• মহাভারতের শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান

    মহাভারতে যে সময়ের এবং শহরগুলোর কথা বলা হয়েছে সেই শহরগুলোর বর্তমান অবস্থা কি, এবং ঠিক কোথায় এই শহরগুলো অবস্থিত সেটাই আমাদের আলোচনার বিষয়। আর এই আলোচনার তাগিদে আমরা যেমন অতীতের অনেক ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসবো, তেমনি বর্তমানের পরিস্থিতির আলোকে শহরগুলোর অবস্থা বিচার করবো। আশা করি পাঠকেরা জেনে সুখী হবেন যে, মহাভারতের শহরগুলো কোনো কল্পিত শহর ছিল না। প্রাচীনকালের সাক্ষ্য নিয়ে সেই শহরগুলো আজও টিকে আছে এবং নতুন ইতিহাস ও আঙ্গিকে এগিয়ে গেছে অনেকদূর।

  • মহাভারতেের উল্লেখিত প্রাচীন শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান ও নিদর্শনসমুহ - পর্ব ০২ ( তক্ষশীলা )

    তক্ষশীলা প্রাচীন ভারতের একটি শিক্ষা-নগরী । পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি জেলায় অবস্থিত শহর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। তক্ষশীলার অবস্থান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল এবং পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার (২০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে; যা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে খুব কাছে। তক্ষশীলা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৪৯ মিটার (১,৮০১ ফিট) উচ্চতায় অবস্থিত। ভারতবিভাগ পরবর্তী পাকিস্তান সৃষ্টির আগ পর্যন্ত এটি ভারতবর্ষের অর্ন্তগত ছিল।

  • প্রাচীন মন্দির ও শহর পরিচিতি (পর্ব-০৩)ঃ কৈলাশনাথ মন্দির ও ইলোরা গুহা

    ১৬ নাম্বার গুহা, যা কৈলাশ অথবা কৈলাশনাথ নামেও পরিচিত, যা অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে ইলোরা’র কেন্দ্র। এর ডিজাইনের জন্য একে কৈলাশ পর্বত নামে ডাকা হয়। যা শিবের বাসস্থান, দেখতে অনেকটা বহুতল মন্দিরের মত কিন্তু এটি একটিমাত্র পাথরকে কেটে তৈরী করা হয়েছে। যার আয়তন এথেন্সের পার্থেনন এর দ্বিগুণ। প্রধানত এই মন্দিরটি সাদা আস্তর দেয়া যাতে এর সাদৃশ্য কৈলাশ পর্বতের সাথে বজায় থাকে। এর আশাপ্সহ এলাকায় তিনটি স্থাপনা দেখা যায়। সকল শিব মন্দিরের ঐতিহ্য অনুসারে প্রধান মন্দিরের সম্মুখভাগে পবিত্র ষাঁড় “নন্দী” –র ছবি আছে।

  • কোণারক

    ১৯ বছর পর আজ সেই দিন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সোমবার দেবতার মূর্তির ‘আত্মা পরিবর্তন’ করা হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে। ‘নব-কলেবর’ নামের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবতার পুরোনো মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তি বসানো হবে। পুরোনো মূর্তির ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে সঞ্চারিত হবে, পূজারীদের বিশ্বাস। এ জন্য ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, সুভদ্রা আর বলভদ্রের নতুন কাঠের মূর্তি তৈরী হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরে ‘গর্ভগৃহ’ বা মূল কেন্দ্রস্থলে এই অতি গোপনীয় প্রথার সময়ে পুরোহিতদের চোখ আর হাত বাঁধা থাকে, যাতে পুরোনো মূর্তি থেকে ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে গিয়ে ঢুকছে এটা তাঁরা দেখতে না পান। পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা পরিচালনা করেন পুরোহিতদের যে বংশ, নতুন বিগ্রহ তৈরী তাদেরই দায়িত্ব থাকে।

  • বৃন্দাবনের এই মন্দিরে আজও শোনা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মোহন-বাঁশির সুর

    বৃন্দাবনের পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নিধিবন মন্দির। এই মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। যা আজও পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষিত করে। নিধিবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য-ঘেরা সব গল্পের আদৌ কোনও সত্যভিত্তি আছে কিনা, তা জানা না গেলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই লীলাভূমিতে এসে আপনি মুগ্ধ হবেনই। চোখ টানবে মন্দিরের ভেতর অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের মুর্তি।

২৫ মে ২০২০

সনাতন ধর্ম বা স্বধর্ম ত্যাগ করলে কি পাপ হয় এবং কি শাস্তি ভোগ করতে হয় ?

শ্রীমদ্ভাগবতে ২৮ টি নরকের মধ্যে অন্যতম ভয়ংকরী নরক হলো "অসিপত্রবন"। যে ব্যক্তি স্বধর্ম পরিত্যাগ করে অন্য ধর্ম বা পরের ধর্ম গ্রহন করেন তাহারা মৃত্যুর পর এই নরকে পতিত হয়। যমদূতগন অতি গরম তাপের কীটের জলে তাকে ফেলিয়ে তার দেহে কষাঘাত করতে থাকে, তখন সে সহ্য না করতে পেরে ছোটাছুটি করতে থাকে,তখন অতি ধারালো তালবনের অসিপত্র দ্বারা তার দেহ কেঁটে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন সে চিৎকার করে বলে "আমি হত হলাম, আমাকে ছেড়ে দাও"। বরং যমদূতগন না ছেড়ে অভিরাম তাকে অসহ্য যন্ত্রণা দিতে থাকে। এই ভাবে মৃত্যুর পর তারা অনেক অনেক বছর এই ভয়ংকরী নরকে কষ্ট যন্ত্রণা ভোগ করে।


ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অজুর্ন কে বলেছেন,

"ওঁ শ্রেয়ান্স্বর্মো বিগুনোঃ পরা ধর্মা
স্বপুষ্ঠিতাৎ স্ব ধর্মে নিধনং শ্রেয়ং পরো ধর্মো ভয়াবহ ।
                                                                                শ্রীমদ্ভাগবত গীতাতে ৩/৩৫

স্বধর্মে যদি দোষ থাকে তাও পরো ধর্ম হতে ভালো। স্বধর্মে সাধনে যদি মৃত্যু হয় তাও মঙলজনক। কিন্তুু অন্যের ধর্মের অনুষ্ঠান করা মহাপাপ ও বিপদজনক।


আবার চাণক্য শ্লোকে ও বলা হয়েছে , যে যাহারা স্বধর্মের সাথে সমন্ধ রাখেন, তাদের বিনাশ নেই।

বর্তমানে কিছু ছেলে মেয়েরা লোভে, সামান্য সুখের জন্য নিজের ধর্ম পরিত্যাগ করেন, কিন্তুু তারা ভাবেনা যে কি মহা অন্যায় তারা করছে। বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা ঐসব ছেলেমেয়েদের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ধর্মে সংখ্যা বাড়াচ্ছে। আমি কি বলতে চাইছি আশাকরি সবাই বুঝতে পারছেন। তাই সাবধান সনাতন ধর্মানুসারীরা। সাবধান।


প্রবচনে ভক্ত কৃপা প্রার্থীঃ-- মনি কাঞ্চন দাস
🌹জয় গুরু জয় গুরু,জয় গুরু🌹
Share:

২৪ মে ২০২০

হাজারবছর আগের আমাদের পূজ্য দেবদেবীর বিগ্রহগুলো আমাদের দেবালয়ে আমাদের উপাসনালয়েই ফেরত দেওয়া উচিত।

জয়পুরহাটের ভাদশা গুচ্ছগ্রাম থেকে হাজারো বছরের পুরানো প্রায় ১২ কোটি মুল্যর একটি চতুর্মুখী শিব বিগ্রহ উদ্ধার করেছে র‌্যাব ।

এই রকম অনেক আমাদের দামী দেবদেবীর প্রতিমা উদ্ধার হয় কিন্তু সেইগুলোর হিসেব নাই।

১) গত ১৪ মার্চ মঙ্গলবার নোয়াখালী সোনাইমুড়ী জয়াগ ইউনিয়নের ভাওরকোর্ট গ্রামের মাটি কাটার সময় প্রায় ৬ ফুট লম্বা ও ২০ মণ ওজনের তিনটি কষ্টি পাথরের কৃষ্ণ মূর্তির সন্ধান পাওয়া যায়। অনুমান করা হচ্ছে মূর্তিগুলোর মূল্য প্রায় ৭০০_কোটি টাকার ও বেশি হবে। এখন মূর্তিগুলি সোনাইমুড়ী থানা পুলিশের তত্ত্বাবধানে আছে ।

২) এর আগে ১২ মার্চ (রবিবার) চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর এলাকা থেকে ১ কেজি ওজনের কষ্টি পাথরের একটি বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এর মূল্য দেড়কোটি টাকা বলে অনুমান করেছে। এটি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার পর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে হস্তান্তর করা হয় বলে ওসি জানিয়েছেন।

৩) পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় পুকুর পুনঃখননের সময় একটি কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার করা হয়। শ্রমিকরা মূর্তিটি দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে মূর্তিটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এর আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। মূর্তিটি রাজশাহী বরেন্দ্র যাদুঘরে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।

৪) মুন্সীগঞ্জে কবর খুঁড়তে গিয়ে ২০ কেজি ওজনের একটি কষ্টি পাথরের মূতির্র খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়। সুন্দর কারুকার্য খচিত খণ্ডাংশ বেদিটি কবরস্থানের একটি কবর খুঁড়তে গিয়ে কষ্টি পাথরের মূর্তি খণ্ডাংশটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পুলিশ মূর্তিটি উদ্ধার করে সংরক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের ট্রেজারিতে জমা দেন।

৫) নওগাঁর সদর উপজেলার মামরা মল্লিকপুর গ্রাম থেকে ৪০ কেজি ওজনের একটি কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা মূর্তিটির আনুমানিক দাম ৪৫ লাখ টাকা। উদ্ধার করা বিষ্ণু মূর্তি সান্তাহার শুল্ক কার্যালয়ে জমা রাখা হয়।

এভাবে বলতে গেলে উদাহরণের শেষ হবে না। আমি মাত্র ৫ টা উপস্থাপন করলাম। এভাবে সারা বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে হিন্দুদের দেবদেবীর দূর্লভ কষ্টি পাথরের বিগ্রহ মূর্তি উদ্ধার নিত্যকার বিষয় । আবার মূর্তি চুরি এবং সীমান্ত এলাকা থেকে সীমান্ত রক্ষীদের দ্বারা মূর্তি উদ্ধারের খবর ও প্রায়শঃ পত্রপত্রিকায় লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু খবর এপর্যন্তই। উদ্ধার পর্ব পর্যন্তই শেষ।

এর পরে মূর্তিগুলো কোথায় যায়, কোন যাদুঘরে সংরক্ষিত হলো তা আর কেউ জানে না। আলেমুল গায়েব। যদিও খুব নগন্য সংখ্যক উদ্ধারকৃত বিগ্রহ মূর্তি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।

মধ্যযুগের বর্বরতায় ধ্বংসকৃত আমাদের পূর্ব পুরুষদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে গচ্ছিত পূজিত দেবদেবীর দূর্লভ বিগ্রহগুলো যেখানেই পাওয়া যাক না কেন এইগুলো আমাদের হিন্দুদের সম্পত্তি। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এইসব দেববিগ্রহ তৈরি করেছিলো পূজা অর্চনা করার জন্য যাদুঘরে সাজিয়ে রাখার জন্য নয়।

এমতাবস্থায় একটি কথা আমরা সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, -
"মনে রাখবেন, আমাদের ধর্ম আমাদের কাছে অনেক বড় এবং পবিত্র। স্বধর্ম বিগুনাত্ শ্রেয়ঃ"।।

তাই মন্দির, পুকুর খনন, সীমান্ত সহ বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধারকৃত আমাদের পূর্ব পুরুষদের গচ্ছিত পূজিত দেববিগ্রহ এবং যাদুঘরে রক্ষিত সকল দেবদেবীর বিগ্রহ ধর্মমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে অথবা হিন্দু কল্যান ট্রাস্টের মাধ্যমে হিন্দুদের হাতে পূজা অর্চনার জন্য ফেরত দেওয়া উচিত।

বর্নিত বিষয়ের আলোকে তাই আবারো দাবী জানাচ্ছি -
"আমাদের পূজ্য দেবদেবীর বিগ্রহ মূর্তিগুলো আমাদের দেবালয়ে আমাদের উপাসনালয়েই ফেরত দেওয়া উচিত।


প্রতিটি হিন্দুর মন্দির, প্রতিমা ধ্বংস করা হয়েছিলো এর বাস্তব প্রমাণ মিলে এটাই।

আর এই প্রতিমাগুলো কোন রাষ্ট্রীয় সম্পদ নয় যে মিউজিয়ামের রাখা হবে। এগুলো হিন্দুর সম্পদ,তাই প্রতিমাগুলো মন্দিরে রাখা হউক। এই দাবি করছি প্রশাসকের কাছে।

হর হর মহাদেব 🙏 ❤



Share:

ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরের এক বিশাল এক শক্তিশালী হিন্দু সাম্রাজ্য কথা জানবো ।

খামের সাম্রাজ্য ( ৮০২-১৪৩১) দক্ষিণ এশিয়ার একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিল । ৮০২ সালে চক্রবর্তী সম্রাট দ্বিতীয় জয়বর্মন এই সাম্রাজের প্রতিষ্ঠা করেন । বর্তমানের কম্বোডিয়া,থাইল্যান্ড,লাওস এবং দক্ষিণ ভিয়েতনাম নিয়ে গঠিত হয় এই শক্তিশালী হিন্দু সাম্রাজ্য । ১৫ শতাব্দীতে খামের সাম্রাজ্যের পতন হয় । খামেরদের রাজধানী ছিল অঙ্কোরাভাট অর্থাৎ মন্দিরের শহর ।

প্রাচীন মন্দির বলতে মানুষের ধারণা শুধু ভারতবর্ষেই। কিন্তু ভারতবর্ষ থেকেও হাজার মাইল দূরে কম্বোডিয়ায় অবস্থিত সনাতন ধর্মালম্বীদের স্থাপিত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মন্দির। শুধু সর্ববৃহৎ বলে নয় এই মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী ও কারুকার্য দেখলে রীতিমতো তাজ্জব বনে যেতে হবে।
সব মন্দিরকে ছাপিয়ে এই অঙ্কোরভাট মন্দির অধীষ্ঠিত আছে অনন্য উচ্চতায়। বিস্তারিত বর্ণনার আগে জানিয়ে নেই এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন অঙ্কোরের তৎকালীন শাসক দ্বিতীয় সূর্যবর্মণ। দ্বাদশ শতাব্দীতে (১১১৩-১১৫০) নিজের রাজধানী ও প্রধান উপসনালয় হিসেবে এই বিশাল স্থাপনাটি নির্মাণ করেছিলেন রাজা দ্বিতীয় সূর্যবর্মণ। রাজা সূর্যবর্মণের মৃত্যুর পর মন্দিরের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায় তাই মন্দিরের দেয়ালে কিছু কারুকাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তখন দ্বিতীয় সূর্যবর্মণ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে এক শক্তিশালী সরকার গঠন করেছিলেন সেটা তাঁর এই স্থাপত্য দেখলেই অনুমান করা যায়৷ তাঁদের সাম্রাজ্যকে বলা হত খামের সাম্রাজ্য। খামের সাম্রাজ্যের আরাধ্য দেব মহাদেব হলেও দ্বিতীয় সূর্যবর্মণ এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন বিষ্ণু দেবের জন্য।
ঙ্কোরভাট নির্মাণশৈলী খামের স্থাপত্যশৈলীকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই মন্দিরের নির্মাণকৌশলে দুইটা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে
১/ টেম্পল মাউন্টেন ধাঁচ (পাহাড়ি মন্দির ধাঁচ)
২/ গ্যালারি মন্দির ধাঁচ


★হিন্দু পূরাণের বিশ্বাস অনুযায়ী পৃথিবীর কেন্দ্র সুমেরু পর্বতে দেব-দেবীদের বসবাস তাই সেই সুমেরু পর্বতের আদলেই এই মন্দিরের মূল অংশ নির্মাণ করা হয়।
মন্দিরের ৫ টি সুইচ চুড়া সুমেরু পর্বতের ৫ টি পর্বতশৃঙ্গকে নির্দেশ করে।
★এই মন্দিরের সুরক্ষার জন্য মন্দিরের চারদিকে রয়েছে বিশাল পরিখা (ধারনা করা হয় কয়েকশত ফুট গভীর পরিখ) ও ৩.৫ কিঃমিঃ দীর্ঘ প্রাচীর। সম্পূর্ণ স্থাপনাটি প্রায় ৫০০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
★বাইরের দেয়ালটি দৈর্ঘ্যে ১০২৫ মিটার, প্রস্থে ৮০২ মিটার, এবং উচ্চতায় ৪.৫ মিটার। এর চার দিকে ৩০ মিটার দূরত্বে ১৯০ মিটার চওড়া একটি পরিখা আছে। মন্দিরে প্রবেশ করার জন্য পূর্ব দিকে একটি মাটির পাড় এবং পশ্চিম দিকে একটি বেলেপাথরের পুল রয়েছে। এই পুলটি মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বার, এবং মন্দির নির্মাণের অনেক পরে যোগ করা হয়েছে। ধারণা করা হয় যে, এর স্থানে পূর্বে একটি কাঠের পুল ছিলো।
★মূল মন্দিরটি শহরের অন্যান্য স্থাপনা হতে উঁচুতে অবস্থিত। এতে রয়েছে তিনটি পর্যায়ক্রমে উচ্চতর চতুষ্কোণ গ্যালারি, যা শেষ হয়েছে একটি কেন্দ্রীয় টাওয়ারে। মান্নিকার মতে এই গ্যালারিগুলো যথাক্রমে রাজা, ব্রহ্মা, এবং বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। প্রতিটি গ্যালারির মূল (কার্ডিনাল) বিন্দুগুলোতে একটি করে গোপুরা রয়েছে। ভিতরের দিকের গ্যালারিগুলোর কোণায় রয়েছে টাওয়ার। কেন্দ্রের টাওয়ার এবং চার কোনের চারটি টাওয়ার মিলে পঞ্চবিন্দু নকশা সৃষ্টি করেছে।
দ্বিতীয় সূর্যবর্মণের মৃত্যুর পর মন্দিরটি সূর্যবর্মণের সমাধিসৌধ হিসেবেও বিবেচিত হত। আসলে তখনকার সত্যিকার ইতিহাসের কোন সাক্ষ্য এমনকি মন্দিরের পূর্বনাম সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায় না।

১১৭৭ এর দিকে খামেদের চিরশত্রু চামদের দ্ধারা এই মন্দির লুন্ঠিত হয়। ধারণা করা হয় তখন এই মন্দিরের চূড়াগুলো স্বর্ন দিয়ে মোড়ানো ছিল৷ পরবর্তীতে ৭ম জয়বর্মন রাজ্যটিকে পুনর্গঠন করেন ও নতুন রাজধানী করেন অঙ্কোরথমকে এবং বায়ু নগরে প্রধান মন্দির স্থাপন করেন।
তবে কম্বোডিয়ায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচারের সাথে সাথে ১৪ শ থেকে ১৫ শ শতাব্দীর মধ্যে এই হিন্দু মন্দিরে রূপান্তরিত হয় কিন্তু এখান থেকে বিষ্ণু মন্দির কখনও স্থানান্তরিত হয় নি এমনকি এই মন্দিরে এখনো প্রধান দেবতা হিসেবে ভগবান বিষ্ণুর পূজা হয়। ষোড়শ শতকের পর থেকে এই মন্দির অবহেলিত হতে শুরু হয় কিন্তু কখনওই পরিত্যক্ত হয় নি। মন্দিরের চারপাশের বিশাল পরিখার জন্যই এই মন্দিরকে জঙ্গলের গাছপালা গ্রাস করতে পারে নি।
পশ্চিমা পরিব্রাজকদের মধ্যে পর্তুগীজ ধর্মপ্রচারক আন্তোনিও দা মাগদালেনার প্রথম এই মন্দির ভ্রমণ করেন ১৫৮৬ সালের দিকে। এই মন্দির ভ্রমণ করে তিনি লিখেছিলেন।
"এটি (মন্দিরটি) এমন অসাধারণ ভাবে নির্মিত যে, ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। সারা বিশ্বে এরকম আর কোন ভবন বা স্থাপনার অস্তিত্ব নাই। এখানে রয়েছে খিলান ও অন্যান্য কারুকার্য, মানুষের পক্ষে সম্ভাব্য সেরা সৃষ্টি।"
তবে পাশ্চাত্যে এই মন্দিরের কথা ছড়িয়ে পড়ে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ফরাসি অভিযাত্রী অনরি মৌহত এর ভ্রমণকাহিনীর মাধ্যমে। তিনি লিখেছিলেন,
"এই মন্দিরগুলির মধ্যে একটি (আঙ্করভাট), সলোমনের মন্দিরকেও হার মানায়। মাইকেলেঞ্জেলোর মতোই কোন প্রাচীন শিল্পী এটি নির্মাণ করেছেন। আমাদের সবচেয়ে সুন্দর ভবন সমূহের সাথে এটি সমতূল্য। এটি এমনকী প্রাচীন গ্রিস বা প্রাচীন রোমের স্থাপনা গুলির চাইতেও অনেক বেশি রাজকীয়, সুন্দর। বর্তমানে এই দেশটি (কম্বোডিয়া এলাকা) যে বর্বরতার মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে, তার সাথে এই মন্দিরের বিশালতার ও সৌন্দর্যের এক বিশাল ফারাক রয়েছে।"
বিংশ শতাব্দীতে আঙ্করভাটের ব্যাপক সংস্কার সম্পন্ন হয়। এ সময় প্রধানত এর চারিদিকে গ্রাস করে নেয়া মাটি ও জঙ্গল সাফ করা হয়। গৃহযুদ্ধ ও খ্‌মের রুজ শাসনকালে ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকগুলিতে সংস্কার কার্য বাধাগ্রস্ত হয়। তবে আঙ্করভাট এলাকায় পরে স্থাপিত মূর্তিগুলি চুরি যাওয়া ও ধ্বংস করে ফেলা ছাড়া মূল মন্দিরের খুব একটা ক্ষতি এসময় হয় নাই।
বর্তমানে আঙ্করভাটের মন্দিরটি কম্বোডিয়ার জাতীয় প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এটি দেশবাসীর গৌরব। ১৮৬৩ সালে প্রথম প্রবর্তনের পর থেকে কম্বোডিয়ার সব পতাকাতেই আঙ্করভাটের প্রতিকৃতি স্থান পেয়েছে।সারা বিশ্বে এটিই একমাত্র ভবন যা কোন দেশের পতাকায় প্রদর্শিত হয়েছে।
#১৯৯০ এর দশক হতে আংকর ওয়তের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এর সাথে সাথে শুরু হয় পর্যটনশিল্প। ভারতের পুরাতাত্তিক সংস্থা ১৯৮৬ হতে ১৯৯২ সালের মধ্যে মন্দিরটিতে সংস্কারের কাজ করে। মন্দিরটি আংকরের বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসাবে ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৯২ সালে স্বীকৃত হয় এবং সপ্তম আশ্চর্যের নতুন ১৩ স্থাপত্যের তালিকায় জায়গা পায়।
২০১৫ সালে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রোলান্ড ফ্লেচার ও ড. ড্যামিয়ান "গ্রেট অঙ্কোর প্রজেক্ট" নামে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন৷ সেসময় তারা প্রত্নতাত্ত্বিক যাচাইবাছাইয়ের জন্য তীক্ষ্ণ ভূমি রাডার এবং এয়ারবোর্ণ লেজার স্ক্যানিং ব্যবহার করেছিলেন। তারা বলেন মন্দিরটির স্থাপনায় এমন কিছু রহস্য লুকিয়ে আছে যা কল্পনার অতীত। স্ক্যানিংয়ে তারা এমন এক গঠনশৈলী পান যেটা আগে কখনও দেখা যায় নি৷ এর নাম দেন তারা "রেক্টিলিনিয়ার স্পাইরাল" তথা "সরলরৈখিক কুন্ডলী" যেটা মন্দিরের দক্ষিণ পাশে ৯ বর্গকিলোমিটার এ
লাকাজুড়ে

তারা মন্দিরের চারপাশে আরও কিছু টাওয়ারের সন্ধান পান যেগুলো মাটিচাপা অবস্থায় আছে এবং সম্পূর্ণটাই রহস্যময়।
আজ থেকে ৮০০ বছর আগে খামের সম্রাট দ্বিতীয় সূর্যবর্মণ কম্বোডিয়ার নির্মাণ করে দিয়ে গেলেন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ হিন্দু মন্দির যেটা প্রায় ৬০০ বছর লোকচক্ষুর অন্তরালেই ছিল হয়ত এখনও অনেকে এই বিষয় অজ্ঞাত।



©সংগৃহিত
Share:

১৩ মে ২০২০

কেও মারা গেলে তার সন্তানেরা ৩৬৫ দিন অশুচ পালন করে কিন্তু কেন ?

কেও মারা গেলে তার সন্তানেরা ৩৬৫ দিন অশুচ পালন করে । কেন ?

কারণ ৩৬৫ দিনে , ৩৬৫ ঋন শোধ হয়। এই ঋন শোধ না হলে সেই সন্তানেরা পূজা অর্চনা আদি বৈদিক কাজের যোগ্য হয় না। আসুন দেখি ৩৬৫ ঋনগুলো কি কিঃ–

১) জন্মদান , ২) মাতার গর্ভে ধারন/ পিতার বীজ স্থাপন , ৩) গর্ভকালীন কষ্ট/ পিতার গর্ভকালীন মাতাকে দেখাশোনা , ৪) গর্ভকালীন চিন্তা , ৫) শিশুর মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা , ৬) আগলে রাখা , ৭) শিশুর মঙ্গলের জন্য ব্রত করা , ৮) শিশুর কল্যাণে সাধু সেবা , ৯) শিশুর কল্যাণে মন্দির যাত্রা , ১০) উত্তম শিশু লাভের জন্য তীর্থ যাত্রা , ১১) শিশুর কল্যাণে দান করা , ১২) নিজের সুখ সুবিধা বর্জন করা , ১৩) গর্ভস্থ শিশুর সঞ্চালন সহ্য করা/ পিতার ক্ষেত্রে রাত্র জাগরণ করত মাতাকে সান্ত্বনা দেওয়া , ১৪) শিশুর জন্য অমঙ্গলের আশায় ভীত হওয়া , ১৫) দাই আনা বর্তমানে চিকিৎসক হাসপাতাল , ১৬) অসহ্য গর্ভ যন্ত্রনা/ পিতার ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা , ১৭) নাড়ীচ্ছেদনের কষ্ট/ পিতার ক্ষেত্রে কঠিন পরিস্থিতিতে মানসিক নিয়ন্ত্রন রাখা, ১৮) দাইয়ের খরচ বর্তমানে হাসপাতালের খরচ , ১৯) শিশুকে স্তন্য পান/ পিতার ক্ষেত্রে উত্তম স্তন্যদুগ্ধের জন্য মাতাকে উত্তম ভোজন প্রদান , ২০) আতুর ঘর নির্মাণ / মাতার ক্ষেত্রে আতুর ঘরে কাঁথা বিছানো , ২১) আতুর ঘর নির্মাতা ঘরামি কে অর্থ প্রদান / মাতার ক্ষেত্রে উত্তম আতুর ঘর নির্মাণ কিনা পরীক্ষা করা ২২) আতুর ঘরে রাত জেগে প্রহরা , ২৩) শৃগাল- কুকুর- মশক- মক্ষী বিতরণ , ২৪) পিতার পুত্রের মুখ দেখার ব্যাকুলতা , মাতার ক্ষেত্রে পুত্রকে প্রহরা একপাশে থেকে পীঠ ব্যাথা উপেক্ষা করে , ২৫) পিতার দোলনা নির্মাণে খরচ/ মাতার দোলনা তে দোলা তে দেওয়া , ২৬) মাতা পিতার আদর , ২৭) মাতার ঘুমপাড়ানি সঙ্গীত / পিতার বাৎসল্য বশতঃ “খোকা-খুকী” বলে সম্বোধন , ২৮) মাতার স্তন্যে শিশুর কামড় দেওয়ার যন্ত্রনা সহ্য/ পিতার ক্ষেত্রে ক্রোড়ে মল মূত্র ত্যাগ করা সহ্য করা , ২৯) সন্তানকে বড় করা/ পিতার সংসার চালানো , ৩০) সন্তানের সজ্জা করা/ পিতার খরচ , ৩১) দুজনের চোখের মণি হয়ে থাকা , ৩২) সন্তানের জন্য দুশ্চিন্তা , ৩৩) ক্রীড়াচ্ছলে আঘাতপ্রাপ্ত হলে মাতা- পিতার চিন্তা, ৩৪) আঘাতের পর মাতা পিতার দুঃখ, ৩৫) মাতার উৎকণ্ঠা পিতার চিকিৎসক খরচা , ৩৬) উভয়ে মিলে যত্ন করা , ৩৭) ষষ্ঠী আদি মঙ্গল ব্রতে মায়ের উপোবাস ও পিতার পূজার দ্রব্যের আয়োজন করা , ৩৮) অন্নপ্রাশনে উভয়ের দায়িত্ব ও ব্রাহ্মণকে দক্ষিণা দানে সন্তুষ্ট করা , ৩৯) দশবিধ সংস্কারে উভয়ের দায়িত্ব , ৪০) হাতে খড়িতে উভয়ের ভূমিকা, ৪১) পিতার , সরস্বতী পূজার আয়োজন – মাতার সেই পূজায় জোগারযন্ত্র যেমন নৈবদ্য- আল্পনা- পূজা দ্রব্য সাজানো , ৪২) মাতা পিতাই প্রথম বিদ্যা দেন , ৪৩) মাতার বিদ্যা বিষয়ে উৎকণ্ঠা ও পিতার উপযুক্ত গুরু পাঠশালা বর্তমানে স্কুল ও শিক্ষক অন্বেষণ , ৪৪) উপযুক্ত স্কুলে ভর্তি হবার উৎকণ্ঠা , ৪৫) বিদ্যা বিষয়ে পিতার খরচা ও মাতার যত্ন , ৪৬) শিক্ষার মান নিয়ে উভয়ের দুশ্চিন্তা , ৪৭) পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা , ৪৮) বিদ্যার্থীর খারাপ ফলে প্রতিবেশীদিগের গঞ্জনা খোঁটা সহ্য করা , ৪৯) পুত্রের মঙ্গল নিমিত্ত শাসন, ৫০) পুত্রকে সঠিক দিশা দেখানো।



৫১) অসৎ সঙ্গ থেকে চিন্তা , ৫২) অসৎ সঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উভয়ের শাসন, ৫৩) উভয়ের সঠিক দিশা দেখানো, ৫৪) সন্তানের অসুখে দুশ্চিন্তা , ৫৫) মাতার উৎকণ্ঠা ও পিতার চিকিৎসক পথ্যের খরচ , ৫৬) উভয়ের রাত্রি জাগরণ করত নিদ্রা বিসর্জন , ৫৭) উভয়ের বার ব্রত ঈশ্বরের কৃপার জন্য কৃচ্ছতা গ্রহণ , ৫৮) মাতার পথ্য রন্ধন/ পিতার সেগুলির জোগার , ৫৯) সন্তানের বমন- পূরীষ পরিষ্কার / পিতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের বিধান মাতাকে শেখানো , ৬০) সন্তানকে আশ্বাস দেওয়া, ৬১) অসুখ অন্তে সন্তানকে শাসন ও যত্নে রাখা , ৬২) পুনঃ অসুখের আশাঙ্কায় চিন্তিত হওয়া , ৬৩) উচ্চ শিক্ষার জন্য উচ্চতর টোলে / বর্তমানে আরোও বড় শিক্ষালয়ে প্রেরন , ৬৪) তত প্রেরনের জন্য নানা দুশ্চিন্তা , ৬৫) পিতার উৎকণ্ঠা ও মায়ের উৎকণ্ঠা , ৬৬) মাতার উপদেশ ও পিতার সেই সংক্রান্ত খরচা , ৬৪) উচ্চ শিক্ষালয়ে সহপাঠী হতে খতির আশাঙ্কা , ৬৫) কষ্ট মনে চেপে শিক্ষালয়ে প্রেরণ , ৬৬) সন্তানের জন্য বুকে কম্পন , ৬৭) সন্তানের জন্য বিবিধ রান্না/ পিতার ক্ষেত্রে সেগুলো ক্রয় করা , ৬৮) মাতার খাদ্য পরিবেশন/ পিতার ক্ষেত্রে সন্তানকে উত্তম দ্রব্য প্রদানের জন্য মাতাকে অনুরোধ। ৬৯) পুত্রকে বাতাস দেওয়া/ পিতার ক্ষেত্রে পুত্রকে উত্তম দ্রব্য বেশী পরিমাণে গ্রহণের জন্য অনুরোধ , ৭০) দুজনের নিকট গল্প আখ্যান শোনা , ৭১) পিতামাতার সাথে বেড়ানো , ৭২) ভ্রমণকালে পিতামাতার যত্ন পাওয়া , ৭৩) ভ্রমণে পিতার খরচ ও মাতার ক্ষেত্রে পরিপাটি করে সন্তানকে সাজানো, ৭৪) পিতা মাতার ক্রোড়ে চড়ে পরিভ্রমণ , ৭৫) খুব কষ্টে পিতামাতা হাসিমুখে সন্তানকে ক্রোড়ে নিয়ে যাত্রা করা যেমন প্রবল গরমে , ৭৬) পিতার ক্ষেত্রে সন্তানের মাথায় ছত্র ধরা , মাতার ক্ষেত্রে আঁচল । ৭৭) মাতার ক্ষেত্রে সন্তানকে স্নান – শৌচাদি করানো/ পিতার ততবিষয়ক পরামর্শ দেওয়া । ৭৮) দোকান হতে উত্তম আহার্য ক্রয় করা/ মাতার ক্ষেত্রে শিশুর মুখে তুলে দেওয়া । ৭৯) পিতার সাথে মেলা ভ্রমণ / মাতার কেশ বিন্যাস ও বস্ত্র বিন্যাস করা । ৮০) নিজের কথা ভুলে সন্তানের হাত ধরে চলা, ৮১) কঠিন জায়গায় ক্রোড়ে লয়ে চলা , ৮২) কঠিন জায়গা চলার সময় চরণে কাঁদা, গরম ভাব, কণ্টক বিদ্ধ হবার কষ্ট গ্রহণ করা , ৮৩) অভাবেও সন্তানকে আহার দেওয়া , ৮৪) অভাব বুঝতে না দেওয়া , ৮৫) নিজেদের অভাব শর্তেও উত্তম খাদ্য দেওয়া , ৮৬) অভাবে সন্তানের যত্ন নেওয়া, ৮৭) কেশ বিন্যাস ও বস্ত্রের জোগান অভাবেও করা , ৮৮) অভাব বুকে চেপে রাখার বেদনা , ৮৯) নিজেরা ক্ষুধায় থাকে , ৯০) নিজেদের নতুন বস্ত্রের কথা ভুলে যাওয়া , ৯১) নিজেদের চিকিৎসার খরচা বাঁচিয়ে সন্তানের জন্য তুলে রাখা , ৯২) বহু কষ্ট সহ্য করা , ৯৩) অভাবে গৃহতে বুঝতে না দেওয়া, ৯৪) খাদ্য সংগ্রহের জন্য দূরে যাত্রা, ৯৫) খাদ্য বহনের কষ্ট, ৯৬) সন্তানদের সাথে প্রীতি ভাব মনে কষ্ট চাপা দিয়ে , ৯৭) সন্তান দুঃখে থাকলে পিতা মাতার কষ্ট , ৯৮) সন্তানের মনের ব্যাথা বোঝার জন্য আপ্রান চেষ্টা , ৯৯) সন্তানের পক্ষে থাকে , ১০০) ব্যাথা দূরীকরণের উপায় খোঁজা ।


১০১) পীড়া দূরের জন্য নানা বুদ্ধি দেওয়া । ১০২) বুদ্ধিকে কাজে লাগানোর জন্য উপায় বর্ণন , ১০৩) বুদ্ধি খোঁজার জন্য নিদ্রা ব্যাতীত রাত্র জাগরণ , ১০৪) সন্তানকে অভয় প্রদান , ১০৫) বিপদে জড়ালে পাশে থাকা, ১০৬ ) ততজনিত উৎকণ্ঠা , ১০৭) পীড়া দূরের জন্য পিতামাতার সন্তানকে সেবা , ১০৮) উত্তমরূপে যত্ন নেওয়া , ১০৯) উত্তরকালের পীড়ার জন্য চিন্তা , ১১০) সন্তানের ক্রন্দন মোচন , ১১১) ক্রন্দন থামানোর জন্য দিবারাত্র নিদ্রা ব্যতীত সেবা , ১১২) উত্তম সামগ্রী দিয়ে ভোলানোর চেষ্টা , ১১৩) ঔষধ গ্রহণের জন্য নানা কায়দা অবলম্বন , ১১৪) সন্তানের পীড়া কষ্ট সহ্য করা, ১১৫) শল্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে সন্তানের আঘাত দেখে পিতামাতার অশ্রুপাত , ১১৬) ততজনিত চিন্তায় নিজ সুখ বিসর্জন , ১১৭) কবিরাজকে বর্তমানে ডাক্তার আনয়ন , ১১৮) চিকিৎসক আনার জন্য পথে উৎকণ্ঠা নিয়ে পিতার চলা/ মাতার সন্তানকে সেবা , ১১৯) উপযুক্ত পারিশ্রামিক দেওয়া/ মাতার ক্ষেত্রে চিকিৎসককে দেবদূত জ্ঞানে আরোগ্য কামনা করা , ১২০) ভালো চিকিৎসসার জন্য উত্তম চিকিৎসক গ্রহণ , ১২১) ততজনিত অর্থ ব্যায়/ মাতার চিন্তা , ১২২) অন্যত্র গমন , ১২৩) আরোগ্যলাভের দিনের প্রতীক্ষা , ১২৪) পিতার পথ্য সংগ্রহ / মাতার সেগুলি যত্নে খাওয়ানো , ১২৫) অসুখে উভয়ের ঠাকুরের কাছে পড়ে থাকা, ১২৬) সন্তানকে কর্মের ব্যাপারে সাহায্য, ১২৭) উভয়কে কর্মের ব্যাপারে বুদ্ধি দান , ১২৮) ততজনিত সুপারিশ করা , ১২৯) পুত্রের ক্ষেত্রে সন্তানকে নিজ ব্যবসা নিয়োগ/ কন্যার ব্যাপারে সাংসারিক বিষয় জ্ঞান দান , ১৩০) পুত্রের কর্ম পরিবেশ/ কন্যার সংসার পরিবেশ নিয়ে চিন্তা , ১৩১) পুত্রের কর্মস্থান হতে দেরীতে আসার চিন্তা/ কন্যার জল আনতে দেরীতে আশাঙ্কা , ১৩২) উভয়ের বয়োঃসন্ধিকাল নিয়ে চিন্তা , ১৩৩) উভয়ের পরবর্তী সংসার জীবন নিয়ে চিন্তা , ১৩৪) উভয়ের জন্য ঘটক সন্ধান , ১৩৫) ঘটকের দক্ষিণা/ মাতার ক্ষেত্রে উৎকণ্ঠা , ১৩৬) পুত্রের জন্য স্ত্রী/ কন্যার জন্য জামাতা সন্ধান , ১৩৭) ততজনিত খরচা আদি / মাতার চিন্তা , ১৩৮) পুত্র/ কন্যার শ্বশুরকূলের আপ্যায়ণ , ১৩৯) খাতির যত্ন , ১৪০) নিজ সুখ ভুলে খাতির যত্ন করা , ১৪১) খাতির যত্নে ত্রুটি না রাখা , ১৪২) পছন্দ/ অপছন্দ নিয়ে চিন্তা , ১৪৩) পিতার ক্ষেত্রে খরচ/ মাতার ক্ষেত্রে রন্ধন দ্বারা আত্মীয়কুটুম্বের সেবাযত্ন , ১৪৪) বিবাহ সংক্রান্ত চিন্তা , ১৪৫) বিবাহ স্থির করা, ১৪৬) পুত্রের/ কন্যার বিবাহের আগে বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা , ১৪৭) পূজার উপবাস কৃচ্ছতা , ১৪৮) পূজাতে ব্যায়/ জোগারযন্ত্র , ১৪৯) ব্রাহ্মণকূলের আশীর্বাদ নেওয়া , ১৫০) বিবাহের প্রস্তুতি ,

১৫১) আত্মীয় দের নিমন্ত্রণ , ১৫২) আত্মীয় দের সেবা ও খরচা , ১৫৩) আত্মীয়দিগের নানা জিনিস পত্র দেওয়া , ১৫৪) অসমর্থে ক্ষমা চাওয়া , ১৫৫) বিবাহ কালীন খরচ বা দেনাপাওনা তে বন্ধক রাখা , ১৫৬) বিবাহের দিন আগানোর সাথে সাথে নানা দুশ্চিন্তায় রাত্রি জাগরণ , ১৫৭) বিবাহ পূর্বে নানা দুঃস্বপ্নে চোখের ঘুম বিসর্জন , ১৫৮) বিবাহ সংক্রান্ত আলোচনা , ১৫৯) বিবাহে তিন জনের উপস্থিতির জন্য ভিক্ষা প্রার্থনা করা , ১৬০) পুরুত ঠাকুরকে সস্মমানে বরন , ১৬১) রান্নার বামুন ঠাকুরকে বরন , ১৬২) নাপিত ঠাকুরকে আনয়ন , ১৬১) পুরুত ঠাকুরকে বস্ত্র দেওয়া , ১৬২) শালগ্রাম নারায়ণের তুষ্টি কামনা , ১৬৩) পাচক ঠাকুরের তুষ্টি , ১৬৪) পাঁচক ঠাকুরকে পান কলা দেওয়া , ১৬৫) অগ্নিতে ব্রহ্মা- বিষ্ণু- মহেশ্বরকে আনয়নের জন্য প্রার্থনা জানানো, ১৬৬) নানা উত্তম দ্রব্য সন্ধান / রান্নার জোগার , ১৬৭) মহিলা কুটুম্বদের সম্মান মাতার/ পুরুষ কুটুম্ব দের সম্মান পিতার , ১৬৮) উভয়ের যত্নের দিক দেখা , ১৬৯) উভয়ের মন বুঝে চলা , ১৭০) উভয়ের সামনে সময়ে রঙ্গ রসিকতা , ১৭১) উভয়ের সম্মান যত্নে ত্রুটি না দেখা, ১৭২) উভয়ের সামান্য অযত্নে চাকর দিকগে বকাঝকা , ১৭৩) কুটুম্বদের নিকট বুদ্ধি প্রার্থনা , ১৭৪) বুদ্ধি শুনে চলা, ১৭৫) বুদ্ধি নিয়ে সংশয় চিন্তা , ১৭৬) নাপিত ঠাকুরকে দক্ষিণা দান, ১৭৭) নাপিত আনান ও তার সংক্রান্ত চিন্তা , ১৭৮) নাপিত বরন , ১৭৯) বিবাহে প্রীতিভোজ প্রদান , ১৮০) জামাই বরন/ বৌভাতে পুত্রবধূ বরন , ১৮১) শুশুরকূলের সকলকে বস্ত্র মিষ্ট প্রদান , ১৮২) বিবাহ সম্পন্ন , ১৮৩) শ্বশুরকূল সম্বন্ধে চিন্তা , ১৮৪) জামাতা/ পুত্রবধূ সম্বন্ধে চিন্তা , ১৮৫) তত সংক্রান্ত নানা অনর্থক আলোচনায় চিন্তা , ১৮৬) নানা দুঃস্বপ্ন রচনা , ১৮৭) কন্যা বিদায়ে ক্রন্দন/ পুত্রবধূ আনয়নে আনন্দ , ১৮৮) কন্যা বিদায়ে বরন/ পুত্রবধূ আনয়নে বরন , ১৮৯) সমন্ধীর বাড়ীতে সাবধানে যাতায়াত , ১৯০) পুত্রবধূকে নানা সুশিক্ষা প্রদান ও কন্যাকে নানা সুশিক্ষা দিয়ে প্রেরণ , ১৯১) পুত্রবধূকে সংস্কার দেওয়া , ১৯২) ঘরের জিনিস বোঝানো, ১৯৩) সংসারের ভার নিতে শেখা , ১৯৪) পুত্রবধূ ও কন্যার গর্ভের জন্য চিন্তা , ১৯৫) তার জন্য মাদুলী আনয়ন , ১৯৬) নানা ধরনের চিন্তা , ১৯৭) চিন্তায় রাত্র জাগরণ , ১৯৮) ঘন ঘন খোঁজ নেওয়া , ১৯৯) লোকের গাল খেয়ে কন্যার গৃহে গিয়ে খোঁজ , ২০০) হবু নাতি- নাতিনীর মুখ দর্শন ।

২০১) গর্ভস্থ অবস্থায় পুত্রবধূ/ কন্যার দেখাশোনা, ২০২) নানা উপদেশ দেওয়া , ২০৩) নানা ধর্মকথা শুনানো, ২০৪) ভজন সাধন , ২০৫) উপবাস ও পূজা, ২০৬) ষষ্ঠীপূজা , ২০৭) নানা জিনিস পত্র খুজে আনা ও রান্না, ২০৮) কবিরাজ বদ্যি আনয়ন , ২০৯) কবিরাজের কথায় নানা পথ্য সংগ্রহ , ২১০) সেগুলো রান্না ও পরিবেশন , ২১১) সান্ত্বনা বাক্য দেওয়া , ২১২) রাত জেগে উৎকণ্ঠা , ২১৩) বারে বারে খোঁজ নেওয়া, ২১৪) পুত্র/ জামাতার অনুপস্থিতিতে কন্যা / পুত্রবধূর দেখাশোনা , ২১৫) উভয়ের মন ভালো করা বাক্য বলা, ২১৬) ইচ্ছানুসারে গ্রহণ করার খাদ্য আনয়ন ও রন্ধন ২১৭) যত্ন করে রাখা , ২১৮) গুছিয়ে কথা বলা , ২১৯) বুকে আগলে রাখা, ২২০) জীবজন্তু থেকে রক্ষা, ২২১) তাবিজ মাদুলী এনে বেতাল কুস্মাণ্ড থেকে রক্ষা , ২২২) পুরাণের ঘটনা শোনানো, ২২৩) মন প্রফুল্লের চেষ্টা , ২২৪) মনে বিভীষিকা দূরের চেষ্টা , ২২৫) তার জন্য নানা উপমা ব্যাখান করা , ২২৬) কেশে তেল দেওয়া/ পিতার ক্ষেত্রে সেই তেল আনয়ন , ২২৭) সান্ত্বনা দেওয়া , ২২৮) অভয় দেওয়া, ২২৯) রাতে দুশ্চিন্তায় জাগরণ হয়ে থাকা, ২৩০) বারবার খোঁজ নেওয়া , ২৩১) পুত্র/ জামাতাকে অভয় প্রদান, ২৩২) পুত্র/ জামাতাকে চিন্তা থেকে বের করা , ২৩২ ) পুত্র/ জামাতার মনে আস্থা উৎপাদন , ২৩৩) শত ব্যস্ততায় তাদের সেবা, ২৩৪) পুত্র/ জামাতাকে উত্তম দ্রব্য সন্ধান , ২৩৫) আনয়ন ও রন্ধন , ২৩৬) ভয় দূর করা, ২৩৭) পুত্র/ জামাতাকে মন প্রসন্ন রাখতে বলা , ২৩৮) সেই বিষয়ে নানা প্রবোধবাক্য, ২৩৯) মনে সন্তোষ উৎপাদন , ২৪০) প্রফুল্ল ভাব বজায় রাখা , ২৪১) মনের মত জিনিস আনয়ন , ২৪২) উভয়ের শ্বশুরকূলকে প্রসন্নতা দান , ২৪৩) উভয়ের শ্বশুরকূলকে সান্ত্বনা দেওয়া , ২৪৪) উভয়ের শ্বশুরকূলকে প্রীতি প্রদান , ২৪৫ ) উভয়ের শ্বশুরকূলকে ভগবানে আস্থা রাখার পরামর্শ , ২৪৬) উভয়ের শ্বশুরকূলকে ভরসা জাগানো, ২৪৭) উভয়ের শ্বশুরকূলকে বিশ্বাস জ্ঞাপন , ২৪৮) উভয়ের শ্বশুরকূলের থেকে কুশল মঙ্গল সংবাদ নেওয়া , ২৪৯) উভয়ের শ্বশুরকূলকে সুবুদ্ধি দেওয়া, ২৫০) উভয়ের শ্বশুরকূলের মঙ্গলে খুশী হওয়া,

২৫১) আর অমঙ্গলে দুখী হওয়া , ২৫২) উভয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক , ২৫৩) উভয়ের আতিথ্যেয়তা , ২৫৪) উভয়ের যত্ন , ২৫৫) উত্তম দ্রব্য প্রেরণ , ২৫৬) উত্তম বস্তু প্রেরণ , ২৫৭) ততজনিত আনয়ন ও প্রেরণ , ২৫৮) বস্তু প্রেরণের আয়োজন , ২৫৯) তাঁদের সুখ দুঃখের সংবাদ নেওয়া , ২৬০) দুঃখ সময়ে সেখানে যাওয়া , ২৬১) অপমান হজম করা , ২৬২) সম্মান পেলে গৃহে এসে কুটুম্বের সুখ্যাতি করা , ২৬৩) নাতি নাতনীর সংবাদ শ্রবনে আনন্দ হওয়া , ২৬৪) আনন্দে সকলের নিকট প্রচার , ২৬৫) যত্ন আত্তি নেওয়া, ২৬৬) ভজন সাধন করা , ২৬৭) নাতি নাতনীর মুখ দেখে দান ধ্যান করা , ২৬৮) আনন্দ লাভ , ২৬৯) দাইকে উপযুক্ত পারিশ্রামিক দেওয়া , ২৭০) মিষ্টি বিতরণ করা , ২৭১) নাতি নাতনীর সাথে খেলা। ২৭২) নাতি নাতনীর সময় কাটানো, ২৭৩) উভয়কে যত্ন নেওয়া , ২৭৪) উভয়ের মনোরঞ্জন করা , ২৭৫) উভয়কে নানা খেলনা এনে দেওয়া, ২৭৬) নাতি নাতনীর জন্য মঙ্গল চিন্তা , ২৭৭) নাতি নাতনীর জন্য নানা দ্রব্য আনয়ন ও রন্ধন, ২৭৮) নানা দুশ্চিন্তা করা, ২৭৯) নানা চিন্তায় রাত্রি জাগরণ , ২৮০) নানা চিন্তায় খারাপ স্বপ্নে ভয় পাওয়া, ২৮১) অলীক কল্পনায় ভীত হওয়া , ২৮২) নানা ভাবে আনন্দ দেওয়া , ২৮৩) সময় কাটানো, ২৮৬) রূপকথা শোনানো, ২৮৭) যত্ন করা , ২৮৮) উত্তম ভেষজ তেল সংগ্রহ , ২৮৯) কবিরাজকে দক্ষিণা ও তেল মর্দন , ২৯০) উত্তম গো দুধের আয়োজন, ২৯১) উত্তম গোমাতা আনয়ন ও সেবা, ২৯২) উত্তম গো দুগ্ধের জন্য গোমাতার সেবা , ২৯৩) গো মাতার দুধ দোয়ানো , ২৯৪) নাতি নাতনী মুখে ভাত অনুষ্ঠান করা/ হাজির থাকা, ২৯৫) নাতি নাতনীর সুখ্যাতি করা, ২৯৬) নাতি নাতনীকে নিয়ে পাড়া বেড়ানো, ২৯৭) বৌমা/ জামাতার প্রশংসা , ২৯৮) বৌমা/ জামাতার বংশের সুখ্যাতি , ২৯৯) উভয়ের কুল নিয়ে গর্ব , ৩০০) উভয়ের কর্মের প্রশংসা ।

এবার দেখা যাক পিতা মাতার বংশে কিছু ঋন থাকে।

৩০১) পিতা/ মাতার বংশ ভূমিকা , ৩০২) উত্তম সন্তান সন্ততি জন্মের সুকৃতি , ৩০৩) উভয়ের বংশে গুরুদেবের ভূমিকা, ৩০৪) উভয়ের ঈশ্বর ভক্তি, ৩০৫) মাতার ক্ষেত্রে কুমারী কালে পুণ্যিপুকুর ব্রত,শিবরাত্রি, গোসেঁজুতি ব্রত, তুষ তুষালী ব্রত , সন্ধ্যামণির ব্রত করা/ পিতার ক্ষেত্রে ঈশ্বর ভক্তি, ৩০৬) উভয়ের ঈশ্বর ভক্তি। কারণ ঈশ্বর ভক্তি না থাকলে সুসন্তান সন্ততির জনক জননী হওয়া সম্ভব না , ৩০৭) উভয়ে গুরু কুলের ঋন, ৩০৮) পরম গুরুর ঋন, ৩০৯) পরমেষ্ঠী গুরুর ঋন , ৩১০) পরাপর গুরুর ঋন , ৩১১) গুরু পরম্পরার ঋন , ৩১২) গুরু সম্প্রদায়ের ঋন , ৩১৩) গুরুকূলের ঋন, ৩১৪) উত্তম শাস্ত্র শ্রবণে উত্তম হওয়ার ঋন, ৩১৫) উভয়ের কুলদেবতা/ কুলদেবীর ঋন , ৩১৬) উভয়ের গ্রাম দেবতা/ দেবীর ঋন , ৩১৭) উভয়ের বাস্তুপুরুষের ঋন , ৩১৮) উভয়ের ইষ্ট দেব/ দেবীর ঋন , ৩১৯) উভয়ের তীর্থ যাত্রার ঋন , ৩২০) উভয়ের সাধু সেবার ঋন, ৩২১) উভয়ের সাধুকে দানের ঋন , ৩২২) উভয়ের ভিক্ষুক ঋন , ৩২৩) উভয়ের পিতৃপুরুষের ঋন, ৩২৪) উভয়ের বাড়ীর অন্ন শস্য- যা গ্রহণে তারা নিজেদের সন্তানের জন্মের উপযুক্ত করেছেন তার ঋন , ৩২৫) উভয়ের দেহে অবস্থিত শক্তির ঋন, ৩২৬) উভয়ের বৃদ্ধির ঋন, ৩২৭) উভয়ের বিবাহ ঋন , ৩২৮) উভয়ের বিবাহের সম্বন্ধ ঘটকের ঋন, ৩২৯) উভয়ের বিবাহে ব্রাহ্মণের ঋন, ৩৩০) উভয়ের পোষ্য জীবজন্তু যেমন কুকুর বিড়াল গোমাতার ঋন, ৩৩১) পোষ্যদের আহার দেওয়ার ঋন, ৩৩৩) পোষ্যদের জল দেওয়ার ঋন , ৩৩৪) অভুক্তকে আহার দেওয়ার ঋন , ৩৩৫) তৃষ্ণার্ত কে জল দেওয়ার ঋন , ৩৩৬) পুকুর ঘাটে স্নানে বরুণ দেবতার ঋন, ৩৩৭) গঙ্গা স্নানে পুণ্যফল নেওয়ার ঋন , ৩৩৮) অগ্নির ঋন , ৩৩৯) শ্বাস গ্রহণে পবন দেবতার ঋন, ৩৪০) ভাগ্যচক্রে উভয়ের নবগ্রহের ঋন , ৩৪১) শাস্ত্র শ্রবনে নিজেদের উন্নতির ঋন, ৩৪২) তীর্থে দেবদর্শনে সুসন্তান পাওয়ার ঋন , ৩৪৩) বিভিন্ন পূজার ঋন , ৩৪৪) সন্তান ধারণের জন্য দেহ গঠনের ঋন, ৩৪৪) বিবাহ করা , ৩৪৫) দাদুদিদা বা ঠাকুরদা/ ঠাকুমার ঋন, ৩৪৬) তাহাদের যাবতীয় কর্মের ঋন , ৩৪৭) পূর্বপুরুষদের কৃৎ কর্মের ঋন, ৩৪৮) সূর্য দেবতার ঋন, ৩৪৯) মা ষষ্ঠীর ঋন , ৩৫০) মা অন্নপূর্ণার ঋন, ৩৫১) পিতার মধ্যে অবস্থিত জগতপিতা মহাদেবের ঋন, ৩৫২) মাতার মধ্যে অবস্থিত জগতজননী মা পার্বতীর ঋন , ৩৫৩) উভয়ের বাৎসল্যের ঋন , ৩৫৪) নতুন সংসারের ঋন, ৩৫৪) সোনাবলী দেবীর ঋন, ৩৫৫) সন্তান জন্মের ক্ষমতার ঋন, ৩৫৬) সন্তানকে হাটা চলা শেখানো, ৩৫৭) তুলসী দেবীর ঋন, ৩৫৮) দুই পক্ষের ঋন শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষ , ৩৫৯) পুত্র হলে গোপালের ঋন/ কন্যা জন্মে মা লক্ষ্মীর ঋন , ৩৬০) পিতামাতার মধ্যে অবস্থিত খাদ্যরূপী ব্রহ্মের ঋন, ৩৬১) শ্মশান ঋন , ৩৬২) পঞ্চভূতের ঋন, ৩৬৩) শ্মশান ভৈরবের ঋন, ৩৬৪) শ্মশান অবস্থিত দেবীর ঋন , ৩৬৫) মুক্তির জন্য শাস্ত্র বিহিত কর্মের ঋন।

এই গেলো ৩৬৫ ঋন। তবে মাতার সূচাগ্র স্তন্যুদুগ্ধের ও পিতার সূচাগ্র ঘর্মের ঋন মোচন করা সাক্ষাৎ ব্রহ্মা- বিষ্ণু- মহেশ্বরেরও অসাধ্য। এবার বুঝলেন কত প্রকার ঋন আছে আমাদের সবার।

তথ্যসূত্র:-
বিধিবিধান ও সংস্কার শ্রীব্রজেশ্বর চক্রবর্তী


Share:

১২ মে ২০২০

মধ্যযুগ হতে পরম্পরা থেকে চলছে গৃহে গৃহে দেবী মঙ্গলচণ্ডীর ব্রত ও পূজা ।



ভারতবর্ষে বহু প্রাচীন কাল থেকে মাতৃদেবী বা আদিশক্তির পূজো হয়ে আসছে । অনার্য বা দ্রাবিড় জাতির মধ্যেও মাতৃকা দেবীর পূজা দেখা যায়। উপনিষদের যুগে কাত্যায়নী, কন্যাকুমারী দেবীর পূজো প্রচলিত ছিল। উমা- হৈমবতী দেবীর নামও পাওয়া যায় । মহাভারতে বিন্ধ্যবাসিনী ও মহিষাসুর মর্দিনীর নাম পাওয়া যায় । এই ভাবে আমরা চণ্ডিকা দেবীর উপাসনা বিধিও দেখি । অতি প্রাচীন কাল থেকেই বাংলায় সংসারের মঙ্গল কামনায় মহিলা গন বৈশাখ মাসে মঙ্গলচণ্ডীর পূজো করে থাকেন । পুরানের দেবী চণ্ডী অস্ত্রধারিনী, অসুর মর্দিনী । কিন্তু মঙ্গলচণ্ডী দেবীর যে পট ছবি আমরা দেখি তাতে তিনি দ্বিভুজা, হাতে পদ্ম পুস্প, পদ্মাসীনা । সমগ্র মাতৃত্বের রূপ দেবীর মধ্যে প্রস্ফুটিত । চণ্ডীদেবীর কথা বৃহধর্ম পুরানে পাওয়া যায় । ভবিষ্য পুরানে মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের উল্লেখ আছে। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান মতে ইনি কেবল স্ত্রীলোকের দ্বারা পূজিতা বলা হয়েছে । চণ্ডীমঙ্গল কাব্য অনুসারে চন্ডী দেবীর আবির্ভাবের প্রথম পর্বে দেখি কালকেতু ও ফুল্লরার কথা। কালকেতু জাতিতে শবর ব্যাধ, তার পত্নী ফুল্লরা এক শবরী । কালকেতু বনে শিকার করে মাংস হাটে বিক্রি করে সংসার চালাতো। একদা দেবী চণ্ডী তাঁদের গৃহে ছদ্দবেশে এসে পরীক্ষা নেন। কালকেতু ও ফুল্লরাকে শেষে দশভুজা রূপে দর্শন দিয়ে তাঁদের গুজরাট প্রদেশের অধিপতি করেন ।


অপর ঘটনা দেখি সেখানে ধনপতি বণিক ও খুল্লনার ঘটনা । চণ্ডিমঙ্গল কাব্যের ঘটনা অনুসারে ধনপতি সদাগর এর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল খুল্লনা। ধনপতি গর্বে উন্মত্ত হয়ে একদা চণ্ডী দেবীর ঘট ভেঙ্গে ফেলে। এরপর সদাগর বাণিজ্যে গিয়ে দেবীর এক অদ্ভুত রূপ দেখতে পায়। এই রূপ ‘কমলেকামিনী’ নামে মঙ্গল কাব্যে আখ্যায়িত হয়েছে । দেবী এক পদ্মের ওপর বসে একটি হাতি একবার শুঁড়ে ধরে গিলে ফেলছেন, আবার বমন করে বের করে দিচ্ছেন । এই ঘটনা দেখে বিস্মিত ধনপতি সিংহলের রাজাকে গিয়ে জানালেন। সিংহলের রাজা এই দৃশ্য দেখতে পায়নি দেবীর মায়ায়। রাজা তখন মিথ্যেবাদী সন্দেহে ধনপতিকে বন্দী করে রাখে। দেবীকে অবজ্ঞা করার শাস্তি সে পায় । অপরদিকে খুল্লনার পুত্র শ্রীমন্ত একদা সিংহল যাত্রা করে । কালক্রমে সেও সিংহল রাজের আদেশে বন্দী হয় । অবশেষে দেবীর কৃপায় তারা মুক্ত হয়ে স্বদেশে ফেরে। ততদিনে ধনপতি বনিক মায়ের একজন ভক্ত হয়ে ওঠে ।

বাঙ্গালী কবিগণ মধ্যযুগে চণ্ডিমঙ্গলের ওপর কাব্য রচনা করেন । মানিক দত্ত, মাধব আচার্য, মুকুন্দরাম এঁনারা চণ্ডিমঙ্গল কাব্যের উল্লেখযোগ্য কবি। এঁদের সেরা হলেন মুকুন্দরাম । তিনি ‘কবিকঙ্কন’ উপাধি পান । এমন বলা যায় পুরানের অসুরনাশিনী দেবী দুর্গাই মঙ্গলকাব্যের দেবী চণ্ডী। মধ্যযুগে মঙ্গলচণ্ডীর গান, পালা আড়ম্বরে পালিত হতো। সেই সময় গৃহে চণ্ডীপূজো হতো। সেই পরম্পরা থেকে চলছে গৃহে গৃহে দেবী মঙ্গলচণ্ডীর ব্রত ও পূজা। দেবী সকল প্রকার অশুভ, জড়তা, অমঙ্গল নাশ করেন । দেবীর কৃপায় মঙ্গল হয় । তাই তিনি মা মঙ্গলচণ্ডী ।


Share:

আসুন জেনে নেই প্রাত্যহিক জীবনের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু মন্ত্র ।

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগে এমন অনেক মন্ত্র রয়েছে হিন্দু শাস্ত্রে। সকল সনাতনী হিন্দুকেই এগুলো জানা এবং পালন করা উচিত। এখানে এমন কিছু মন্ত্রের সংকলন দেয়া হলো যা আপনার প্রাত্যহিক প্রয়োজন পড়ে। চলুন দেখে নেয়া যাক ঐ সকল মন্ত্রঃ

১. প্রতিদিন ঘুমাবার আগে বলুন :-
                                                             ওঁ শয়নে শ্রী পদ্মনাভায় নম:।

২. জন্ম সংবাদ শুনলে বলুন :- ( ৩ বার)
                                                                 আয়ুষ্মান ভব।

৩. মৃত্যু সংবাদ শুনলে বলুন :-
                               
                                                         "দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু"( পুরুষের ক্ষেত্রে)
                                                                 "দিব্যান্ লোকান্ সা গচ্ছতু"( নারীর ক্ষেত্রে)

৪. প্রতিদিন খাবার আগে বলুন :-
                                                                         ওঁ শ্রী জনার্দ্দনায় নম:।

৫. বিপদে বলুন :-
                                                                        ওঁ শ্রী মধুসূদনায় নম:।

৬. হিন্দু ধর্মীয় সকলকাজ শুরুর আগে বলুন :-
                                                                        ওঁ তৎ সৎ।

৭. গৃহ প্রবেশ মন্ত্র :-
                                                ওঁ শ্রী বাস্তুপুরুষায় নম:।

৮. মাতৃ প্রনাম মন্ত্র :-
                                   ভূমেগরীয়সী মাতা স্বাগাৎ উচ্চতর পিতা জননী জন্মভূমিশ্চ স্বগাদগি গরিয়সী।
                                         গর্ভ ধারণ্যং পোষ্যভাং পিতুমাতা বিশ্বস্তে।
                                        সর্বদেব সরুপায় স্তন্মৈমাএ নমঃ নমঃ।।

৯. পিতৃ প্রনাম মন্ত্র :-
                                     পিতাস্বর্গঃ পিতা ধর্মঃ পিতাহিপরমংতপঃ। ।
                                         পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রীয়ন্তে সর্বদেবতা নমঃ পিতৃ চরনেভ্য নমঃ।।

১০. শ্রীকৃষ্ণ প্রনাম মন্ত্র :-
                                  হে কৃষ্ণ করুণা সিন্ধু দীনবন্ধু জগৎপথে।
                                        গোপেশ গোপীকা কান্ত রাধা কান্ত নমহস্তুতে।।
                                 নম ব্রহ্মণ্য দেবায় গো ব্রহ্মণ্য হিতায় চ।
                                       জগদ্ধিতায় শ্রীকৃষ্ণায় গোবিন্দায় বাসুদেবায় নমো নমঃ।।

১১. শ্রীরাধারানী প্রণাম মন্ত্র :-
                                             তপ্ত কাঞ্চন গৌরাঙ্গীং রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
                                                     বৃষভানু সূতে দেবী তাং প্রণমামি হরি প্রিয়ে।।

১২. দেহ শুচীর মন্ত্র :-
                              ওঁ অপবিত্র পবিত্রোবাং সর্বাবস্থান গতহ্বপিবা।
                                    যৎ সরেত পুন্ডরিকাক্ষং স বাহ্য অভ্যান্তরে শুচি।।
                             পাপোহং পাপ কর্মাহং পাপাত্মা পাপ সম্ভাবান্।
                                    ত্রাহি মাং পুন্ডরীকাক্ষং সর্ব পাপো হরো হরি।।

১৩. গুরু প্রণাম মন্ত্র :-
                              অখন্ড মন্ডলা কারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম।
                                      তদপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।।
                             অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া।
                                      চক্ষুরুন্মিলিত যেন তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।।
                            গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বর।
                                     গুরু রেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।।

১৪. শ্রী পঞ্চতত্ত্ব প্রণাম মন্ত্র :-
                                      পঞ্চতত্ত্ব আত্মকং কৃষ্ণং ভক্তরূপ স্বরূপকম্।
                                        ভক্ত অবতারং ভক্তাখ্যাং নমামি ভক্ত শক্তিকম্।।

১৫. সূর্য প্রণাম মন্ত্র :-
                                  ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্।
                                            ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহষ্মি দিবাকরম্।।

১৬. গোবিন্দ প্রণাম মন্ত্র :-
                                           ঔঁ ব্রহ্মাণ্ড দেবায় গোব্রাহ্মণ হিতায় চঃ।
                                                    জগদ্ধিতায় শ্রীকৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমঃ।।

১৭. তুলসী প্রণাম মন্ত্র :-
                                   ঔঁ বৃন্দায়ৈ তুলসী দৈব্যে প্রিয়াঐ কেশবস্য চঃ।
                                         কৃষ্ণভক্তিপদে দেবী সত্যবত্যৈ নমঃ নমঃ।।

১৮. দুর্গা প্রণাম মন্ত্র :-
                                    সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সবার্থসাধিকে। 
                                          শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণী নমোহস্তুতে।।

১৯. শ্রীবিষ্ণু প্রণাম মন্ত্র :- ( অশ্বথ বৃক্ষমূলে জল দিয়ে)
                                                                      ওঁ অশ্বত্থ বৃক্ষরূপোহসি মহাদেবেতি বিশ্রুতঃ।
                                                                                 বিষ্ণুরপধরোহসি ত্বং পুণ্যবৃক্ষ নমোহস্ত্ত তে।।

২০. বিশ্বকর্মা প্রণাম মন্ত্র :-
                                             দেবশিল্পিন মহাভাগ দেবানাং কার্যসাধক।
                                                           বিশ্বকর্মন্নমস্তুভ্যং সর্বাভীষ্টফলপ্রদ।।

২১. গায়ত্রী প্রণাম মন্ত্র :-
                                                 ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ
                                            তৎ সবিতুর্বরেণ্যং
                                          ভর্গো দেবস্য ধীমহি
                                    ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ।

২২. তুলসী পত্র চয়ন মন্ত্র :-
                                               ওঁ তুলস্যমৃতজন্মাসি সদা ত্বং কেশবপ্রিয়া।
                                                    কেশবার্থে চিনোমি ত্বাং বরদা ভব শোভনে॥

২৩. তুলসী জলদান মন্ত্র :-
                                        গোবিন্দ বল্লভাং দেবী ভক্ত চৈতন্য কারিনী।
                                             স্নাপযামি জগদ্ধাত্রীং কৃষ্ণভক্তি প্রদায়িনী।।

২৪.  তুলসীদেবীর কাছে ক্ষমা প্রর্থনা মন্ত্র :-
                                                               চয়নোদ্ভবদুঃখং চ যদ্ হৃদি তব বর্ততে।
                                                                     তত্ ক্ষমস্ব জগন্মাতঃ বৃন্দাদেবী নমোহস্ততে॥

২৫.  আচমন মন্ত্র :-
                                        ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু ওঁ বিষ্ণু।
                                  ওঁ তদ্বিষ্ণু পরমং পদং সদাপশ্যান্তি সুরয়।
                                       দিবিব চহ্মুরাততম।

২৬. গঙ্গা প্রনাম মন্ত্র :-
                                              ওঁ সদ্যঃপাতকসংহন্ত্রী সদ্যোদুঃখবিনাশিনী।
                                             সুখদা মোক্ষদা গঙ্গা গঙ্গৈব পরমা গতিঃ।।


২৭.  গীতা পাঠে ভুলের ক্ষমা প্রর্থনা মন্ত্র :-
                                                               নমো যদক্ষরং মাত্রাহীনঞ্চ যদ্‌ ভবেৎ ।
                                                            পূর্ণং ভবতু ত্বং সর্বং ত্বং প্রসাদাৎ জনার্দ্দন ।।


২৮. সরস্বতী দেবীর প্রনাম মন্ত্র :-
                                                           নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।
                                                          বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহি নমোহস্তুতে।


২৯.  একাদশী পারনা মন্ত্র :-
                                            একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব।
                                               প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব।।

৩০. দেহ শুদ্ধি মন্ত্র :-
                                   পাপোহং পাপ কর্মাহং পাপাত্মা পাপ সম্ভাবান্ ।
                                        ত্রাহি মাং পুন্ডরীকাক্ষং সর্ব পাপো হরো হরি ৷৷

৩১. শ্রীকৃষ্ণের চরনামৃত পান করার মন্ত্র :-
                                                               ওঁ অকাল-মৃত্যু-হরণং সর্ব্ব ব্যাধি-বিনাশনং ।
                                                                  কৃষ্ণ পাদোদকং পীত্বা শিরসা ধারয়াম্যহং ।।

৩২. শিবের প্রনাম মন্ত্র :-
                                              ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয় হে তবে।
                                                    নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতি পরমেশ্বর।

৩৩. প্রসাদ সেবন মন্ত্র :-
                                       মহাপ্রসাদে গোবিন্দে নাম-ব্রহ্মেণি বৈষ্ণবে।
                                            স্বল্প-পুণ্য বতাং রাজন্ বিশ্বাস নৈব জায়তে॥
                                 শরীর অবিদ্যা-জাল, জড়েন্দ্রিয় তাহে কাল,জীবে ফেলে বিষয়-সাগরে।
                                তা'র মধ্য জিহ্বা অতি, লোভময় সুদুর্মতি, তা'কে জেতা কঠিন সংসারে॥
                                কৃষ্ণ বড় দয়াময়, করিবারে জিহ্বা জয়, স্বপ্রসাদ-অন্ন দিলা ভাই।
                                সেই অন্নামৃত খাও, রাধাকৃষ্ণ গুণ গাও,প্রেমে ডাক চৈতন্য-নিতাই ৷৷

৩৪. পুষ্প শুদ্ধিকরন মন্ত্র :-
                                     ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্পসম্ভবে পুষ্পচয়াবকীর্নে চ হুং ফট স্বাহা।।


৩৫. নৃসিংহ প্রনাম মন্ত্র :-
                                            জয় নৃসিংহ শ্রীনৃসিংহ
                                           জয় জয় জয় শ্রীনৃসিংহ
                                           উগ্রং বিরং মহাবিষ্ণুং
                                           জলন্তং সর্বতোমুখং
                                           নৃসিংহং বিষনং ভদ্রং
                                           মৃত্যুর মৃত্যো নমাম্যহং
                                           শ্রী নৃসিংহ জয় নৃসিংহ
                                           জয় জয় নৃসিংহ
                                           প্রহ্লাদেশ জয় পদ্ম
                                           মুখো পদ্ম বৃংঙ্গম।।




Share:

বাংলা সাহিত্যের চণ্ডীমঙ্গল কাব্য ও বাংলায় গৃহে গৃহে আরাধিতা মঙ্গলচণ্ডী নিয়ে কিছু কথা।



চণ্ডীমঙ্গল কাব্য বাংলা সাহিত্যের মঙ্গলকাব্যের মধ্যে একটি স্থান অধিকার করে আছে । এই কাব্য “ভবানীমঙ্গল” নামেও উল্লেখিত। এথেকে বোঝা যায় বাংলায় একসময় চণ্ডী আরাধনার ব্যপক প্রচলন ছিলো, বর্তমানে তিনিই মঙ্গলচণ্ডী নামে গৃহে গৃহে আরাধিতা । যতগুলি লেখকের লিখিত ‘চণ্ডীমঙ্গল’ কাব্য পাওয়া যায়- সবটিতেই দুটি কাহানীর উল্লেখ পাওয়া যায়- ১) আক্ষেটি খণ্ড ( কালকেতু ও ফুল্লরার উপাখ্যান ), ২) বণিক খণ্ড ( ধনপতি বণিকের উপাখ্যান, কমলেকামিনী মূর্তি দর্শন ) । এছাড়া গ্রন্থের পূর্বে “দেবখণ্ড” নামক একটি অধ্যায় দেখা যায় যেখানে শিব পার্বতীর কাহানী ও দেবতাদের বন্দনা । চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আদি রচয়িতা মানিক দত্ত । গবেষক দের মতে মাণিক দত্ত মালদহ এর কবি। কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম তাঁর রচিত চণ্ডীমঙ্গলে বারংবার শ্রদ্ধার সহিত মাণিক দত্তের নাম উল্লেখ করেছেন । চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্য কবি দ্বিজমাধব বা মাধব আচার্য । গবেষক দের মতে ১৫৭৯ শকাব্দে ইনি গ্রন্থ রচনা সমাপ্ত করেন , তিনি প্রথমে নবদ্বীপের বাসিন্দা ছিলেন, পড়ে চট্টগ্রামে চলে যান।


“চণ্ডীমঙ্গল” কাব্যের সবচেয়ে উল্লেখ্য কবি হলেন কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী । বর্ধমানের দামিন্যা গ্রামে এঁনার জন্ম । পড়ে ইনি পরিবার এর সাথে জন্মভূমি ছেড়ে মেদিনীপুরের ব্রাহ্মণভূমির জমিদার বাঁকুড়া রায়ের আশ্রয়ে আসেন । এইসময় একদা দেবী চণ্ডী স্বপ্নে মুকুন্দরামকে দর্শন দিয়ে তাঁর মহিমা বিষয়ক গ্রন্থ লেখতে আদেশ করেন । মুকুন্দরাম একসময় জমিদার বাঁকুড়া রায়ের সন্তানের গৃহশিক্ষক ছিলেন । পরবর্তীতে মুকুন্দরামের সেই ছাত্র জমিদার হয়ে মুকুন্দরামকে চণ্ডীকাব্য লিখতে অনুরোধ জানান। স্বপ্নাদেশ ও জমিদারের ইচ্ছা মেনে মুকুন্দরাম “চণ্ডীমঙ্গল” কাব্য রচনা করতে বসলেন । আনুমানিক ১৫৮৪ সনে তাঁর গ্রন্থ লেখা সমাপ্ত হয় । এই কাব্য “চণ্ডীমঙ্গল” কাব্যের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় । কালকেতু ও ফুল্লরার উপাখ্যান চণ্ডীমঙ্গলের সবথেকে জনপ্রিয় উপাখ্যান । দেবাদিদেব মহাদেবের অভিশাপে ইন্দ্রপুত্র নীলাম্বর শাপিত হয়ে মর্তে ব্যাধ হয়ে জন্ম নেন, তাঁর নাম কালকেতু , অপরদিকে নীলাম্বরের স্ত্রী ছায়া স্বামীকে অনুসরণ করে মর্তে ব্যাধিনী হয়ে জন্মান- এঁর নাম ফুল্লরা। দরিদ্র পরিবারের ব্যাধ আর ব্যাধিনী দম্পতি কে দিয়েই দেবী চণ্ডী তাঁর লীলা আরম্ভ করেন । ব্যাধ কালকেতু দেবীর কৃপায় গুজরাট নগরীর রাজা হন । আজোও দেবী মঙ্গলচণ্ডীর পূজায় পাঁচালীতে দেবীর এই লীলামাহাত্ম্য পাঠ হয় ।
Share:

০১ মে ২০২০

মুসলিম শাসকেরা কেন ভারতবর্ষকে একটি ইসলামী দেশে পরিবর্তিত করতে পারেনি ?

"প্রথমে আমাদের মাথা থেকে এই ধারণাটা দূর করতে হবে যে ভারত এক হাজার বছরের বেশি সময় ধরে ইসলামী শাসনের অধীন ছিল। অধিকাংশ এলাকা ছিল না। ইসলামী শাসকেরা যে ধরণের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল, প্রচলিত ইতিহাসে তাকে শুধুমাত্র উপেক্ষা করা হয়।

নিচে দেওয়া হল উমাইয়াদ খলিফাতন্ত্রের চিত্র, যা একটি অপ্রতিরোধ্য শক্তি ছিল এবং যা আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া এমনকী ইউরোপেও বিস্তৃতি লাভ করেছিল। লক্ষ্য করুন ডান দিকে তাদের মানচিত্র সিন্ধু নদের তীরে শেষ হচ্ছে। তার কারণ হচ্ছে, উমাইয়াদ খলিফা তন্ত্রের ভারত অভিযানগুলো ভারতীয় রাজাদের প্রচেষ্টায় এবং বীরত্বে চূড়ান্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। একমাত্র যে স্থানে খলিফাতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পেরেছিল, তা হল সিন্ধ। এই সিন্ধ এলাকা মুসলিম এলাকায় রুপান্তরিত হয় এবং ১৯৪৭ এর ভারতবিভাগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।


উমাইয়াদ খলিফাতন্ত্র

উমাইয়াদ খলিফাতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই ধরণের প্রতিরোধ না থাকলে ভারতের আরও বড় অংশের ইসলামীকরণ হত।

(সিন্ধ ছাড়া) প্রথম ধাপের ইসলামী আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারত জয়লাভ করে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতে ইসলামী আক্রমণ শুরু হয় ৩০০ বছর পরে গজনবী বংশের হাত ধরে। এরা সিন্ধু নদ অতিক্রম করতে সক্ষম হয় এবং পঞ্জাব এর একটা অংশ এবং কাশ্মীর দখল করে।

গজনবীর সাম্রাজ্য

যদিও এই সাম্রাজ্যের স্থায়ীত্বকাল বেশিদিন নয়। এবং কয়েকটা হিন্দু নগরের উপর আক্রমণ এবং লুটতরাজ ছাড়া ভারতের উপর আর কোনো নিয়ন্ত্রণ এদের ছিল না।

তৃতীয় পর্যায়ের আক্রমণ শুরু হয় দুই শতাব্দী পরে মোহম্মদ ঘোরী-র মাধ্যমে। এই আক্রমণের মাত্রা পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। উত্তর ভারতের একটা বড় অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর দিল্লীর সুলতানতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দক্ষিণ ভারতের মাদুরাই পর্যন্ত পৌঁছেছিল- মাদুরাই সুলতানতন্ত্র। যদিও দক্ষিণে ইসলামী শাসন খুবই ক্ষণস্থায়ী ছিল কারণ অত্যন্ত শক্তিশালী বিজয়নগর সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে এবং তারা শক্তিশালী ভাবে এর প্রতিরোধ করে।
দক্ষিণে শক্তিশালী বিজয়নগর সাম্রাজ্য

এই খানদের মধ্যে অনেকেই ধর্মবিস্তারে অনুৎসাহী ছিলেন। এমনকী তাদের মধ্যে কয়েকজন, যেমন- খুসরো খান হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন ।

এই সময়কালে হত্যা এবং ধর্মান্তরিতকরণ হয়ে চলছিল। কিন্তু সুলতানশাহীগুলির নিজেদের মধ্যে সামরিক বিবাদের কারণে ধর্মান্তরিতকরণের কাজ খুব একটা সফল হয়নি।

চতুর্থ পর্যায়ের ইসলামী আক্রমণ আসে মুঘলদের মাধ্যমে। যখন এই ঘটনা ঘটে, তখন দিল্লীর সুলতানী মোটেও সারা ভারতে বিস্তৃত ছিল না, তা আজকের দিল্লী, হরিয়াণা, উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের ক্ষুদ্র এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

বাবর দুর্বল লোদী বংশকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং তাদের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হন, কিন্তু তিনি এই সাম্রাজ্যের তেমন বিস্তার ঘটাননি।


বাবর দিল্লী আক্রমণের সময় দিল্লী সুলতানাত (মুসলিম শাসক নিয়ন্ত্রিত এলাকা)

এই পর্যায়ে প্রতিরোধের আরেকটি ধাপ গড়ে ওঠে হেমচন্দ্র বিক্রমাদিত্যের হাত ধরে। তিনি অনেক এলাকা মুঘলদের হাত থেকে উদ্ধার করেন।

কিন্তু দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে একটি উড়ে আসা তীর তাঁর দিকে ধেয়ে আসে। এতে আকবর জয়যুক্ত হন। তাঁর পূর্বজদের পথে না চলে তিনি ধর্ম সম্পর্কে নমনীয় নীতি গ্রহণ করেন [এমনকী তিনি ইসলাম ছেড়ে বেড়িয়ে গিয়ে দীন-ই-ইলাহী প্রতিষ্ঠাও করেন]। ধর্ম সম্পর্কে নমনীয় নীতি নেওয়ার ফলে তিনি ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত তিনি পোক্ত করতে সমর্থ হন। এবং তাঁর বিরুদ্ধে তেমন প্রতিরোধ ও গড়ে ওঠেনি।

এই সু-অবস্থার অবসান ঘটান তাঁর প্রপৌত্র ঔরঙ্গজেব। এই সময় মারাঠা সাম্রাজ্য, শিবাজীর নেতৃত্বে প্রতিরোধের শিখরে উঠে আসে। এবং ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর কয়েক দশকের মধ্যে ভারতবর্ষের অধিকাংশ এলাকা তাঁদের করায়ত্ত হয়।
পারসিয়ান সাম্রাজ্য- সিন্ধু নদের তীরে সমাপ্ত
আলেক্সান্ডার এর সাম্রাজ্য

ত্রয়োদশ শতকে ঘোরীর প্রথম বিজয়ের পর থেকে সর্বভারতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে মারাঠাদের উত্থান মাত্র পাঁচশো বছরের ব্যবধান। অর্থাৎ ভারতের অধিকাংশ এলাকায় ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল মাত্র ৫০০ বছর। এই পাঁচশো বছরের সময়কালেও ভারতবর্ষের একটা বড় এলাকা ইসলামী শাসনের বাইরেই ছিল। এবং সব সময়েই একের পর শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল যা ইসলামী শাসকদের ধর্ম সম্পর্কে নমনীয় পথ নিয়ে সমর্থন জোগাড় করতে বাধ্য করেছিল বা তাদের শাসনের উৎপাটন ঘটিয়েছিল।

সংক্ষেপে বললে- এরকম নয় যে ভারতীয়রা আত্মসমর্পণ করেছিল। সবসময়ই একটা শক্তিশালী প্রতিরোধের অস্তিত্ব ছিল এবং সেজন্যই ভারতের দশা পারস্য বা মিশরের মতো হয়নি।

ইসলামী আক্রমণের ফলে যে ধর্মগুলো সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছিল সেগুলি হল শ্রমণিক ধর্মগুলি- বৌদ্ধ ধর্ম এবং জৈন ধর্ম। বৌদ্ধ ধর্মের বিশেষ ভাবে একটা শক্তিশালী সংগঠনের প্রয়োজন ছিল এবং শাসকের সমর্থনের প্রয়োজন ছিল। এই ধর্ম ছিল কেন্দ্রীভূত ধর্ম এবং এর ক্ষতিসাধন করা সহজ ছিল।

হিন্দুধর্ম প্রচন্ডভাবে বিকেন্দ্রীভূত ধর্ম। এবং বহিঃআক্রমণের সময়গুলিতে তা ভারতের গ্রামগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এবং সময়ের অপেক্ষা করছিল।

বিগত কয়েক শতকে হিন্দুধর্ম শুধুমাত্র বেঁচেই থাকেনি, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। এই ধর্ম মণিপুরের মতো উত্তর-পূর্ব ভারতীয় ভূ-খন্ডে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়েছে। গত কয়েক শতক ধরে হিন্দু ধর্ম স্থানীয় এবং গ্রাম্য লোকাচারকে নিজেতে আত্তীকৃত করেছে — যা বহুসংখ্যক মানুষের কাছে এই ধর্মকে পৌঁছে দিয়েছে এবং তাতে কালাজাদুর মতো কিছু বিষয়ও পিছনে পড়ে থাকেনি।

অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় ভারত যে আলাদা এবং তা অত্যন্ত সফল ভাবে ব্রোঞ্জ যুগে উদ্ভুত নিজের ধর্মীয় আচার আচরণগুলিকে পালন করে, তার সুস্পষ্ট কারণ আছে, এবং সমস্ত শক্তিশালী সাম্রাজ্যের সীমানা ভারতের সীমানাতেই শেষ হয়, তারও একটা সুস্পষ্ট কারণ আছে, সেটা হল - সিন্ধু নদের পূর্ব তীরে এক দুর্ধর্ষ জাতি বাস করে যারা সবসময় রুখে দাঁড়াবে এবং কখনো আত্মসমর্পণ করবে না।"



(অনুবাদ করেছেন- ঋতব্রত ঘোষ,
এই উত্তরটি প্রথমে ইংরেজিতে Quora-এ Balaji Viswanathan দিয়েছেন।)

Post Courtesy by: Subrata Saha
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।