০৮ ডিসেম্বর ২০১৫

দেবী ক্ষীরভবানী

দেবী সতীর কণ্ঠদেশ এখানে পড়েছিল বলে বলা হয়। দেবীর নাম ভগবতী ভৈরবের নাম ত্রিসন্ধ্যেশ্বর। আবার কিছু পণ্ডিতদের মতে অমরনাথেই সতী অঙ্গ পতিত হয় । তন্ত্রে বলা হয় ---
.
”কাশ্মীরে কণ্ঠদেশশ্চ ত্রিসন্ধ্যেশ্বর ভৈরবঃ। ”
.
এখানে যে স্থানে সতী দেবীর অঙ্গ পতিত হয়- সেই স্থান অজ্ঞাত। ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের সময় মুসলিম বাদশা সিকান্দার এই মন্দির চূর্ণ বিচূর্ণ করে মন্দির লুঠপাঠ করেন। মন্দির বিধস্ত করা হয়। কাশ্মীরের হিন্দু রাজা প্রায় ১৯১২ খ্রীঃ এই মন্দির নতুন করে নির্মাণ করেন। শ্রীনগর থেকে ১২ মাইল দূরে এই মা ভবানীর মন্দির। বাসে ঘণ্টা খানেক এর ওপর সময় লাগে মন্দির পৌছাতে। মন্দির চত্বর বেশ বড়। পাশ দিয়ে একটি খাল গিয়ে ঝিলাম নদীতে মিশেছে। কাশ্মীর কে ভূস্বর্গ বলা হয়। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এত সুন্দর যেনো অমরাবতী ধরিত্রীর বুকে নেমে এসেছে। মিষ্ট আপেলের গাছ চারদিকে। লাল লাল থোকায় সুমিষ্ট আপেল তাতে ঝুলে আছে। যারা আপেল খেতে ভালোবাসেন- তারা কাশ্মিরে গেলে মন শান্তি করে খেয়ে আসবেন। মন্দিরের ভিতরে একটা ত্রিকোন কুণ্ড আছে। তাঁর মাঝখানে একটি নবনির্মিত ছোট্ট মন্দির দেখা যায়। পূর্বে ত্রিকোণ কুণ্ডটিই মাতৃ জ্ঞানে পূজিতা হতো। নতুন মন্দিরে দেবীর একটি মূর্তি দেখা যায়। ভক্তরা পূজার দ্রব্য সেই কুণ্ডে নিবেদন করেন। কুন্ডের সামনে একটা ছোট্ট নাট মন্দির আছে। সন্ন্যাসীরা সেখানে বসে ধ্যান জপ, পূজা পাঠ করেন। তবে এই সতী পীঠের যথার্থ স্থান নিয়ে মতভেদ আছে। এখানে অপর একটি শক্তিপীঠ দেখা যায়। সেটা হল শারদাপীঠ। অপর শারদাপীঠকেউ অনেকে আসল দেবী পীঠ বলেন। তাঁদের মতে মহামায়া সতী দেবীর কণ্ঠনালী এখানেই পতিত হয়েছিল। তবে এখানে দেবী হলেন মহামায়া আর ভৈরব হলেন ত্রিনেত্রশ্বর । বলা হয় স্বামীজি এই ক্ষীর ভবানী পীঠে এসে গো-দুগ্ধ দ্বারা মায়ের পূজো করেছিলেন।এই পীঠে এসে তিনি মায়ের দিব্য আদেশ শুনতে পেয়েছিলেন। কিছু তন্ত্র মতে কাশ্মীরের শক্তিপীঠের দেবীর নাম ভগবতী, ভৈরবের নাম অমরনাথ বলা হয়েছে। কুব্জিকা তন্ত্র ও কাশ্মীরের কবি কলহনের রচনায় শারদা পীঠের নাম পাওয়া যায়। এই পীঠ খুব দুর্গম স্থানে। মহাভারত ও কিছু পুরান মতে মহর্ষি পুলস্ত এই শারদা পীঠে বসে তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেন। এই পীঠে চতুস্কোন সিঁদুর মাখানো একটি শিলাকে সতী অঙ্গ ধরে পূজা পাঠ করা হয়। আমরা ভগবতী ভবানী মায়ের কাছে প্রার্থনা জানাই -----
.
“হে মাতঃ। হে সিদ্ধিদাত্রী। তুমি সর্বপ্রকার মঙ্গল করো। তোমার আশীষে যেনো এই জীবন ধন্য হয়।” জয় জয় মা ভবানী ।
লেখকঃ প্রীথিশ ঘোষ
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।