হরিভক্তিবিলাস বৈষ্ণব প্রামান্য গ্রন্থ। শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামীপাদ , শ্রীল সনাতন গোস্বামীপাদ রচনা করেছেন এই গ্রন্থ। এই গ্রন্থ মূলতঃ বিভিন্ন পুরান থেকে নেওয়া শ্লোক। শালগ্রাম অর্চনা সম্বন্ধে জন্মসূত্রে উপবীত ধারী গন আমাদের ওপরে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করেন।
হরিভক্তিবিলাস বলেন- শালগ্রামশিলাপূজং বিনা ষোহশ্নাতি কিঞ্চন । স চণ্ডালাদিবিষ্ঠায়ামাকল্পং জায়তে কৃমিঃ ।। পদ্ম পুরান (হরিভক্তিবিলাস, ৫ম বিলাস, অধ্যায়- শালগ্রামশিলাপূজানিত্যতা )
পদ্ম পুরান মতে- শালগ্রামের অর্চনা না করিয়া ভোজন করিলে চাণ্ডালাদির বিষ্ঠায় কৃমি হইয়া কল্প কাল যাবৎ অবস্থিতি করিতে হয় । গৌরবাচলশৃঙ্গাগ্রৈর্ভিদ্যতে তস্য বৈ তনুঃ । ন মতির্জায়তে যস্য শালগ্রামশিলাঅর্চনে ।। এবং শ্রীভগবান সর্বৈঃ শালগ্রামশিলাত্মকঃ । দ্বিজৈঃ স্ত্রীভিশ্চ শূদ্রেশ্চৈ পূজ্যো ভগবতঃ পরৈঃ ।।
স্কন্দ পুরান (হরিভক্তিবিলাস, ৫ম বিলাস, অধ্যায়- শালগ্রামশিলাপূজানিত্যতা, শ্লোক নং- ২২২ ) স্কন্দ পুরান মতে- শালগ্রাম শিলা অর্চনায় যার মতি না জন্মে, গিরিশৃঙ্গ পাতিত করিয়া তার দেহ বিদ্ধ করা হয় ।
সুতরাং বিধানে দীক্ষা গ্রহণ করে ভগবানের অর্চনা পরায়ণ হলে বিপ্র, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র, স্ত্রী সকলেই শালগ্রাম শিলা অর্চনা করিবেন । ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বিশাং সচ্ছৃদ্রাণামথাপি বা । শালগ্রামেহধিকারোহন্তি ন চাণ্যেষাং কদাচন । স্ত্রিয়ো যা যদি বা শূদ্রা ব্রাহ্মণাঃ ক্ষত্রিয়াদয়ঃ । পূজায়িত্বা শিলাচক্রং লভন্তে শাশ্বতং পদং ।।
স্কন্দ পুরান (হরিভক্তিবিলাস, ৫ম বিলাস, অধ্যায়- শালগ্রামশিলাপূজানিত্যতা) এর অর্থ- ঐ স্কন্দপুরানে একস্থানে লিখিত আছে যে বিপ্র, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ইহারা শালগ্রাম শিলার পূজার অধিকারী।
হরি ভক্ত শূদ্রের অধিকার আছে শালগ্রাম শিলা পূজার। কিন্তু হরি ভক্তি হীন দ্বিজাতির শালগ্রাম সেবার অধিকার নাই । কি শূদ্র, কি স্ত্রী, কি ক্ষত্র, কি বিপ্র সকলেই শালগ্রাম শিলার অর্চনা করিলে শাশ্বত পদ প্রাপ্তি হয় । গোস্বামী গন এখানে পূজার অধিকার বিষয়ে ও শালগ্রাম পূজার নিষেধাজ্ঞা ব্যাপারে বলেছেন- অতো নিষেধকং যদযদ্বচনং শ্রূয়তে স্ফুটং । অবৈষ্ণবপরং তত্ত্বদ্বিজ্ঞেয়ং তত্ত্বদর্শিভিঃ । (হরিভক্তিবিলাস, ৫ম বিলাস, অধ্যায়- শালগ্রামশিলাপূজানিত্যতা) গোস্বামী গনের মতে বিষ্ণু ভক্তিহীন মানুষ সে বিপ্র হলেও শালগ্রাম পূজায় অধিকার পায় না। নিষেধবাক্য কেবল তাঁদের জন্য। ইহাই হরিভক্তিবিলাসের সিদ্ধান্ত ।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন