রাজা রামমোহন রায় বেদান্ত শাস্ত্রের বাংলার অনুবাদ করতে
প্রবৃত্ত হলে অনেকেই আপত্তি উত্থাপন করতে থাকেন এবং বলেন বেদের বাংলার অনুবাদ
করাতে ও শুনাতে পাপ আছে। শূদ্র তা শুনলে পাতক হয়। এই আপত্তির উত্তরে রাজা রামমোহন
রায় বলেন যে, যারা এরূপ আপত্তি করেন তাঁদের জানা উচিত যখন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়য়ের
শিক্ষকরা শ্রুতি, স্মৃতি, জৈমিনিসূত্র, পুরাণ ইত্যাদি শাস্ত্র ছাত্রকে পাঠ করান,
তখন বাংলা ভাষায় তাঁর ব্যাখ্যা করে থাকেন কিনা এবং ছাত্ররা এই ব্যাখ্যা শুনেন কি
না? তাছাড়া মহাভারত, যাকে পঞ্চম বেদ ও সাক্ষাৎ বেদার্থ বলা হয় তার শ্লোক সকল
শূদ্রের নিকট পাঠ করা হয় কি না? শূদ্রগণ সেই অর্থ ও ইতিহাস নিয়ে পরস্পরের মধ্য
কথোপথন করেন কিনা? যদি তাই হয় তাহলে শূদ্রগনের বেদমন্ত্র উচ্চারণে আপত্তি কোথায়
থাকলো বিষয়টি সবিনয়ে ভেবে দেখলেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে। শাস্ত্রে বলা আছেঃ
“তে অজ্যেষ্ঠা অকনিষ্ঠাস উদ্ভিদো হমধ্যমাসো মহসা বি কবৃধুঃ
সুজাতাসো জনুষা পৃশ্নি মাতরো দিবো মর্যা আ নো অচ্ছা
জিগাতন।।”
(ঋকবেদ ৫/৫৯/৬)
অনুবাদঃ মানবের মধ্য কেহ বড় নয়, কেহ ছোট নয় এবং কেহ
মধ্যম নয়; তাহারা সকলেই উন্নতি লাভ করিতেছে। উৎসাহের সঙ্গে বিশেষভাবে ক্রমোন্নতির
প্রযত্ন করিতেছে। জন্ম হইতেই তাহারা কুলীন। তাহারা জন্মভূমির সন্তান-দিব্য মনুষ্য।
তাহারা আমার নিকট সত্য পথে আগমন করুক।
সুতরাং, এই সকল বিষয়ে আমাদের অজ্ঞতা দূর করতে হবে।
শাস্ত্রমুখী হয়ে স্বধর্ম পরায়ন হতে পারলেই এই বিভ্রান্তির অবসান হবেই।
মনে রাখতে
হবে, আমাদের সকলের একটাই পরিচয়, “আমরা হিন্দু”।
"জয় রায়"
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন