০২ সেপ্টেম্বর ২০১২

সনাতন হলো সত্তের ধারক

প্রমানিত সত্য হলো বিজ্ঞান, আর সনাতন হলো সত্তের ধারক। নিত্য নতুন আবিষ্কার কে সনাতন সব সময় শ্রদ্ধা করেছে। সনাতন প্রকৃতিকেই ঈশ্বর বলে (বেদ মতে), সুতরাং বিজ্ঞান ও সনাতনের মধ্যে কোন প্রতিযোগিতা নেয়। সনাতন সত্যকে মেনে নিতে সদা প্রস্তুত। বিজ্ঞান এ
র আবিষ্কার মানুষ কে আজ অনেক অনেক উন্নত করেছে। সভ্যতাকে করেছে বিকশিত, কিন্তু মানুষ এখনো অনেক অসহায়, কারণ প্রকৃতির সাহায্য ছাড়া এখনো একটি বালি কনাও তৈরি করতে পারেনি মানুষ। আমার মনে হয় সনাতন এর সাথে বিজ্ঞানের দৈরথ তৈরি না করে সনাতন এর ধারণা কে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান কে আরো সমৃদ্ধ করা উচিৎ। সূর্যের সাত রঙের বর্ণনা বেদ ও বিষ্ণু পুরাণে আছে। কিন্তু বেদ কে অন্ধকারে রাখার কারণে সেটি প্রকাশিত হয় নি। মহা জ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন পড়ে টা আবিষ্কার করেন। আমি প্রতিটি বিজ্ঞানী কে এক এক জন ঋষি মনে করি, তিনি যে ধর্মের অবলম্বী হোন না কেন বা ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী না হলেও তাঁকে আমি ঋষিই মনে করি। প্রজুক্তির কোন সাহায্য ছারাই সপ্ত মণ্ডল সহ মাহাকাশের অনেক অনেক ধারণা কে বেদ উল্লেখ করেছে অনেক অনেক আগেই। বেদ এর সেই আবিষ্কার কে আমি বিজ্ঞান ই বলি। সুতরাং সনাতন ও বিজ্ঞান অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত।

আমাদের মহা জ্ঞান বেদ কে আমি চর্চা করার চেষ্টা করছি বেশ কিছুদিন ধরেই। যা শিখছি চেষ্টা করছি সবার সাথে তা শেয়ার করার জন্যে। আমি অবাক ও বিস্মিত হচ্ছি এই ভেবে যে, হাজার হাজার বছর আগে কিভাবে আমাদের মহা জ্ঞানী মুনি ঋষিরা এতো এতো আবিষ্কার আমাদের জন্যে করে গেলেন। কত বেশী জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন তাঁরা। আমরা চর্চা করি না বলেই সনাতন কে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়। আমি বেদ চর্চার সময় ভালো বা খারাপ কোন রকমের ধারণা ছারাই শুদ্ধ ও শূন্য মনেই শুরু করি। যাতে আমার নিজের কোন ধারণা জ্ঞান চর্চায় অন্তরায় না হয় এবং আমি যত বেদ এর জ্ঞানের মধ্যে প্রবেশ করছি তত বিস্মিত হচ্ছি। এতো এতো সমৃদ্ধ জ্ঞান থাকতে কেন এমন একটা জ্ঞান কে অন্ধকারে রেখেছে সমাজ !!!!!!!! দয়া করে কেও, কার দোষ বেদ কে অন্ধকারে রাখার পেছনে এ নিয়ে তর্ক করবেন না। তার চেয়ে বেদ পড়ার অভ্যাস করুণ। এতে মহা জ্ঞান সবার ঘড়ে ঘড়ে প্রবেশ করব। সমাজ কুসংস্কার মুক্ত হবে। আমি এ কথা নিশ্চিৎ ভাবেই বলছি বৈদিক সমাজ আধুনিক ত্বম সমাজ ছিলো।

ধর্ম মানতে হবে হবে কথা নেয়, কিন্তু ধর্ম কে জানতে হবে। সবচেয়ে আদি সনাতন ধর্মে কি আছে তা জানার চেষ্টা করুণ কেন তা এতদিন ধরে টিকে আছে? কি আছে এতে? মিথ্যে হলে তো এতদিন ধরে টিকে থাকতে পারতো না।

সনাতন ধর্মের নির্যাশ বলতে আমি পেয়েছি "জীব আত্মায় পরম আত্মা" "যত্র জীব তত্র শিব" "সকল পথ ই ঈশ্বরের দিকে ধাবিত" "যত মত তত পথ" "জীবে প্রেম করে যে জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর" "মেরেছিস কলশীর কানা তা বলে কি প্রেম দিব না" তাহলে আপনি নাস্তিক হোন আর আস্তিক সনাতন এর সাথে আপনার তো কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। লোকাচার কে ধর্ম বলে অনেকেই ভুল করেন বলেন এবং মনে করেন সনাতন কুসংস্কারে ভরা। যেমন ধরুন সতী দাহ প্রথা বা বিধবা প্রথা এগুলি কি ছিলো বেদে? অথচ অনেকেই মনে করেন এগুলি আমাদের সনাতনের কু-সংস্কার।

সনাতন ধরমালম্বিরা প্রকৃতি পূজারী। সনাতন ধর্ম মতে প্রকৃতিই হলো ভগবান। আপনার খেয়াল করলে দেখবেন আমাদের প্রত্যেকটি পুজাতেই গাছ পালার ব্যবহার আছে। যেমন ধরেন বেল পাতা, তুলশী পাতা, বট পাতা, অশত্ত পাতা, আম পাতা সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল, ফল সহ প্রকৃতির সব সব কিছুকেই ব্যবহার করতে বলেছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রকৃতি সংরক্ষণ। পূজার মাধ্যমে প্রকৃতি কে সংরক্ষণ করতে বলেছে সনাতন। আবার প্রাণী কুল কে রক্ষার জন্যে প্রত্যেক দেব দেবী এক এক টা বাহন নিয়েছেন, যা আমাদের ইকোসিস্টেম কে রক্ষার কাজে সহায়তা করে। এত বড় গনেশ দেবতা কিন্তু তার বাহন ইঁদুর, আবার প্যাঁচা হলো লক্ষ্মীর বাহন === এভাবে প্রাণী কুল কে ও সন্মানিত করেছে সনাতন।

অথচ না জেনে না বুঝে অনেকেই বলেন আমরা বহু ঈশ্বর বাদী। প্রকৃত পক্ষে ঈশ্বর নিজে কিছু করেন না তিনি করান। তাঁর শক্তি কে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বিভিন্ন জনের মধ্যে সেই শক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। একে গণতন্ত্র ও বলতে পারেন। তাহলে সনাতনে গণতন্ত্র অনেক আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত ছিলো।

সবার প্রতি আমার অনুরোধ "ধর্ম মানতে হবে কথা নেয় জানতে হবে" না জেনে কেও কুমন্তব্য করবেন না। সনাতনের একটি ঘটনা দিয়ে কোন বিষয় কে বিশ্লেষণ করবেন না সনাতনের এক এক টা ঘটনার পেছনে অনেক অনেক গুলি কারণ জড়িত থাকে। যেমনঃ স্বর্গের দার রক্ষী অভিশপ্ত হয়ে তিন বার পৃথিবীতে জন্ম নেন ১/- হিরন্যক ২/- রাবণ ৩/- কংশ। অথচ নচিকেতা বলে বসলেন রাম যদি হেরে যেত রাবণ রাজ হতো সেখানে (রবন ছিলেন মহা জ্ঞানী তিনি নিজেই জান্তেন রাম দ্বারা তিনি নিহত হবেন। আর এ কারণেই অকাল বোধনে নিজেই দুর্গা পূজা করে নিজের মৃত্যু কে ডেকে এনেছেন এবং মুক্ত হয়েছিলেন পৃথিবী থেকে)

তায় না জেনে কোন মন্তব্য করবেন না, জানার জন্যে প্রশ্ন করুণ। যারা জানবেন তাঁরা উত্তর দিবেন। সবার কাছে সব কিছু জানা থাকবে এমন ও কোণ কথা নেয়।

ঈশ্বর সবার মঙ্গল করুণ।


by Lincon Chakraborty
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।