০৯ এপ্রিল ২০১৫

ভাগবতের আলোকে মানব শরীর সৃষ্টি (পর্ব ০৩)

ব্রহ্মা ৩ বার বেদ অধ্যয়ন করেছিলেন

ভগবান্‌ ব্রহ্মা র্কাৎস্ন্যেন ত্রিরন্বীক্ষ্য মণীষয়া ।
তদধ্যবসাৎ কূটস্থো রতিরাত্মন্‌ যতো ভবেৎ ।। (ভাগবত ২/২/৩৪)
অনুবাদ
মহাত্মা ব্রহ্মা, গভীর মনোনিবেশ সহকারে একাগ্রচিত্তে তিনবার বেদ অধ্যয়ন করিয়াছিলেন এবং তাহা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার করিয়া স্থির করিয়াছিলেন যে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আকর্ষণই হইতেছে ধর্মানুষ্ঠানের পরম পূর্ণতা ।

এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ব্রহ্মা ৩ বার বেদ অধ্যয়ন করেন এবং কৃষ্ণ যে সব কিছুর মূল সেটা উপলব্ধি করতে পারেন । এখন প্রশ্ন হতে পারে মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রথমে ব্রহ্মা বেদ কোথায় পেল । এ বিষয়ে ভাগবতে বলা হয়েছে মহাপ্রলয়ের সময় এই মহাবিশ্ব যখন ধ্বংস হয় তখন ভগবান মৎস্যরূপে ধারণ করে একটি নৌকার মাধ্যমে বেদ রক্ষা করেন, পরবর্তীতে আবার যখন সৃষ্টি কার্য শুরু হয় তখন ভগবান ব্রহ্মাকে বেদ দান করেন, সেই বৈদিক জ্ঞান দ্বারা ব্রহ্মা মহাবিশ্বের সৃষ্টি করেন ।

ভগবান বেদ উদ্ধার করে ব্রহ্মাকে দান করেন

বেদান্‌ যুগান্তে তমসা তিরস্কৃতান্‌
রসাতলাদ্‌যো নৃতুরঙ্গবিগ্রহঃ
প্রত্যাদদে বৈ করয়েহভিযাচতে
তৈস্মে নমস্তেহবিতথেহিতায় ইতি ।। (ভাগবত ৫/১৮/৬)
অনুবাদ
কল্পান্তে মূর্তিমান অজ্ঞানরূপী দৈত্য যখন সমস্ত বেদ অপহরণ করিয়া রসাতলে নিয়া গিয়েছিল, তখন ভগবান হয়গ্রীব মূর্তি প্রকট করিয়া বেদ উদ্ধার করিয়াছিলেন এবং ব্রহ্মা প্রার্থনা করিলে তিনি তাঁকে তা প্রদান করিয়াছিলেন । সেই সত্যসংকল্প পরমেশ্বর ভগবানকে সশ্রদ্ধ প্রণতি নিবেদন করি ।

এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ভগবান রসাতলে নামক গ্রহ থেকে বেদ এনে ব্রহ্মাকে প্রদান করলেন । বৈদিক শাস্ত্র বা বেদ শুধুমাত্র পৃথিবীতে বর্তমান সেটা নয় । এই মহাবিশ্বের সকল ব্রহ্মাণ্ডে বেদ বিদ্যমান ।

ভগবান বেদ রক্ষা করেন

মৎস্যো যুগান্তসময়ে মনুনোপলবদ্ধঃ ক্ষোণীময়ো খিলজীবনিকায়কেতঃ ।
বিস্রংসিতানুরুভয়ে সলিলে মুখান্মে আদায় তত্র বিজহার হ বেদমার্গান্‌ ।। (ভাগবত ২/৭/১২)
অনুবাদ
কল্পান্তে সত্যব্রত নামক ভাবী বৈবস্তত মনু দেখিতে পাইবেন যে মৎস্যাবতাররূপে ভগবান পৃথিবী পর্যন্ত সর্বপ্রকার জীবাত্মাদের আশ্রয় । কেননা কল্পান্তে প্রলয় বারির ভয়ে ভীত হইয়া বেদ-সমূহ আমার (ব্রহ্মার) মুখ থেকে নির্গত হয় এবং ভগবান তখন সেই বিশাল জল রাশি দর্শন করিয়া উৎফুল্ল হন এবং বেদসমূহকে রক্ষা করেন ।

এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে মহাপ্রলয়ের সময় ভগবান বেদ রক্ষা করেন । এই আলোচনা থেকে বলা যায় সৃষ্টির প্রথমে ব্রহ্মা যে বেদ প্রাপ্ত হয় সেটা ভগবান ব্রহ্মাকে দান করেন যা আগে থেকে ছিল ।

(চলবে............)

সংকীর্তন মাধব‎
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।