০৬ জানুয়ারী ২০১৮

ঋগ্বেদ সংহিতা - প্রথম মণ্ডলঃবিভিন্ন ঋষিঃ সুক্তঃ ১৪৬-১৬০

১৪৬ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। পিতা মাতার (দ্যাবাপৃথিবী) ক্রোড়স্থিত, মস্তকত্তয়যুক্ত সপ্তরশ্মিবিশিষ্ট (১) ও বিকলতারহিত অগ্নিকে স্তব কর। সর্বত্রগামী, অবিচলিত, দ্যোতমান এবং অভীষ্টবর্ষী অগ্নির তেজ চতুর্দিকে ব্যাপ্ত হচ্ছে।
২। ফলপ্রদাতা অগ্নি নিজ মহিমায় দ্যাব্যাপুথিবীকে ব্যাপ্ত করে রয়েছেন, জরারহিত, পূজনীয় অগ্নি আমাদের রক্ষা করে অবস্থিতি করছেন, বিস্তৃত পৃথিবীর সানুপ্রদেশে বেদিতে পদক্ষেপ করছেন। তার উজ্জল জ্যাতিঃ উধঃ অন্তরীক্ষ লেহন করছে।
৩। যজমান ও তৎ পত্নী সেবাকার্যকুশল দুটি ধেনুর ন্যায় একটি বৎসরূপ অগ্নির অভিমুখে সঞ্চরণ করছেন। তারা গর্হিত বিষয়শূন্য পথ নির্মাণ করছেন এবং সর্ব প্রকার প্রজ্ঞা অধিক পরিমাণে ধারণ করছেন।
৪। অভিজ্ঞ মেধাবীগণ অজেয় অগ্নিকে স্বীয়স্থানে স্থাপন করছেন বুদ্ধিবলে নানা উপায়ে তার রক্ষা করছেন, যজ্ঞফলভোগেচ্ছায় ফল দায়ী অগ্নির শুশ্রুষা করছেন। অগ্নি সূর্যরূপে তাদের নিকট আবির্ভূত হচ্ছেন।
৫। অগ্নি ইচ্ছা করেন, যে দশদিকে তাদের দেখতে পায়। তিনি সর্বদা জয়শীল এবং স্তুতিযোগ্য, ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সকলেরই জীবনস্বরূপ। ধনবান এবং সকলের দর্শনীয়, অগ্নি অনেক স্থানে শিশুতুল্য যজমানগণের পিতারূপ।
টীকাঃ
১। তিনটি সবন অগ্নির মুর্ধা, সাতটি ছন্দ তার রশ্মি। সায়ণ।
১৪৭ সুক্ত।।
অনুবাদঃ হে অগ্নি! তোমার উজ্জল ও শোষক রম্মিগণ কি প্রকারে অন্নের সাথে বায়ু প্রদান করে, যে পুত্র ও পৌত্রাদির জন্য অন্ন ও আয়ু প্রাপ্ত হয়ে যজমান যজ্ঞসম্বন্ধীয় সামগান করতে পারে?
২। হে তরুণ অন্নবান অগ্নি! আমার অতিশয় পূজনীয় ও উত্তমরূপে সম্পাদিত স্তুতি গ্রহণ কর। একজন তোমাকে হিংসা করে আর একজন তোমার পূজা করে। আমি তোমার উপাসক, আমি তোমার মুর্তিকে পূজা করি।
৩। হে অগ্নি! তোমার যে প্রসিদ্ধ পালনশীল রশ্মিগণ মমতার পুত্র দীর্ঘতমাকে অন্ধ দেখে তাকে অন্ধত্ব হতে রক্ষা করেছিল তুমি সর্ব প্রজ্ঞাযুক্ত, তুমি সে সুখকর রশ্মিগণকে রক্ষা কর। বিনাশেচ্ছু শত্রুগণ যেন হিংসা না করে।
৪। হে অগ্নি! যে আমাদের পাপ ইচ্ছা করে, নিজে দান করে না মানসিক ও বাচনিক দু প্রকার মন্ত্র দ্বারা আমাদের নিন্দা করে, তাদের একমন্ত্র (মানস)। তাদেরই পক্ষে পুরুভাব হোক, তারা দুবৃাকাদ্বারা আপনাদেরই শরীর নষ্ট করুক।
৫। হে বলের পুত্র অগ্নি। যে মানুষ জেনে শুনে দ্বিপ্রকার মন্ত্র দ্বারা মানুষের নিন্দা করে,হে স্তুয়মান অগ্নি। আমি স্তব করছি, তার হস্ত হতে আমাকে রক্ষা কর এবং আমাদের পাপে নিক্ষেপ করো না।
১৪৮ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। মাতরিশ্বা প্রবেশ করে নানা রূপ বিশিষ্ট সর্বদেবকার্য কুশল দেবগণের আহ্বানকর্তা অগ্নিকে প্রবৃদ্ধ করেছেন। পূর্বে দেবগণ একে বিচিত্র দ্যুতিমান সুর্যের ন্যায় মানুষ ও ঋত্বিকগণের যজ্ঞ সমাধার জন্য স্থাপন করেছিলেন।
২। অগ্নিকে সন্তোষকর হব্য প্রদান করলেই শত্রুগণ আমাকে নাশ করতে পারবেন না, যেহেতু অগ্নি আমার দেওয়া বরণীয় (স্তোত্রাদির) অভিলাষী। স্তোতা যখন অগ্নির সম্বন্ধে স্তুতি করেন, তখন সমস্ত দেবগণ তৎপ্রদত্ত সমস্ত হব্য প্রাপত্ হন।
৩। যজ্ঞকারীগণ যে অগ্নিকে নিত্য অগ্নিগৃহে নিয়ে যান এবং স্তুতিসহকারে স্থাপন করেন, ঋত্বিগণ দ্রুতগামী রথনিবদ্ধ অশ্বের ন্যায় সে অগ্নিকে যজ্ঞার্থ প্রণয়ন করেন।
৪। বিনাশক অগ্নি, সর্ব প্রকার বৃক্ষাদি দন্তদ্বারা নষ্ট করেন, অনন্তর বনে নানাবর্ণে শোভাপ্রাপ্ত হন। তদন্তর যেমন ধানুকীর নিকট হতে তার বেগে গমন করে সেরূপ বায়ু প্রতিদিন শিখার অনুকুলে বয়ে থাকে।
৫। অরণি গর্ভে অবস্থিত যে অগ্নিকে শত্রুগণ অথবা অন্য হিংসকগণ দুঃখ দিতে পারে না, অন্ধ, দৃষ্টি শক্তিরহিত লোকে যে অগ্নির মাহাত্ম্য নষ্ট করতে পারে না, অবিচলিত ভক্তি বিশিষ্ট যজমানগণ বিশেষরূপে তৃপ্তিসাধন করে তাকে রক্ষা করে।

১৪৯ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। মহাধনের স্বামী অগ্নি অভীষ্ট প্রদান করে আমাদের অভিমুখে আসছেন। প্রভুর অগ্নি ধনাস্পদ বেদি আশ্রয় করছেন। প্রস্তর হস্ত যজমানগণ আগত অগ্নির সেবা করছেন।
২। যে অগ্নি মনুষ্যদের ন্যায় দ্যাবাপৃথিবীরও উৎপাদক, তিনি যশোযুক্ত হয়ে বর্তমান আছেন এবং তার থেকেই জীবগণ সৃষ্টির আস্বাদন প্রাপ্ত হয়। তিনি গর্ভাশয়ে প্রবিষ্ট হয়ে (সমস্ত জীবের) সৃষ্টি করেন।
৩। অগ্নি মেদাবী, তিনি অন্তরীক্ষচারী বায়ুর ন্যায় ননাস্থানে যান। তিনি এ সুন্দর স্থান দীপ্ত করেছেন, নানারূপ অগ্নি সূর্যের ন্যায় শোভা পাচ্ছেন।
৪। দ্বিজন্মা অগ্নি দীপ্যমান লোকত্রয়কে প্রকাশ করেন এবং সমস্ত রজনাত্মক লোকও প্রকাশ করেন। তিনি দেবতগণের আহাবন কতৃা এবং যে স্থলে জল সংগৃহীত হয় সেখানে বর্তমান আছেন।
৫। যে অগ্নি দ্বিজন্মা, তিনিই হোতা, তিনি হব্যলাভের ইচ্ছায় সমস্ত বরণীয় ধন ধারণ করেন। যে মর্ত্য অগ্নিকে হব্য দান করেন, তার উত্তম পুত্র হয়।

১৫০ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। হে অগ্নি! যেহেতু আমি হব্য দান করি অতএব তোমার নিকট অনেক প্রার্থনা করি। হে অগ্নি! আমি তোমারই সেবক। হে অগ্নি! মহৎ প্রভুর গৃহে যেরূপ সেবক থাকে আমি তোমার নিকট সেরূপ।
২। হে অগ্নি! যে ধনবান ব্যক্তি তোমাকে স্বামী বলে না বা উত্তমরূপ হোমের জন্য দক্ষিণা দেয় না এবং যে ব্যক্তি দেবতাগণকে স্তব করে না সে দেবশূন্য লোকদ্বয়কে ধন দান করো না।
৩। হে মেধাবী অগ্নি! যে ব্যক্তি তোমার যজ্ঞ করে, সে স্বর্গস্থচন্দ্রের ন্যায় সকলের আনন্দকর হয়, প্রধানদের মধ্যেও প্রধান হয়। (অতএব) আমরা বিশেষরূপে তোমারই সেবক হব।

১৫১ সুক্তঃ
অনুবাদঃ
১। গোধনাভিলাষী, স্বাধ্যায়সম্পন্ন যজমানগণ, দোধনালাভের ও মনুষ্যগণের রক্ষার নিমিত্ত, মিত্রের ন্যায় প্রিয় ও যজনীয় যে অগ্নিকে অন্তরীক্ষভব জলমধ্যে ক্রিয়াদ্বারা উৎপন্ন করেছেন তাঁর বল ও শব্দে দ্যাব্যাপৃথিবী কম্পিত হচ্ছে।
২। যেহেতু মিত্রভূত ঋথ্বিকগণ তোমাদের জন্য অভীষ্টপ্রদায়ী স্বকর্মক্ষম সোমরস ধারণ করে আছে অতএব অর্চকের গৃহে এস। তোমরা অভীঙ্টবযী, তোমরা গৃহপতির আহ্বান শোন।
৩। হে অভীষ্টবর্ষী মিত্রাবরুণ! মহাবল লাভের জন্য মনুষ্যগণ দ্যাব্যাপৃথিবী হতে তোমার প্রশংসনীয় জন্মের কীর্তন করছে যেহেতু তুমি যজমানের যজ্ঞা ফলস্বরূপ অভীষ্ট প্রদান কর এবং স্তুতি ও হব্যযুক্ত যজ্ঞ গ্রহণ কর।
৪। হে প্রভূত বলবান মিত্রারূন! যজ্ঞভূমি তোমাদের প্রিয়তর তা উত্তমরূপে সম্পাদিত হয়েছে। হে সত্যবাদী মিত্রারবরূণ! তোমরা আমাদের বৃহৎ যজ্ঞের প্রশংসা কর; দুগ্ধাদির দ্বারা শরীরেরবল প্রদানে সমর্থ ধেনুর ন্যায়, তোমরা উভয়ে বৃহৎ দ্যুলোকের অগ্রভাগে দেবতাগণের আনন্দোৎপাদনে সমর্থ এবং নানাস্থানে আরদ্ধা কর্ম উপভোগ কর।
৫। হে মিত্রাবরূণ! তোমরা নিজ মহিমায় যে ধেনুগণকে বরণীয় প্রদেশে নিয়ে যাও, তাদের কেউ নষ্ট করতে পারে না। তারা ক্ষীর প্রদান করে এবং গোষ্ঠে ফিরে আসে। চৌরধারী ব্যক্তিগণের ন্যায় উক্ত গাভীগণ প্রাতঃকালে ও সায়ংকালে পরিস্থিত সূর্ডের দিকে চীৎকার করে।
৬। হে মিত্র! হে বরূণ! তোমরা যে যজ্ঞে যজ্ঞভূমিকে সম্মানিত কর তথায় কেশের ন্যায় অগ্নির শিখা যজ্ঞার্থ তোমাদের পূজা করে। তোমরা নিম্নমুখে বৃষ্টি প্রদান কর এবং আমাদের কর্ম সম্পন্ন কর। তোমরাই মেধাবী যজমানের মনে াহর স্তুতির ঈশ্বর।
৭। যে মেধাবী হোমনিষ্পাদক, মনোহর যজ্ঞোপকরণবিশিষট যজমান যজ্ঝের নিমিত্ত তোমাদের উদ্দেশ্যে স্তব করে হব্য প্রদান করে সে প্রজ্ঞাবান যজমানের উদ্দেশ্যে যায় এবং যজ্ঞের কামনা কর। আমাদের অনুগ্রহ করবার অভিলাষে আমাদের স্তুতি স্বীকার কর!
৮। যেমন ইন্দ্রিয়ের প্রয়োগ করতে হলে প্রথমে মনের প্রয়োগ করতে হয়। হে সত্য বাদী মিত্র ও বরূণ! সেরূপ তোমাদের জযমানেরা প্রথমে গব্য দ্বারা অর্চনা করে। যজমানেরা তোমাদের আসক্ত চিত্তে স্তুতি করেছে, তোমরা মনে দর্প না করে আমাদের সমৃদ্ধ কার্যে উপস্থিত হও।
৯। হে মিত্র ও বরূণ! তোমরা ধনবিশিষ্ট অন্ন ধারণ কর, আমাদের ধনবিশিষ্ট অগ্নি প্রদান কর। এ প্রচূর ও তোমার ধনবিশিষ্ট অন্ন ধারণ কর, আমাদের ধনবিশিষ্ট অগ্নি প্রদান কর। এ প্রচূর ও তোমার বৃদ্ধি বলে রক্ষিত। দিবস বা রাত্রি তোমার দেবত্ব প্রাপ্ত হয় নি! নদীগণও তোমার দেবত্ব প্রাপ্ত হয় নি, পণিরাও প্রাপ্ত হয় নি; তারা তোমার দানও প্রাপ্ত হয় নি।

১৫২ সুক্ত।
অনুবাদঃ
১। হে স্থুল মিত্র ও বরূণ! তোমরা (তেজরূপ) বস্ত্র ধারণ কর, তোমাদের সৃষ্টি সুন্দর ও দোষ রহিত। তোমরা সমস্ত অনৃত বিনাশকর এবং ঋতের সাথে যুক্ত হও।
২। এ উভয়ের (মিত্র ও বরূণ্যের) প্রত্যেকেই কর্ম অনুষ্ঠান কহরেন। তিনি সত্যবাদী, মন্ত্রণাকুশল, কবিগণের স্তুত্য ও শত্রু হিংসক। তিনি উগ্ররূপে চতুর্গূণ অস্ত্রবিশিষ্ট হয়ে; ত্রিগুন অত্রবিশিষ্টগণকে নাশ করেন। দেবনিন্দূকেরা তাঁর পভাবে পথমতই জীর্ণ হয়ে যায়।
৩। পদবিশিষ্ট মনূষ্যদের অগ্রে পদরহিতা ঊষা আসেন; হি মিত্রাবরূণ! এ যে তোমাদেরই কাজ তা কে জানে? তোমাদের সন্তান আদিত্য ঋতের পূরণ ও অনূতের বিনাশ করে সমস্ত জগতের ভার বহন করেন(৯)
৪। আমরা দেখেছি যে কণ্যার ঊষার প্রণয়ী আদিত্য মিত্রাবরূণের প্রিয়পাত্র।
৫। আদিত্যের অশ্ব নেই, তথাপি তিনি শ্রীঘ্র গমনশীল ও অত্যন্ত শব্দাকারী; তিনি ক্রমেই ঊর্দ্ধে আহোরণ করেছেন। লোকে এ সকল অচিন্তনীয় বৃহৎ কর্ম মিত্র ও বরূণ্যের প্রতি আরোপ করে তাদের স্তব করছে ও সেবা কর ছে।
৬। প্রীতিজনক ধেনুগণ বৃহৎ কর্মপ্রিয় মমতার পুত্রকেহ (অর্থাৎ আমাকে) আপনার স্তনজাত দুগ্ধ দ্বারা প্রীত করুক। তিনি যজ্ঞানুষ্ঠান অবগত হয়ে যজ্ঞাবিশিষ্ট অন্ন, মুখদ্বারা আহারার্থ ভিক্ষা করুন এবং মিত্রাবরূণের পরিচর্যা করে যজ্ঞা অখন্ডিতরূপ সম্পূর্ণ করুন।
৭। হে দেব মিত্রাবরূণ! আমি রক্ষার নিমিত্ত নমস্কার ও স্তোত্র করে তোমাদের হব্য সেবার উদ্যোগ করব। আমাদের বৃহৎ কর্ম যেন যুদ্ধের সময় শত্রুদের অভিনব করতে পারে! স্বর্গীয় বৃষ্টি যেন আমাদের উদ্ধার করে।
টীকাঃ
১। মিত্র ও বরূণ দিবা ও রাত্রি। সূর্য ঐ দু কালের মধ্যকালে উদয় হন। এ জন্য মিত্রাবরূণের গর্ভ অর্থাৎ শিশু বলে বর্ণিত হয়েছে। সায়ণ।
১৫৩ সুক্ত।
অনুবাদঃ
১। হে ঘৃতস্রাবী, মহান মিত্রাবরূণ! যেহেতু আমাদের অধ্বর্যূগণ স্বীয় কার্যদ্বারা তোমাদের পোষণ করে অতএব আমরা সমান প্রীতিযুক্ত হয়ে হব্য ঘৃত ও নমস্বারদ্বারা তোমাদের পূজা করি। হে মিত্রাবরূণ! তোমাদের উদ্দেশেকেবল যাগের প্রস্তাবই প্রকৃত যাগ নহে কিন্তু তা দিয়েই আমি তোমাদের তেজঃ প্রাপ্ত হই। কারণ সূখী হোতা তখন তোমাদের উদ্দেশে যজ্ঞ করবার নিমিত্ত আসেন, হে অভিষ্টবর্শদ্বয়! তখন তিনি সুখ লাভ করেন।
৩। হে মিত্রাবরূণ! রাতহব্য নামক রাজা মনুষ্য যজমানের হোতার ন্যায় যজ্ঞে সপর্যাদ্বারা তোমাকে প্রীত করলে তদীয় ধেনু যেরূপ দুগ্ধবতী হয়েছিল, তোমার যজ্ঞে যে যজমান হব্য প্রদান করে, তার ধেনু সকল সেরুপ বহু দুগ্ধবতী হয়ে আনন্দ বর্ধন করূক।
৪। হে মিত্রাবরূণ! দিবা ধেনুগণ এবং অন্ন ও উদক তোমাদের ভক্ত যজমানগণের নিমিত্ত তোমাদের প্রীত করূক। আমাদের যজমানের পূর্ব পালক অগ্নি দানশীল হোন এবং তোমরা ক্ষীরস্রাবিনী ধেনুর দুগ্ধ পান কর।

১৫৪ সুক্ত।
অনুবাদঃ
১। আমি বিষ্ণুর বীর কর্ম শ্রীঘ্রই কীর্তন করি। তিনি পার্থিব লোক পরিমাপ করেছেন। তিনি উপরিস্থ জগৎ স্তম্ভিত করেছেন! তিনি তিনবর পদক্ষেপ করছেন। লোকে তার প্রভূত স্তুতি করে (১)।
২। যেহেতু বিষ্ণুর তিনি পদক্ষেপে সমস্ত ভূবন অবস্থিতি করে অতএব ভয়ঙ্কর, হিংস্র, গিরিশায়ী আরণ্য জন্তুর ন্যায় বিষ্ণুর বিক্রম লোকে প্রশংসা করে।
৩। উন্নত প্রদেশনিবাসী, অভীষ্টবর্ষী ও সর্ব লোক প্রশংসিত বিষ্ণুকে মহাবল ও স্ত্রোত্র সমূহ আশ্রয় করুক! তিনি এককই এই একত্রাবস্থিত তঅতি বিস্তীর্ণ নিয়ত ভূবন তিনবার পদক্ষেপদ্বারা পরিমাপ করেছেন।
৪। যারা অক্ষীণ, অমৃত পূর্ণ, ত্রিসংখ্যক পদক্ষপ অন্নদ্বারা হর্ষ উৎপাদন করে; যিনি এককই ধাতুত্রয় ও পৃথিবী, দ্যুলোক ও সমস্ত ভূবন ধারন করে আছেন (২)।
৫। দেবাকাঙ্ক্ষী মানুষ্যগণ যে প্রিয় পথ প্রাপ্ত হয়ে হৃস্ট হন, আমি সে পথ যেন প্রাপ্ত হই। উরবিক্রমী বিষ্ণুর পরমপদে মধুর উৎস্য আছে, তিনি প্রকৃতই বন্ধু!
৬। যে সকল সুখের স্থানে ভূরিশৃঙ্গবিশিষ্ট ও ক্ষিপ্রগামী গোপসমূহ বিচরণ করে, সে সকল স্থানে গমনার্থ তোমাদের উভয়ের প্রার্থনা করি। এ সকল স্থানে বুহ লোকের স্তুতিযোগ্য, অভীষ্টবর্ষী বিষ্ণুর পরম পদ স্ফুর্তি প্রাপ্ত হচ্ছে।
টীকাঃ
১। বিষ্ণুর তিন পদবিক্ষেপ সম্বন্ধে ২২ সুক্তের ১৬ ঋকের টীকা দেখুন।
২। সায়ণ ধাতুত্রয়ের তিন প্রকার অর্থ অনুমান করেছেন। (১) পৃথিবী, জল ও তেজঃ। (২) কালত্রয়। (৩) পুণত্রয়। Three Elements. –Welson. Triple Universe –Muir. ‘Trois choses’ –Langlois,

১৫৫ সুক্তঃ
অনুবাদঃ
১। হে অধ্বর্যুগণ! তোমরা স্তুতিপ্রিয় মহাবীর ইন্দ্রের নিমিত্ত এবং বিষ্ণুর জন্য পানীয় সোমরস যত্নপূর্বক প্রস্তুত কর। তারা উভয়ে দুর্ধর্ষ ও মহীয়ান। তাঁরা মেঘের উপর ভ্রমণ করেন, যেন সুশিক্ষিত অশ্বের উপর আরোহন করে ভ্রমণ করেছেন।
২। হে ইন্দ্র ও বিষ্ণু! তোমরা ইষ্টপ্রদ; অতএব হূতাবিশিষ্ট সোমপায়ী যজমান তোমাদের দীপ্তিপূর্ণ আগম প্রশংসা করছে। তোমরা মর্ত্যদের জন্য শত্রুবিমর্দক অগ্নির নিকট হতে প্রদেয় অন্ন নিরন্তর প্রেরণ কর।
৩। প্রসিদ্ধ অহুতি সকল ইন্দ্রের মহৎ পৌরুষ বৃদ্ধি করছে। ইন্দ্র, সকলের মাতৃস্থানীয় দ্যাবাপৃথিবীকে রেতঃ এবং উপভোগের জন্য সে সামর্থ প্রদান করেন। পুত্র নিকৃষ্ট নাম ধারণ করেন, উৎকৃষ্ট নাম পিতার, তৃতীয় মান ম্যুলোকের দীপ্তমান প্রদেশ আছে (১)।
৪। আমরা সকলের সআমী, পালনকর্তা, শত্রু রহিত ও সেচন সমর্থ বিষ্ণুর পৌরুষের স্তুতি করি। তিনি প্রশংসনীয় লোক রক্ষার নিমিত্ত ত্রিসংখ্যক পদবিক্ষেপদ্বারা পার্থিব লোক সকল বিস্তীর্ণরূপে পরিক্রম করেছিলেন।
৫। মনুষ্যগণ স্বর্গদর্শী বিষ্ণুর দুই পাদক্ষেপ কীর্তন করে প্রাপ্ত হয়। তার তৃতীয় পাদক্ষেপ, মনুষ্য ধারণা করতে পারে না, উড্ডীয়মান পক্ষবিশিষ্ট পক্ষীগণো প্রাপ্ত হয় না।
৬। বিষ্ণু গতিবিশেষ দ্বারা বৎসরের চতুর্নবতি দিবস চক্রের ন্যায় বৃত্তাকারে চালিত করেছেন (২)। বিষ্ণু বৃহৎ শরীর বিশিষ্ট ও সুতিদ্বারা পরিমেয়, তিনি নিত্য তরূণ ও অকুমার, তিনি আহাবে গমন করেন।
টীকাঃ
১। এ ঋকের সায়ণ এরূপ তাৎপর্য লিখেছেন অগ্নিতে প্রদত্ত আহুতি সকল সূর্যলোকে গমন করে দ্বাদশ আদিত্যের মধ্যে ইন্দ্র ও বিষ্ণুর পুষ্টি বর্ধন এবং মানুষ্যদের জীবনযাত্রা নির্বাহ হয়। এই প্রকারে পিতা, পুত্র ও পৌত্রের উৎপত্তি হয়।
২। সায়ণ ৯৪ কালাবয়ব নির্দেশ করেছেন, যথা সম্বৎসর (১), অশ্বীদ্বয়, (২)পঞ্চঋতু (৫) দ্বাদশ মাস (১২), চতুর্বিংশতিপক্ষ (২৪) ত্রিংসৎ অহোরাত্র (৩০), অষ্টপ্রহর (৮), দ্বাদশ রাত্রি (১২)। পণ্ডিতবরা মিউয়র চতুর্ভি নবতিং অর্থে চারগুণ নব্বই অর্থাৎ বৎসরের ৩৬০ দিন করেছেন। আমরা এই দ্বিতীয় অর্থ গ্রহণ করেছি।

১৫৬ সুক্ত।
অনুবাদঃ
১। হি বিষ্ণু! তুমি মিত্রের ন্যায় আমাদের সুখপ্রদ, ঘৃতাহুতিভাজন, প্রভূত অন্নবান,রক্ষণশীল ও পৃথুব্যাপী হও। তোমার স্তোম বিদ্বান যজমান কর্তৃক পুনঃপুনঃ উচ্চার্য এবং তোমার যজ্ঞ হবিষ্মান যজমানের আরাধনীয়।
২। যে মনুষ্য প্রাচীন, মেধাবী, নিত্য নুতন ও সুমজ্জানি বিষ্ণুকে হব্য প্রদান করেন; যিনি মহানুভব বিষ্ণুর পূজনীয় জন্ম (কথা) কীর্তন করেন, তিনিই যুজ্য (স্থান) প্রাপ্ত হন।
৩। হে স্তোতৃগণ! প্রাচীন যজ্ঞের গর্ভতূত বিষ্ণুকে যেরূপ জান সে রূপেই স্তোত্রাদিদ্বারা তরি প্রীতি সাধন কর। বিষ্ণুর নাম জেনে কীর্তন কর। হে বিষ্ণু! তুমি মহানুভব, তোমার মুমতি আমরা ভজন করি।
৪। রাজা বরুণ ও অশ্বিদ্বয় মরুৎবান বিধাতার কসে যজ্ঞে মিলিত হোন। অশ্বিদ্বয় এবং বিষ্ণু সখাবিশিষ্ট হয়ে উত্তম অহর্বিদ বলধারণ করেন এবং মেঘের আবরণ উন্মোচন করে।
৫। যে স্বগীয়, অতিশয় শোভনকর্মা বিষ্ণু শোভনকর্মা ইন্দ্রের সাথে মিলিত হয়ে আসেন, সে মেধাবী ত্রিজৎবিক্রমী আর্যকে প্রীত করেছেন এবং যজমানকে যজ্ঞের ভাগ প্রদান করেছেন।

১৫৭ সুক্ত।
অনুবাদঃ
১। ভূমির উপর অগ্নি গাজরিত হলেন, সূর্য উদিত হলেন, মহতী ঊষা তেজঃদ্বারা সকলকে আহ্লাদিত করে (তমঃ) দূরীকৃত করেছেন। হে অগ্নিদ্বয়। আগমেনর জন্য তোমাদের রথ যোজিত কর, সবিতা সমস্ত জগৎকে (স্বস্ব কর্ম করণে) নিয়োজিত করুন।
২। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা যখন বৃষ্টিপ্রদ রথ যোজনা করছ, তখন মধুর জলদ্বারা আমাদের বল বর্ধিত কর এবং আমাদের লোকজনকে অন্নদ্বারা প্রীত কর। আমরা যেন বীর যুদ্ধে ধনপ্রাপ্ত হই।
৩। অশ্বিদ্বয়ের চক্রত্রয়বিশিষ্ট মধুপূর্ণ, শীঘ্রগামী অশ্ববিশিষ্ট প্রশংসতি ত্রিবন্ধুর, ধনপূর্ণ সর্ব সৌভাগ্যসম্পন্ন রথ আমাদের অভিমুখে আসুক এবং আমাদের দ্বিপদ (পুত্রাদির) ও চতুস্পদ (গবাদির) সুখ সম্পাদন করুক।
৪। হে অশ্বিবদ্বয়! তোমরা উভয়ে আমাদের বল প্রদান কর, তোমাদের মধুমতী কথাদ্বারা আমাদের প্রীতি উৎপাদন কর, আমাদের আয়ু বৃদ্ধি কর, পাপ শোধন কর, দ্বেষকারীদের বিনাশ কর, সকল কর্মে আমাদের সহচর হও।
৫। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা উভয়ে গমনশীল গোপসমূহ মধ্যে এবং সমস্ত জগতের (প্রাণী সমূহের) অন্তঃস্থিত গর্ভ রক্ষা কর। হে অভীষ্টবর্ষিদ্বয়! তোমরা উভয়ে অগ্নি, জল ও বনস্পতিদের প্রবর্তিত কর।
৬। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা উভয়ে ঔষধ (জ্ঞানদ্বারা) ভিষক হয়েছে, রথবাহক অশ্বদ্বারা রথবান হেয়ছে। তোমদের বল অত্যন্ত অধিক, অতএব হে উগ্র অশ্বিদ্বয়! তোমাদের (আসক্তচিত্তে) হব্য প্রদান করে তাকে রক্ষা কর।

১৫৮ সুক্ত।
অনুবাদঃ
১। হে অভীষ্টবর্ষী, নিবাসপ্রদ, পাপনাশক, বহুজ্ঞানী, স্তুতিদ্বারা বর্ধমান, পূজিত, অশ্বিদ্বয়! আমাদের অভিমত ফলপ্রদান কর। যেহেতু উচথ্যপুত্র দীর্ঘতমা তোমাদের নিকট ধন প্রার্থনা করছে এবং তোমরা অকুৎসিতভাবে আশ্রয় প্রদান করে থাক।
২। হে নিবাসপ্রদ অশ্বিদ্বয়! তোমাদের এ অনুগ্রহের জন্য, কে তোমাদের হব্য প্রদান করতে পারে? যেহেতু বেপদে তোমরা অন্নের সাথে বহুতর ধন দান করতে ইচ্ছা কর। শরীরপুষ্টিকারী, শব্দায়মানা, বহুদুগ্ধবতী ধেনুসমূহ প্রদান কর। তোমরা যজমানের অভিলাষ পূরণে যেন কৃতসংকল্প হয়ে বিচরণ করছো।
৩। হে অশ্বিদ্বয়! তোমাদের উদ্ধারকুশল, অশ্বযুক্ত রথ তৌগ্র্যরাজার নিমিত্ত বল প্রয়োগদ্বারা উত্তীর্ণ হয়ে সমুদ্র মধ্যে স্থাপিত হয়েছিল (১)। অতএব যেমন যুদ্ধজেতা বীর, দ্রুতগামী অশ্বে স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন করে, সেরূপ আমি তোমাদের আশ্রয়ার্থে শরণাগত হয়েছি।
৪। হে অশ্বিদ্বয়! তোমাদের স্তুতি, উচ্যথ্য তনয়কে রক্ষা করুক! নিত্য প্রত্যবর্তনশীল অহোরাত্র যেন আমাকে শীর্ণ করতে না পারে, দশবার প্রজ্বলিত অগ্নি যেন আমাকে দগ্ধ করতে না পারে, কারণ তোমার আশ্রিত এ ব্যক্তি, পাশ বন্ধ হয়ে ভূমিতে লুষ্ঠিত হচ্ছে।
৫। মাতৃস্থানীয় নদী জল আমাকে যেন গ্রাস না করে, দাসেরা এ সঙ্কুচিতাঙ্গ বৃদ্ধকে নিন্মমুখে প্রক্ষেপ করেছে, ত্রৈতন এর মন্তক ছেদন করেছে, দাস স্বয়ং বক্ষঃস্থল ও অংশ দ্বয় আঘাত করেছে (২)।
৬। মমতার পুত্র দীর্ঘতমা, দশমযুগ অতীত হলে জীর্ণ হয়েছিল। যে সকল লোক কর্মফল পেতে বাসনা করে, তিনি তাদের নেতা এবং সারথি।
টীকাঃ
১। ১১৬ সুক্তের ৩ ঋক ও টীকা দেখুন।
২। সায়ণ দাসাঃ শব্দের অর্থ গর্ভদাস করেছেন, কিন্তু বেদের অন্যস্থলে যেরূপ এস্থলেও সেরূপ দাস অর্ধে অনার্য দস্যু হতে পারে। ত্রৈতন সম্বন্ধে ৫২ সুক্তের ৫ ঋকের টীকা দেখুন। ঋগ্বেদে ত্রিত নাম বারবার ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু ত্রৈতন নামের এ একবার মাত্র উল্লেখ আছে।

১৫৯ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। যজ্ঞের বর্ধক, মহান, যজ্ঞকার্যের চৈতন্যকারী, দ্যাবাপৃথিবীকে আমি বিশেষরূপে স্তব করি। যজমানেরা তাদের পুত্রস্বরূপ, তাদের কর্ম সুন্দর তারা অনুগ্রহ করে যজমানগণকে বরণীয় ধন প্রদান করেন। । আমি দ্রোহ রহিত পিতৃস্থানীয় দ্যুলোকের উদার এবং সদয় মন আহ্বান মন্ত্রদ্বারা জেনেছি। মাতৃস্থানীয় পৃথিবীর মনও জেনেছি। পিতামাতা দ্যাবাপৃথিবী নিজ সামর্থ্য দ্বারা পুত্রগণকে বিশেষরূপে রক্ষা করে প্রভূত, বিস্তীর্ণ অমৃত প্রদান করুন।
৩। তোমাদের পুত্র, সুকর্মা, সুদর্শন প্রজাগণ, তোমাদের পূর্ব অনুগ্রহ স্মরণ করে, তোমাদের মহৎ ও মাতা বলে জানেন; পুত্রভূত স্থাবর ও জঙ্গমগণ দ্যাবাপৃথিবী, ভিন্ন আর কাকেও জানে না, তোমরা তাদের রক্ষার নিমিত্ত অবাধ স্থান প্রদান কর।
৪। দ্যাবাপৃথিবী, সহোদরা ভগিনী এবং একস্থান স্থিতা মিথুন। প্রজ্ঞাবিশিষ্ট চৈতন্যকারী। রশ্মিগণ তাদের পরিচ্ছেদ করছে স্থব্যাপারনিরত, সুদীপ্ত রশ্মিগণ দ্যোতমান অন্তরীক্ষের মধ্যে নূতন নুতন তন্তু বিস্তার করছে।
৫। আমরা অদ্য সবিতার অনুমতি অনুসারে সে বরণীয় ধন প্রার্থনা করি। দ্যাবাপৃথিবী আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করে গৃহাদি বিশিষ্ট এবং শত শত গোবিশিষ্ট ধন প্রদান করুন।

১৬০ সুক্ত।।
অনুবাদঃ
১। দ্যাবা পৃথিবী জগতের সুখদায়িনী, যজ্ঞবতী, উদকোৎপাদনার্থ প্রযত্নবতী ও সুজাতা, নিজকার্যে প্রগল্ভা। দ্যোতমানা শুচি, দীপ্যমান সবিতা দ্যাবাপৃথিবীর অন্তরালে স্বকার্যে সর্বদা গমন করেন।
২। বিস্তীর্ণা, মহতী ও পরস্পর বিষুক্তা পিতা মাতা (দ্যাবাপৃথিবী) ভূতসমূহকে রক্ষা করছেন। দ্যাবাপৃথিবী শরীরীদের মঙ্গলের জন্যই যেন সযত্না, কারণ পিতা সমুদয় পদার্থকে রূপ প্রদান করছেন।
৩। আদিত্য পিতা মাতা স্বরূপ দ্যাবাপৃথিবীর পুত্র। তিনি ধীর এবং ফলপ্রদায়ী তিনি স্বীয় প্রজ্ঞাদ্বারা সমস্ত ভূতগণকে প্রকাশ করছেন। তিনি পৃশ্নি (১) ধেনু ও সেচন সমর্থ বৃক্ষকে প্রকাশ করছেন ও দ্যুলোক হতে নির্মল জল দোহন করছেন।
৪। তিনি দেবতাগণের মধ্যে দেবতম কর্মবানগণের মধ্যে কর্মবত্তম। তিনি সর্বসুখপ্রদ দ্যাবাপৃথিবীকে উৎপন্ন করেছেন এবং প্রাণীগণের সুখের জন্য দ্যাবাপৃথিবীকে পরিচ্ছেদ করেছেন। তিনি দৃঢ়তর শঙ্কু দ্বারা এদের স্থির করে রেখেছেন।
৫। হে দ্যাবাপৃথিবী। আমরা তোমাদের স্তব করি। তোমরা মহৎ আমাদের প্রভূত অন্ন ও বল প্রদান কর, যা দিয়ে আমরা সর্বকালেই (পুত্রাদি) প্রজা বিস্তার করব। আমাদের শরীরে প্রশংসনীয় বল বৃদ্ধি করে দাও।
টীকাঃ
১। সায়ণ পৃশ্নি শব্দের অর্থ শুক্রবর্ণ করেছেন । কিন্তু পৃশ্নি ধেনুর প্রকৃত অর্থ নানা বর্ণযুক্ত বৃষ্টিদাতা মেঘ বা আকাশ; মরুৎগণের মাতা। এ সম্পর্কে ২৩ সুক্তের ১০ ঋকের টীকা দেখুন।

(C) https://www.ebanglalibrary.com



Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।