প্রহ্লাদ মহারাজ, যিনি ছিলেন যথার্থই মহা জ্ঞানী, তিনি তাঁর সহপাঠীদের অত্যন্ত মধুর বাক্যে সম্ভাষণ করে, হেসে জড়-জাগতিক জীবনের নিরর্থকতা সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন। তাদের প্রতি অত্যন্ত কৃপাপরবশ হয়ে, তিনি তাদের নিম্নলিখিত উপদেশগুলি দিয়েছিলেন।[৭/৫/৫৫]
হে মহারাজ যুধিষ্ঠির, সমস্ত বালকেরা প্রহ্লাদ মহারাজের প্রতি অত্যন্ত অনুরক্ত এবং শ্রদ্ধাশীল ছিল। তাদের অল্প বয়সের ফলে, দ্বৈতভাব এবং দেহসুখের প্রতি আসক্ত শিক্ষকদের উপদেশের দ্বারা তাদের অন্তঃকরণ দূষিত হয়নি। তারা তাদের খেলার সমস্ত উপকরণ পরিত্যাগ করে, প্রহ্লাদ মহারাজের কথা শ্রবণ করার জন্য তাঁকে ঘিরে বসেছিল। তাদের হৃদয় এবং নেত্র তাঁর উপর নিবদ্ধ ছিল এবং গভীর নিষ্ঠা সহকারে তারা তাঁর দিকে তাকিয়ে তাঁর কথা শুনছিল। অসুরকুলে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও প্রহ্লাদ মহারাজ ছিলেন একজন মহাভাগবত, এবং তিনি তাদের মঙ্গল কামনা করেছিলেন। তার ফলে তিনি তাদের জড়-জাগতিক জীবনের নিরর্থকতা সম্বন্ধে উপদেশ দিতে শুরু করেছিলেন। [৭/৫/৫৬-৫৭]
দৈত্যবালকদের প্রতি প্রহ্লাদের উপদেশ
প্রহ্লাদ মহারাজ বললেন-প্রাজ্ঞ ব্যক্তি মনুষ্যজন্ম লাভ করে জীবনের শুরু থেকেই, অর্থ্যাৎ বাল্যকাল থেকেই, অন্য সমস্ত প্রয়াস ত্যাগ করে ভাগবত-ধর্ম অনুষ্ঠান করবেন। মনুষ্যজন্ম অত্যন্ত দূর্লভ, এবং অন্যান্য শরীরের মতো অনিত্য হলেও তা অত্যন্ত অর্থপূর্ণ, কারণ মনুষ্য-জীবনে ভগবানের সেবা সম্পাদন করা সম্ভব। নিষ্ঠাপূর্বক কিঞ্চিৎমাত্র ভগবদ্ভক্তির অনুষ্ঠান করলেও মানুষ পূর্ণসিদ্ধি লাভ করতে পারে। [৭/৬/১]
মনুষ্য-জীবন ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার সুযোগ প্রদান করে। তাই প্রতিটি মানুষের অবশ্য কর্তব্য ভগবান শ্রীবিষ্ণুর শ্রীপাদপদ্মের সেবায় যুক্ত হওয়া। এই ভগবদ্ভক্তি স্বাভাবিক, কারণ ভগবান শ্রীবিষ্ণু সকলেরই পরম প্রিয়, পরমাত্মা এবং পরম সুহৃদ্। [৭/৬/২]
প্রহ্লাদ মহারাজ বললেন-হে দৈত্য-কুলোদ্ভূত বন্ধুগণ, দেহের সঙ্গে ইন্দ্রিয়-বিষয়ের সংযোগবশত যে ইন্দ্রিয় সুখ তা যে কোন যোনিতেই পূর্বকৃত কর্ম অনুসারে লাভ হয়ে থাকে। এই প্রকার সুখ আপনা থেকেই কোন রকম প্রচেষ্টা ছাড়াই লাভ হয়, ঠিক যেমন বিনা প্রয়াসে দু:খলাভ হয়।[৭/৬/৩]
ইন্দ্রিয়সুখ ভোগ অথবা অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনের মাধ্যমে জড়সুখ ভোগের প্রয়াস করা উচিত নয়, কারণ তার ফলে বাস্তবিক কোন লাভ হয় না, পক্ষান্তরে কেবল সময় এবং শক্তিরই অপচয় হয়। মানুষের প্রয়াস যদি কৃষ্ণভক্তির দিকে পরিচালিত হয়, তা হলে নি:সন্দেহে আত্ম-উপলব্ধির চিন্ময় স্তর প্রাপ্ত হওয়া যায়। অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনে যুক্ত হওয়ার ফলে কোন লাভ হয় না। [৭/৬/৪]
অতএব জড় জগতে অবস্থান কালে (ভবমাশ্রিতঃ) পূর্ণরূপে সুযোগ্য ব্যক্তির কর্তব্য সৎ এবং অসতের পার্থক্য নিরূপণ করে, যে পর্যন্ত এই পরিপুষ্ট মানব-শরীরটি রয়েছে, ততক্ষণ ভীত না হয়ে জীবনের চরম উদ্দেশ্য লাভের জন্য যত্নশীল হওয়া। [৭/৬/৫]
মানুষের আয়ু বড় জোর একশ বছর। কিন্তু যে ব্যক্তি অজিতেন্দ্রিয়, তার সেই একশ বছরের অর্ধেক সময় অনর্থক অতিবাহিত হয়, কারণ অজ্ঞানের অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে, রাত্রিবেলায় সে বার ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকে। অতএব এই প্রকার ব্যক্তির আয়ুষ্কাল মাত্র পঞ্চাশ বছর। [৭/৬/৬]
বাল্যকালে মোহগ্রস্ত অবস্থায় দশ বছর অতিবাহিত হয়। তেমনই, কৈশোরে খেলাধুলায় মগ্ন থেকে আরও দশ বছর অতিবাহিত হয়। এইভাবে কুড়ি বছর বিফলে যায়। তেমনই, বৃদ্ধ বয়সে জরাগ্রস্ত হয়ে জড়-জাগতিক কার্যকলাপ অনুষ্ঠান করতে অক্ষম হওয়ার ফলে, আরও কুড়ি বছর বৃথা অতিবাহিত হয়। [৭/৬/৭]
যার মন এবং ইন্দ্রিয় অসংযত, তার অতৃপ্ত কামনা এবং প্রবল মোহের ফলে, পারিবারিক জীবনের প্রতি সে অত্যন্ত আসক্ত হয়। এই প্রকার উন্মত্ত ব্যক্তির বাকি জীবনও বিফলে যায়, কারণ সেই কয়টি বছরেও সে ভগবদ্ভক্তিতে যুক্ত হতে পারে না। [৭/৬/৮]
গৃহস্থ-জীবনের প্রতি অত্যন্ত আসক্ত কোন্ অজিতেন্দ্রিয় ব্যক্তি মুক্ত হতে সমর্থ হয়? গৃহাসক্ত ব্যক্তি তার স্ত্রী-পুত্র এবং অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের প্রতি স্নেহরূপ রজ্জুর দ্বারা অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ। [৭/৬/৯]
ধন মানুষের এতই প্রিয় যে, সে ধনকে মধু থেকেও মধুরতর বলে মনে করে। তাই, সে ধন সংগ্রহের বাসনা কে ত্যাগ করতে পারে, বিশেষ করে গৃহস্থ-জীবনে? তস্কর, পেশাধারী ভৃত্য (সৈনিক)এবং বণিক-এরা নিজের প্রিয়তম প্রাণকে বিপন্ন করেও অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে।[৭/৬/১০]
যে ব্যক্তি তার পরিবারের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল, যার অন্তরের অন্তঃস্থল সর্বদা তাদের চিত্রে পূর্ণ, সে কিভাবে তাদের সঙ্গ ত্যাগ করতে পারে? বিশেষত, স্নেহশীলা এবং সহানুভূতিশীলা পত্নীর নির্জন সঙ্গ স্মরণ করলে, কে তাকে পরিত্যাগ করতে পারে? শিশুদের মধুর আধো আধো বুলি স্মরণ করলে কোন্ স্নেহশীল পিতা তাদের সঙ্গ পরিত্যাগ করতে পারে? বৃদ্ধ পিতা-মাতা, পুত্র-কন্যা এরা সকলেই অত্যন্ত প্রিয়। কন্যা বিশেষ করে পিতার অত্যন্ত প্রিয় হয়, এবং যখন সে তার পতিগৃহে চলে যায়, তখন তার কথা পিতার সব সময় মনে হয়। সেই সঙ্গ কে পরিত্যাগ করতে পারে? আর তা ছাড়া গৃহে নানা রকম ভোগের উপকরণ থাকে, গৃহপালিত পশু এবং ভৃত্য থাকে। সেই সুখ কে পরিত্যাগ করতে পারে? গৃহাসক্ত ব্যক্তির অবস্থা ঠিক রেশমকীটের মতো, যে কোষ সে তৈরি করে, সেই কোষে বন্দী হয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারে না। কেবল জিহ্বা এবং উপস্থ-এই দুটি ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তি সাধনের জন্য মানুষ এই জড় জগতের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। কিভাবে সে তা থেকে মুক্তিলাভ করতে পারে? [৭/৬/১১-১৩]
যে ব্যক্তি অত্যন্ত আসক্ত সে বুঝতে পারে না যে, তার কুটুম্ব ভরণ-পোষণে সে তার জীবনের মূল্যবান সময়ের অপচয় করছে। সে এও বুঝতে পারে না যে, পরম সত্যকে উপলব্ধি করার অত্যন্ত অনুকূল এই মনুষ্যজীবন সে অনর্থক নষ্ট করছে। কিন্তু, সে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা এবং সাবধানতার সঙ্গে দেখে যে, একটি পয়সাও যেন অনর্থক নষ্ট না হয়। এইভাবে জড় বিষয়াসক্ত ব্যক্তি নিরন্তর ত্রিতাপ দু:খ ভোগ করা সত্ত্বেও তার জড় অস্তিত্বের প্রতি বিতৃষ্ণা বোধ করে না।[৭/৬/১৪]
যদি কোন ব্যক্তি তার কুটুম্ব ভরণ-পোষণের কর্তব্যের প্রতি অত্যন্ত আসক্ত হয়, তা হলে সে তার ইন্দ্রিয়গুলি বশীভূত করতে পারে না এবং তার মন সর্বদাই ধন সংগ্রহের চিন্তায় মগ্ন থাকে। যদিও সে জানে যে পরের ধন অপহরণ করার ফলে সে আইনের দ্বারা দণ্ডিত হবে এবং মৃত্যুর পর যমরাজের আইনে দণ্ডভোগ করবে, তবুও সে ধন সংগ্রহ করার জন্য অন্যদের প্রতারণা করতে থাকে। [৭/৬/১৫]
হে বন্ধু, দানব-নন্দনগণ! এই জড় জগতে আপাতদৃষ্টিতে বিদ্বান ব্যক্তিরাও মনে করে, “এটি আমার এবং ওটি অন্যের।” তার ফলে তারা সর্বদাই অশিক্ষিত কুকুর-বিড়ালের মতো তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য জীবনের আবশ্যকতাগুলি প্রদান করার কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকে। তারা আধ্যাত্মিক জ্ঞান গ্রহণ করতে পারে না। পক্ষান্তরে তারা অজ্ঞানের দ্বারা মোহাচ্ছন্ন হয়। [৭/৬/১৬]
হে আমার বন্ধু দৈত্যনন্দনগণ, কোন দেশে অথবা কোন কালে ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞান-বিহীন ব্যক্তি নিজেকে জড় জগতের বন্ধন থেকে মুক্ত করতে পারেনি। পক্ষান্তরে সেই সমস্ত ভগবদ্বিমুখ ব্যক্তিরা জড়া প্রকৃতির নিয়মে জড় জগতের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকে। তারা প্রকৃতপক্ষে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগের প্রতি আসক্ত, এবং তাদের একমাত্র লক্ষ্য স্ত্রীসম্ভোগ। বস্তুতপক্ষে তারা সুন্দরী রমণীর হস্তে ক্রীড়ামৃগতুল্য। এই প্রকার জীবনের শিকার হয়ে তারা পুত্র, পৌত্র এবং প্রপৌত্রদের দ্বারা পরিবোষ্টিত হয়, এবং এইভাবে জড় জগতের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকে। যারা এই প্রকার জীবনের প্রতি আসক্ত, তাদের বলা হয় অসুর। অতএব, যদিও তোমরা দৈত্যনন্দন, সেই প্রকার ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাক এবং আদিদেব ভগবান শ্রীনারায়ণের শরণ গ্রহণ কর। কারণ নারায়ণের ভক্তদের চরম লক্ষ্য জড় জগতের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া। [৭/৬/১৭-১৮]
হে অসুর-নন্দনগণ, পরমেশ্বর ভগবান নারায়ণই সমস্ত জীবের মূল পরমাত্মা এবং পরম পিতা। তাই তাঁকে সন্তুষ্ট করতে অথবা তাঁর আরাধনা করতে বালক-বৃদ্ধ নির্বিশেষে কারুরই কোন রকম প্রতিবন্ধকতা নেই। জীব এবং ভগবানের সম্পর্ক সর্বদাই বাস্তব, এবং তাই অনায়াসে ভগবানের প্রসন্নতা বিধান করা যায়। [৭/৬/১৯]
পরম ঈশ্বর ভগবান যিনি অচ্যুত এবং অব্যয়, তিনি বৃক্ষলতা আদি স্থাবর জীব থেকে শুরু করে ব্রহ্মা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার জীবের মধ্যে বিরাজমান। তিনি নানা প্রকার জড় সৃষ্টিতে, জড় উপাদানে, মহত্তত্ত্বে, প্রকৃতির গুণে (সত্ত্বগুণ, রজোগুণ এবং তমোগুণ), অব্যক্ত প্রকৃতিতে এবং অহংকারেও বিরাজমান। তিনি যদিও এক, তবুও তিনি সর্বত্র বিরাজমান, এবং তিনি চিন্ময় পরমাত্মা এবং সর্বকারণের পরম কারণ, যিনি সমস্ত জীবের অন্তরে সাক্ষীরূপে বিরাজ করেন। তাঁকে ব্যাপ্য এবং সর্বব্যাপ্ত পরমাত্মা বলে ইঙ্গিত করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি বর্ণনাতীত। তিনি অবিকারী এবং অবিভাজ্য। তাঁকে কেবল পরম সচ্চিদানন্দরূপে অনুভব করা যায়। নাস্তিকদের কাছে মায়ার আবরণে আচ্ছাদিত থাকার ফলে, তারা মনে করে যে তাঁর অস্তিত্ব নেই। [৭/৬/২০-২৩]
অতএব দৈত্য কুলোদ্ভুত আমার বালক বন্ধুগণ, তোমরা সকলে এমনভাবে আচরণ কর যাতে অধোক্ষজ ভগবান তোমাদের প্রতি প্রসন্ন হন। তোমাদের আসুরিক প্রবৃত্তি পরিত্যাগ করে শত্রুতা এবং দ্বৈতভাব রহিত হয়ে কর্ম কর। ভগবদ্ভক্তির জ্ঞান প্রদান করে সমস্ত জীবের প্রতি তোমাদের করুণা প্রদর্শন কর, এবং এইভাবে তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হও। [৭/৬/২৪]
সর্বকারণের পরম কারণ, সবকিছুর আদি উৎস ভগবানের প্রসন্নতা বিধান করেছেন যে সমস্ত ভক্তেরা, তাঁদের পক্ষে কিছুই অপ্রাপ্য নয়। ভগবান অন্তহীন চিন্ময় গুণের উৎস। তাই, গুণাতীত ভক্তদের কাছে ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মুক্তির প্রচেষ্টা করার কি প্রয়োজন-যা প্রকৃতির গুণের প্রভাবে আপনা থেকেই লাভ হয়? আমরা ভগবদ্ভক্তেরা সর্বদাই ভগবানের শ্রীপাদপদ্মের মহিমা কীর্তন করি, এবং তাই আমাদের ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ আদির বাসনা করার কোন প্রয়োজন হয় না। [৭/৬/২৫]
ধর্ম, অর্থ এবং কাম-এই তিনটিকে বেদে ত্রিবর্গ বা মোক্ষ লাভের তিনটি উপায় বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই তিনটি বর্গের মধ্যেই আত্ম-উপলব্ধির বিদ্যা, বৈদিক নির্দেশ অনুসারে কর্ম অনুষ্ঠানের পন্থা, তর্কশাস্ত্র, দণ্ডনীতি এবং জীবিকা নির্বাহের বিভিন্ন বৃত্তি নিহিত রয়েছে। এগুলি বেদ অধ্যয়নের বাহ্য বিষয়, এবং তাই আমি এগুলিকে জড়-জাগতিক বলে মনে করি। কিন্তু, পরম পুরুষ শ্রীবিষ্ণুর শ্রীপাদপদ্মে আত্ম-নিবেদনের পন্থাকে আমি দিব্য বলে মনে করি। [৭/৬/২৬]
সমস্ত জীবের শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সুহৃদ ভগবান প্রথমে এই দিব্য জ্ঞান দেবর্ষি নারদকে উপদেশ দিয়েছিলেন। নারদ মুনির মতো মহাত্মার কৃপা ব্যতীত এই জ্ঞান হৃদয়ঙ্গম করা অত্যন্ত কঠিন, কিন্তু যিনি শ্রীনারদ মুনির পরম্পরার শরণ গ্রহণ করেন, তিনি এই গুহ্য জ্ঞান হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। [৭/৬/২৭]
প্রহ্লাদ মহারাজ বললেন-এই জ্ঞান আমি দেবর্ষি নারদ মুনির কাছ থেকে প্রাপ্ত হয়েছি, যিনি সর্বদা ভগবানের সেবায় যুক্ত। এই জ্ঞান, যাকে বলা হয় ভাগবত-ধর্ম, তা সর্বতোভাবে বিজ্ঞানসম্মত। তা ন্যায় এবং দর্শনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, এবং সমস্ত জড় কলুষ থেকে মুক্ত।[৭/৬/২৮]
দৈত্যনন্দনেরা বলল-হে প্রহ্লাদ, তুমি অথবা আমরা শুক্রাচার্যের পুত্র ষণ্ড এবং অমর্ক ব্যতীত অন্য কোন গুরুকে জানি না। আমরা শিশু এবং তারা আমাদের নিয়ন্তা। বিশেষ করে তোমার পক্ষে, যে সর্বদা প্রাসাদে থাকে, তার মহাত্মার সঙ্গ করা অত্যন্ত কঠিন। হে সৌম্য, দয়া করে আমাদের বল কিভাবে তুমি নারদ মুনির উপদেশ শ্রবণ করেছিলে? দয়া করে আমাদের এই সংশয় দূর কর। [৭/৬/২৯-৩০]
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন