• মহাভারতের শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান

    মহাভারতে যে সময়ের এবং শহরগুলোর কথা বলা হয়েছে সেই শহরগুলোর বর্তমান অবস্থা কি, এবং ঠিক কোথায় এই শহরগুলো অবস্থিত সেটাই আমাদের আলোচনার বিষয়। আর এই আলোচনার তাগিদে আমরা যেমন অতীতের অনেক ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসবো, তেমনি বর্তমানের পরিস্থিতির আলোকে শহরগুলোর অবস্থা বিচার করবো। আশা করি পাঠকেরা জেনে সুখী হবেন যে, মহাভারতের শহরগুলো কোনো কল্পিত শহর ছিল না। প্রাচীনকালের সাক্ষ্য নিয়ে সেই শহরগুলো আজও টিকে আছে এবং নতুন ইতিহাস ও আঙ্গিকে এগিয়ে গেছে অনেকদূর।

  • মহাভারতেের উল্লেখিত প্রাচীন শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান ও নিদর্শনসমুহ - পর্ব ০২ ( তক্ষশীলা )

    তক্ষশীলা প্রাচীন ভারতের একটি শিক্ষা-নগরী । পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি জেলায় অবস্থিত শহর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। তক্ষশীলার অবস্থান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল এবং পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার (২০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে; যা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে খুব কাছে। তক্ষশীলা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৪৯ মিটার (১,৮০১ ফিট) উচ্চতায় অবস্থিত। ভারতবিভাগ পরবর্তী পাকিস্তান সৃষ্টির আগ পর্যন্ত এটি ভারতবর্ষের অর্ন্তগত ছিল।

  • প্রাচীন মন্দির ও শহর পরিচিতি (পর্ব-০৩)ঃ কৈলাশনাথ মন্দির ও ইলোরা গুহা

    ১৬ নাম্বার গুহা, যা কৈলাশ অথবা কৈলাশনাথ নামেও পরিচিত, যা অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে ইলোরা’র কেন্দ্র। এর ডিজাইনের জন্য একে কৈলাশ পর্বত নামে ডাকা হয়। যা শিবের বাসস্থান, দেখতে অনেকটা বহুতল মন্দিরের মত কিন্তু এটি একটিমাত্র পাথরকে কেটে তৈরী করা হয়েছে। যার আয়তন এথেন্সের পার্থেনন এর দ্বিগুণ। প্রধানত এই মন্দিরটি সাদা আস্তর দেয়া যাতে এর সাদৃশ্য কৈলাশ পর্বতের সাথে বজায় থাকে। এর আশাপ্সহ এলাকায় তিনটি স্থাপনা দেখা যায়। সকল শিব মন্দিরের ঐতিহ্য অনুসারে প্রধান মন্দিরের সম্মুখভাগে পবিত্র ষাঁড় “নন্দী” –র ছবি আছে।

  • কোণারক

    ১৯ বছর পর আজ সেই দিন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সোমবার দেবতার মূর্তির ‘আত্মা পরিবর্তন’ করা হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে। ‘নব-কলেবর’ নামের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবতার পুরোনো মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তি বসানো হবে। পুরোনো মূর্তির ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে সঞ্চারিত হবে, পূজারীদের বিশ্বাস। এ জন্য ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, সুভদ্রা আর বলভদ্রের নতুন কাঠের মূর্তি তৈরী হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরে ‘গর্ভগৃহ’ বা মূল কেন্দ্রস্থলে এই অতি গোপনীয় প্রথার সময়ে পুরোহিতদের চোখ আর হাত বাঁধা থাকে, যাতে পুরোনো মূর্তি থেকে ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে গিয়ে ঢুকছে এটা তাঁরা দেখতে না পান। পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা পরিচালনা করেন পুরোহিতদের যে বংশ, নতুন বিগ্রহ তৈরী তাদেরই দায়িত্ব থাকে।

  • বৃন্দাবনের এই মন্দিরে আজও শোনা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মোহন-বাঁশির সুর

    বৃন্দাবনের পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নিধিবন মন্দির। এই মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। যা আজও পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষিত করে। নিধিবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য-ঘেরা সব গল্পের আদৌ কোনও সত্যভিত্তি আছে কিনা, তা জানা না গেলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই লীলাভূমিতে এসে আপনি মুগ্ধ হবেনই। চোখ টানবে মন্দিরের ভেতর অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের মুর্তি।

১০ জানুয়ারী ২০২৩

হিন্দুরা কি সত্যিই বিজ্ঞানমনস্ক?

 আমরা কি সত্যই বিজ্ঞানমনস্ক?

পৃথিবীতে ধর্ম একটাই আর সেটি হল সনাতনী হিন্দু ধর্ম, বাকিগুলো মনুষ্য প্রচারিত বিশেষ উপাসনা পদ্ধতি বা ধর্মমত। আমরা অনেকসময়ই এই ধর্ম আর ধর্মমত শব্দদুটি নিয়ে বিভ্রান্ত হই। আমরা লক্ষ্য করলে দেখব, বিশেষ মনুষ্য প্রচারিত 'ধর্মমত'-এর ক্ষেত্রে ঐ বিশেষ মানুষকে 'পূজা' করা হয় বা বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্মে কিন্তু তা হয় না। যদি আপনি 'গুরুদেব'-এর বিষয়ে এমন বলেন তে আমি বলব যে, শাস্ত্রে কিন্তু গুরুদেবকে 'শিব' জ্ঞানে ধারণা করতে ও মেনে চলতে বলা হয়েছে। সারা পৃথিবীতে মানুষ যখন সভ্য হতে শিখল, গুহা ছেড়ে বাড়ীঘর বানিয়ে বাস করতে শুরু করল বা গাছের ছাল-পাতা দিয়ে লজ্জা নিবারণ না করে কাপড় পরতে শিখল, তার বহু আগেই সনাতনী মানুষ বর্ণলিপি তৈরী করল ও ধর্মগ্রন্থ 'বেদ' রচনা করল। তাই, সনাতনী হিন্দুধর্মের অনুসরণ সকল ধর্মমতই করে থাকে। আসুন, সনাতনী হিন্দুধর্মের বিজ্ঞানসম্মত কিছু আবিস্কার সম্পর্কে জেনে নিই।

=> হিন্দু ধর্ম যখন বলে সৃষ্টি শুরু হয়েছিল জলে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি না অথচ জড় বিজ্ঞান যখন বলে, কিন্তু পৃথিবীর বুকে প্রথম প্রাণসৃষ্টি হয়েছিল জলে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি।

-

=> হিন্দু ধর্ম যখন মৎস > কূর্ম > বরাহ > নৃসিংহেরকথা বলে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি না অথচ জড় বিজ্ঞান যখন বলে, পৃথিবীতে প্রাণী জগতের বিবর্তন হয়েছে জলজ প্রাণী > উভচর > স্থলজ >চতুষ্পদ তৃণভোজী > মাংশাসী > দ্বিপদী প্রাণীতে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি।



=> হিন্দু ধর্ম যখন দেখায়, শিবের কপালে তৃতীয় নয়ন আছে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি না অথচ জড় বিজ্ঞান যখন দেখায়, মানুষের মস্তিষ্কে দুটি চোখের মাঝখান বরাবর পিছন দিকে পিনিয়াল নামক এক গ্রন্থি আছে যা আমাদের ইনটিউশনের সহায়ক -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি।

-

=> হিন্দু ধর্ম যখন গণেশের কাটা মাথা জোড়া দেওয়ার কাহিনী বলে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি না অথচ জড় বিজ্ঞান যখন অর্গ্যান ট্রান্সপ্ল্যান্ট, সার্জারির কথা বলে -- তখন তা আপনি বিশ্বাস করেন। 


=> হিন্দু ধর্ম যখন আপনাকে ব্রহ্মাস্ত্র, পাশুপাতাস্ত্রের মত ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের কথা বলে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি না কিন্তু বিজ্ঞান যখন অ্যাটমিক ওয়েপন, নিউক্লিয়ার ওয়েপন নামক ভয়ঙ্কর অস্ত্রের কথা বলে -- তখন তা আমরা বিশ্বাস করি। 

-

হায়রে আমাদের সমাজ, মানুষ সেই কুসংস্কারাচ্ছন্ন আদিম যুগেই পড়ে রয়েছে, এদের জীবনে এখনও সনাতন নামক বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগেনি -- হয় এরা প্রত্যেকই ভাবের ঘরে চুরি করে 'প্রগতিশীল' সাজে অথবা সত্যিই অজ্ঞান। 

তাই 'প্রগতিশীল' সেকু, ফেকু, মাকু ও কাটা নেড়েদের বলছি -- পাঁচ হাজার বছরের ভারতীয় সভ্যতার আস্তে আস্তে সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে ভারতের শিক্ষার যে বিরাট ব্যাপ্তি, যার ৯৯%  আজকের প্রজন্ম যে জানে না তার জন্য আপনারা কি করেছেন?

জেনে নিন --

১. জ্যোতির্বিদ্যার জনক -- আর্যভট্ট; অবদান-  আর্যভট্টিয়াম

২. জ্যোতিষের জনক -- বরাহমিহির, অবদান- পঞ্চসিদ্ধান্তিকা, বৃহৎসংহিতা 

৩. অস্ত্রোপচারের জনক --  সুশ্রুত, অবদান:  সুশ্রুতসংহিতা

৪. যোগের জনক -- পতঞ্জলি, অবদান: যোগসুত্র

৫. অর্থনীতির জনক -- চাণক্য, অবদান: অর্থশাস্ত্র

৬. কূটনীতির /রাজনীতির জনক -- চাণক্য, অবদান: চানক্যনীতি 

৭. পরমাণু তত্ত্বের জনক -- ঋষি কনাদ্ , অবদান- পদার্থবিদ্যা 

৮. চিকিৎসাশাস্ত্রের  জনক -- ধন্বান্তরি, প্রথম আয়ুর্বেদ চিকিৎসা ব্যাখ্যা করেন 

৯.ব্যাকরণের পিতা -- পানিনি, কাজ: অষ্টাধয়ী, পানিনি ব্যাকরণ

১০.কাব্যর জনক (সাহিত্য) -- কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন (বেদব্যাস) অবদান:- মহাভারত, 

১১. নাট্য (Play writing) রচনার জনক -- কালিদাস, অবদান:- মেঘধূতম, রঘুবংশম, কুমার সম্ভব প্রভৃতি।

১২. গণিতের পিতা -- দ্বিতীয় ভাস্কর, অবদান:- লীলাবতী।

১৩. নীতি গল্প লেখার জনক -- বিষ্ণু শর্মা, রচনা:- পঞ্চতন্ত্র

১৪. কামশাস্ত্র শিক্ষার  জনক -- বাৎসায়ণ, অবদান:- কামসূত্র।

১৫. আলকেমির জনক -- নাগার্জুন, রচনা: প্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র।

উপরের তালিকাটা কেবলমাত্র একটা হিমশৈলের  চূড়া। আসুন আমাদের পূর্বপুরুষেরা যা করেছে তা বিশ্বকে ভাগ করে নেওয়ার এবং শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে গর্ব বোধ করি। তবুও আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের বিনীত "নমস্তে" নিয়ে বিশ্বের কাছে মাথা নত করেছিলেন। গর্ব করে বলুন -- 'আমি হিন্দু'। মনে রাখবেন, 'ধর্মনিরপেক্ষ' আর 'সর্বধর্মসমন্বয়' বলে কিছু হয় না। অহেতুক অসাধু রাজনৈতিক নেতানেত্রী, বুদ্ধিজীবীদের ছলনায় ভুলবেন না।

লেখকঃ শ্রী পৃথ্বীষ ঘোষ

Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।