• মহাভারতের শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান

    মহাভারতে যে সময়ের এবং শহরগুলোর কথা বলা হয়েছে সেই শহরগুলোর বর্তমান অবস্থা কি, এবং ঠিক কোথায় এই শহরগুলো অবস্থিত সেটাই আমাদের আলোচনার বিষয়। আর এই আলোচনার তাগিদে আমরা যেমন অতীতের অনেক ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসবো, তেমনি বর্তমানের পরিস্থিতির আলোকে শহরগুলোর অবস্থা বিচার করবো। আশা করি পাঠকেরা জেনে সুখী হবেন যে, মহাভারতের শহরগুলো কোনো কল্পিত শহর ছিল না। প্রাচীনকালের সাক্ষ্য নিয়ে সেই শহরগুলো আজও টিকে আছে এবং নতুন ইতিহাস ও আঙ্গিকে এগিয়ে গেছে অনেকদূর।

  • মহাভারতেের উল্লেখিত প্রাচীন শহরগুলোর বর্তমান অবস্থান ও নিদর্শনসমুহ - পর্ব ০২ ( তক্ষশীলা )

    তক্ষশীলা প্রাচীন ভারতের একটি শিক্ষা-নগরী । পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি জেলায় অবস্থিত শহর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। তক্ষশীলার অবস্থান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল এবং পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার (২০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে; যা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে খুব কাছে। তক্ষশীলা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৪৯ মিটার (১,৮০১ ফিট) উচ্চতায় অবস্থিত। ভারতবিভাগ পরবর্তী পাকিস্তান সৃষ্টির আগ পর্যন্ত এটি ভারতবর্ষের অর্ন্তগত ছিল।

  • প্রাচীন মন্দির ও শহর পরিচিতি (পর্ব-০৩)ঃ কৈলাশনাথ মন্দির ও ইলোরা গুহা

    ১৬ নাম্বার গুহা, যা কৈলাশ অথবা কৈলাশনাথ নামেও পরিচিত, যা অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে ইলোরা’র কেন্দ্র। এর ডিজাইনের জন্য একে কৈলাশ পর্বত নামে ডাকা হয়। যা শিবের বাসস্থান, দেখতে অনেকটা বহুতল মন্দিরের মত কিন্তু এটি একটিমাত্র পাথরকে কেটে তৈরী করা হয়েছে। যার আয়তন এথেন্সের পার্থেনন এর দ্বিগুণ। প্রধানত এই মন্দিরটি সাদা আস্তর দেয়া যাতে এর সাদৃশ্য কৈলাশ পর্বতের সাথে বজায় থাকে। এর আশাপ্সহ এলাকায় তিনটি স্থাপনা দেখা যায়। সকল শিব মন্দিরের ঐতিহ্য অনুসারে প্রধান মন্দিরের সম্মুখভাগে পবিত্র ষাঁড় “নন্দী” –র ছবি আছে।

  • কোণারক

    ১৯ বছর পর আজ সেই দিন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সোমবার দেবতার মূর্তির ‘আত্মা পরিবর্তন’ করা হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে। ‘নব-কলেবর’ নামের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবতার পুরোনো মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তি বসানো হবে। পুরোনো মূর্তির ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে সঞ্চারিত হবে, পূজারীদের বিশ্বাস। এ জন্য ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, সুভদ্রা আর বলভদ্রের নতুন কাঠের মূর্তি তৈরী হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরে ‘গর্ভগৃহ’ বা মূল কেন্দ্রস্থলে এই অতি গোপনীয় প্রথার সময়ে পুরোহিতদের চোখ আর হাত বাঁধা থাকে, যাতে পুরোনো মূর্তি থেকে ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে গিয়ে ঢুকছে এটা তাঁরা দেখতে না পান। পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা পরিচালনা করেন পুরোহিতদের যে বংশ, নতুন বিগ্রহ তৈরী তাদেরই দায়িত্ব থাকে।

  • বৃন্দাবনের এই মন্দিরে আজও শোনা যায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মোহন-বাঁশির সুর

    বৃন্দাবনের পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নিধিবন মন্দির। এই মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। যা আজও পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষিত করে। নিধিবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য-ঘেরা সব গল্পের আদৌ কোনও সত্যভিত্তি আছে কিনা, তা জানা না গেলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই লীলাভূমিতে এসে আপনি মুগ্ধ হবেনই। চোখ টানবে মন্দিরের ভেতর অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের মুর্তি।

০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

ইনি রাজা রবি বর্মা, যিনি প্রথম পূরাণ ও মহাভারত অনুযায়ী দেবদেবীর ছবি একেছিলেন ।

“রবি বর্মার চিত্রকর্মগুলো দেখে পুরোটা সকালই কাটিয়ে দিলাম। স্বীকার করতেই হয় যে ওগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এই চিত্রগুলো আমাদের দেখায় যে আমাদের নিজস্ব গল্প, ছবি ও এর অভিব্যক্তি আমাদের কতটা আপন। কিছু কিছু চিত্রকর্মে গঠনের অনুপাত হয়তো ঠিক নেই কিন্তু তাতে কী এসে যায়! সামগ্রিক অর্থে এই চিত্রকর্মগুলোর প্রভাব থেকেই যায়”।
রাজা রবি বর্মা(১৮৪৮-১৯০৬)
১৮৪৮ সালের ২৯শে এপ্রিল রাজা রবি বর্মার জন্ম হয় ভারতের কেরালা রাজ্যের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল তৎকালীন ‘ত্রাভানকোর’ এর ‘কিলিমানুর’ রাজপ্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নীলকান্থন ভট্টতিরিপদ ও মাতা উমাম্বা থামপুরত্তি। তার পরিবারের আবহাওয়া ছিল শিল্পমনা। কবি, শিল্পীতে ভরপুর এই বংশ-পরম্পরায় রবি’র শিল্পমন খুব একটা অদ্ভূত কিছু ছিলো না বটে, কিন্তু তারপরও ছোটবেলায় রবি’র ছবি আঁকাআঁকির ব্যাপারটি দুরন্তপনা বলেই গণ্য হয়েছিলো। মাত্র ৭ বছর বয়স থেকেই তার ছবি আঁকার নেশা তাকে সবার কাছে পরিচিত করে তোলে। তাদের বাড়ির দেয়াল ভরে ওঠতো তার আঁকা পশুপাখির ছবিতে, হাটবাজারে, পথেঘাটে বহমান নিত্যদিনের জীবনযাত্রার দৃশ্যে।
‘গোয়ালিনী’। সাধারণ চিত্রেও অভিব্যক্তির স্পষ্টতা।
তার সৃজনশীলতা ও শৈল্পিক অভিব্যক্তি খুব সাধারণ ছবিতেও স্পষ্ট হয়ে ওঠতো। বাড়ির সবাই যখন তার এই অন্যরকম দুরন্তপনায় কিছুটা বিরক্ত বোধ করছে, তখন তার কাকা রাজা রাজা বর্মাই ছিলেন যিনি রবির শিল্পীসত্ত্বাকে আরো বিকশিত করার পথে নিয়ে যান। রাজা বর্মা নিজেও তাঞ্জোরের শিল্পী ছিলেন। তিনি তার ভ্রাতুষ্পুত্রের চিত্রশিল্পে প্রথম শিক্ষক হন, তিনি তাকে শিল্পের খাতায় নিয়ম-কানুনের হাতেখড়ি করান এবং তার একান্ত পৃষ্ঠপোষকতায়ই রবি বর্মার চিত্রশিল্পীজীবনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষণ শুরু হয়। ১৪ বছর বয়সে রাজা রবি বর্মা জলরঙ্গে ছবি আঁকতে শেখেন থিরুবনান্তপূরম রাজপ্রাসাদের রাজ চিত্রকর রামা স্বামী নাইড়ুর কাছ থেকে।
মহাভারতের দৃশ্য তার চিত্রে
সে সময়ে তৈলচিত্রের ব্যাপারটি ছিলো ছবি আঁকার জন্য অত্যন্ত নতুন একটি মাধ্যম। একজন ব্যক্তিই তৈলচিত্র সম্পর্কে খুব ভাল করে জানতেন, জানতেন কীভাবে তেলরঙ্গে চিত্র রূপ নেয়। ব্যক্তিটি ছিলেন মাদুরাই প্রদেশের রামা স্বামী নাইকার। রবি বর্মা তার কাছ থেকেই তৈলচিত্রে দীক্ষা নিতে মনস্থ করেন, কিন্তু বলিহারি! নাইকার তাকে কিছুতেই প্রশিক্ষণ দান করতে চাইলেন না! নাইকার ছিলেন একজন ঈর্ষান্বিত শিল্পী, যিনি রবি’র মধ্যে তার ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বীকে দেখতে পান।
এ সময় গল্পে অবতীর্ন হন আরেক চরিত্র, নাইকারেরই এক ছাত্র অরূমুঘম পিল্লাই। নাইকারের এই ছাত্র তার শিক্ষকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে রাজা রবি বর্মাকে তেল রঙ্গে ছবি আঁকা শেখাতে শুরু করেন। এর সাথে ডাচ চিত্রশিল্পী থিওডর জনসনও যুক্ত হন রবি বর্মার শিক্ষকতালিকায়। থিওডর জনসন মূলত একজন পোর্ট্রেটশিল্পী ছিলেন এবং তিনি রাজা আইল্যাম থিরূনাম এর পোর্ট্রেট আঁকতে ভারতে এসেছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে শিক্ষালাভের মধ্য দিয়ে, বহু ভুল করার পর, ভুল শোধরানো মোড়ের পর রবি বর্মা তেলরঙ্গে ছবি আঁকায় সিদ্ধহস্ত হলেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এরপর তিনিও রাজকীয় জুটি আইল্যাম থিরূনাম ও তার পত্নীর একটি পোর্ট্রেট আঁকেন। বলা হয়ে থাকে এই পোর্ট্রেট তার শিক্ষক থিওডর জনসনের আঁকা পোর্ট্রেটটির চাইতেও মোহনীয় ছিলো! একেই বোধহয় বলে একেবারে ‘গুরুমারা বিদ্যে’!
অভিজাতশ্রেণীর পোর্ট্রেট করায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি, তার করা পান্নালাল রায়ের একটি পোর্ট্রেট
চিত্রকর রাজা রবি বর্মা তার শিল্পকে শুধু শিক্ষকপ্রাপ্ত জ্ঞানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। সুনির্মল বসুর কবিতাটির মতই রবি বর্মাও বিশ্বাস করতেন, “বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র……”। ভারতীয় উপমহাদেশের অগণিত সঙ্গীত, কথাকলি নৃত্য ও প্রাচীন গাথা থেকে তিনি খুঁজে নিয়েছেন তার জ্ঞানতৃষ্ণা মেটাবার উৎস এবং সময়ে সময়ে সে জ্ঞান ঢেলে দিয়েছেন রং-তুলিতে ছোঁয়ানো তার ক্যানভাসে।
রবি’র চিত্রে যশোদা ও কৃষ্ণ, মাতৃত্বের অপূর্ব রূপ
যখন ভারতের মানুষ ব্রিটিশ রীতি-নীতিতে ক্রমেই নিমজ্জিত হচ্ছিলো এবং নিজেদের সংস্কৃতিতে প্রশংসনীয় কিছু থাকতে পারে তাও ভুলে যাচ্ছিলো, ভারতীয় সংস্কৃতিকে সেসময় রক্ষার ভার যারা নিয়েছিলেন, তার মধ্যে রাজা রবি বর্মার নাম অবশ্যই থাকা উচিত। এক রাজা ইউরোপীয় চিত্রশিল্পের দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়ে রবি বর্মাকে নির্দেশ দেন সেসব চিত্রকর্মের অনুলিপি প্রস্তুত করতে। রবি বর্মা তা অস্বীকার করেন এবং তাকে বলেন যে ভারতীয় সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করতে বাইরে থেকে কোন অনুলিপি তৈরী করতে হবেনা, ভারতের মাঠেঘাটে প্রাচীনকাল থেকেই ছড়িয়ে আছে শিল্পের সহস্র উপাদান। শুধু সেগুলোকে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলবার বিলম্বমাত্র! এর জের ধরে তিনি ভ্রমণ করেন সমগ্র ভারতবর্ষ এবং যখন তার মনে হয় ভারতীয় সাহিত্যের সাথে মিল রয়েছে ভারতের লোকেদের জীবনবোধের, জীবনদর্শনের এবং সর্বোপরি তাদের জীবনযাপনের। তখনই তিনি একের পর এক পৌরাণিক কাহিনীর খন্ড দৃশ্য তার চিত্রাবলীতে প্রকাশ করতে থাকেন। রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণের সাহিত্য… ভারতবাসীর সঙ্গে যা জড়িয়ে থেকেছে বহুকাল ধরে, তার দৃশ্যমান রূপ দেখতে পারলো তারা, রবি বর্মার ক্যানভাসের মধ্য দিয়ে।
রামায়ণের দৃশ্য
রাজা রবি বর্মা বিবাহিত ছিলেন, তার স্ত্রী ছিলেন পুরুরুত্তাথি ভাগীরথী…মাভেলিকরার রাজপরিবারের মেয়ে। তাদের সর্বমোট পাঁচ সন্তান ছিল।
আমরা আগেই দেখেছি যে তার অধিকাংশ ছবিই ছিলো পৌরাণিক কাহিনী ও চরিত্র নিয়ে, কিন্তু তার খ্যাতি অর্জনে এই ছবিগুলোর পাশাপাশি অবদান রেখেছে বহু রাজা-মহারাজা ও অভিজাতশ্রেণীর নিখুঁত পোর্ট্রেটগুলোও। ১৮৭০ থেকে ১৮৭৮ সাল পর্যন্ত রবি বর্মা মনোনিবেশ করেন পোর্ট্রেট আঁকার প্রতি এবং লাভ করেন সুদূরপ্রসারী খ্যাতি। ১৮৭৩ সালে ঘটে তার শিল্পীজীবনের স্বীকৃতির শুরু, মাদ্রাস চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে প্রথম পুরষ্কার লাভের মধ্য দিয়ে। সেই একই বছরে ভিয়েনা প্রদর্শনীতেও প্রথম পুরষ্কার পেয়ে খ্যাতির সীমানা পৌঁছে যায় দেশ থেকে এবার বিদেশে। এরপর শিকাগো কলাম্বিয়ান প্রদর্শনীতে গিয়ে তিনটি স্বর্ণপদক অর্জনের মধ্য দিয়ে রাজা রবি বর্মার নাম যুক্ত হয়ে যায় বিশ্ববিখ্যাতদের তালিকায়ও। ১৯০৪ সালে লর্ড কার্জন, রাজা রবি বর্মাকে ‘কায়সার-ই-হিন্দ’ স্বর্ণপদকে ভূষিত করেন। তার খ্যাতির বিড়ম্বনা হিসেবে একবার কিলিমানুর পোস্ট অফিসে দেশ-বিদেশের অগণিত চিঠির বন্যা বয়ে গিয়েছিলো!
তিনি ছিলেন তার জীবনকালে প্রথম আধুনিক ভারতীয় চিত্রশিল্পী। তাকে ‘আধুনিক ভারতীয় দৃশ্য সংস্কৃতির জনক’ও বলা হয়েছে। ইউরোপীয় শিল্পের প্রকৃতিবাদ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ভারতের প্রকৃতি থেকে নির্যাস নিয়ে যান তার শিল্পে। যা তার চোখে সুন্দর ছিলো, তিনি সে সৌন্দর্যকে সেঁচে আনতে চাইতেন… সম্পূর্ণরূপে ঢেলে দিতে চাইতেন ক্যানভাসে। সৌন্দর্যেরে পূজারী এই চিত্রকর সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে এতটাই বদ্ধপরিকর ছিলেন যে প্রায়ই ভুলে বসতেন স্থান-কাল-পাত্র! যে সৌন্দর্য তার চোখকে মুগ্ধ করেছে, তাকে স্থায়ী রূপ না দেয়া পর্যন্ত শান্ত হতে পারতো না তার শিল্পীমন! তিনি বিশ্বাস করতেন, কোনকিছুর সৌন্দর্যই চিরস্থায়ী হয়না…কিন্তু শিল্প চিরস্থায়ী হয়।
তার চিত্রে দীপ হাতে রমণী।
ভারতের আপামর জনগণকে শিল্পের কাছাকাছি আনতে, সংস্কৃতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত করতে রাজা রবি বর্মা এক অভূতপূর্ব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন তার চিত্রকর্মগুলো যেন শুধু একটি নির্দিষ্ট অভিজাত গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে পড়ে ভারতের উঁচু-নিচু সকল স্তরে। বিশেষজ্ঞরা তার চিত্রকর্ম সম্পর্কে কী মতামত দেন তারচাইতেও বেশি তিনি ভাবতেন আপামর জনতা তার চিত্রকর্মগুলোকে কতটা নিজেদের সাথে সম্পৃক্ত করতে পারে, কতটা আপন ভাবতে পারে তা নিয়ে…তাই তিনি একটি পথ বেছে নিলেন যাতে করে তার শিল্প পৌঁছে যাবে প্রতিটি মানুষের কাছে। সেই বেছে নেয়া পথটি ছিল ‘মুদ্রণ শিল্প’, এবং এও বলা হয়ে থাকে যে মুদ্রণ শিল্পকলায় সর্বাপেক্ষা সফল শিল্পী ছিলেন কেরালার রাজা রবি বর্মা। ১৮৯৪ সালে তিনি একটি লিথোগ্রাফি ছাপাখানা স্থাপন করেন ও তার আঁকা ছবিগুলোর প্রতিলিপি বাংলাসহ সারা ভারতে অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা অর্জন করে। রবি বর্মার কাছে এই ছিলো তার সাফল্য, এই ছিলো তার পরম অর্জন।
তার তৈলচিত্রগুলো সত্যিই আলো আঁধারির খেলা জানে!
৫৮ বছর বয়সে রাজা রবি বর্মা ত্রাভানকোরের কিলিমানুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। কেরালা সরকার তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে ‘রাজা রবি বর্মা পুরষ্কারম’ প্রবর্তন করেছে। শিল্প-সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য বার্ষিকভাবে এই পুরষ্কারটি দেয়া হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র:
https://en.m.wikipedia.org>wiki>raja_ravi_varma
www.thefamouspeople.com
Film: ‘Rangrasiya’
Book: Art nationalism in colonial India, Partha Mitter
ছবি উৎস:
www.webneel.com
লেখকঃAnindeta Chowdhury

সংগ্রহঃ https://roar.media
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।