১৮ মার্চ ২০১৫

কন্যাকুমারী মন্দির,কন্যা কুমারী অন্তরীপ,তামিল নাড়ু


কন্যাকুমারী মন্দিরটি ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারী জেলার অন্তর্গত একটি শহর। ইংরেজিতে এই শহরকে Cape Comorin বা কুমারী অন্তরীপ বলা হয়। এই শহরটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দুতে অবস্থিত। কন্যাকুমারী জেলার সদর শহর নাগেরকইল এই শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কন্যাকুমারী একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রাচীনকালেও কন্যাকুমারী ছিল তামিলাকাম বা প্রাচীন তামিল দেশের দক্ষিণতম অঞ্চল। কন্যাকুমারী নামটি এসেছে হিন্দু দেবী কন্যাকুমারীর (যাঁর স্থানীয় নাম কুমারী আম্মান) নামানুসারে। এই শহরের সৈকত অঞ্চলে যেখানে আরব সাগর, ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর পরস্পর মিলিত হয়েছে, সেখানেই দেবী কুমারীর মন্দির অবস্থিত।
আনুমানিক ৩০০০ বছরের কুমারী আম্মানকে পুজো করে আসছেন হিন্দু ভক্তরা। সমুদ্র সৈকতের কিনারায় পাথর দিয়ে তৈরি মন্দিরে দেবী কন্যাকুমারীকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মন্দিরের মুল ফটকটি উত্তর দিকে। এই ফটকটি বিশেষ কয়েকটি দিন ছাড়া প্রতিদিনই খোলা থাকে। এই মন্দিরে পূজো দেওয়ার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সাধারণত, দক্ষিণ ভারতের সমস্ত মন্দিরেই প্রবেশ কালে পুরুষদের গায়ের জামা খুলতে হয়। তারপরেই মন্দিরের অন্দরমহলে প্রবেশ করা যায়। কন্যাকুমারীতেও তাই। এখানে পূজা দেওয়ার আগে লারী-পুরুষ উভয়কেই সমুদ্রে মন্ত্র পড়ে স্নান করে, ভিজে জামা কাপড়েই প্রবেশ করতে হয়।
হিন্দু মতে দেবী কুমারী হলেন পার্বতীর আরেক রূপ।যাঁর রূপে মোহিত হয়ে মহাদেব তাঁকে বিয়ে করতে চায়। বিয়ের দিনই দেখা পাওয়া যায় না শিবের। কুমারী দেবীর বিয়ের দিন যা যা রান্না করা হয়েছিল তা সব ফেলে দেওয়া হয়। ভক্তরা মনে করেন, সেই সব রান্না না করা চাল, শস্য ফেলে দেওয়ায় সমুদ্রতট তৈরি হয়েছে।
আবার রামায়ণ থেকে এই কন্যাকুমারী মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, রাম- রাবণের যুদ্ধে মৃত লক্ষ্মণের দেহে প্রাণ আনার জন্য সঞ্জীবনী গাছের মূল আনতে গিয়েছিল হনুমান। কিন্তু গাছ না চেনায় সে পড়েছিল মহা বিপদে। শেষে গাছ না চেনার জন্য মারুনথুভাজ মালাই নামে পুরো পাহারটাই তুলে নিয়ে গিয়ে হাজির করেছিলেন অগস্থা মুনির সামনে। আসলে আগস্থা মুনি ছিলেন আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রের পণ্ডিত। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, কন্যাকুমারীর কিছু দূরেই অগস্থে্স্বরম নামে একটি গ্রাম ছিল। সেটি আজ একটি আশ্রমে পরিণত হয়েছে। পর্যটকেরা সেই পাহাড়ে উঠে আশ্রমে যান। সেখান থেকেই পরিষ্কার দেখা যায় কন্যাকুমারী মন্দিরটি।
এই শহরের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলির মধ্যে দেবী কুমারীর মন্দির, বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল, প্রাচীন তামিল কবি তিরুবল্লুবরের ১৩৩ ফিট উঁচু মূর্তি এবং গান্ধীমণ্ডপম্‌ (ভারত মহাসাগরের জলে মহাত্মা গান্ধীর চিতাভষ্ম বিসর্জনের আগে এখানে তা রাখা হয়েছিল) রয়েছে।


Bangali Hindu Post (বাঙ্গালি হিন্দু পোস্ট)
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।