পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একদশীর নাম " সফলা " । ব্রহ্মাণ্ড পুরাণে যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে এই তিথির মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে । যুধিষ্ঠির বললেন __ হে প্রভু ! পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম , বিধি এবং পূজ্যদেবতা বিষয়ে আমার কৌতূহল নিবারণ করুন ।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন __ হে মহারাজ ! আপনার প্রতি স্নেহবশত সেই ব্রত কথা বিষয়ে বলছি । এই ব্রত আমাকে যেরকম সন্তুষ্ট করে , বহু দানদক্ষিণাযুক্ত যজ্ঞাদি দ্বারা আমি সেরকম সন্তুষ্ট হই না । তাই যত্নসহকারে এই ব্রত পালন করা কর্তব্য । পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম " সফলা " । নাগদের মধ্যে যেমন শেষ নাগ , পক্ষীদের মধ্যে যেমন গরুড় , মানুষের মধ্যে যেমন ব্রাহ্মণ , দেবতাদের মধ্যে নারায়ণ সর্বশ্রেষ্ঠ , তেমনই সকল ব্রতের মধ্যে একাদশী ব্রতই সর্বশ্রেষ্ঠ । হে মহারাজ ! যারা এই ব্রত পালন করেন , তারা আমার অত্যন্ত প্রিয় । তাদের এজগতে ধনলাভ ও অনায়াসে প্রাপ্ত হওয়া যায় ।
মহিষ্মত নামে এক রাজা প্রসিদ্ধ চম্পাবতি নগরে বাস করতেন । রাজার চারজন পুত্র ছিল । কিন্তু তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র লুম্ভক সর্বদা পরস্ত্রী গমন , মদ্যপান প্রভৃতি অসৎ কার্যে লিপ্ত ছিল । সে সর্বক্ষণ ব্রাহ্মণ , বৈষ্ণব ও দেবতাদের নিন্দা করত । পুত্রের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজা তাকে রাজ্য থেকে বের করে দিলেন । স্ত্রী - পুত্র , পিতা - মাতা , আত্মীয়স্বজন পরিত্যক্ত হয়ে সে এক গভীর বনে প্রবেশ করল । সেখানে কখনও জীবহত্যা আবার কখনও চুরি করে জীবন ধারণ করতে লাগল ।
কিছুদিন পরে একদিন সে নগরে প্রহরীদের কাছে ধরা পড়ল । কিন্তু রাজপুত্র বলে সেই অপরাধ থেকে সে মুক্তি পেল । পুনরায় সে বনে ফিরে গিয়ে জীবহত্যা ও ফলমূল আহার করে দিন যাপন করতে লাগল । ঐ বনে বহু বছরের পুরানো একটি বিশাল অশ্বত্থ বৃক্ষ ছিল । সেখানে ভগবান শ্রী বাসুদেব বিরাজমান বলে বৃক্ষটি দেবত্ব প্রাপ্ত হয়েছে । সেই বৃক্ষতলে পাপবুদ্ধি লুম্ভক বাস করত । বহুদিন পর তার পূর্বজন্মের কোন পুণ্য ফলে সে পৌষ মাসের দশমী দিনে কেবল ফল আহারে দিন অতিবাহিত করল । কিন্তু রাত্রিতে অসহ্য শীতের প্রকোপে সে মৃতপ্রায় হয়ে রাত্রিযাপন করল । পরদিন সূর্যোদয় হলেও সে অচেতন হয়েই পড়ে রইল । দুপুরের দিকে তার চেতনা ফিরল । ক্ষুধা নিবারণের জন্য সে অতিকষ্টে কিছু ফল সংগ্রহ করল । এরপর সেই বৃক্ষতলে এসে পুনরায় বিশ্রাম করতে থাকল । রাত্রিতে খাদ্যাভাবে সে দুর্বল হয়ে পড়ল ।
সে প্রাণরক্ষার্থে ঈশ্বরের উদ্দেশে ফলগুলি নিয়ে _ " হে ভগবান ! আমার কি গতি হবে " বলে অশ্রুপাত করতে করতে সেই বৃক্ষমূলে , " হে লক্ষ্মীপতি নারায়ণ ! আপনি প্রসন্ন হোন " বলে নিবেদন করল । এইভাবে সে অনাহারে ও অনিদ্রায় সেই রাত্রি যাপন করল । ভগবান নারায়ণ সেই পাপী লুম্ভকের রাত্রি জাগরণকে একাদশীর জাগরণ এবং ফল অর্পণকে পূজা বলে গ্রহণ করলেন । এইভাবে অজ্ঞাতসারে লুম্ভকের সফলা একাদশী ব্রত পালন হয়ে গেল । প্রাতঃকালে আকাশে দৈববাণী হল _ হে পুত্র তুমি সফলা ব্রতের পুণ্য প্রভাবে রাজ্য প্রাপ্ত হবে । সেই দৈববাণী শোনা মাত্র লুম্ভক দিব্যরূপ লাভ করল । স্ত্রীপুত্র সহ কিছুকাল রাজ্যসুখ ভোগের পর পুত্রের উপর রাজ্যের ভার দিয়ে সে সন্ন্যাস আশ্রম গ্রহণ করল । অবশেষে মৃত্যুকালে সে অশোক অভয় ভগবানের কাছে ফিরে গেল ।
হে মহারাজ ! এভাবে সফলা একাদশী যিনি পালন করেন , তিনি জাগতিক সুখ ও পরে মুক্তি লাভ করেন । এই ব্রতে যারা শ্রদ্ধাশীল তাঁরাই ধন্য । তাঁদের জন্ম সার্থক , এতে কোন সন্দেহ নেই । এই ব্রত পাঠ ও শ্রবণে মানুষের রাজসূয় যজ্ঞের ফল লাভ হয় ।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন __ হে মহারাজ ! আপনার প্রতি স্নেহবশত সেই ব্রত কথা বিষয়ে বলছি । এই ব্রত আমাকে যেরকম সন্তুষ্ট করে , বহু দানদক্ষিণাযুক্ত যজ্ঞাদি দ্বারা আমি সেরকম সন্তুষ্ট হই না । তাই যত্নসহকারে এই ব্রত পালন করা কর্তব্য । পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশীর নাম " সফলা " । নাগদের মধ্যে যেমন শেষ নাগ , পক্ষীদের মধ্যে যেমন গরুড় , মানুষের মধ্যে যেমন ব্রাহ্মণ , দেবতাদের মধ্যে নারায়ণ সর্বশ্রেষ্ঠ , তেমনই সকল ব্রতের মধ্যে একাদশী ব্রতই সর্বশ্রেষ্ঠ । হে মহারাজ ! যারা এই ব্রত পালন করেন , তারা আমার অত্যন্ত প্রিয় । তাদের এজগতে ধনলাভ ও অনায়াসে প্রাপ্ত হওয়া যায় ।
মহিষ্মত নামে এক রাজা প্রসিদ্ধ চম্পাবতি নগরে বাস করতেন । রাজার চারজন পুত্র ছিল । কিন্তু তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র লুম্ভক সর্বদা পরস্ত্রী গমন , মদ্যপান প্রভৃতি অসৎ কার্যে লিপ্ত ছিল । সে সর্বক্ষণ ব্রাহ্মণ , বৈষ্ণব ও দেবতাদের নিন্দা করত । পুত্রের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজা তাকে রাজ্য থেকে বের করে দিলেন । স্ত্রী - পুত্র , পিতা - মাতা , আত্মীয়স্বজন পরিত্যক্ত হয়ে সে এক গভীর বনে প্রবেশ করল । সেখানে কখনও জীবহত্যা আবার কখনও চুরি করে জীবন ধারণ করতে লাগল ।
কিছুদিন পরে একদিন সে নগরে প্রহরীদের কাছে ধরা পড়ল । কিন্তু রাজপুত্র বলে সেই অপরাধ থেকে সে মুক্তি পেল । পুনরায় সে বনে ফিরে গিয়ে জীবহত্যা ও ফলমূল আহার করে দিন যাপন করতে লাগল । ঐ বনে বহু বছরের পুরানো একটি বিশাল অশ্বত্থ বৃক্ষ ছিল । সেখানে ভগবান শ্রী বাসুদেব বিরাজমান বলে বৃক্ষটি দেবত্ব প্রাপ্ত হয়েছে । সেই বৃক্ষতলে পাপবুদ্ধি লুম্ভক বাস করত । বহুদিন পর তার পূর্বজন্মের কোন পুণ্য ফলে সে পৌষ মাসের দশমী দিনে কেবল ফল আহারে দিন অতিবাহিত করল । কিন্তু রাত্রিতে অসহ্য শীতের প্রকোপে সে মৃতপ্রায় হয়ে রাত্রিযাপন করল । পরদিন সূর্যোদয় হলেও সে অচেতন হয়েই পড়ে রইল । দুপুরের দিকে তার চেতনা ফিরল । ক্ষুধা নিবারণের জন্য সে অতিকষ্টে কিছু ফল সংগ্রহ করল । এরপর সেই বৃক্ষতলে এসে পুনরায় বিশ্রাম করতে থাকল । রাত্রিতে খাদ্যাভাবে সে দুর্বল হয়ে পড়ল ।
সে প্রাণরক্ষার্থে ঈশ্বরের উদ্দেশে ফলগুলি নিয়ে _ " হে ভগবান ! আমার কি গতি হবে " বলে অশ্রুপাত করতে করতে সেই বৃক্ষমূলে , " হে লক্ষ্মীপতি নারায়ণ ! আপনি প্রসন্ন হোন " বলে নিবেদন করল । এইভাবে সে অনাহারে ও অনিদ্রায় সেই রাত্রি যাপন করল । ভগবান নারায়ণ সেই পাপী লুম্ভকের রাত্রি জাগরণকে একাদশীর জাগরণ এবং ফল অর্পণকে পূজা বলে গ্রহণ করলেন । এইভাবে অজ্ঞাতসারে লুম্ভকের সফলা একাদশী ব্রত পালন হয়ে গেল । প্রাতঃকালে আকাশে দৈববাণী হল _ হে পুত্র তুমি সফলা ব্রতের পুণ্য প্রভাবে রাজ্য প্রাপ্ত হবে । সেই দৈববাণী শোনা মাত্র লুম্ভক দিব্যরূপ লাভ করল । স্ত্রীপুত্র সহ কিছুকাল রাজ্যসুখ ভোগের পর পুত্রের উপর রাজ্যের ভার দিয়ে সে সন্ন্যাস আশ্রম গ্রহণ করল । অবশেষে মৃত্যুকালে সে অশোক অভয় ভগবানের কাছে ফিরে গেল ।
হে মহারাজ ! এভাবে সফলা একাদশী যিনি পালন করেন , তিনি জাগতিক সুখ ও পরে মুক্তি লাভ করেন । এই ব্রতে যারা শ্রদ্ধাশীল তাঁরাই ধন্য । তাঁদের জন্ম সার্থক , এতে কোন সন্দেহ নেই । এই ব্রত পাঠ ও শ্রবণে মানুষের রাজসূয় যজ্ঞের ফল লাভ হয় ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন