ঐতিহাসিক কাল পর্বে, ভগবান বুদ্ধের পর স্বামী বিবেকানন্দের মাধ্যমে ভারতীয় অধ্যাত্ম তথা সনাতন হিন্দু ধর্মের আন্তর্জাতিক প্রসার শুরু হতে থাকে। বর্তমানে প্রচারণার সেই দায়িত্ব যে কজনের ওপর পরমেশ্বর বিশেষ ভাবে অর্পণ করেছেন ,শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর তাঁদের অন্যতম। ১৯৫৬ সালে , ১৩ মে , তামিলনাডুর পাপ নাশম তীর্থে তাঁর আবির্ভাব। সদ্য প্রয়াত আর এক মহাসাধক মহেশ যোগীর আশিস প্রাপ্ত রবি শঙ্কর ১৯৮২ তে দীর্ঘ সমাধি থেকে উত্থিত হয়ে যুগান্তকারী 'সুদর্শন ক্রিয়া" নামক সরল যৌগিক সাধনা প্রবর্তন করেন যা সারা বিশ্বে হিন্দু অধ্যাত্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে। তাঁর আরও এক বিশিষ্টটা এই যে ,বুদ্ধ,চৈতন্য, নানক,কবীর,রামকৃষ্ণ প্রমুখ মহাত্মার মত তিনি অধ্যাত্ম সম্পদ গোপন না রেখে জাতি- বর্ণ - ধর্ম- দেশ নির্বিশেষে বিতরন করছেন। এমনকি লাখ লাখ খ্রিস্টান, মুসলমান তাঁর পদপ্রান্তে বসে সনাতন হিন্দুত্বের পাঠ নিচ্ছেন। স্মরন কালের মধ্যে তিনি-ই একমাত্র ভারতীয় হিন্দু সাধক, যিনি পাকিস্তানের মাটিতে সুদর্শন ক্রিয়া ও ভজন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছেন। ইউনেসকো সহ বহু আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর বক্তব্য ও সুদর্শন ক্রিয়া ভারতের ঋষি সংস্কৃতির মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। দিব্য আনন্দের স্পর্শে বাঁচার নতুন মানে পাচ্ছে বিশ্ববাসী।
২২ মে ২০১৩
"এ মুহূর্তের অন্যতম জীবিত মহাপুরুষ শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর ও সনাতন হিন্দু ধর্মের বিশ্বজয়"
ঐতিহাসিক কাল পর্বে, ভগবান বুদ্ধের পর স্বামী বিবেকানন্দের মাধ্যমে ভারতীয় অধ্যাত্ম তথা সনাতন হিন্দু ধর্মের আন্তর্জাতিক প্রসার শুরু হতে থাকে। বর্তমানে প্রচারণার সেই দায়িত্ব যে কজনের ওপর পরমেশ্বর বিশেষ ভাবে অর্পণ করেছেন ,শ্রী শ্রী রবি শঙ্কর তাঁদের অন্যতম। ১৯৫৬ সালে , ১৩ মে , তামিলনাডুর পাপ নাশম তীর্থে তাঁর আবির্ভাব। সদ্য প্রয়াত আর এক মহাসাধক মহেশ যোগীর আশিস প্রাপ্ত রবি শঙ্কর ১৯৮২ তে দীর্ঘ সমাধি থেকে উত্থিত হয়ে যুগান্তকারী 'সুদর্শন ক্রিয়া" নামক সরল যৌগিক সাধনা প্রবর্তন করেন যা সারা বিশ্বে হিন্দু অধ্যাত্মের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে। তাঁর আরও এক বিশিষ্টটা এই যে ,বুদ্ধ,চৈতন্য, নানক,কবীর,রামকৃষ্ণ প্রমুখ মহাত্মার মত তিনি অধ্যাত্ম সম্পদ গোপন না রেখে জাতি- বর্ণ - ধর্ম- দেশ নির্বিশেষে বিতরন করছেন। এমনকি লাখ লাখ খ্রিস্টান, মুসলমান তাঁর পদপ্রান্তে বসে সনাতন হিন্দুত্বের পাঠ নিচ্ছেন। স্মরন কালের মধ্যে তিনি-ই একমাত্র ভারতীয় হিন্দু সাধক, যিনি পাকিস্তানের মাটিতে সুদর্শন ক্রিয়া ও ভজন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছেন। ইউনেসকো সহ বহু আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর বক্তব্য ও সুদর্শন ক্রিয়া ভারতের ঋষি সংস্কৃতির মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। দিব্য আনন্দের স্পর্শে বাঁচার নতুন মানে পাচ্ছে বিশ্ববাসী।
১২ মে ২০১৩
"মানবের মধ্য কেহ বড় নয়, কেহ ছোট নয় এবং কেহ মধ্যম নয়"
রাজা রামমোহন রায় বেদান্ত শাস্ত্রের বাংলার অনুবাদ করতে
প্রবৃত্ত হলে অনেকেই আপত্তি উত্থাপন করতে থাকেন এবং বলেন বেদের বাংলার অনুবাদ
করাতে ও শুনাতে পাপ আছে। শূদ্র তা শুনলে পাতক হয়। এই আপত্তির উত্তরে রাজা রামমোহন
রায় বলেন যে, যারা এরূপ আপত্তি করেন তাঁদের জানা উচিত যখন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়য়ের
শিক্ষকরা শ্রুতি, স্মৃতি, জৈমিনিসূত্র, পুরাণ ইত্যাদি শাস্ত্র ছাত্রকে পাঠ করান,
তখন বাংলা ভাষায় তাঁর ব্যাখ্যা করে থাকেন কিনা এবং ছাত্ররা এই ব্যাখ্যা শুনেন কি
না? তাছাড়া মহাভারত, যাকে পঞ্চম বেদ ও সাক্ষাৎ বেদার্থ বলা হয় তার শ্লোক সকল
শূদ্রের নিকট পাঠ করা হয় কি না? শূদ্রগণ সেই অর্থ ও ইতিহাস নিয়ে পরস্পরের মধ্য
কথোপথন করেন কিনা? যদি তাই হয় তাহলে শূদ্রগনের বেদমন্ত্র উচ্চারণে আপত্তি কোথায়
থাকলো বিষয়টি সবিনয়ে ভেবে দেখলেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে। শাস্ত্রে বলা আছেঃ
"গোহত্যা কেবল হিন্দুত্বের নয়, মানবতার-ও কলঙ্ক"- Debasish Singha
৫০০ বছর আগে বাঙ্গালী জাতির মাঝে শ্রীভগবান শ্রীচৈতন্য রূপে অবতার নিয়েছিলেন। সেইসময় নদিয়ায় কাজীর অত্যাচারে হিন্দুর ধন,প্রান,ধর্ম রক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শ্রীচৈতন্য শুধু সেই কুশাসন বন্ধ করেছিলেন তাই নয় ,কাজীর মনুষ্যত্ব জাগিয়ে দিয়েছিলেন । বলদ ও গোহত্যা প্রসঙ্গে মহাপ্রভু সেসময় কাজীকে বলেছিলেন যে, যেহেতু বলদ উদয় অস্ত লাঙল টেনে শস্য উৎপাদনে সাহায্য করে ,তাই সে পিতৃতুল্য। আর দুগ্ধজাত বস্তু দ্বারা আমাদের প্রতিপালন করে বলে গাভী মাতৃ তুল্য। তাই এদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এদের হত্যা না করে ভালবেসে সেবা করা উচিত।
"সগুন সাকার উপাসনা ও রামানুজাচার্য্যের বিশিষ্ট অদ্বৈতবাদ"- জয় রায়
শ্রীশ্রী গীতার দ্বাদশ অধ্যায়ের প্রথম শ্লোকেই অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করেছেন যে, “নিরাকার ও সগুণ সাকার উপাসনার মধ্য শ্রেষ্ঠ কোন উপাসনা?” তাঁর উত্তরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, সগুণ সাকার উপাসনাই শ্রেষ্ঠ। কারণ, নির্গুণ নিরাকার উপাসনা অত্যন্ত কঠিন। সগুণ সাকার উপাসনাই ভক্তগণের নিকট অনেক প্রিয়।
ভক্ত কে? তাঁর লক্ষণ কি? এই বিষয়েও দ্বাদশ অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। এখানে ভগবান স্বাধীন স্বার্থশূন্য, নিলিপ্ত থেকেও ভক্তাধীন হয়েছেন। এ কারণে ঈশ্বর সাধনায় ভক্ত হওয়া এবং ভক্তের উপাসনাই শ্রেষ্ঠ।
কারণ, ঈশ্বর সকল বাঁধা অতিক্রম করলেও ভক্তের নিকট ঠিকই বাঁধা পড়েন।
এখানে, সগুন সাকার উপাসক হিসেবে মহাত্মা রামানুজাচার্য্যের একটি কাহিনী তুলে ধরা হলঃ-
“ব্রহ্ম ও জীব স্বতন্ত্র। যেখানে, “ব্রহ্ম এক, অদ্বিতীয় এবং সর্বব্যাপী”; কিন্তু, “জীব এক নয়, জীব বহু, প্রতি শরীরে বিভিন্ন”।” - এটাই হচ্ছে রামানুজাচার্য্যের বিশিষ্ট অদ্বৈতবাদ।
অদ্বৈতবাদী রামানুজ বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ মতকে যেভাবে
সাজিয়েছিলেন তা হলো- “অদ্বৈতবাদকে অস্বীকার করে নয়, স্বীকার করেই বলছি যে কালের
সমুদ্রে যত স্বল্প সময়ই হোক আমার একটা অস্তিত্ব আছে এই পরিণামশীল জগতে। সমুদ্রের
জগতে ঢেউয়ের অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না, তার স্থিতিকাল যতটুকুই হোক।” মূলত, এ
মতবাদই বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ। সেই রামানুজের কাহিনীটি এরূপঃ
“রামানুজ অদ্বৈতবাদী হলেও মূর্তিপূজা করতেন। তাঁর
শিষ্যগণ স্বভাবতই একটু দ্বিধান্বিত ছিলেন গুরু মহারাজ এর উপর। কারণ, রামানুজ সকলকে
শিক্ষা দিচ্ছেন অদ্বৈতবাদ আর নিজে চর্চা করছেন দ্বৈতবাদ। একদিন সকালে রামানুজ পূজায়
বসেছেন, শীতের সকাল। এক শিষ্য তাঁর পূজার
কাছে গিয়ে বসলো। ইচ্ছা এই বিষয়ে গুরুদেব এর কাছ থেকে নিঃসংশয় হবেন। গুরুদেব রামানুজ শিষ্যকে বললেন, “আগুন নিয়ে আসো”। শিষ্য দৌড়ে গিয়ে
একটি জ্বলন্ত কাঠ নিয়ে আসলো। রামানুজ দেখে বললেন, “প্রজ্বলিত কাঠ কেন এনেছ? আগুন
নিয়ে আসো”। শিষ্য বুঝতে পারলো না যে এ উপায় ছাড়া আর কিভাবে আগুন আনা সম্ভব?
রামানুজ বললেন, “দেখ, এই পৃথিবীর সর্বত্রই আগুন আছে। এই
আগুনকে আমাদের কাজে লাগাতে হলে তাকে বসার আসন দিতে হয়, যেমন- কাঠ। ঐ কাঠে বসেই সে
আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ করে দেয়। সেরূপ ঈশ্বর সর্বত্রই আছেন। তার কাছে আমাদের প্রার্থনা জানাতে হলে তাকে বসবার আসন
দিতে হবে। তার বসবার আসন হল এই মূর্তি। এখানে বসেই তিনি আমার প্রার্থনা শুনে যা
করার তাই করবেন।””
সগুন সাকার উপাসনা সম্পর্কে এর চেয়ে ভাল উদাহরণ আর কি
হতে পারে???
"জয় রায়"