প্রশ্ন : কেন হিন্দু মেয়েরা ধর্মান্তরিত হয়? পর্ব - ২
উত্তর : গত পর্বে মূলত সংক্ষিপ্ত আলোচনা ছিল। তাহলে আজ একটু বড় পরিসরে আলোচনা করার ইচ্ছে প্রকাশ করছি। কি কেন কিভাবে?
১.কি জন্য ধর্মান্তরিত হয়?
২.কেন ধর্মান্তরিত হয়?
৩. কিভাবে ধর্মান্তরিত হয়?
একটু ভেবে দেখা যাক? নিজেকে প্রশ্ন করুন উত্তর এমনিতে দেওয়া শুরু হয়ে যাবে।
১....কি জন্য ধর্মান্তরিত হয়?
উত্তর : খুব সহজ প্রশ্ন আবার খুব কঠিন প্রশ্ন।
১. আমরা আসলে নিজেদের ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে মুখ বহু আগেই ঘুরিয়ে নিয়েছি। তবে আমরা আবার এতটাই উদার যে অপরের সংস্কৃতি গুলোকে আমরা নিজের ভেবে নিয়েছি।
২. আমাদের মধ্যে জড়তা প্রচুর, কোন ব্যাক্তি যে যদি ধর্মীয় কিছু সমন্ধে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে সে তেমন স্বচ্ছন্দ বোধ করে না।
৩. পরিবার বিরাট অংশে দ্বায়ী। আপনার সন্তান দের ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানের প্রাথমিক বলি আর গুরুদ্বায়িত্বই বলি না কেন, পরিবারের ভূমিকা টা অপরিসীম। কিন্তু আমরা চাই সব কিছু করুক কিন্তু মাঝখান থেকে ধর্মীয় ব্যাপারটি না খুব সুন্দর করে বাদ চলে যায়।
৪. সেকুলারিজম। আমারা তো সর্বধর্ম সমান এই রুপ মতবাদ নিয়ে চলি। কোন মুসলিম কি গিয়ে একটু জিজ্ঞাসা করুন, যে সেকুলারিজম মানে কি না? সে বলবে আমি মুসলিম, আমি সেকুলারিটি মানি না, আর কোনদিন মানবও না। তাহলে আপনি হিন্দু, আপনার হিন্দু হিসেবে পরিচয় দিতে সমস্যা কোথায়। সব সমান ভাবলে একটি প্রশ্নের উত্তর তাহলে আপনাদের কাছে থাকার কথা যারা সেকুলারিটি মানেন! উত্তর টি দিয়ে যাবেন
প্রশ্নটি হলো : হাতের পাঁচ টা আঙ্গুল কেন সমান না? সব সমান থাকা উচিত ছিল বোধ হয়। সবাই কেন আলাদা আলাদা সম্প্রদায়ের?
আপনি সেকুলারিটি মানেন আর নাই মানেন তাতে আমার কোন আপত্তি নেই! সেটা আপনার বিষয়। কিন্তু এই সেকুলারিটির কারনে খুব সুন্দর করে আমাদের ধর্মীয় ছেলে/ মেয়েরা ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্মের অনুসারী হচ্ছে। যদি বাচতে চান এই সেকুলার বা আমি সেকুলারিটি মানি এইসব কথা বলা এইক্ষণে বাদ দিন। না হলে সেকুলার করতে করতে নিজেই ফির আবার এই ফাদে পা ফেলে দিয়েন না যেন!
২...এখন আসি কেন ধর্মান্তরিত হয়? এবার আরো একটু গভীর ভাবে ভাবার চেষ্টা করি?
উত্তর : উত্তর খুঁজতে গেলে সবার একটা কমন উত্তর পাওয়া যাবে যে, ধর্মীয় শিক্ষা ও সচেতনতা নেই। সঠিক কিন্তু পুরোপুরিভাবে সঠিক নয়। ধরুন সেই ছেলে/ মেয়েটি জানে যে লাভ-জিহাদ কি? তারপরেও সে নিজে এর শিকার হলো? এবং ধর্ম চেঞ্জ করল? তাহলে কেন চেঞ্জ করল সে?
উত্তর প্রেক্ষিতে আসতে পারে প্রকৃত সত্য খোজার অনিচ্ছা। একজন ব্যাক্তি আজবীন পৌরাণিক গল্প শুনে আসছে আর গীতাও পড়েছে। ধরে নিলাম সে গীতা সম্পূর্ণ ভাবেই শেষ করেছে। যেহেতু বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বেদ পৌছায় নি সেহেতু এটাকে আলাদা করে রাখি। এখন অনেকেই বলবেন যে দাদা বেদকে কেন আলাদা করে রাখলেন? আচ্ছা বেদকে কেন আলাদা করলাম এর কারণ হলো, আমার কাছে বেদ আছে, আপনার কাছেও আছে কিন্তু ১০০ জনের মধ্যে ৯০-৯৫ জনের কাছে বেদ নেই তাই বেদকে আলাদা করে রাখলাম।
শ্রীমদ্ভাগবত গীতা প্রায় সবার ঘরে ঘরেই আছে তাই ছোট একটি শ্লোক বলি। অধ্যায় ৭, শ্লোক : ২০
কামৈস্তৈস্তৈর্হৃতজ্ঞানাঃ প্রপদ্যন্তেন্যদেবতাঃ৷
তং তং নিয়মমাস্থায় প্রকৃত্যা নিয়তাঃ স্বয়া৷৷২০
অর্থ: যাদের মন জড়-কামনা বাসনা দ্বারা বিকৃত তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয়ে এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে।
ব্যস এখন কাজ শেষ। প্রশ্ন আসতে পারে যে তুমি কয়টা ঈশ্বর মানো? ঈশ্বর তো একজন আর যেখানে তোমাদের গীতায় পর্যন্ত বলা আছে দেব দেবীর পূজা নিষিদ্ধ। সেখানে এত পূজো করে কি হবে। তোমাদের বেদেও কিন্তু কোন প্রতিমাপূজার কথা বলা নেই।
এরপর ছোট ভাবনা আসবেই,,, কি? সত্যি নেই! তাহলে কি আমি ভুল পথে ছিলাম! আমি কি এখনো ভুল পথেই আছি? অনেকে হয়তো প্রকৃত সত্য না জেনেই সব কিছু গুলিয়ে ফেলেন। আবার অনেকে খোজার চেষ্টা করেন, যারা খোজার চেষ্টা করেন তাদের ধন্যবাদ। আর আমাদের মন এমন একটি জিনিস যে পূর্বের ভুল গুলোকে সংশোধন করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। যেহেতু আপনার মাথায় ঢুকে গেছে যে আপনি ভুল ছিলেন!
এরপরে আসে দারিদ্র্যতা আর নিচু বর্ণের সমস্যা।
কর্ম অনুসারে মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণবিভাগ সৃষ্টি করা হয়েছে তবে বুঝতে হবে কর্ম অনুসারে। জন্ম অনুসারে নয়। তাই জন্ম আর কর্মকে দুইয়ে মানুষে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। শংকর ভাষ্যে আপনি পাবেন যে নারীদের বেদ পড়ার অধিকার নেই আবার কোন নিচু বর্নের লোক বেদ পাঠ শুনলে তার কানে গরম শিষা ঢেলে দেওয়ার কথা পর্যন্ত বলা হয়েছে। তাহলে যে ধর্মে নারীদের বেদ পড়ার অধিকার নেই, নিচু বর্নের সাথে এত হীন আচরণ করা হয় সেটাকি আদেও কোন ধর্ম হতে পারে ? আচ্ছা বলুন তো নিচু বর্নের লোকেদের মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয় কিনা? পরক্ষনে আপনার উত্তরটিও হবে না, আসলেই তো এতো বুজরুকি। এতো কোন ধর্মই না। এরপর আসবে মর্যাদা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের কথা। রামচন্দ্র শম্বুক নামে একজন শুদ্রকে হত্যা করেছিল। তাহলে কিভাবে হবে বলো? এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিয়ে আরো কিছু অপপ্রচার চলবে যেমন টা চলেছে ভগবান রামচন্দ্রের বেলায়। এরপরে মনে হওয়া টা কি স্বাভাবিক নয় যে আপনার পদ্ধতিটা ভুল। আপনারা ভুল পথে আছেন।
আচ্ছা আপনিই বলুন তো আমরা জানি যে পৃথিবী গতিশীল ও তা সুর্যের চারদিকে ঘোরে। কিন্তু বেদে বলা হয়েছে, “পৃথিবী স্থির ও নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে “ আপনি খুব সুন্দর ভাবেই বলবেন ওহ আমি তো জানতাম না এই ব্যাপারে। পরক্ষণে অপরদিক থেকে উত্তর আসবে এবার আপনি নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন? এখনো কি নিজ ধর্মকে সঠিক বলবেন? যেখানে সব কিছুই ভুয়ো।
৩. কিভাবে এই ধর্মান্তরকরণ প্রক্রিয়াটি চলমান?
প্রথমত আপনাকে প্রেম দ্বারা বশীভূত করা হয় এবং আপনি প্রেমে এতটাই অন্ধ হয়ে যান যে তার দ্বারা উচ্চারিত প্রত্যেকটি শব্দকে আপনি সত্য বলে স্বীকার করতে থাকেন। তখন সে আপনাকে যাহাই বলিবে তাহাই আপনি মানবেন। সত্য মিথ্যার ফারাক তো পরে আসবে অনেক। কেন ধর্মান্তরিত হয়? ওই অংশটুকু পড়লে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা।
এরপর বাকি থাকে আমাদের টিভি সিরিয়াল আর মুভির মতো জায়গা টা,,,, এই জায়গাটাতে তো হিন্দু ধর্মকে খুব ভালো মতোই ছোট করার কাজ টি করে ফেলেছে। টিভি সিরিয়াল আর মুভি এতটাই অনুপ্রাণিত করে যে অর্ধেক কাজ ওইখানেই হয়ে যায় আর বাকি অর্ধেক মানুষেরা করে। ধর্মান্তরিত হবার জন্য মিডিয়ার সাপোর্ট দরকার যদি মিডিয়া সেই সাপোর্ট দিয়েই দেয় তাহলে তো কথাই নেই কোন। মিডিয়ার দৌলতে প্রক্রিয়া এখন খুব সোজা।
দারিদ্র হলে তো কথাই নেই সুযোগ সুবিধার নাম করে হলেও শেষ পর্যন্ত ধর্মান্তরকরণ এর খাতায় সবুজ টিক পড়বেই পড়বে।
পিকে মুভির একটা অংশ বলি
" সাফরাজ কাভি ধোকা নেহি দেগা "
সমালোচনা বেশি করে ফেলেছি বোধ হয়। আচ্ছা এবার থামি তাহলে । সাফরাজ ধোকা দেয় কি না? সে উত্তর তো সবাই জানে এর জন্য অনেক মেয়েকেই বস্তাবন্দী লাশ হয়ে যেতে হয়।
আমি শুধু ধারণা গুলো দেওয়ার চেষ্টা করলাম মাত্র। একটু চোখ কান খুলা রাখলে দেখবেন যে এইরকম হাজার টা ঘটনা সামনে চলে আসবে। আমাদের অবস্থা মহাত্মা গান্ধীর ওই উক্তির মতো যে এক গালে চড় মারলে আরেক গাল এগিয়ে দিতে হবে। যাতে আরো একবার চড় মারতে পারে। নিজে সচেতন হয়ে যান না হলে এখন একটি দুইটি খবর আসছে, হয়তো সামনের দিনে দশটি পর্যন্ত খবর আসতে পারে।
পারিবারিক ধর্মীয় কাঠামো আরো শক্তিশালী হবার দরকার বলে আমি মনে করি কিন্তু ধর্মীয় কাঠামো যতই শক্তিশালী হোক না কেন? যদি নিজের সদিচ্ছা না থাকে তাহলে কিছুই হবে না। শুধু ধর্মীয় জ্ঞান না জানা ব্যাক্তিরা ধর্ম ত্যাগ করছে না। অর্ধ জ্ঞান নিয়ে যারা জীবিত আছে আর যারা পৌরানিক ব্যাপারে বিশ্বাসী তারাও কিন্তু এই ফাদে পা দিচ্ছেন। সময় থাকতে নিজে সাবধান হন আর অপরকে সাবধান করুন।
দুইটি বই পড়লে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে
"সত্যার্থ প্রকাশ" এই বইটি পড়লে নিজেই বুঝতে পারবেন যে ঘটনা কি?
সত্যার্থ প্রকাশের ডাউনলোড লিংক :
https://drive.google.com/…/10FGs-BatALm0m2h5mtcVhMPc-…/view…
আর এই বইটি শুধু মাত্র বাস্তবতা জানার জন্য পড়া উচিত,,, কি হয় লাভ জিহাদের ফলে?
বইয়ের নাম : যখন আমির আনুষ্কার সাথে দেখা করেছিল
ডাউনলোড লিংক :
https://drive.google.com/…/1FkcR4jUqMxZiKh_Mh_TjE7ISL…/view…
পড়তে থাকুন আর জানতে থাকুন, সর্বোপরি নিজে সচেতন হন আর ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হন। প্রশ্ন জাগলে পোস্ট করুন অথবা কমেন্ট করুন।
অবশেষে say not to Love Jihad
Post: Koushik Basak Koushik
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন