কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। কিন্তু, ২৫শে ডিসেম্বর, ৩১শে ডিসেম্বর, ১লা জানুয়ারীর সঙ্গে সঙ্গে ভ্যালেনটাইনস ডে, পেরেন্টস ডে, চিলড্রেন্স ডে, ফ্রেন্ডসিপ ডে’র মতো একাধিক ‘দিবস’ নিয়ে বাঙালি মাতামাতি করায়, বাঙালির পার্বণের তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে এবং বাঙালি বিজ্ঞাপনের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে৷ সাধারণত, সাবেকি বাঙালি উৎসব বলতে নববর্ষ, রথযাত্রা, দুর্গাপূজো, লক্ষীপূজো, কালীপূজো, ভাইফোঁটা, পৌষ সংক্রান্তি, নব্বান্ন, দোলযাত্রা, চৈত্র সংক্রান্তি প্রভৃতি। কিন্তু সময় বদলেছে৷ অক্ষয় তৃতীয়া, পৌষ সংক্রান্তি, নব্বান্ন, চৈত্র সংক্রান্তির মতো এরকম অনেক উৎসব আজ বাঙালীর জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। অক্ষয় তৃতীয়ায় আগে কাসুন্দি বানানো হত, ১৪দিন ধরে চলত তার প্রস্তুতি, নতুন সরষে, হলুদ রোদে দেওয়া হত। বাড়িতে কদম ফুল আনা হোত, সেসব এখন অতীত। শীত কালে কলাই ডালের বড়ি দেওয়া হ'ত ইত্যাদি। যত নগরায়ন হচ্ছে, তত বাংলার নিজস্ব উৎসবগুলি কমে যাচ্ছে। আসলে এখন ইংরাজী তারিখ অনুযায়ী যেহেতু অফিসিয়াল কাজকর্ম হয় তাই বাংলা মাস নিয়ে খুব একটা কেউ মাথা ঘামায় না। বাঙালী অন্য দেশের সংস্কৄতিকে গ্রহন করছে এটা ভালো কথা, কিন্তু আক্ষেপ এটাই যে, অন্য দেশের সংস্কৄতি আমাদের সংস্কৃতির ঘাড়ে চেপে বসছে যে। ১৬ কলায় পূর্ণ হোক্ আপনার আগামী দিনের উচ্চাশা।
.
আজ ৩১শে ডিসেম্বর...... একটু বাদেই শুরু হবে ১লা জানুয়ারী, ২০১৭ সালের পথ চলা .....
অনেকেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভেসে চলেছেন .......
রাত জেগে পান-ভোজনানন্দে উল্লসিত কলতানে মুখরিত বাংলা ........
এই ভাবেই পশ্চিমী হাওয়ায় আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে হারাতে বসেছি .......
বাজী-পটকার শব্দে বাংলা মায়ের আর্তনাদের প্রতিবাদী কান্না ও ভাষা-শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে .........
আপনি কি এতটুকু ব্যথিত?
আপনি কি সামান্যও মর্মাহত?
আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন বাংলা মায়ের কান্না? নাহ্..... আপনি শুনতে পাচ্ছেন না!
আজ ৩১শে ডিসেম্বর...... একটু বাদেই শুরু হবে ১লা জানুয়ারী, ২০১৭ সালের পথ চলা .....
অনেকেই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভেসে চলেছেন .......
রাত জেগে পান-ভোজনানন্দে উল্লসিত কলতানে মুখরিত বাংলা ........
এই ভাবেই পশ্চিমী হাওয়ায় আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে হারাতে বসেছি .......
বাজী-পটকার শব্দে বাংলা মায়ের আর্তনাদের প্রতিবাদী কান্না ও ভাষা-শব্দ চাপা পড়ে যাচ্ছে .........
আপনি কি এতটুকু ব্যথিত?
আপনি কি সামান্যও মর্মাহত?
আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন বাংলা মায়ের কান্না? নাহ্..... আপনি শুনতে পাচ্ছেন না!
......... সময় এগিয়ে যাবে নিজের মত করে ....... আপনি তার সাথে কি গা ভাসাবেন?..... সেটা আপনার স্বাধীনতা ..... কিন্তু তা কখনই যেন উশৃঙ্খলতা যেন না হয় ............
যাই হোক্, আসুন জেনে নিই .......
যাই হোক্, আসুন জেনে নিই .......
ইংরাজী সাল নিয়ে কিছু কথা
====================
আমরা ইংরাজী নববর্ষ এলেই খুব মাতামাতি করি। ২০০৯ পেরিয়ে ২০১০ এ পড়লাম। এটা আমরা এখন সবাই জানি যে, যীশু খ্রীষ্টের জন্ম থেকে এই ইংরাজী সালের হিসাব চলে আসছে। যীশু খ্রীষ্টের জন্মের আগের সময়কে খ্রীষ্টপূর্ব এবং জন্মের পর থেকে খ্রীষ্টাব্দ বলা হয়।
যাই হোক, যে কোন ইংরাজী সালের শেষ থেকেই আগামী নতুন বছরের ক্যালেন্ডার নিয়ে আমরা খুব মাতামাতি করি। কে কটা ক্যালেন্ডার পাব, তাই নিয়ে চলে অলিখিত এক রেশারেশি।
আমরা চেষ্টা করি, এই ক্যালেন্ডারের ইতিহাসটা জানতে। ক্যালেন্ডার সৃষ্টির পেছনে দুইজনের নাম ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত। একজন রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার, আর একজন পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি। আমরা জানি, ১২ মাসে ১ বছর, বা ৩৬৫ দিনে ১ বছর। এই সাধারণ গণণাকে ইংরাজীতে “সিভিল ইয়ার”; বাংলায় “লৌকিক বছর” বলে। কিন্তু বিজ্ঞানের দৌলতে এখন আমরা জানি, পৃথিবীর সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে, ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৭.৫ সেকেণ্ড। এটাকেই “সোলার ইয়ার” বা “সৌরবছর” বলে বিজ্ঞানীরা বলেন; আর এটাকেই আসল বছর হিসেবে গণ্য করা হয়। (প্রসঙ্গত বলে রাখি, বরাহমিহির তাঁর “সূর্য্যসিদ্ধান্ত” গ্রন্থে আর পরে ৪৭৬ খ্রীষ্টাব্দে আর্য্যভট্ট কিনতু ঠিক এই হিসেবটাই দিয়ে গেছেন। মহামহোপাধ্যায় গোপীনাথ কবিরাজের গুরু বর্ধমানের শ্রী বিশুদ্ধানন্দ বলেছিলেন, হিমালয়ের আড়ালে এক গোপন জায়গায় একটি সূর্য্যমন্দির আছে। সেখানে শেখানো হয় সূর্য্যবিজ্ঞান। মহামহোপাধ্যায় গোপীনাথ কবিরাজ বেনারস সংস্কৃত কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে শেষ চাকরী করেছিলেন।)
আগে ধারণা ছিল, পৃথিবী সূর্য্যকে প্রদক্ষিণ করতে ৩৬৫ দিন নেয়। খ্রীস্টপূর্ব ৪৬ এ রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজার জানতে পারলেন যে ওটা ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা হবে। তা তখনই তিনি ঘোষণা করলেন- বছর ৩৬৫ দিনই হবে, আর বাকী ৬ ঘন্টা প্রতি ৪ বছর পরে পরে ১ দিন করে যোগ হবে। ৬x৪ = ২৪ ঘন্টা = ১ দিন। প্রতি ৪ বছর অন্তর, যে বছরে এই ১ টা দিন যোগ হবে, তাকে লিপ ইয়ার বলা হবে।
সম্রাট জুলিয়াস সিজারের নামানুসারে এই ক্যালেণ্ডারের নাম হলো- জুলিয়েন ক্যালেণ্ডার। এই ক্যালেণ্ডারের হিসেবে বছরে গড় দিন দাঁড়ালো ৩৬৫.২৫ দিন। কিন্তু, এই হিসেবটাও ভুল বলে প্রমাণিত হলো, যখন সৌর বছর ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৭.৫ সেকেণ্ড বলে প্রমাণিত হলো। এবার ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টা থেকে ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট ৪৭.৫ সেকেণ্ড বিয়োগ করলে দাঁড়ায় ১১ মিঃ ১২.৫ সেঃ। এবার ২৪x৬০x৬০=৮৬,৪০০ সেঃ,সুতরাং, দিনের হিসেবে ১১ মিঃ ১২.৫ সেঃ কে ৮৬,৪০০ ভাগ করলে হলো ০.০০৭৭৮৩৫৬ দিন(প্রায়)। তার মানে দাঁড়াল, প্রতি বছর ১১ দিন করে দিন এগোচ্ছে, কিন্তু সেটার হিসেব থাকছে না। এবার ১৭৫২ খ্রীষ্টাব্দে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরির এই হিসেব অনুযায়ী, ইংলাণ্ড ২রা সেপ্টেম্বর পরে ৩রা সেপ্টেম্বর না করে ১৩ ই সেপ্টেম্বর করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেণ্ডার চালু করে দিল। ধীরে ধীরে পৃথিবীর সারা দেশে এটা চালু হয়ে গেল। সুতরাং আমরা এখন গ্রেগরিয়ান ক্যালেণ্ডারই অনুসরণ করি।
লেখকঃ প্রীথশ ঘোষ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন