০১ এপ্রিল ২০১৪

আদ্যাশক্তির তৃতীয় রূপের প্রকাশ দেবী চন্দ্রঘণ্টা


পিণ্ডজাপ্রবরারূঢ়া চন্দ্রকৌপাস্ত্রকৈরুতাম্‌
প্রসাদাং তনুতে মহা চন্দ্রঘণ্টেতি বিস্রুতাম্‌।।

নবরাত্রির তৃতীয় দিনে পূজা হয় মা চন্দ্রঘণ্টার। আদ্যাশক্তির তৃতীয় রূপের প্রকাশ দেবী চন্দ্রঘণ্টা। মায়ের মস্তকে ঘণ্টার আকারে চন্দ্র শোভা পায় এই জন্যই ইনি চন্দ্রঘণ্টা। দেবীর গাত্রবর্ণ স্বর্ণপ্রভ উজ্জ্বল দেবী দশবাহু সমন্বিতা হয়ে দশদিক আলো করে রয়েছেন। হস্তে যথাক্রমে খড়গ, গদা, ধনুর্বাণ, শক্তি, চক্র, ত্রিশূল , কমণ্ডল ও রুদ্রাক্ষ ইত্যাদি ধারন করে আছেন। দেবী বাঘ্রের উপর আসীনা। দেবীর কণ্ঠে শ্বেত পুস্পের মালা , জগত জননী ত্রিনয়না।

পুরানে বর্ণিত আছে অসুরাধিপতি মহিষাসুরের অত্যচারে যখন ত্রিভুবন কম্পিত তখন দেবতারা ভগবতীর শরণাপন্ন হলে দেবী দশবাহু সমন্বিত হয়ে চন্দ্রঘণ্টা রূপে প্রকাশিত হন। দেবীর ঘণ্টাধ্বনিতে অত্যাচারী দানব দল ভয়ে ত্রাসে পলায়ন করে। দেবী সর্বদাই রণসাজে সুসজ্জিতা ও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। ইনি যুদ্ধপ্রিয়া ও শত্রুবিনাশকারিণী। মা ভগবতী যেমন একাধারে যুদ্ধপ্রিয়া তেমনি তাকে জ্ঞান প্রদায়িনীও বলা হয়, তাঁর হাতের অক্ষমালা ও কমণ্ডলু সেই জ্ঞানের প্রতীক। তিনি পরমশান্তিময়ী কল্যাণকারিণী।

দেবীর এই রূপ জগতে বার্তা বহন করে যে অকিঞ্চন দুষ্ট ব্যাক্তিদের যেমন শাস্তি প্রদান করা উচিত তেমনই নিজের জ্ঞান ও আত্মউদ্দেশ্য থেকেও বিস্মৃত হওয়া উচিত নয় সর্বদা শান্তি রক্ষা করাও প্রয়োজন। দেবীর বাহন বাঘ হল শৌর্যবীর্য ও পরাক্রমের প্রতীক। মানব জীবনে উন্নতির জন্য কারজ সিদ্ধির জন্য পরাক্রম ও শৌর্যবীর্যের প্রয়োজন। দেবীর বাহন যেমন রনক্ষেত্রে শত্রুদের উপর তার পরাক্রম দেখায় সমস্ত শক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে তেমনই আমাদের সমস্ত কাজে সমাজের প্রতিকূলতায় সমস্ত শক্তিদিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ও অন্যায় কে প্রতিরোধ করা উচিৎ দেবীর বাহন সেই বার্তাই বহন করে।

মা চন্দ্রঘণ্টার উপাসনা করলে ভক্তগন পরমপদ প্রাপ্ত হন ইহলোক ও পরলোকে সদগতি প্রাপ্ত হন। দেবীর আশীর্বাদে ভক্তগণ দীর্ঘজীবী, আরোগ্য সুখী জীবন যাপন লাভ করে। মা ভগবতীর অভয়ে জীবনের সমস্ত দুঃখ যন্ত্রণা দূর হয়ে পরমআনন্দ ও শান্তি লাভ হয়।

নবরাত্রির তৃতীয় দিন মায়ের উপাসনা হয় বিশুদ্ধ চিত্তে মাকে স্মরন করে কুলকুণ্ডলিনীর মনিপুর চক্রে মনো নিবেশ করতে হয়।দেবীকে জবার মালা অর্পণ করে রক্ত চন্দন বিল্বপত্র লাল পুস্প দিয়ে দেবীর অর্চনা করা হয়। নৈবিদ্য হিসেবে দেবীকে দুধ, মিষ্টি ও ক্ষীর অর্পণ করলে দেবী সন্তুষ্টা হন।



=joy ghoshal=
Share:

Total Pageviews

4506106

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।