আপনি জানেন কি? আদ্যাপীঠে প্রতিষ্ঠিতা আদ্যাদেবীর প্রতিমা কালীমূর্তি সদৃশ হলেও কিছু কিছু ভিন্নতা লক্ষিত হয়। যেমন ---- কালীমূর্তি ত্রিনয়না, কিন্তু আদ্যামূর্তি দ্বিনয়না, ললাটে চোখের পরিবর্তে শুধু একটি চিহ্ন রয়েছে। কালিকাদেবীর কটিদেশে দানবহস্ত দ্বারা নির্মিত কোমরবন্ধনী চোখে পড়ে, কিন্তু আদ্যামায়ের কটিদেশ অনাবৃত। দক্ষিণাকালিকার কেশদাম উন্মুক্ত ও চরণ পর্যন্ত লম্বিত,পক্ষান্তরে আদ্যাবিগ্রহের কেশগুচ্ছ তিনটি জটায় বদ্ধ। বামদিকের ওপরের হস্তে খড়গের বদলে ভোজালি জাতীয় অস্ত্র।
উপরোক্ত বৈসাদৃশ্যের কারণে দক্ষিণাকালীর ধ্যানমন্ত্রে আদ্যাকালীর পূজা প্রশস্ত নয়, অতএব শ্রীযুক্ত কালীপদ তর্কাচার্য্য একটি নব ধ্যানমন্ত্রের প্রণয়ন করেন, যার দ্বারা আদ্যাদেবী নিত্য ধ্যাতা -------
উপরোক্ত বৈসাদৃশ্যের কারণে দক্ষিণাকালীর ধ্যানমন্ত্রে আদ্যাকালীর পূজা প্রশস্ত নয়, অতএব শ্রীযুক্ত কালীপদ তর্কাচার্য্য একটি নব ধ্যানমন্ত্রের প্রণয়ন করেন, যার দ্বারা আদ্যাদেবী নিত্য ধ্যাতা -------
নীলাক্ষ-প্রস্তর-শ্যামাং শীর্ষে মুকুটমণ্ডিতাম্।
ললাটে নেত্র-চিহ্নেণ ত্রিনেত্রীকৃত বিগ্রহম্।।
অঘোরং পদ্মপত্রাভ বিশাল স্মিতলোচনাম্।
সুকৃষ্ণ প্রজ্বলদ্রূপ নেত্রদ্বয়-কনীনিকাম্।।
দৃষ্ট্যা সকরুণা-বাসাং জটা ত্রিত্বয়া শোভিতাম্।
সুপ্রসন্না মুখারভোজং নানা ভূষণভূষিতাম্।।
ঊর্ধ্ববামাকরে খড়গং নৃমুণ্ড বিভ্রতি মদঃ।
অভয়ঞ্চ বরং দক্ষ-করয়ো কথিত-ক্রমম্।।
লোলজিহ্বাং পদালম্বি মুণ্ডমালা-বিমণ্ডিতাম্।
সালঙ্কারং বরাকরাং কর কাঞ্চি বিবর্জিতাম্।।
পদ্মাকৃতি শিলাপীঠে শয়ন শিববক্ষসি।
স্থিতং দক্ষপদং নস্য তদাঃ ক্ষরৌ পরমপদম্।।
অমেয়ং অভয়ং দেবীং পরব্রহ্মস্বরূপিণীম্।
ধ্যায়েৎ আদ্যাং মনাদ্যান্তং চিৎ রূপা ধরং পরাম্।।
ললাটে নেত্র-চিহ্নেণ ত্রিনেত্রীকৃত বিগ্রহম্।।
অঘোরং পদ্মপত্রাভ বিশাল স্মিতলোচনাম্।
সুকৃষ্ণ প্রজ্বলদ্রূপ নেত্রদ্বয়-কনীনিকাম্।।
দৃষ্ট্যা সকরুণা-বাসাং জটা ত্রিত্বয়া শোভিতাম্।
সুপ্রসন্না মুখারভোজং নানা ভূষণভূষিতাম্।।
ঊর্ধ্ববামাকরে খড়গং নৃমুণ্ড বিভ্রতি মদঃ।
অভয়ঞ্চ বরং দক্ষ-করয়ো কথিত-ক্রমম্।।
লোলজিহ্বাং পদালম্বি মুণ্ডমালা-বিমণ্ডিতাম্।
সালঙ্কারং বরাকরাং কর কাঞ্চি বিবর্জিতাম্।।
পদ্মাকৃতি শিলাপীঠে শয়ন শিববক্ষসি।
স্থিতং দক্ষপদং নস্য তদাঃ ক্ষরৌ পরমপদম্।।
অমেয়ং অভয়ং দেবীং পরব্রহ্মস্বরূপিণীম্।
ধ্যায়েৎ আদ্যাং মনাদ্যান্তং চিৎ রূপা ধরং পরাম্।।
বঙ্গানুবাদ --- যিনি কৃষ্ণপ্রস্তরের ন্যায় কালো; রত্নখচিত মুকুট পরিহিতা; যাঁর ললাটে নয়নচিহ্ন বিদ্যমান; যে ত্রিনয়না মাতার আঁখি পদ্মপত্র সদৃশ বিশাল; যাঁর সামান্য দৃষ্টিপাত মাত্র অশেষ করুণার বর্ষণ হয়; যাঁর মস্তক ত্রিজটায় বেষ্টিত; যিনি মুখপদ্মে পরম প্রশান্তি ও ঔজ্জ্বল্য প্রদর্শন করেন; যিনি উত্থিত বামকরে অসি ও নিম্নকরে মুণ্ড এবং দক্ষিণ ঊর্ধ্বহস্তে অভয় ও নিম্নহস্তে বরমুদ্রা ধারণ করেন; যাঁর জিহ্বা লকলক করিতেছে ও যিনি মুণ্ডমালায় সজ্জিতা; যাঁর শ্রীঅঙ্গে দিব্য আভরণ কিন্তু কটিদেশ আবরণশূন্য; পদ্মাকৃতি শিলাবেদীতে শায়িত শিববক্ষের ওপরে যিনি ডানচরণ স্থাপন করেছেন ও বামপদটি রেখেছেন শিবের দক্ষিণ ঊরুতে; যিনি সর্বভয় হতে মুক্ত করেন; সেই সগুণা পরব্রহ্মস্বরূপা চিদ্রূপা অনন্ত আদ্যাদেবীকে ধ্যান করি।
লেখকঃ প্রীথিশ ঘোষ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন