১১ জুলাই ২০১৬

গণিত শাস্ত্রে হিন্দুদের অবদান বলে শেষ করা যাবে না, যার খুবই সামান্য অংশ এখানে তুলে ধরেছি


হাজার হাজার বছর আগে যখন পৃথিবীতে জ্ঞান ও ধর্মকে একত্রিত করা হয়েছিল ঈশ্বরের উপাসনার জন্য, ঠিক তখন থেকেই আমাদের ভারত উপমহাদেশেও জ্যামিতি, গণিত ও ধর্মের বিভিন্ন রীতির সংমিশ্রন ঘটেছিল ঠিক একই উদ্দেশ্যে। সংস্কৃত ভাষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হল "শুলভা সূত্র"। শুলভা শব্দের অর্থ দড়ি বা ঐ ধরনের কিছু। এই শুলভা সূত্র ব্যবহার হত হিন্দুদের মৃত্যুর পর বেদী তৈরীর কাজে। এটি এক ধরনের বৈদিক জ্ঞান, যেখানে বিভিন্ন ধরনের আগুনে পোড়ানোর বেদীর বিভিন্ন অর্থ তুলে ধরা হয়েছিল। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, যারা স্বর্গে যেতে ইচ্ছুক, শুল্ভা সূত্র অনুযায়ী তাদের আগুনে পোড়ানোর বেদী হবে বকের আকৃতির। যারা ব্রাক্ষনদের মত পৃথিবী জয় করতে চায়, তাদের বেদী হওয়া উচিত কচ্ছপ আকৃতির। এছাড়া রম্বস আকৃতির হবে তাদের বেদী , যারা অজাতশত্রু হতে চায়! বেদ থেকে প্রাপ্ত সর্বমোট ৮টি সূত্র পাওয়া গেছে। এগুলো হল:
• অপাস্তমব্য
• বৌধয়ন
• মানব
• ক্যাত্যায়ন
• মৈত্রয়নী (মানব এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ)
• বরাহ
• বধূলা
• হিরন্যকেশ (অপাস্তমব্য এর সাথে সাদৃশ্য পূর্ণ)
এই সূত্র গুলোর বেশির ভাগই আবিষ্কৃত হয় ৮০০ থেকে ২০০ খ্রীষ্টপূর্বে। এদের মধ্যে সবচাইতে প্রাচীন হল বৌধয়ন। ধারনা করা হয় যে, সংখ্যা ও জ্যামিতির বিভিন্ন বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্যই গণিতবিদ ও পুরোহিতদের অনুপ্রাণিত করেছিল এদের বিভিন্ন ধর্মবিষয়ক কাজে ব্যবহার করার।
অপাস্তমব্য ও বৌধয়নের সাথে পীথাগোরাসের সূত্র ও পীথাগোরিয়ান এয়ীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতি, যেমন চতুর্ভূজ ও বর্গের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গেছে বৌধয়নের ভেতর। এছাড়া আছে, একটি সুনির্দিষ্ট জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলকে অন্য একটি জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলে রূপান্তর করার পদ্ধতি। আরো একটি বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এই সূত্রের ভিতর √2 এর মান অত্যন্ত নির্ভুলভাবে বের করার উপায়ও বলা হয়েছে। যা আমরা পানিনি দ্বারা বর্ণিত ইতিহাস থেকে জানতে পারি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা অনেকদিন আগেই এসব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আবিষ্কার করে গণিতের ইতিহাসে অবদান রেখেছেন। শুলভাসূত্রের মতই এই উপমহাদেশে আরও অনেক শাস্ত্র ও বৈদিক আচার রয়েছে, যার সাথে গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের রয়েছে অত্যন্ত গাঢ় সম্পর্ক।

@জয় রায়(১৩/০৬/১২)
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।