের বাড়ি ঘিরে ফেলে। পুলিশ ও বিপ্লবীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পুলিশ ও বিপ্লবীদের গুলি ফুরিয়ে গেলে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু হয়। বিপ্লবীরা পিস্তলের বাট দিয়ে পুলিশদের আঘাত করে। ঐ সময় বিপ্লবী নলিনী বাগচী, সতীশ পাকড়াশী, প্রবোধ দাশগুপ্ত পুলিশ বেষ্টনি ভেদ করে সরে পড়তে সক্ষম হন। নলিনী বিহারে এবং সতীশ পাকড়াশী কলকাতায় ফিরে আসেন। সতীশ পাকড়াশী কলকাতায় আত্মগোপন অবস্থায় চার বছর অতিক্রান্ত করেন। নলিনী বাগচী বিহার থেকে কলকাতায় এলেন মহামারী রোগ বসন্তে আক্রান্ত হয়ে। মুমূর্ষু অবস্থায় নলিনী আশ্রয়হীন হয়ে কলকাতার গড়ের মাঠে ধুঁকছিলেন। সেসময় শহরের মধ্যস্থলে সুবিস্তীর্ণ গড়ের মাঠ ছিল বিপ্লবীদের আশ্রয়ভূমি। সতীশ পাকড়াশী নলিনী দাসকে সেখান থেকে উদ্ধার করে সুস্থ করে তোলেন এবং নলিনী দাস ঢাকার দলের দায়িত্বভার নিয়ে চলে আসেন। ১৯১৮ সালের জুন মাসে কলকাতা বাজারের সংঘর্ষে বিপ্লবী তারিনী মজুমদার নিহত হন এবং সশস্ত্র পুলিশের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মারাত্মক আহত হন নলিনী বাগচী। তিনি একদিন পরে মারা যান। অন্যদিকে ফেরারী বিপ্লবীরা কলকাতার বরানগরে বাড়ি ভাড়া করেন কিন্তু পুলিশের নজরে পড়ায় সতীশ পাকড়াশীসহ তাঁর সঙ্গীরা বাগবাজারের কুলি বস্তিতে মজুর সেজে বসবাস করেন। আত্মগোপনে থাকার পর সতীশ পাকড়াশী ১৯১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা হাইকোর্টের সামনে ধরা পড়ে যান। তাঁকে গ্রেফতার করার পর ইলিসিয়াম রো স্পেশাল ব্রাঞ্চ অফিসে এনে নির্যাতন করা হয়। তাঁকে ৪/৫ দিন শুধু একটি চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয় এবং তন্দ্রা এলেই চুলের মুঠি ধরে উল্টোদিকে হেঁচকা টান মারা হত। ইতর ভাষায় গালাগালি এবং বুকে বুটের লাথি মারা হয়। ১৯১৮ সালের মার্চ মাসে তাঁকে বিনা বিচারে প্রেসিডেন্সি জেলের চুয়াল্লিশ নম্বর সেলে আবদ্ধ রাখা হয়। তালাবদ্ধ নির্জন কক্ষে পড়াশুনা করার জন্য কোন আলো ছিল না। দেশমাতৃকার স্বাধীনতার চিন্তায় তাঁর সময় কেটেছে।
কিছুদিন পর তাঁকে রাজশাহী জেলে আনা হয়। ৩ বৎসর পর ১৯২১ সালের জানুয়ারিতে তিনি মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর ১৯২১ সালে তিনি বরিশাল জেলা কংগ্রেসের কাজে যুক্ত হন। কিন্তু যখন অহিংস সংগ্রামে বিশ্বাস করার নীতি স্বীকার করে প্রতিজ্ঞাপত্রে সই করে স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার জন্য নির্দেশ এল তিনি তখন কংগ্রেস ত্যাগ করেন। এই সময় বিপ্লবী পার্টিগুলো সাপ্তাহিক মুখপত্র প্রকাশ করে। 'শঙ্খ', 'বিজল', 'স্বরাজ্য', 'সারথি' পত্রিকাগুলো ছিল বিপ্লবীদের পরিচালিত প্রগতিশীল পত্রিকা। সতীশ পাকড়াশী তাঁদের পার্টির মুখপত্র 'শঙ্খ'তে প্রায়ই প্রবন্ধ লিখতেন।
১৯২৩ সালে সোভিয়েত রাশিয়া থেকে আগত অবনী মুখার্জীর সাথে তাঁকে রাশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। ১৯২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি আবার গ্রেপ্তার হন এবং স্টেট প্রিজনার হিসেবে পাঁচ বৎসর জেল খাটেন। এই সময় তিনি আলিপুর, মেদিনীপুর, ঢাকা, মহারাষ্ট্রের যারবেদা এবং কর্ণাটকের বেলগাঁও জেলে আটক থাকেন। জেলে বসে সতীশ পাকড়াশী 'আয়ারল্যন্ডের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস' লেখেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বাড়িতে আগুন লেগে বইটির ৭০০ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপি পুড়ে যায়। এছাড়া তাঁর বিখ্যাত রচনা 'অগ্নিযুগের কথা'।
মেদিনীপুর জেলে থাকাকালীন তাঁর সাথে ছিলেন বিপ্লবী সূর্য সেন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সতীশ পাকড়াশী ঢাকা জেলা স্বাধীনতা সংঘের সম্পাদক হন। তিনি, নিরঞ্জন সেন প্রমুখ 'অনুশীলন সমিতি'তে 'রিভোল্ট গ্রুপ' বলে পরিচিত ছিলেন। রংপুরে প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সম্মেলনে নিরঞ্জন সেন, সতীশ পাকড়াশী, অম্বিকা চক্রবর্তী, যতীন দাস, বিনয় রায় এই পাঁচ জন বিপ্লবী মিলে বিদ্রোহের ছক আঁকেন। স্থির হয় ঢাকা, কলকাতা ও চট্টগ্রামে তিনটি জায়গায় অস্ত্রাগার দখল করা হবে। একমাত্র চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলের অভ্যুত্থান সফল হয়। অন্য দুটি সংঘটিত করা যায়নি।
১৯২৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ২২/৩ মেছুয়া বাজার স্ট্রিটের বাড়িতে সতীশ পাকড়াশী, নিরঞ্জন সেন প্রমুখ বোমা বানাবার সাজ-সরঞ্জাম ও ফর্মুলাসহ ধরা পড়েন। সুধাংশু দাশগুপ্তও ওই বাড়িতে এসে ধরা পড়েন। মোট ৩২ জনের নামে 'মেছুয়া বাজার ষড়যন্ত্র মামলা' দায়ের করা হয়। নিরঞ্জন সেনগুপ্ত ও সতীশ পাকড়াশীর ৭ বৎসর, সুধাংশু দাশগুপ্তদের ৫ বৎসর সাজা হয়। আলিপুর জেলে তাঁদের উপর প্রচণ্ড নির্যাতন চালানো হয়। আলিপুর জেল থেকে সতীশ পাকড়াশীকে রাজশাহী জেলে এবং পরে হাজারিবাগ জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। হাজারিবাগ জেল থেকে তাঁকে আন্দামান দ্বীপান্তরে পাঠানো হয়। হাতে হাতকড়া, পায়ে পাঁচ সের ওজনের বেড়ি পরে তিনি, নিরঞ্জন সেন ও ডাক্তার নারায়ণ রায় স্টিমারে আন্দামান সেলুলার জেলে পৌঁছেন।
১৯৩৮ সালের ২৫ জুলাই আমরণ অনশন শুরু হয়। বার বার অনশন এবং প্রথম অনশনের জন্য ৩ জন বিপ্লবীর মৃত্যুর ফলে কিছু দাবিদাওয়া পূরণ হয়। বন্দীরা পড়াশুনার সুযোগ পেলেন। 'বিপ্লবী বিশ্ববিদ্যালয়' স্থাপন করে তাঁরা পড়াশুনায় গভীর মনোযোগ দেন। এই আমরণ অনশনে যুক্ত ছিলেন কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিপ্লবীরা। এই অনশনের মূল দাবি ছিল আন্দামান সেসুলার জেলের সকল বন্দীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সকলকে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে। এক পর্যায়ে এই অনশনে সকল বন্দীরা যোগ দেন।
অন্যদিকে অনশনকারীদের সমর্থনে ভারতব্যাপী উত্তাল আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল 'যুগান্তর', 'অনুশীলন সমিতি' ও কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দ। ফলে ১৯৩৮ সালের ১৯ জানুয়ারী ব্রিটিশ সরকার চাপের মুখে আন্দামান বন্দীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়। এই মৃত্যু ফাঁদের সকল সহযাত্রীর সাথে সতীশ পাকড়াশী একদিন দেশে ফিরে আসেন। ১৯৩৮ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সরাসরি কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হয়ে শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
পঞ্চাশের মন্বন্তরের (১৯৪৩ সাল) অনুষঙ্গ হিসেবে দেখা দেয় মহামারী। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে বসন্ত রোগ। পীড়িতদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন সতীশ পাকড়াশী।
১৯৪৬ সালের মার্চ মাসে অবিভক্ত বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ নির্বাচন। এ নির্বাচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪৮ সালের ২২-২৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতার মোহাম্মদ আলী পার্কে অনুষ্ঠিত হয় কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেস। এই কংগ্রেসে তিনি আত্মগোপন অবস্থায় কাজ করেন। 'তেভাগা'র প্রস্তুতিপর্বে পার্টি ও কৃষক সমিতিকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে তিনি বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করেছেন।
১৯৫০ সালে তিনি পার্টির সিদ্ধান্তে আত্মগোপনে চলে যান। আত্মোগোপনে থেকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা মোকাবেলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালান। ১৯৫৪ সালে ২৪ পরগনা জেলায় 'দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ কমিটি' গঠিত হলে তিনি ঐ কমিটির কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। এসময় তিনি উদ্বাস্তু সংগঠন 'ইউসিআরসি'র সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৪ সালে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য হন। তিনি 'পিপলস রিলিফ কমিটি'র দায়িত্বও পালন করেন। তিনি আমৃত্যু 'বাংলাদেশ শহীদ স্মৃতি কমিটি'র সভাপতি ছিলেন।
১৯৭৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ৮১ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Bangali Hindu Post (বাঙ্গালি হিন্দু পোস্ট)
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।