ঘটনাটা ঠিক সীতা মায়ের অপহরণের পর । শ্রীরামচন্দ্রের সাথে সুগ্রীবের বন্ধুত্ব হয়েছে । কিন্তু সুগ্রীব তখনো বানর দের রাজা হন নি। কিস্কিন্ধ্যার রাজা ছিলেন বালি। বালির সাথে সুগ্রীবের বিবাদ এমন পর্যায়ে ছিল- যে বালি সুগ্রীবের বিনাশ চাইতো। মাতঙ্গ মুনির অভিশাপ থাকার জন্য একটি বিশেষ স্থানে বালি আসতে পারতো না, আর সেই বিশেষ স্থানে বাস করতেন সুগ্রীব । ভগবান রামের সাথে সুগ্রীবের চুক্তি হোলো বালিকে বধ করে সুগ্রীবকে সম্রাট বানাবেন। ঠিক সেই মতো সুগ্রীব বালির সাথে লড়তে তাকে আহ্বান জানালো। আড়ালে ভগবান রাম ধনুর্বাণ নিয়ে তৈরী থাকলেন । কিন্তু সমস্যা হোলো- বালি আর সুগ্রীব যমজ। কে সুগ্রীব আর কে বালি ভগবান রাম বুঝতে না পেরে বাণ চালালেন না। বালির হাতে আধা মরা হয়ে সুগ্রীব ফিরে এসে ভগবান রামকে খুব করে বাক্যবানে বিঁধলে ভগবান রাম বললেন- "মিত্র সুগ্রীব। তুমি ও বালি যমজ ও একই রকম দেখতে। ভুল বশত আমি যদি তোমাকে বালি জ্ঞানে শর বিদ্ধ করতাম তবে অনর্থ হোতো। কাল তুমি একটি পুস্পমাল্য কন্ঠে পরিধান করে পুনঃ বালিকে মল্ল যুদ্ধে আহ্বান জানাবে। তোমার কন্ঠের মাল্য দেখে আমি নিশ্চিত হয়ে বালিকে বধ করবো।" পর দিবস পুনঃ সুগ্রীব ভ্রাতা বালিকে যুদ্ধে আহ্বান করলে বালি রেগে দাঁত কিড়মিড় করে গেলো। দেখতে দেখতে দুই বানরে যুদ্ধ লাগলো। গাছেড় ডালপালা ভেঙ্গে চুরমার করতে লাগলো। বড় বড় পাথর একে অপরের প্রতি নিক্ষেপ করতে লাগলো। আঁচড় কামড় কিছুই বাদ গেলো না। তখন ভগবান রাম শর নিক্ষেপ করলেন আড়াল থেকে। রামের বাণে বালি বিদ্ধ হয়ে ছিটকে পড়লো । তখন বালি সব চালাকী বুঝতে পেরে বলল- " ওহে রাম আড়াল থেকে শর সন্ধান করা কি তোমার উচিৎ কর্ম ? আমাদের দুভাইয়ের লড়াইয়ে তুমি আড়াল থেকে আমাকে বধ করছ - এই তোমার ধর্ম ? সাধু মুনি গণ তোমাকে ভগবান নারায়ন বলে ভক্তি করে- এই কি তুমি এমন ভগবান যে আড়াল থেকে শর সন্ধান করো ? হে রাম। তুমি মহান সূর্য বংশীয় নৃপতি রাজা দশরথের সন্তান। তুমি কিভাবে এই অধর্ম করলে ? হে রাম। আমি জাতিতে বানর। আমি তো বাঘ, ভল্লুক বা মৃগ নি, যে আমার চর্ম তুমি ব্যবহার করবে ? শুনেছি তোমার পত্নীকে লঙ্কার রাজা রাবন অপহরণ করেছে । তুমি আমাকে বলতে- আমি সেই রাবণকে লেজে বেঁধে তোমার সম্মুখে উপস্থিত করতাম। কিন্তু সেসব না করে তুমি কিভাবে এই অধর্ম করলে ? "
শুনে রাম বললেন- "ওহে বালি তোমার এখন ধর্ম কথা মনে পড়ছে ? তুমি সন্দেহের বশে তোমার ভ্রাতা সুগ্রীবকে বিতারিত করেছো - তখন তোমার ধর্ম জ্ঞান কোথায় ছিল ? পিতার সম্পত্তি থেকে নিজ ভ্রাতাকে বহিষ্কার করেছো- তখন তোমার ধর্ম চিন্তা উদয় হয়নি ? সুগ্রীবের স্ত্রী রুমাকে কারাগারে আটকে রেখে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছো, তখন তোমার ধর্ম ভাবনা কোথায় ছিলো? তোমার সাথে আমি রাবণের কোনো বিভেদ দেখিই না। এখন তোমার মনে ধর্ম ভাবের উদয় হয়েছে।" বালি বুঝতে পেরে ভগবান রামের চরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে মৃত হোলো। বালি পুত্র অঙ্গদকে ভগবান রাম বর দিলেন- "অঙ্গদ, তোমার নিকট আমি অপরাধী । তুমি পরজন্মে এক ব্যাধ হয়ে জন্মাবে। পরজন্মে যখন আমি কৃষ্ণ অবতার ধারন করবো- তোমার বানে আমি দেহ ছেড়ে বৈকুণ্ঠ প্রস্থান করবো।" এই বালি বধ প্রসঙ্গে ভগবান রাম তাঁর ভ্রাতা লক্ষণ কে বলেছিলেন - "ধর্ম সংস্থাপনের জন্য, পাপের বিনাশের জন্য ছল করলে তা পাপ বলে খ্যাত হয় না।" লক্ষণ কে তাই যজ্ঞে রত অবস্থায় মেঘনাদ বধ করতে হয়েছিল । সাম, দাম, দণ্ড, ভেদ সর্বদা ধর্মের জন্য, সত্যের জন্যই প্রয়োগ করা উচিৎ। মিথ্যা কথার দ্বারা যদি ধর্ম স্থাপন হয়- তবে সেই মিথ্যায় পাপ নেই।
লিখেছেনঃ সুকান্ত বসাক, শিলিগুরি ।
শুনে রাম বললেন- "ওহে বালি তোমার এখন ধর্ম কথা মনে পড়ছে ? তুমি সন্দেহের বশে তোমার ভ্রাতা সুগ্রীবকে বিতারিত করেছো - তখন তোমার ধর্ম জ্ঞান কোথায় ছিল ? পিতার সম্পত্তি থেকে নিজ ভ্রাতাকে বহিষ্কার করেছো- তখন তোমার ধর্ম চিন্তা উদয় হয়নি ? সুগ্রীবের স্ত্রী রুমাকে কারাগারে আটকে রেখে তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছো, তখন তোমার ধর্ম ভাবনা কোথায় ছিলো? তোমার সাথে আমি রাবণের কোনো বিভেদ দেখিই না। এখন তোমার মনে ধর্ম ভাবের উদয় হয়েছে।" বালি বুঝতে পেরে ভগবান রামের চরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে মৃত হোলো। বালি পুত্র অঙ্গদকে ভগবান রাম বর দিলেন- "অঙ্গদ, তোমার নিকট আমি অপরাধী । তুমি পরজন্মে এক ব্যাধ হয়ে জন্মাবে। পরজন্মে যখন আমি কৃষ্ণ অবতার ধারন করবো- তোমার বানে আমি দেহ ছেড়ে বৈকুণ্ঠ প্রস্থান করবো।" এই বালি বধ প্রসঙ্গে ভগবান রাম তাঁর ভ্রাতা লক্ষণ কে বলেছিলেন - "ধর্ম সংস্থাপনের জন্য, পাপের বিনাশের জন্য ছল করলে তা পাপ বলে খ্যাত হয় না।" লক্ষণ কে তাই যজ্ঞে রত অবস্থায় মেঘনাদ বধ করতে হয়েছিল । সাম, দাম, দণ্ড, ভেদ সর্বদা ধর্মের জন্য, সত্যের জন্যই প্রয়োগ করা উচিৎ। মিথ্যা কথার দ্বারা যদি ধর্ম স্থাপন হয়- তবে সেই মিথ্যায় পাপ নেই।
লিখেছেনঃ সুকান্ত বসাক, শিলিগুরি ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন