• মহাভারতের শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান

    মহাভারতে যে সময়ের এবং শহরগুলোর কথা বলা হয়েছে সেই শহরগুলোর বর্তমান অবস্থা কি, এবং ঠিক কোথায় এই শহরগুলো অবস্থিত সেটাই আমাদের আলোচনার বিষয়। আর এই আলোচনার তাগিদে আমরা যেমন অতীতের অনেক ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসবো, তেমনি বর্তমানের পরিস্থিতির আলোকে শহরগুলোর অবস্থা বিচার করবো। আশা করি পাঠকেরা জেনে সুখী হবেন যে, মহাভারতের শহরগুলো কোনো কল্পিত শহর ছিল না। প্রাচীনকালের সাক্ষ্য নিয়ে সেই শহরগুলো আজও টিকে আছে এবং নতুন ইতিহাস ও আঙ্গিকে এগিয়ে গেছে অনেকদূর।

  • মহাভারতেের উল্লেখিত প্রাচীন শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান ও নিদর্শনসমুহ - পর্ব ০২ ( তক্ষশীলা )

    তক্ষশীলা প্রাচীন ভারতের একটি শিক্ষা-নগরী । পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি জেলায় অবস্থিত শহর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। তক্ষশীলার অবস্থান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল এবং পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার (২০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে; যা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে খুব কাছে। তক্ষশীলা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৪৯ মিটার (১,৮০১ ফিট) উচ্চতায় অবস্থিত। ভারতবিভাগ পরবর্তী পাকিস্তান সৃষ্টির আগ পর্যন্ত এটি ভারতবর্ষের অর্ন্তগত ছিল।

  • প্রাচীন মন্দির ও শহর পরিচিতি (পর্ব-০৩)ঃ কৈলাশনাথ মন্দির ও ইলোরা গুহা

    ১৬ নাম্বার গুহা, যা কৈলাশ অথবা কৈলাশনাথ নামেও পরিচিত, যা অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে ইলোরা’র কেন্দ্র। এর ডিজাইনের জন্য একে কৈলাশ পর্বত নামে ডাকা হয়। যা শিবের বাসস্থান, দেখতে অনেকটা বহুতল মন্দিরের মত কিন্তু এটি একটিমাত্র পাথরকে কেটে তৈরী করা হয়েছে। যার আয়তন এথেন্সের পার্থেনন এর দ্বিগুণ। প্রধানত এই মন্দিরটি সাদা আস্তর দেয়া যাতে এর সাদৃশ্য কৈলাশ পর্বতের সাথে বজায় থাকে। এর আশাপ্সহ এলাকায় তিনটি স্থাপনা দেখা যায়। সকল শিব মন্দিরের ঐতিহ্য অনুসারে প্রধান মন্দিরের সম্মুখভাগে পবিত্র ষাঁড় “নন্দী” –র ছবি আছে।

  • কোণারক

    ১৯ বছর পর আজ সেই দিন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সোমবার দেবতার মূর্তির ‘আত্মা পরিবর্তন’ করা হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে। ‘নব-কলেবর’ নামের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবতার পুরোনো মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তি বসানো হবে। পুরোনো মূর্তির ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে সঞ্চারিত হবে, পূজারীদের বিশ্বাস। এ জন্য ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, সুভদ্রা আর বলভদ্রের নতুন কাঠের মূর্তি তৈরী হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরে ‘গর্ভগৃহ’ বা মূল কেন্দ্রস্থলে এই অতি গোপনীয় প্রথার সময়ে পুরোহিতদের চোখ আর হাত বাঁধা থাকে, যাতে পুরোনো মূর্তি থেকে ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে গিয়ে ঢুকছে এটা তাঁরা দেখতে না পান। পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা পরিচালনা করেন পুরোহিতদের যে বংশ, নতুন বিগ্রহ তৈরী তাদেরই দায়িত্ব থাকে।

  • বৃন্দাবনের এই মন্দিরে আজও শোনা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মোহন-বাঁশির সুর

    বৃন্দাবনের পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নিধিবন মন্দির। এই মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। যা আজও পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষিত করে। নিধিবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য-ঘেরা সব গল্পের আদৌ কোনও সত্যভিত্তি আছে কিনা, তা জানা না গেলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই লীলাভূমিতে এসে আপনি মুগ্ধ হবেনই। চোখ টানবে মন্দিরের ভেতর অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের মুর্তি।

১৩ মার্চ ২০১৭

এই হিন্দুদেবীর মাহাত্ম্য এতোই শক্তিশালী! মুসলিমরাও পুজো করেন

সারা বিশ্বে এমন দেবী মাহাত্ম্য আর দ্বিতীয় খুঁজে পাওয়া ‌যায় না। ‌যেখানে হিন্দুরাতো বটেই ভক্তিভরে পুজো করছেন মুসলিমরাও। না বলপ্রয়োগ করে অন্য ধর্মের মানুষদের পুজো করতে বাধ্য করা হচ্ছে এমন গল্প নয়। দেবী খাঁটি প্রচীন ভারতীয় হলেও, অধুনা কট্টর ইসলামধর্মী একটি দেশেই সগৌরবে পূজিতা হন তিনি। তাঁকে রক্ষা করার জন্য হিন্দু বাহিনীর প্রয়োজন পড়ে না। বরং সর্বজাতির তিনি রক্ষা করে চলেছেন তিনি নিজ হাতে। তাঁর শরণাপন্ন হলে জীবনবোধটাই বদলে ‌যায়। কোনও অনিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

ভারতে এমন বহু জায়গা রয়েছে ‌যেখানে দেব দেবীর মাহাত্ম্য বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে। তার মধ্যে বেশ কিছু জায়গা দুর্গম হলেও জনপদ রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারের তরফে সাজানো হয়েছে, ‌যাতে বেশি করে প‌র্যটকেরা আসেন। কিন্তু হিঙ্গোল মাতার মন্দির তার থেকে অনেকটাই আলাদা। আলাদা ঐশ্ব‌র্যে বা বৈভবে নয়। তিনি স্বয়ং এবং তাঁর মহিমায়।
পাকিস্তান, বালুচিস্তান। আপামর বাঙালি মরুতীর্থ হিংলাজ ছবিটি দেখেননি, এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া ‌যাবে না। কিন্তু এই হিঙ্গোলমাতা বা হিংলাজ মাতা সম্পর্কে কে কতটা জানেন?
করাচি থেকে প্রায় ৩২৮ কিলোমিটার পথ। মাকরান উপকূল রাজপথ ধরে গেলে ঘণ্টা চারেকের রাস্তা। রাস্তা ভালো হলেও, দুর্গম, চারপাশে শুধু শুকনো পাহাড় আর পাহাড়। জনশূন্য পথ। দিনের বেলাতেও গা ছমছমে ব্যপার থাকবেই।

একবার ভেবে দেখুন। একটা সময় এই পথটাই অতিক্রম করতে হত পায়ে হেঁটে।বালিয়াড়ি, মরুভূমি পথ। বেশ কয়েকটা দিন ‌যেত পুণ্যর্থীদের ‌যেতে। বহু মানুষ রাস্তাতেই মারা পড়তেন এ ছাড়া দস্যুদের হানাতো ছিলই। রাস্তার মধ্যে কেউ মারা গেলে তাঁকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করা ‌যেত না। প্রিয়জনকে ছেড়ে ‌যেতে হত ধু ধু মরুপ্রান্তরেই।
বর্তমানে সেই কষ্ট আর নেই, তবু চলার পথে অনুভব করা ‌যায় কতটা কঠিন এ পথ। ভারতের ইতিহাস বলছে, নানা সময়ে বহু প্রচীন মন্দির নষ্ট হয়েছে মোগল, আফগানদের হাতে। কিন্তু এক এবং অদ্বিতীয় হিংলাজ মাতার মন্দিরকে স্পর্শ করার ক্ষমতা কারও হয়নি।
পুরাণ বলছে, এই মরুক্ষেত্রে সতীর ব্রহ্মরন্ধ্র পড়েছিল। তাই একান্ন পীঠের মধ্যে এটিই শ্রেষ্ঠ বলে ধরা হয়। সতীর ‌যত পীঠ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে দুর্গম পথ এটাই। এবং মানা হয় সেই কারণেই এখানকার পবিত্রতা এখনও অক্ষুণ্ণ।
এখানে দেবীর কোনও প্রথাগত মূর্তি নেই। পাহাড়ের গুহার মধ্যে অধিষ্ঠান করছেন দেবী। এই দেবীকে নিয়ে বেশ কিছু কিংবদন্তী রয়েছে। বলা হয় সর্বমনস্কামনাপূর্ণকারী দেবী। অর্থাৎ এই দেবীর কাছে ‌যা চাওয়া হয় তাই মেলে।
এখানে একটা কথা বলা ভালো, সতীর পীট নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক রয়েছে। কারণ ‌যত প্রাচীন সাহিত্য ঘাঁটা হয় তত দেবীর পীঠের সংখ্যা কমতে থাকে। কুলার্নভ তন্ত্রে সতীর ১৮টি পীঠের উল্লেখ রয়েছে, তার মধ্যে হিংলাজ মাতা তৃতীয় স্থানে। আবার কুব্জিকা তন্ত্রে ৪২টি পীঠের কথা রয়েছে, ‌যেখানে হিংলাজ মাতা পঞ্চম স্থানে। তন্ত্রচূড়ামণিতে ৪৩টি পীঠের নাম আছে, পরে অবশ্য মোট ৫১টি পীঠের সং‌যোজন হয়।
হিংলাজ মাতা এখানে আরও বেশ কিছু নামে পরিচিত, ‌যেমন কোট্টারি, কোট্টাভি, কোট্টারিশা, ভৈরবী, ভীমলোচনা। এই দেবীকে নিয়ে বেশ কিছু কিংবদন্তি রয়েছে। তার মধ্যে বিশেষ তাৎপ‌র্যপূর্ণ ব্রহ্মক্ষত্রিয়ের কাহিনী। একবার পরশুরাম ক্ষত্রিয় নিধনে সারা বিশ্ব ভ্রমণ করছেন। সেই সময় তিনি একবার আসেন এই মরুতে, তখন স্থানীয় ক্ষত্রিয়রা এই দেবীর শরণাপন্ন হন। দেবীই তখন ক্ষত্রিয়দের ব্রাহ্মণ রূপ দান করে পরশুরামের হাত থেকে বাঁচান। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন জয়সেনা। ‌যিনি সিন্ধ প্রদেশের রাজত্ব করেন। কথিত আছে ক্ষত্রিয়দের শুধু বাঁচানোই নয়, পরশুরামকে এই হত্যালীলা থেকে অস্ত্র ছাড়তে বাধ্য করেছিলেন স্বয়ং হিংলাজ মাতা। পরশুরামকে বলেছিলেন, প্রত্যেক মানব ব্রহ্মার সন্তান। আর ব্রহ্মত্ব আসে সুকর্মের মধ্যে দিয়ে। জাতি দাঙ্গায় ব্রহ্মত্ব প্রমাণ হয় না। পরশুরাম বুঝেছিলেন তিনি ব্রাহ্মণ সন্তান তাই তিনি ক্ষত্রিয় নিধনে নেমে আদপে ব্রহ্মহত্যাই করছেন। অগত্যা ক্ষত্রিয়হত্যা থেকে সরে আসেন তিনি।
সিন্ধ প্রদেশের প্রত্যন্ত দুর্গম অঞ্চলে দেবীর বাস, অথচ তাৎপ‌র্যপূর্ণ ভাবে দেখা ‌যায় এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ, পুজাচারে মুসলিমদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। পাকিস্তানের মুসলিমরা এই দেবীকে বড়ি নানি বলে সম্বোধন করে। আর এই গুহা মন্দিরকে নানি কি হজ বলেন।
মন্দিরের কাছে আছে একটি কুণ্ড। এটিও বেশ রহস্যময়। কুণ্ডের মধ্যে অবিরাম কাদা মাটি ফুটতে থাকে। কিংবদন্তি রয়েছে, এই ফুটন্ত কুণ্ডের কাছে এসে অন্তর থেকে নিজের জ্ঞানত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করলে পাপ স্খলন হয়। বৈজ্ঞানিকদের অবশ্য ‌যুক্তি, ওই কুণ্ডের তলা থেকে কিছু রাসায়নিক গ্যাস নির্গত হয় বলেই এমন চিত্র ধরা পড়ে। স্থানীয়দের অবশ্য প্রশ্ন, এই কুণ্ড ছাড়া আশে পাশের কয়েকশো কিলোমিটার ব্যসে কেন এমন কুণ্ড দ্বিতীয় দেখা ‌যায় না? মন্দিরের কাছেই কেন? আর এই কুণ্ডের মহিমা সেতো ‌যুক্তি দিয়ে বিচার করা ‌যায় না। কিছু শিক্ষা লাভ করা ‌যায় অনুভূতি দিয়ে।
অনেকে বলেন, দেব দেবীতো সর্বত্র বিরাজ করছে, তাহলে এতো কষ্ট করে এতো দুর্গম পথ পেরিয়ে দেবীর দর্শন করতে ‌যাওয়া কেন? উত্তর একটাই, এই ‌যাত্রা জীবনের সঙ্গে ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। তুমি কি জীবনের কষ্টকর, দুর্গম পথকে অতিক্রম করতে চাও? তুমি কি সত্যি সত্যি মানব কল্যাণ পছন্দ করো? তুমি কি সত্যি সত্যি সত্যকে উপলব্ধী করতে চাও মানবজাতির স্বার্থে? তাহলে তোমাকে কষ্ট করতে হবে। সুখ স্বচ্ছন্দ্য তোমার অধিকার, কিন্তু অন্যকে কষ্ট দিয়ে নয়। হত্যা করে নয়। হ্যাঁ বধ করতে হয়েছে প্রয়োজন হলে, তবে সেটা নিজের অন্তরে থাকা অসুর এবং রাক্ষসদের। কারণ কারও ছত্রছায়ায় থেকে ‌যেমন জীবনের মূল্য বোঝা সম্ভব নয়। তেমন জীবনের ‌যাত্রাটাও অনুভব করা সম্ভব নয়। তথাকথিক ধর্ম, জাতির ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছেন একাংশ মানুষ, তাই তারাও ভিন জাতির হয়েও উপাসনা করেন বড়ি নানির।
কী অবিশ্বাস্য লাগছে? বিশ্বাস করুন, এটাই সত্যি।

Collected from: http://travelweekbazar.com/hindu-muslim-pilgrim-784759/

Share:

শ্রীকৃষ্ণের প্রচীন নগরীর হদিশ মিলল জলের তলায়! স্বীকৃতি পুরাতত্ত্ব বিভাগের

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বাসুদেবের অস্তিত্বের কথা বিশ্বাস করেন না? কিন্তু এবার থেকে বিশ্বাস করতে হবে। শুধু তাই নয়। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসটাও নতুন করে লেখার হয়তো সময় এসেছে। পুরাণকে কল্পলোকের গল্পকথা ‌যাঁরা মানেন আসলে ‌যে তা ইতিহাসেরই প্রতিচ্ছবি এ কথা বলাই ‌যায়। অনেকে ধন্ধে রয়েছেন জলের তলায় থাকা প্রাচীন দ্বরকা নগরী কি আসলে বিষ্ণুলোক?
বহু গবেষক মনে করেন, ভারতের অন্যতম মহাকাব্য মহাভারত সত্যি ঘটনা, তার চরিত্র, কাহিনি বিন্যাস রাজনীতি আসলে সমাজ থেকেই নেওয়া, ‌তার জন্যই এই মহাকাব্য অনেকটাই সমকালীন হয়ে রয়েছে সহস্রাব্দ ধরে।
মহাভারত বা পুরাণের সূত্র মতে, পাণ্ডবদের হস্তিনাপুর জয়ের পর, শ্রীকৃষ্ণ বাসুদেব মথুরার পরিবর্তে দ্বারকা শহরে থাকতে শুরু করেন। ‌যা অধুনা গুজরাটে অবস্থিত। কিন্তু এই দ্বারকা নগরী আসলে প্রাচীন দ্বারকা নয়। এটা একটা ক্ষুদ্র অংশ বিশেষ। শ্রীকৃষ্ণের নগরী দ্বারকা বর্তমানে রয়েছে জলের তলায়। আর তার হদিশ মিলেছে সমুদ্রবিজ্ঞানীদের কাছে। গুজরাটের আরব সাগরের পশ্চিমে লম্বায় ১৫ কিলোমিটার এবং চওড়ায় ৬ কিলোমিটার জুড়ে ছিল প্রাচীন দ্বারকা নগরীর অস্তিত্ব। ‌যার ঐতিহাসিক প্রমাণ্য তথ্য পাওয়া গিয়েছে হালে।




প্রচীন নগরীর ‌পুরো কাঠামো ইমারৎ, অট্টালিকার স্তম্ভ, গ‌ৃহস্থের ব্যবহা‌র্য যে সমস্ত জিনিস জলের তলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার C14 কার্বন ডেটিং প্র‌যুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই সমস্ত জিনিসই প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার বছরের পুরনো। অর্থাৎ এতদিন সাড়ে চার হাজার বছরের সিন্ধু সভ্যতাকে ধরে ইতিহাস তার পথ চলা শুরু করেছিল। কিন্তু এই নয়া তথ্য সেই ইতিহাসকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। মহাভারতকে ‌যদি ২৫০০ বছর আগেকার ঘটনা ধরা হয়, তার মানে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারকা নগরী তার থেকেও কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন।
কী ভাবে মিলল এই নগরীর খোঁজ? ভারতের ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ওসেন টেকনোলজি সমুদ্র দূষণ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। অত্যাধুনিক স্ক্যানার ‌যন্ত্র সোনার, ‌যা জলের তলায় বহু নীচ প‌র্যন্ত শব্দ তরঙ্গের বিম পাঠাতে পারে। সেই ‌যন্ত্র মারফৎ জানতে পারে, জলের প্রায় ১২০ ফুট নীচে একটি প্রকাণ্ড জ্যামিতিক কাঠামো রয়েছে। তারই খোঁজ চালাতে গিয়ে গবেষকদের চোখ কপালে ওঠে। উঠে আসে বিশাল এক প্রচীন নগরীর তথ্য। সময়কাল পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু জিনিস, ‌যার থেকে ‌জানা ‌যায়, এই কাঠামো তৈরি হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার বছরেরও আগে।আন্তর্জাতিক ইতিহাস গবেষকদের দাবি, মেসোপটেমিয়ার সবচেয়ে পুরনো ব‌ৃহৎ নগর বলে বিশ্ব ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। কিন্তু এই আবিষ্কার বিশ্ব ইতিহাসের পাতাকেই ঘেঁটে দিয়েছে। নতুন করে ইতিহাস লেখার প্রয়োজন রয়েছে।
ঐতিহাসিকদের মত, সময়ের সঙ্গে প্রকৃতি তার রূপ পরিবর্তন করেছে। ঠিক ‌যে ভাবে টেথিস সাগর সরে গিয়ে হিমালয়ের জন্ম নিয়েছে, ঠিক তেমনই আরব সাগর স্থান পরিবর্তন করায় একটা ব‌ৃহৎ প্রাচীন নগরী জলের তলায় চলে গিয়েছে। ‌যা বহু বছর ধরে মানুষের কাছে অধরা ছিল। তবে এখন ‌যা প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তার উপর ভর করে আরও গবেষণা চালাতে হবে। ‌যে ইতিহাস মিলেছে তাকেই মাইল ফলক ধরে চললে ভুল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এখানে একটা কথা উল্লেখ্য, একাংশ পৌরাণিক গবেষকদের মত, পুরাণে বলছে, ক্ষীরপাই সমুদ্রের গর্ভে শেষনাগের উপর অনাদি অনন্তকাল ধরে অধিষ্ঠান করছেন ভগবান শ্রীবিষ্ণু সঙ্গে নারায়ণী। তাহলে কি এই আরবসাগরই পুরাণের ক্ষীরপাই? ‌যেখানে সলিল সমাধিতে রয়েছে বিষ্ণুর অন্যতম অবতার শ্রীকৃষ্ণের প্রাচীন বাসভূমি। তাহলে কি এই প্রাচীন দ্বারকা নগরী আসলে বিষ্ণুলোক? মানুন বা মানুন পুরাণ শুধু কল্পনার গল্প বলে না, হয়তো তার রহস্য উন্মোচন হয়, বহু বছর বাদে। ঈশ্বর ‌যে আছেন তার প্রমাণ দেন প্রকৃতিক গর্ভে লুকিয়ে থাকা অস্তিত্বে। তাইতো কখনও কখনও বিজ্ঞানও নিজের কাছে হেরে ‌যায়। আজ বিজ্ঞানের কাছে ‌যা সত্যি আগামিকাল তা মিথ্যে হয়ে দাঁড়ায়।

Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।