ব্যাক্তিগনের হৃদয় এ সদ্ বুদ্ধি স্বরূপা ও সজ্জনগনের লজ্জারুপা , সেই তোমাকে আমরা ভক্তিভরে প্রনাম করি । হে দেবি , তুমি সমগ্র জগত প্রতিপালন কর । হে দেবী , দেবতা , দৈত্য , প্রমথ ও ব্রহ্মর্ষিগনের মধ্যে আপনার এই অনিবার্য ও অচিন্তনীয় স্বরূপ তোমার অসুর নাশকারী অসীম মহাবীর্য , সংগ্রামে তোমার এই অতি অদ্ভূত আচরণসমূহ আমরা কি প্রকারে বর্ণনা করব? তুমি সম্যক জগতের মূল কারণ । তুমি সত্ত্ব প্রভৃতি ত্রিগুণময়ী হলেও রাগ , দ্বেষ যুক্ত ব্যাক্তিগন তোমাকে জানতে পারে না । এমনকি তুমি বিষ্ণু ও শিব প্রভৃতি দেবতাদের অজ্ঞাত । তুমিই সকলের আশ্রয়স্বরূপা । ব্রহ্মা থেকে কীট পর্যন্ত এই অখিল বিশ্ব তোমার একাংশ মাত্র । কারণ তুমিই ত সকলের আশ্রয় স্বরূপা । তুমিই বিকার রহিতা পরমা আদ্যা প্রকৃতি । হে দেবী , যে মন্ত্রের সম্যক উচ্চারণে সকল দেবতাবৃন্দ তৃপ্তিলাভ করেন সেই স্বাহামন্ত্র তুমিই এবং পিতৃগনের তৃপ্তির স্বধামন্ত্র তো তুমিই । এজন্যই দেবযজ্ঞ ও পিতৃযজ্ঞ অনুষ্ঠানকারী সকল ব্যাক্তিগন স্বাহা ও স্বধা মন্ত্ররূপে উচ্চারন করে থাকেন ।
হে দেবী , যে পরাবিদ্যা মুক্তির কারণ , যোগশাস্ত্রে বর্ণিত দুঃসাধ্য যম নিয়ম প্রভৃতি মহাব্রত যার সাধন – তুমিই সেই ভগবতী পরমা ব্রহ্মবিদ্যা । সেজন্য যারা জিতেন্দ্রিয় তত্ত্বনিষ্ঠ , সমস্ত দোষবর্জিত , শুদ্ধচিত্ত ও মুমুক্ষু সেই মুনিগন তোমার সাধনা করে থাকেন । হে দেবী । তুমিই শব্দ ব্রহ্মস্বরূপিণী । তুমিই বিশুদ্ধ ঋক ও যজুঃ মন্ত্রসমূহের এবং উদাত্তদি স্বর ও মধুর পদোচ্চারন বিশিষ্ট সামমন্ত্রসমূহের আশ্রয় । তুমি বেদত্রেয় রুপিনী ও সর্ব ঐশ্বর্যময়ী দেবী ভগবতী । তুমিই জগত সংসার পালনের জন্য কৃষি বাণিজ্য প্রভৃতি বৃত্তি স্বরূপা এবং সারা জগতের পরম দুঃখ বিনাশকারিনী । হে দেবী যাঁর কৃপায় সর্ব শাশ্ত্রের মর্ম অবগত হওয়া যায় – তুমিই সেই মেধারুপিনী সরস্বতী । দুস্তর সংসার সমুদ্রের অদ্বিতীয়া তরণী স্বরূপা দুর্গাও তুমি । তুমিই নারায়নের হৃদয় বিহারিনী লক্ষ্মীদেবী এবং তুমিই মহাদেবের হৃদয় বিলাসিনী দেবী গৌরী । হে দেবী , তুমি প্রসন্না হও । কারন তুমিই জগতের কল্যাণকারিনী । তুমিই প্রসন্না হলেই জগতের কল্যাণ হয় । আর তুমি যদি তার বিপরীত হও । অর্থাৎ ক্রুদ্ধা হও তাহলে বংশ সমূহ নষ্ট হয় ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন