'ওঁ' শব্দটি অতি পবিত্র। যার উচ্চারণ অ-উ-ম্। একে ওঙ্কার বা প্রণবও বলা হয়। ওঙ্কার শব্দটি এমন মহাপপবিত্র যে সর্ব্বাবস্থায় ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এই জন্য এর আর এক নাম প্রণব। 'প্র' উপসর্গ পূর্ব্বক 'নু' ধাতুর 'অল্' প্রত্যয়ে 'প্রণব' গঠিত। 'নু' ধাতুর অর্থ ডাকা বা স্তব্ধ করা। প্রণব অর্থ প্রকৃষ্ট উপায়ে ডাকা, অতি সুন্দর ভাবে ডাকা, প্রীতির সাথে ডাকা।
মানুষের অনেক নাম থাকে। একটি পোষাকী নাম হয়, আর একটি থাকে ডাকনাম। কেউ যদি কাউকে ডাকনাম ধরে ডাকে, তাহলে তার অধিক প্রীতি হয়। বোঝা যায় সে অতি প্রিয় বা আপন জন। ব্রহ্মের অনেক নাম। কেউ যদি তাঁকে 'ওঁ' বলে ডাকে, তবে তিনি অধিক প্রীত হন। তাকে প্রিয়জন মনে করেন। ভগবানকে তুষ্ট করতে এই নামটি সুন্দর, মনোহর। এজন্য ওঙ্কারকে প্রণব বলে। শ্রেষ্ঠ পুরুষের বাচক শব্দ প্রণব। ঈশ্বর বাচ্য আর প্রণব বাচক। উপনিষদ বলছে, গাছের সব পাতা যেমন যেমন কান্ডের সাথে যুক্ত, ঠিক একই ভাবে সব শব্দই একত্রিত আছে 'ওঁ' উচ্চারণের মধ্যে।'ওঁ'ই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। শুধু মানুই নয়, সমগ্র মহাবিশ্বেরও এই একীভূত হওয়ার প্রচেষ্টা আছে সরলীকরণের মাধ্যমে। আর পরমেশ্বর ঈশ্বর এটাই আশা করেন।
'ওঁ' এর প্রথম অর্থ হলো, অন্য কোনো অর্থ যুক্ত না করে মূলতত্ত্বকে ঘনীভূত রুপ দেওয়া এবং সহজ করা। 'ওঁ' এর দ্বিতীয় মানুষের প্রয়োজনে হ্যাঁ বোধক সাড়া দেওয়া। 'ওঁ' ই হচ্ছে পরিপূর্ণতা। স্তোত্র, প্রার্থনা এবং ধ্যান শুরু হয় গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে। যার শুরু ও শেষ 'ওঁ' দিয়ে। এই দুটি বস্তুই বিভিন্ন ভাবে পরম পুরুষকেই বোঝায়। 'ওঁ' ই শ্বাশত ব্রাহ্মণ, 'ওঁ' ই শেষ অবলম্বন। যার উপর মানুষ নিজেকে সমর্পণ করে দিতে পারে জীবন যাত্রার শেষে। অর্থাৎ ব্রহ্মনে মিলিত হওয়ার সময়ে। 'ওঁ' এর প্রতি উচ্চারণেই গভীর থেকে গভীরতর উপলব্ধি আসে সেই পরম একের। 'ওঁ' উচ্চারিত হয়ে থাকে শাস্ত্রাদি পাঠ, পবিত্র কাজ ইত্যাদির আরম্ভে এবং শেষে। যোগী পুরুষেরা অনবরত 'ওঁ' ধ্বনি উচ্চারণ করে থাকেন।
বারবার 'ওঁ' ধ্বনি উচ্চারণ এবং শ্রবণ মঙ্গলকারক। 'ওঁ' কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রার্থনার বস্তু নয়, এ সকলের, সার্বজনীন। 'ওঁ' কোনো দেবতার প্রার্থনার মন্ত্র নয়। সমগ্র বিশ্বপ্রপঞ্চকের মূল কথা নিহিত আছে এই শব্দে। এই ডাকটি একটি স্বর্গীয় বস্তু। সামগ্রিক পরমার্থিক চিন্তার আত্মসমর্পণ বলা যায় 'ওঁ' কে। 'ওঁ' ধ্বনির বিনাশ নেই। 'ওঁ' ই ব্রাহ্মণ, 'ওঁ' ই শব্দব্রহ্ম। 'ওঁ' শুধু ধ্বনিই নয়, নীরবতাও। এই মহাধ্বনি উচ্চারণের মাধ্যমে এক নীরবতার স্তর আছে, যার নাম 'তুরীয়'। প্রকৃত ঞ্জান এবং আত্মোপলব্ধির জন্য এই মাধুর্যমন্ডিত নীরবতাই অভিপ্রেত। প্রকৃত সাধণার শুরু নীরবতায় এবং অনন্ত শাশ্বত নীরবতায়ই মানুষের পরম প্রাপ্তি। 'ওঁ' ই প্রথম শব্দ, মহাবিশ্বের প্রথম প্রতীক, প্রথম বিকাশ, বাস্তব সত্তার ঘনীভূত রুপ। ইহা পৃথিবীর আগে, ইহাই পৃথিবীর শেষ কথা, ইহাই সারকথা। এর নিজস্ব কোনো অর্থ নেই। কারণ সমগ্র অর্থের এই ই উৎস। 'ওঁ' একের প্রতীক। পরমকরুনাময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অতি প্রিয় এই ওঙ্কার শব্দ।
তাঁর শ্রীচরণে আমাদের ভক্তিপূর্ণ অর্ঘ্য,
"ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়।"
!!হরে কৃষ্ণ হরে কৃৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!
!!জয় শ্রীহরি!! জয় রাধে!!
Written by: Ripon Saha
Like our page: সনাতন সন্দেশ - Sanatan Swandesh
মানুষের অনেক নাম থাকে। একটি পোষাকী নাম হয়, আর একটি থাকে ডাকনাম। কেউ যদি কাউকে ডাকনাম ধরে ডাকে, তাহলে তার অধিক প্রীতি হয়। বোঝা যায় সে অতি প্রিয় বা আপন জন। ব্রহ্মের অনেক নাম। কেউ যদি তাঁকে 'ওঁ' বলে ডাকে, তবে তিনি অধিক প্রীত হন। তাকে প্রিয়জন মনে করেন। ভগবানকে তুষ্ট করতে এই নামটি সুন্দর, মনোহর। এজন্য ওঙ্কারকে প্রণব বলে। শ্রেষ্ঠ পুরুষের বাচক শব্দ প্রণব। ঈশ্বর বাচ্য আর প্রণব বাচক। উপনিষদ বলছে, গাছের সব পাতা যেমন যেমন কান্ডের সাথে যুক্ত, ঠিক একই ভাবে সব শব্দই একত্রিত আছে 'ওঁ' উচ্চারণের মধ্যে।'ওঁ'ই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। শুধু মানুই নয়, সমগ্র মহাবিশ্বেরও এই একীভূত হওয়ার প্রচেষ্টা আছে সরলীকরণের মাধ্যমে। আর পরমেশ্বর ঈশ্বর এটাই আশা করেন।
'ওঁ' এর প্রথম অর্থ হলো, অন্য কোনো অর্থ যুক্ত না করে মূলতত্ত্বকে ঘনীভূত রুপ দেওয়া এবং সহজ করা। 'ওঁ' এর দ্বিতীয় মানুষের প্রয়োজনে হ্যাঁ বোধক সাড়া দেওয়া। 'ওঁ' ই হচ্ছে পরিপূর্ণতা। স্তোত্র, প্রার্থনা এবং ধ্যান শুরু হয় গায়ত্রী মন্ত্র দিয়ে। যার শুরু ও শেষ 'ওঁ' দিয়ে। এই দুটি বস্তুই বিভিন্ন ভাবে পরম পুরুষকেই বোঝায়। 'ওঁ' ই শ্বাশত ব্রাহ্মণ, 'ওঁ' ই শেষ অবলম্বন। যার উপর মানুষ নিজেকে সমর্পণ করে দিতে পারে জীবন যাত্রার শেষে। অর্থাৎ ব্রহ্মনে মিলিত হওয়ার সময়ে। 'ওঁ' এর প্রতি উচ্চারণেই গভীর থেকে গভীরতর উপলব্ধি আসে সেই পরম একের। 'ওঁ' উচ্চারিত হয়ে থাকে শাস্ত্রাদি পাঠ, পবিত্র কাজ ইত্যাদির আরম্ভে এবং শেষে। যোগী পুরুষেরা অনবরত 'ওঁ' ধ্বনি উচ্চারণ করে থাকেন।
বারবার 'ওঁ' ধ্বনি উচ্চারণ এবং শ্রবণ মঙ্গলকারক। 'ওঁ' কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রার্থনার বস্তু নয়, এ সকলের, সার্বজনীন। 'ওঁ' কোনো দেবতার প্রার্থনার মন্ত্র নয়। সমগ্র বিশ্বপ্রপঞ্চকের মূল কথা নিহিত আছে এই শব্দে। এই ডাকটি একটি স্বর্গীয় বস্তু। সামগ্রিক পরমার্থিক চিন্তার আত্মসমর্পণ বলা যায় 'ওঁ' কে। 'ওঁ' ধ্বনির বিনাশ নেই। 'ওঁ' ই ব্রাহ্মণ, 'ওঁ' ই শব্দব্রহ্ম। 'ওঁ' শুধু ধ্বনিই নয়, নীরবতাও। এই মহাধ্বনি উচ্চারণের মাধ্যমে এক নীরবতার স্তর আছে, যার নাম 'তুরীয়'। প্রকৃত ঞ্জান এবং আত্মোপলব্ধির জন্য এই মাধুর্যমন্ডিত নীরবতাই অভিপ্রেত। প্রকৃত সাধণার শুরু নীরবতায় এবং অনন্ত শাশ্বত নীরবতায়ই মানুষের পরম প্রাপ্তি। 'ওঁ' ই প্রথম শব্দ, মহাবিশ্বের প্রথম প্রতীক, প্রথম বিকাশ, বাস্তব সত্তার ঘনীভূত রুপ। ইহা পৃথিবীর আগে, ইহাই পৃথিবীর শেষ কথা, ইহাই সারকথা। এর নিজস্ব কোনো অর্থ নেই। কারণ সমগ্র অর্থের এই ই উৎস। 'ওঁ' একের প্রতীক। পরমকরুনাময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অতি প্রিয় এই ওঙ্কার শব্দ।
তাঁর শ্রীচরণে আমাদের ভক্তিপূর্ণ অর্ঘ্য,
"ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়।"
!!হরে কৃষ্ণ হরে কৃৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে!!
!!জয় শ্রীহরি!! জয় রাধে!!
Written by: Ripon Saha
Like our page: সনাতন সন্দেশ - Sanatan Swandesh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন