এই সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
প্রায় দশ বছর দেশের বাহিরে থাকি। বিগত দশ বছরে বিভিন্ন সময়ে দেশে যাওয়া হলেও নানা কারণে শারদীয় এই উৎসবে কখনই দেশে যাওয়া হয়নি। দেশের পূজোর খবরা খবর রাখতে তাই দ্বারস্থ হতে হয় অনলাইন পত্রিকাগুলোর। আর সেটাই দাঁড়ালো কাল হয়ে।
গুগলে বাংলায় বাংলাদেশে দুর্গা পূজা অথবা প্রতিমা ইত্যাদি দিয়ে সার্চ দিলেই বেরিয়ে আসে সব অপ্রত্যাশিত সংবাদ। পূজার আনন্দের চেয়ে মূর্তি ও প্রতিমা ভাঙ্গার সংবাদে সয়লাব গুগল সার্চ ইঞ্জিন। কৌতূহলবশতঃ বিগত দুই আড়াই মাসের মন্দির ভাঙ্গা, প্রতিমা ভাংচুর সহ নানা ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের সংবাদগুলো একত্রে জড়ো করতে গিয়ে দেখি এই সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এ যেন রীতিমত এক প্রতিযোগিতা। সাথে আরও একটি জিনিস উপলব্ধি করলাম যে বড় বড় নামীদামী সংবাদপত্রগুলো খুব সযত্নে বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। হয়ত তাদের মনে মূর্তি ভাঙ্গা একটি মামুলি বিষয়। এ যেনো অনেকটা মশা মেরে হাত লাল না করার মতো ব্যাপার।
তবে অনলাইনের কিছু স্থানীয় পত্রিকা ও গুটি কয়েক জাতীয় পত্রিকার বরাত দিয়ে একটি সংকলন তৈরি করলাম যা নিম্নে দেওয়া হলো :
১. শেরপুরে ৪০ বছরের পুরনো মন্দিরের আসন্ন দুর্গাপূজার ৩ টি প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। (শেরপুর নিউজ২৪ / তারিখ ১৩ই অক্টোবর ১৫)
২. ডিমলায় মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর (দৈনিক যুগান্তর/ ২রা সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৩. মধুখালীতে মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর (দৈনিক যুগান্তর/ ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৪. সাভারে একটি মন্দিরের কয়েকটি মূর্তি ভাংচুর (শীর্ষ নিউজ ডট কম ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৫. হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা রামকৃষ্ণ সেবা আশ্রমের দুর্গাপূজার দু’টি মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। (একুশে টেলিভিশন )
৬ .নাটোরে মন্দিরের ৫টি মূর্তি ভাংচুর (মানব কণ্ঠ ১০ অক্টোবর ২০১৫)
৭. ফরিদপুরে প্রতিমা ভাংচুর (বিডি নিউজ ২৪/ ২২ সেপ্টেম্বর)
৮. সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় আসন্ন দুর্গা পূজার জন্য তৈরি ১৫টি প্রতিমা ৯.ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। (বিডি নিউজ ২৪/ ৭ অক্টোবর ২০১৫)
১০.বড়লেখায় দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা (সিলেটটুডে ২৪/ ১৩ অক্টোবর ২০১৫)
১১. নাটোরের বড়াইগ্রামে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (আমাদের সময়ডট কম / ১০/১০/২০১৫)
১২.পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার পশ্চিম অলিপুরা গ্রামের একটি মন্দিরে দূর্গা প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। (হিন্দু ওয়াপ ডট কম/১১/১০/২০১৫)
১৩. সিরাজগঞ্জে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর (বিএম দ্য রিপোর্ট ডট কম ০১/১০/২০১৫)
১৪. হিন্দু মন্দিরে হামলা,বগুড়ার গাবতলিতে কালি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর (০২/০৯/২০১৫)
১৫.ভালুকায় মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর (ভালুকা নিউজ ২৪ডট কম ১৩/১০/২০১৫)
১৬. কালিয়াকৈরে প্রতিমা ভাংচুর (চ্যানেল সেভেন ডট কম ১৩/১০/১৫)
১৭.রায়গঞ্জে প্রতিমা ভাংচুর (অনাবিল ডট কম ১৩/১০/২০১৫)
১৮. মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের পাঁছ বারইল গ্রামে মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা -(বিডি লাভ ২৪ / অগাস্ট ২০১৫)
১৯. মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নে প্রতাবনগর গ্রামে সার্বজনীন শিব মন্দিরের দু’টি মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা (বাংলাদেশ প্রতিদিন অগাস্ট ২০১৫)
২০. মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নে প্রতাবনগর গ্রামে সার্বজনীন শিব মন্দিরের দু’টি মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা (খবর বিতান ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫)
২১. বাগেরহাটে সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা (বাংলা পোস্ট ২৪ ১৩ অক্টোবর ২০১৫)
২২. দাকোপে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (বিডি নিউজ ২৪)
২৩. বাগেরহাটের মোল্লাহাটে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ঐতিহ্যবাহী সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। (এপ্রিল ২০১৫, বাগেরহাট ইনফো )
২৪. দিনাজপুরে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ / উত্তর বাংলা ডট কম )
২৫. হালুয়াঘাটে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫/ ময়মনসিংহ বার্তা )
২৬. কাউনিয়ার অপরাজিতা কুঞ্জ মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (বরিশাল ওয়াচ ডট কম / অক্টোবর ২০১৫) .
২৭. সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী বারোয়ারী মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। (দৈনিক আমার দেশ /১৪ অক্টোবর ২০১৫)
২৮. ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ৫টি প্রতিমা ভাংচুর।(১৭ই অক্টোবর ২০১৫, ঢাকা নিউজ ২৪) (বাকি রয়েগেছে আরও অনেক )
যুদ্ধাপরাধীরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করেছিল, তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছিল এবং জোর করে কোথাও কোথাও ধর্মান্তরিত করেছিল। এসব আমাদের ইতিহাস। আমরা সব সময় এই গ্লানিকর ইতিহাসকে ভুলে থাকতে চাই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের কৃতকর্মের ইতিহাস ভুলে যেতে দেয় না।
হিন্দুদের ওপর অত্যাচারে বেশ সুবিধা তাদের। একে তো হিন্দুরা খুবই দুর্বল- সংখ্যা এবং সাহসের দিক থেকে, অন্যদিকে হিন্দুদের ভয় দেখিয়ে দেশত্যাগ করাতে পারলে তাদের ফেলে রাখা সম্পদের অধিকারী হওয়ার হাতছানি থাকে।
২০০১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে এদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ১৬.৮৩ মিলিয়ন। ২০১১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ানোর কথা ছিল ১৮.২ মিলিয়ন। কিন্তু ২০১১ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায় এই সংখ্যা ১২.৩ মিলিয়নে এসে দাঁড়ালো।
১৯৪৭, ১৯৫০, ১৯৬৪, ১৯৯০, ১৯৯২ ও ২০০১, সালের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় ঘটেছে। বাংলাদেশে ১৯৪৭ সালের পর থেকে আজ রাত অবধি অন্যধর্মের ওপর চলমান নির্যাতন ও নিপীড়নে আজ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান-অন্যা ন্য
বিশ্বাসের মানুষের সংখ্যা প্রায় দশ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনা হয়েছে। এটি
বর্বর ক্রম: গণহত্যা বা এথনিক ক্লিনজিং যা স্পষ্টভাবেই মানবতা বিরোধী
অপরাধ।
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো গত দুইমাসে সারা বাংলাদেশ জুড়ে ঘটে যাওয়া এই সব সাম্প্রদায়িক ঘটনায় গ্রেফতার হয়নি একজনও। আর গ্রেফতার হলেও সেটা খুবই নগণ্য। এই বিচারহীনতা আর উস্কে দিচ্ছে এসব ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠীকে। মুখে মুখে শুধু ধর্মীয় সহাবস্থান আর সম্প্রীতির ভুয়া বুলি তুললেও কোনো রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা নেই এই সমস্যা সমাধানের। হয়নি কোনো সুস্পষ্ট আইন। হয়নি কোনো বিচার বিভাগীয় তদন্ত।
গত বছর তিনেক ধরে ধর্মানুভুতি শব্দটি সরকার এবং বিরোধী দলের সবচেয়ে মুখরোচক শব্দ হলেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মানুভুতি নিয়ে কারো কোনো অনুভূতি নেই। কারণ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী জানে যে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক শুধুই একটি বিশেষে দলের জন্য, সুতরাং এ নিয়ে তাদের মাথা ব্যথার কারণ নেই। অন্যদিকে প্রগতিশীল স্যেকুলার ধ্বজাধারীরা ভাবছে আমাদের ভোট না দিয়ে এরা যাবে কোথায়।
যারা হিন্দুদের আক্রমণ করেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের বাড়িঘর, তাদের তো চিনতে কষ্ট হওয়ার কারণ নেই। তারা তো এ দেশেরই মানুষ। তাদের চিহ্নিত করে অপরাধের শাস্তি দেয়া কি একেবারেই অসম্ভব?
তবে কি কবির কথা মিথ্যা- মানুষ কি মানুষের জন্য নয়? রাষ্ট্র কি মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারছে না? গুটিকতক নরপশু আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী অসাম্প্রদায়িক অস্তিত্বকে নষ্ট করে দেবে, আর আমাদের সরকার ও রাষ্ট্র শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে- এটাই কি আমাদের নিয়তি? মানুষ হয়ে আমরা মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারব না- এমন সমাজই কি আমাদের নিয়তি? এমন নিয়তিকে আমরা মেনে নিতে পারছি না।
আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ব্যাপারে ইন্ধন দান এবং হামলার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার ক্ষেত্রে যদি বিএনপি-জামাতকে দায়ী করা যায়, তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতা, ক্ষমতায় থেকেও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত না করা এবং উপরন্তু এই বিষয়টাকে ব্যবহার করে নোংরা রাজনীতির জন্য আওয়ামীলীগও কি দায় এড়াতে পারে?
অসীম চক্রবর্তী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী লেখক
http:// www.sylhettoday24.com/ opinion/details/8/250
প্রায় দশ বছর দেশের বাহিরে থাকি। বিগত দশ বছরে বিভিন্ন সময়ে দেশে যাওয়া হলেও নানা কারণে শারদীয় এই উৎসবে কখনই দেশে যাওয়া হয়নি। দেশের পূজোর খবরা খবর রাখতে তাই দ্বারস্থ হতে হয় অনলাইন পত্রিকাগুলোর। আর সেটাই দাঁড়ালো কাল হয়ে।
গুগলে বাংলায় বাংলাদেশে দুর্গা পূজা অথবা প্রতিমা ইত্যাদি দিয়ে সার্চ দিলেই বেরিয়ে আসে সব অপ্রত্যাশিত সংবাদ। পূজার আনন্দের চেয়ে মূর্তি ও প্রতিমা ভাঙ্গার সংবাদে সয়লাব গুগল সার্চ ইঞ্জিন। কৌতূহলবশতঃ বিগত দুই আড়াই মাসের মন্দির ভাঙ্গা, প্রতিমা ভাংচুর সহ নানা ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের সংবাদগুলো একত্রে জড়ো করতে গিয়ে দেখি এই সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এ যেন রীতিমত এক প্রতিযোগিতা। সাথে আরও একটি জিনিস উপলব্ধি করলাম যে বড় বড় নামীদামী সংবাদপত্রগুলো খুব সযত্নে বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। হয়ত তাদের মনে মূর্তি ভাঙ্গা একটি মামুলি বিষয়। এ যেনো অনেকটা মশা মেরে হাত লাল না করার মতো ব্যাপার।
তবে অনলাইনের কিছু স্থানীয় পত্রিকা ও গুটি কয়েক জাতীয় পত্রিকার বরাত দিয়ে একটি সংকলন তৈরি করলাম যা নিম্নে দেওয়া হলো :
১. শেরপুরে ৪০ বছরের পুরনো মন্দিরের আসন্ন দুর্গাপূজার ৩ টি প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। (শেরপুর নিউজ২৪ / তারিখ ১৩ই অক্টোবর ১৫)
২. ডিমলায় মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর (দৈনিক যুগান্তর/ ২রা সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৩. মধুখালীতে মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর (দৈনিক যুগান্তর/ ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৪. সাভারে একটি মন্দিরের কয়েকটি মূর্তি ভাংচুর (শীর্ষ নিউজ ডট কম ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৫)
৫. হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা রামকৃষ্ণ সেবা আশ্রমের দুর্গাপূজার দু’টি মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। (একুশে টেলিভিশন )
৬ .নাটোরে মন্দিরের ৫টি মূর্তি ভাংচুর (মানব কণ্ঠ ১০ অক্টোবর ২০১৫)
৭. ফরিদপুরে প্রতিমা ভাংচুর (বিডি নিউজ ২৪/ ২২ সেপ্টেম্বর)
৮. সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় আসন্ন দুর্গা পূজার জন্য তৈরি ১৫টি প্রতিমা ৯.ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। (বিডি নিউজ ২৪/ ৭ অক্টোবর ২০১৫)
১০.বড়লেখায় দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা (সিলেটটুডে ২৪/ ১৩ অক্টোবর ২০১৫)
১১. নাটোরের বড়াইগ্রামে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (আমাদের সময়ডট কম / ১০/১০/২০১৫)
১২.পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার পশ্চিম অলিপুরা গ্রামের একটি মন্দিরে দূর্গা প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। (হিন্দু ওয়াপ ডট কম/১১/১০/২০১৫)
১৩. সিরাজগঞ্জে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর (বিএম দ্য রিপোর্ট ডট কম ০১/১০/২০১৫)
১৪. হিন্দু মন্দিরে হামলা,বগুড়ার গাবতলিতে কালি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর (০২/০৯/২০১৫)
১৫.ভালুকায় মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর (ভালুকা নিউজ ২৪ডট কম ১৩/১০/২০১৫)
১৬. কালিয়াকৈরে প্রতিমা ভাংচুর (চ্যানেল সেভেন ডট কম ১৩/১০/১৫)
১৭.রায়গঞ্জে প্রতিমা ভাংচুর (অনাবিল ডট কম ১৩/১০/২০১৫)
১৮. মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের পাঁছ বারইল গ্রামে মন্দিরের মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা -(বিডি লাভ ২৪ / অগাস্ট ২০১৫)
১৯. মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নে প্রতাবনগর গ্রামে সার্বজনীন শিব মন্দিরের দু’টি মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা (বাংলাদেশ প্রতিদিন অগাস্ট ২০১৫)
২০. মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নে প্রতাবনগর গ্রামে সার্বজনীন শিব মন্দিরের দু’টি মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা (খবর বিতান ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫)
২১. বাগেরহাটে সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা (বাংলা পোস্ট ২৪ ১৩ অক্টোবর ২০১৫)
২২. দাকোপে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (বিডি নিউজ ২৪)
২৩. বাগেরহাটের মোল্লাহাটে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ঐতিহ্যবাহী সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। (এপ্রিল ২০১৫, বাগেরহাট ইনফো )
২৪. দিনাজপুরে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ / উত্তর বাংলা ডট কম )
২৫. হালুয়াঘাটে দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫/ ময়মনসিংহ বার্তা )
২৬. কাউনিয়ার অপরাজিতা কুঞ্জ মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর (বরিশাল ওয়াচ ডট কম / অক্টোবর ২০১৫) .
২৭. সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী বারোয়ারী মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। (দৈনিক আমার দেশ /১৪ অক্টোবর ২০১৫)
২৮. ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ৫টি প্রতিমা ভাংচুর।(১৭ই অক্টোবর ২০১৫, ঢাকা নিউজ ২৪) (বাকি রয়েগেছে আরও অনেক )
যুদ্ধাপরাধীরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করেছিল, তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছিল এবং জোর করে কোথাও কোথাও ধর্মান্তরিত করেছিল। এসব আমাদের ইতিহাস। আমরা সব সময় এই গ্লানিকর ইতিহাসকে ভুলে থাকতে চাই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের কৃতকর্মের ইতিহাস ভুলে যেতে দেয় না।
হিন্দুদের ওপর অত্যাচারে বেশ সুবিধা তাদের। একে তো হিন্দুরা খুবই দুর্বল- সংখ্যা এবং সাহসের দিক থেকে, অন্যদিকে হিন্দুদের ভয় দেখিয়ে দেশত্যাগ করাতে পারলে তাদের ফেলে রাখা সম্পদের অধিকারী হওয়ার হাতছানি থাকে।
২০০১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে এদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ১৬.৮৩ মিলিয়ন। ২০১১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ানোর কথা ছিল ১৮.২ মিলিয়ন। কিন্তু ২০১১ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায় এই সংখ্যা ১২.৩ মিলিয়নে এসে দাঁড়ালো।
১৯৪৭, ১৯৫০, ১৯৬৪, ১৯৯০, ১৯৯২ ও ২০০১, সালের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় ঘটেছে। বাংলাদেশে ১৯৪৭ সালের পর থেকে আজ রাত অবধি অন্যধর্মের ওপর চলমান নির্যাতন ও নিপীড়নে আজ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান-অন্যা
তবে সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো গত দুইমাসে সারা বাংলাদেশ জুড়ে ঘটে যাওয়া এই সব সাম্প্রদায়িক ঘটনায় গ্রেফতার হয়নি একজনও। আর গ্রেফতার হলেও সেটা খুবই নগণ্য। এই বিচারহীনতা আর উস্কে দিচ্ছে এসব ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠীকে। মুখে মুখে শুধু ধর্মীয় সহাবস্থান আর সম্প্রীতির ভুয়া বুলি তুললেও কোনো রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা নেই এই সমস্যা সমাধানের। হয়নি কোনো সুস্পষ্ট আইন। হয়নি কোনো বিচার বিভাগীয় তদন্ত।
গত বছর তিনেক ধরে ধর্মানুভুতি শব্দটি সরকার এবং বিরোধী দলের সবচেয়ে মুখরোচক শব্দ হলেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মানুভুতি নিয়ে কারো কোনো অনুভূতি নেই। কারণ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী জানে যে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক শুধুই একটি বিশেষে দলের জন্য, সুতরাং এ নিয়ে তাদের মাথা ব্যথার কারণ নেই। অন্যদিকে প্রগতিশীল স্যেকুলার ধ্বজাধারীরা ভাবছে আমাদের ভোট না দিয়ে এরা যাবে কোথায়।
যারা হিন্দুদের আক্রমণ করেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের বাড়িঘর, তাদের তো চিনতে কষ্ট হওয়ার কারণ নেই। তারা তো এ দেশেরই মানুষ। তাদের চিহ্নিত করে অপরাধের শাস্তি দেয়া কি একেবারেই অসম্ভব?
তবে কি কবির কথা মিথ্যা- মানুষ কি মানুষের জন্য নয়? রাষ্ট্র কি মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারছে না? গুটিকতক নরপশু আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী অসাম্প্রদায়িক অস্তিত্বকে নষ্ট করে দেবে, আর আমাদের সরকার ও রাষ্ট্র শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে- এটাই কি আমাদের নিয়তি? মানুষ হয়ে আমরা মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারব না- এমন সমাজই কি আমাদের নিয়তি? এমন নিয়তিকে আমরা মেনে নিতে পারছি না।
আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ব্যাপারে ইন্ধন দান এবং হামলার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার ক্ষেত্রে যদি বিএনপি-জামাতকে দায়ী করা যায়, তবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতা, ক্ষমতায় থেকেও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত না করা এবং উপরন্তু এই বিষয়টাকে ব্যবহার করে নোংরা রাজনীতির জন্য আওয়ামীলীগও কি দায় এড়াতে পারে?
অসীম চক্রবর্তী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী লেখক
http://
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন