১৬ মে ২০১৬

বৃন্দাবনের এই মন্দিরে আজও শোনা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মোহন-বাঁশির সুর

বৃন্দাবনের পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নিধিবন মন্দির। এই মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। যা আজও পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষিত করে। নিধিবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য-ঘেরা সব গল্পের আদৌ কোনও সত্যভিত্তি আছে কিনা, তা জানা না গেলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই লীলাভূমিতে এসে আপনি মুগ্ধ হবেনই। চোখ টানবে মন্দিরের ভেতর অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের মুর্তি।

 

জঙ্গলে ঘেরা এই মন্দিরে বাঁকে বিহারীর পবিত্র বিগ্রহ রয়েছে। নিধি অর্থে সম্পদ এবং চারপাশ জঙ্গলে ঘেরা বলে বন। সেখান থেকেই এই মন্দিরের নাম নিধিবন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এই জঙ্গলের সব গাছের শাখাই নিম্নমুখী। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে শ্রদ্ধা জানিয়ে গাছের শাখা-প্রশাখা নিচের দিকে মুখ করে রয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও এই মন্দির ও তার আশেপাশের এলাকা অত্যন্ত রুক্ষ, এই সব গাছগুলো সারা বছরে সবুজে ভরে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা ও মন্দিরের কর্মচারিদের বিশ্বাস এই সব গাছ আসলে বাঁকে বিহারীর লীলাখেলার সঙ্গী গোপীনির দল।

রাত নামলেই নাকি বদলে যায় মন্দির এলাকা? তাই বিকেলের পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় মন্দিরের দরজা। স্বয়ং বাঁকে বিহারী নাকি আজও এখানে রাইকিশোরী ও অন্য গোপীনিদের সঙ্গে লীলাখেলা করেন। মন্দিরের চারপাশ ঘিরে রাখা এই গাছগুলোই গোপীনিতে পরিবর্তিত হয়ে রাসলীলায় অংশ নেন। মন্দির চত্বরে ঘুরতে ঘুরতেই একটি ছোট কুয়ো নজরে পড়বে আপনার। মনে করা হয়, রাসলীলার সময় একদিন রাধা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লে, তাঁর তৃষ্ণা মেটাতে খোদ শ্রীকৃষ্ণ এই কুয়োটি তাঁর বাঁশি দিয়ে খনন করেন।



 


সন্ধ্যারতির পরই এই মন্দিরের সমস্ত দরজা-জানালা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরে বের করে দেওয়া হয় সমস্ত পর্যটক ও পূণ্যার্থীদের। সকাল পর্যন্ত এখানে যে কোনও কারোর প্রবেশ নিষেধ। এই মহারাসলীলা কাউকে চাক্ষুস করতে দেওয়া হয় না। কয়েকজন অতি-উত্‍সাহী কখনও সখনও লুকিয়ে সন্ধের পর মন্দিরে থেকে গিয়েছিলেন। সকালবেলা তাঁদের হয় মৃত, নয়তো পাগল অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি সন্ধের পর বন্ধ মন্দির থেকে ভেসে আসা ঘুঙুরের শব্দ অনেকেই শুনেছেন। রাধা-কৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করতে সন্ধ্যারতির পর পুরোহিতরা এখানে শাড়ি, মিষ্টি, চুড়ি, পান এই সব রেখে যান। সকালে সেই সবকিছু ছড়ানো-ছিটোনো অবস্থায় পাওয়া যায়। মিষ্টি, পান কেউ খেয়েছে বলেও বোঝা যায়।

এই মন্দিরে সত্যিই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বাল করেন বলেই বিশ্বাস করেন স্থানীয়রা। বৃন্দাবনের মানুষের ভক্তি ও প্রেম কৃষ্ণভগবানকে এই মন্দিরে ফিরিয়ে আনে বলে মনে করেন তাঁরা। অনেক ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক এই মন্দিরের রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেছেন। তবে কিছু একটা অস্বাভাবিক এখানে রয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন তাঁরাও ।

Source:  www.eisamay.com
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (3) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (82) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।