১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

আপনার সন্তানের পড়াশুনা নিয়ে চিন্তিত?

গত কয়েকদিন আগে এক দম্পতি তার দুই ছেলের পড়াশুনা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে আমার কাছে ছেলে দুইজন কে নিয়ে আসেন। আমি তাদের যথাসাধ্য মূল্যবান পরামর্শ দিই। তারপরই একদিন পূর্বনির্ধারিত কথামত তাদের বাড়ী যাই। ভদ্রলোকের বড় ছেলের পড়ার ঘরে বসে তার সাথে গল্প করতে করতে তাকে পড়াশুনা ভালোভাবে করবার পরামর্শ দিয়ে চলে এলাম।
ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্রমতে ছাত্রদের বিভিন্ন শিক্ষা সংক্রান্ত যে পরামর্শ দিয়েছিলাম, মূল্যবান সেই তথ্য গুলো এখানে লিপিবদ্ধ করে দিলাম।
=> প্রাথমিক শিক্ষামূলক (উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত) পড়াশুনার ক্ষেত্রে পড়াশুনার ঘরের মধ্যে সর্বদা উত্তর দিক কিংবা উত্তর-পূর্ব কোণের (ঈশান কোণ) দিকে মুখ করে বসা উচিৎ, তবে উত্তর-পূর্ব কোণটাই গুরুত্বপূর্ণ। 
=> পড়াশুনার ঘর সর্বদা সবুজ রঙ করা প্রয়োজন কারন সবুজ রঙ বুধ গ্রহের রঙ আর এই রঙ থেকে আমাদের সবচেয়ে বেশী মনঃসংযোগ বাড়ে।
=> পড়াশুনা করতে হলে সবসময় চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করে তাতে বসে পড়াশুনা করা উচিৎ এবং তার সাথে যদি পাসে একটা টেবিল ল্যাম্প থাকে তাহলে সেটা শুভফলদায়ক।
=> উচ্চতর শিক্ষামূলক পড়াশুনা (উচ্চমাধ্যমিকের পরবর্তী শিক্ষা কিংবা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কিংবা কোনো টেকনোলজি কিংবা গবেষণা সংক্রান্ত শিক্ষা) উচ্চতর শিক্ষামূলক পড়াশুনার ক্ষেত্রে সর্বদা দক্ষিন-পূর্ব কোণ (অগ্নি কোণ) বরাবর মুখ করে প্রতিদিন পড়াশুনা করতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে আপনার জন্ম কুন্ডলী (Horoscope) অনুযায়ী যে দিক শুভ, বাড়ীর সেই দিকের ঘরে পড়াশুনা করা উচিৎ। উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রেও পড়াশুনার ঘরের রঙ সবুজ করতে হবে। গবেষনা মূলক কিংবা টেকনোলজি শিক্ষার ক্ষেত্রে নীল, গোলাপী ইত্যাদি রঙও করা যেতে পারে।
=> পড়াশুনার ঘরে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যে একটি করে চন্দনের ধুপ জ্বালানো উচিৎ কারন একমাত্র চন্দনের ধূপের মধ্যে মনঃসংযোগ করার অধিক ক্ষমতা আছে।
=> আপনাদের বাড়ীর মধ্যে যদি একটা গ্লোব রাখতে পারেন তাহলে এটা সেই বাড়ীর শিক্ষার্থীদের উপর শুভ প্রভাব ফেলতে বাধ্য।
আপনাদের শোবার ঘরে যেদিকে আপনি মাথা রেখে ঘুমান সেই দিকে আমাদের দেশের একটা বড় আকৃতির কাগজের ম্যাপ (Map) বা মানচিত্র দেওয়ালে পেরেক দিয়ে কিংবা আঠা লাগিয়ে শুধু টাঙিয়ে রাখবেন, এতে আশাকরি আপনাদের বাচ্চার মনঃসংযোগ অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে।
=> যেসব ছাত্ররা উচ্চতর শিক্ষামূলক পড়াশুনা করছেন তারা তাদের পড়ার টেবিলে একটি পরিস্কার কাঁচের গ্লাসে চারটি সবুজ রঙের (মাথা ছোলা) পেন্সিল নিয়ে সেগুলিকে একটি সবুজ সুতো দিয়ে ৩ প্যাঁচে বেঁধে পেন্সিল গুলোর ছোলা দিকটা উপরের দিকে করে কাঁচের গ্লাসে রেখে দিন এবং সেই পেন্সিল সমেত গ্লাসটি রেখে দিন, এতে আশাকরি আপনাদের পড়াশুনার প্রতি মনঃসংযোগ বৃদ্ধি পাবে।
=> এই কাজটি করতে হবে শুক্ল পক্ষ্যের মধ্যে শুক্রবার। আপনাদের বাচ্চার পড়ার বই গুলোর মধ্যে শুক্লপক্ষের শনিবার একটি করে লবঙ্গ প্রতিটি বইয়ের মধ্যে রেখে দিন এতে ছাত্রের পড়ায় মনঃসংযোগ বাড়বে।
=> পরীক্ষার সময় যদি আপনারা আপনাদের বাচ্চার হাতের অনামিকা আঙ্গুল (Ring Finger) দিয়ে টক দইয়ের ফোটা কিংবা হনুমানজীর মন্দিরে গিয়ে তাঁর ডান কাঁধের থেকে কিছুটা মেটে সিন্দুর অনামিকা আঙ্গুল (Ring Finger) দিয়ে কপালে এবং গলায় তিলক দিয়ে তারপর পরীক্ষা দিতে যায় তাহলে পরীক্ষাকেন্দ্রে আপনার বাচ্চা মনঃসংযোগ সঠিকভাবে প্রয়োগ
করতে পারবে।
=> আপনাদের বাড়ীর শৌচালয় ঘরের (Toilet Room) পাশে অথবা শৌচালয় ঘরের দেওয়ালের সাথে সংযুক্ত কোনো ঘরে পড়াশুনা করা উচিৎ নয়।
=> আপনাদের বাড়ীর শোবার বিছানার উপর বসে পড়াশুনা করা কখনোও উচিৎ নয়, এটা ভারতীয় বাস্তুমতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, তবে এই বাস্তুদোষের জন্য হয়তো প্রথম প্রথম আপনারা আপনাদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে বাস্তুর কুপ্রভাব বুঝতে নাও পারেন কিন্তু পরবর্তীকালে উচ্চ শিক্ষার সময় ৯৯% নিশ্চিতভাবে অবশ্যই আপনারা কুপ্রভাব আপনাদের বাচ্চার পড়াশুনার ক্ষেত্রে পাবেন।
=> আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, 'হনুমান চালিশা' নিত্য পাঠ করা ছাত্রেরা পরীক্ষায় ভালো ফল তো অবশ্যই করে উপরন্তু শিক্ষক ও গুরুজনদের যথাযোগ্য সম্মান দেয় এবং সামাজিক অশুভ প্রভাব থেকে দুরে থাকে।
=> খাদ্যের প্রভাবও ছাত্রদের উপর মারাত্মক। যত বেশী নিরামিষ ও আঁশযুক্ত সুষম খাদ্য বাচ্চারা খায় ততই ভালো। প্রতিদিন ভোরে সূর্য্যপ্রণাম ও প্রাণায়াম বাচ্চাদের মনঃসংযোগ বাড়ানোর আরও একটা উপায়। ফাস্ট-ফুড্ মনঃসংযোগ ও স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক।
পড়াশুনা করার প্রতি মনঃসংযোগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে এতক্ষন আলোচনা করলাম কিন্তু এই পড়াশুনাকে কে কতটা ভালোবেসে করবে সেটা পুরোটাই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, একজন ছাত্র সে নিজে থেকে কতটা পড়াশুনাকে ভালোবাসবে সেটা ব্যক্তিগত জন্ম-কুন্ডলী দেখে বিচার করতে হয়। কোনো ছাত্র যদি নিজে বা পরিবার থেকে তার মধ্যে পড়াশুনার প্রতি ভালোবাসা না থাকে তাহলে কিন্তু সেইক্ষেত্রে আমার এই তথ্য কিংবা আমি তার কাছে দায়ী থাকব না। অম্ততঃ একজন বাচ্চাও যদি আমার এই তথ্যে উপকৃত হয় আমি ধন্য হব।

 জয় মা কামাখ্যা।

Courtesy by: Prithwish Ghosh


Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।