গর্ভোদকশায়ী
বিষ্ণুর নাভীপদ্ম থেকে ব্রহ্মার জম্ম । শ্বেত-বরাহ করে ইনি জম্মগ্রহন করেন
। ব্রহ্মাই সৃষ্টির আদি জীব । পদ্ম-উপরি উপবিষ্ট ব্রহ্মার চারটি মস্তক ।
অনন্তকোটি ব্রহ্মাণ্ড রয়েছে। প্রতি ব্রহ্মাণ্ডেই ব্রহ্মা রয়েছ
by অমিত সরকার শুভ
েন।
শাস্ত্রে বর্ণিত আছে, বিশমাথা, পঞ্চাশ মাথা, শত মাথা, সহস্র মাথা ও লক্ষ
মাথা রয়েছে । ব্রহ্মাণ্ড সমূহও ছোট বড় আকৃতির। আমাদের ব্রহ্মাণ্ডটি সবচেয়ে
ছোট । আমাদের ব্রহ্মার চরটি মস্তক ।
সৃষ্টির সমস্ত জীব হতে ব্রহ্মা বয়োবৃদ্ধ ও জ্ঞানবৃদ্ধ । প্রথমে চিন্তা করলেন, “আমি কোথা হতে এলাম । কেউ তো কোথাও নেই, কেবল আমি একা ।” ভাবলেন এই পদ্মের নাল বেয়ে নিচে নামবেন কিনা। শেষ পর্যন্ত তিনি ধ্যানস্থ হয়ে তার সৃষ্টির উৎস সম্বন্ধে সন্ধিৎসু হলেন ।
বহু বর্ষ পরে ভগবান শ্রীহরি দর্শন দান করলেন । ভগবান বললেন, হে ব্রহ্মা এই দেখো চৌদ্দ ভুবন । সমস্ত ভুবন জীবে পরিপূর্ণ কর । ভগবান শ্রীব্রহ্মার মধ্যে সৃষ্টিশক্তি সঞ্চার করলেন । ব্রহ্মা ভগবানের শক্ত্যাবেশ অবতার । সৃষ্টিকার্যে তিনি নিয়োজিত । ব্রহ্মা নিজ অঙ্গ হতে মুনি ঋষি এবং মরীচি প্রমুখ প্রজাপতির সৃষ্টি করলেন । তিনি কাউকে তপস্যা আচরণের নির্দেশ দিলেন, কাউকে বা সাংসারিক কার্যে নিয়োজিত করলেন ।
তারপর ব্রহ্মা চিন্তা করলেন আর নিজের থেকে এভাবে সৃষ্টি না করে, নারী-পুরুষের মাধ্যমে সংসার সৃষ্টি হোক । তার সংকল্প অনুসারে মানস পুত্ররূপে মনু ও মনুর অর্ধাঙ্গিনী-রূপে শতরূপাকে সৃষ্টি করলেন । তা৺রা মিলিত হয়ে প্রিয়ব্রত ও উত্তানপাদ নামে দুই পুত্র এবং আকুতি, প্রসুতি ও দেবহুতি নামে তিন কন্যার জম্ম দেন । তা৺দেরকে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীর হাতে সমর্পণ করা হয় । ক্রমে ক্রমে ব্রহ্মার দ্বারাই সৃষ্টিকার্য ব্যাপকভাবে পরিচালিত হতে লাগল।
সৃষ্টি করবার জন্য ভগবান ব্রহ্মাকে রজোগুণ দিয়েছিলেন । রজোগুণের মধ্যে রয়েছে সংকল্প, আগ্রহ ও প্রচেষ্টা । চতুর্মুখ ব্রহ্মা রজোগুণের প্রভাবে স্থাবর, জঙ্গম, খেচর, ভূচর, জলচর, উভয়চর প্রাণী প্রজাতির সৃষ্টি করলেন । নয় লক্ষ রকমের জলজ প্রাণী, কুড়ি লক্ষ রকমের গাছপালা, এগার লক্ষ রকমের কীটপতঙ্গ, দশ লক্ষ রকমের পাখী, ত্রিশ লক্ষ রকমের গাছপালা পশু এবং চার লক্ষ রকমের মানুষ প্রজাতি সৃষ্টি করলেন ।
একদিন ব্রহ্মা অহংকার বশতঃ মনে করলেন, ‘ আমিই সবকিছু করেছি । আমিই সমগ্র মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা । আমিই ব্রহ্মাণ্ডের মালিক ।’
শ্রীমদ্ভাগবতে বর্ণিত আছে দ্বারকাতে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীব্রহ্মাকে আহ্বান করলেন । ব্রহ্মা এসে পৌঁছালে কৃষ্ণের দ্বারপালগণ জিজ্ঞাসে করেন, ‘আপনি কোন ব্রহ্মা ।’ ব্রহ্মা তখন বিস্মিত হয়ে বললেন, চতুর্মুখ ব্রহ্মা । তারপর সভাকক্ষে প্রবেশ করে দেখলেন বহু বহু ব্রহ্মাণ্ড থেকে আগত অসংখ্য ব্রহ্মা সেখানে উপস্থিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে প্রণতি নিবেদন করেছেন । আমাদের চতুর্মুখ ব্রহ্মা নিজেকে সবচেয়ে ছোট বলে অনুভব করলেন । শ্রীকৃষ্ণ প্রত্যেক ব্রহ্মার সঙ্গে কুশল-বার্তা জিজ্ঞাসা করে একে একে তাদের বিদায় দিলেন । তখন চর্তুমখ ব্রহ্মার বিষণ্ণ মুখ দর্শন করে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে ব্রহ্মা, বলুন আপনার কি অভিপ্রায় ?
ব্রহ্মা বললেন, আমি বড় অভিমানী, আমি মনে করেছি আমি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি । কিন্তু সেই মোহ আমার দুর হয়েছে, আমার চেয়েও অসংখ্য কোটি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি রয়েছেন, তা আমি এখন বুঝতে পারলাম । আমার এই চৌদ্দ-ভুবন বিশিষ্ট ব্রহ্মাণ্ড ছাড়াও আরও অনন্তকোটি ব্রহ্মাণ্ড রয়েছে- এবার আমার সেই বুদ্ধি জম্মেছে । হে ভগবান, এখন আমি বুঝেছি যে, আমিই সবার চেয়ে ক্ষুদ্র, আমার চিন্তাধারা অতি তুচ্ছ । আপনি দয়া করে আমার সমস্ত অভিমান ও অহংকার দুর করুন এবং আমাকে আপনার চরণে শুদ্ধ-ভক্তি প্রদান করুন ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে ব্রহ্মা, অভিমান অহংকার যাতে না হয় সেজন্য এখানে আহ্বান করেছি, এখন আপনার মঙ্গল হোক । তারপর ব্রহ্মা শ্রীকৃষ্ণকে প্রণতি নিবেদন করে আপন স্থান সত্যলোকে গমন করলেন ।
একসময় নারদমুনি মন্দাকিনীর তটে তপস্যা করছিলেন । কিন্তু তিনি দৈববাণী শুনতে পেলেন- ‘শ্রীহরি যদি আরাধিত না হন, তবে তপস্যার কি দরকার ? শ্রী হরি যদি আরাদিত হন তবে তপস্যারই কি দরকার ? ’ দৈববাণী শুনে নারদ শ্রীহরি স্মরণ করছিলেন, তখন পিতৃদেব ব্রহ্মাকে দেখতে পেলেন । ব্রহ্মাকে প্রণতি নিবেদন করে জলপূর্ণ নয়নে নারদ বললেন, এই দৈববাণীর অর্থ কি ?
ব্রহ্মা বললেন হে বৎস ! যদি ব্যক্তি ভক্তি সহকারে শ্রীহরির আরাধনা করেন, তবে সেই ব্যক্তির তীর্থভ্রমণ, তপস্যার প্রয়োজন নেই । ভারতবর্ষে কৃষ্ণ-মন্ত্র-উপাসক জীবন্মুক্ত ব্যক্তির তপস্যার প্রয়োজন হয় না । হে নারদ, শ্রীকৃষ্ণ নাম-মন্ত্র গ্রহণ মাত্রেই তার বংশের শত পুরুষ ও বন্ধুবান্ধবরা ও অনায়াসে পবিত্র হয় । শ্রীকৃষ্ণ সেবা থেকে অন্য কোন ধর্ম বড় নয়, অন্যকোন তপস্যা শ্রেয় নয় । কৃষ্ণ-সেবা পরায়ণ ব্যক্তিদের তপস্যার পরিশ্রম অনাবশ্যক । হে পুত্র, কৃষ্ণ-মন্ত্রে ব্রতী ব্যক্তিই মহা পবিত্র । তার তীর্থস্থান, তার অনশন, তার বেদ অধ্যয়ন বিড়ম্বনা মাত্র । হে বৎস, আগুন পবিত্র, নির্মল জল পবিত্র, ভারতবর্ষ পবিত্র এবং তীর্থস্বরূপ তুলসী-পত্র পরম পবিত্র । কিন্তু কৃষ্ণনাম পরায়ণ, কৃষ্ণ-সেবা পরায়ণ ব্যক্তি অবলীলা ক্রমে পবিত্র করেন, আর এরাও সাদরে কৃষ্ণভক্ত ব্যক্তির স্পর্শ বাঞ্ছা করেন । বসুন্ধরা হরিভক্তের পদধূলি দ্বারা তৎক্ষণাৎ পবিত্র হন । হে নারদ, জানবে যে, ব্রহ্মাণ্ডে শ্রীকৃষ্ণ-সেবক অপেক্ষা কোন বস্তু বা কোনও ব্যক্তি অধিক পবিত্র নয় ।
যে ব্যক্তি প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণ পূজা করে এবং শ্রীকৃষ্ণ-চরণামৃত ও মহা-প্রসাদ গ্রহণ করে, সেই মহা পবিত্র । হে নারদ, কৃষ্ণ ভক্ত যে বংশে জম্মগ্রহন করে সেই বংশ পবিত্র হয় । জগতে যে ব্যক্তি কৃষ্ণ-ভজনা করে না, তার তপস্যা, তার কর্মপ্রচেষ্টা তার পরিশ্রম বৃথা । গঙ্গা জল যেমন মদের ভাণ্ডকে পবিত্র করতে পারে না, সেরকম বৈদিক কর্মকাণ্ডীয় যজ্ঞ, উপবাস, তপস্যা, ব্রত, দান, শুভকর্ম- এসবই অভক্ত ব্যক্তিকে পবিত্র করতে পারে না । শ্রীকৃষ্ণে যে ভক্তিপরায়ন নয়, সেই ব্যক্তি যদি তীর্থে স্নান করতে যান তবে তীর্থ বিচলিত হন । বসুন্ধরা অভক্তের ভারে দুঃখে কম্পিত হয়ে থাকেন ।
হে বৎস, শ্রীকৃষ্ণের কথাই বেদ-শাস্ত্রের সারবস্তু । যে মহাত্মা স্বপ্নে ও জাগরণে শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা করেন , তিনি নিষ্পাপ হয়ে জগৎকে পবিত্র করেন , ভগবানের সুদর্শন চক্র সেই আত্মাকে সুরক্ষিত করেন । শ্রীকৃষ্ণের নিরন্তর স্মরণকারী ভক্ত অপেক্ষা আত্মা, প্রাণ, দেহ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, আমি, শিব তার কাছে কিছুই পবিত্র নয় । পরম-প্রভু শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন ভক্ত-গত প্রাণ এবং ভক্ত-গন হচ্ছেন কৃষ্ণ-গত প্রাণ । ভক্ত শ্রীকৃষ্ণকে ধ্যান করেন, শ্রীকৃষ্ণ ভক্তের ধ্যান করেন ।
হে নারদ, যারা ব্রাহ্মণ অথচ কৃষ্ণ ভক্ত নয়, তারা ধর্মভ্রষ্ট পতিত জীব । কৃষ্ণভক্ত-হীন ব্রাহ্মণ অপেক্ষা স্বধর্মাচারশীল চণ্ডাল, স্লেচ্ছ এমনকি কুকুর-শুকুরেরাও ভালো । হে নারদ, ধর্মহীন ব্রাহ্মণেরা যা আহার্যরূপে গ্রহণ করা উচিত নয়, সেইগুলিও তারা ভক্ষণ করে । প্রতিদিন বিপরীত ধর্মাচার দ্বারা পতিত হয়ে চণ্ডাল অপেক্ষাও অধম হয় ।
নারদমুনি প্রশ্ন করলেন, হে পিতা, ব্রাহ্মণদের স্বধর্ম কি ? তাদের ভক্ষ্য বস্তু কি ?
ব্রহ্মা বললেন, হে পুত্র, ব্রাহ্মণদের নিরন্তর কৃষ্ণ-সেবন করাই স্বধর্ম । এই জন অন্যান্য লোকেরা ব্রাহ্মণকে সশ্রদ্ধ সম্মান জ্ঞাপন করে থাকে, ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ট ও পদ-ধৌত জল পান করে থাকে । ব্রাহ্মণরা প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণকে ভোগ নিবেদন করেন এবং শ্রীকৃষ্ণ-প্রসাদই তাদের আহার্য বস্তু ।
নারদমুনি প্রশ্ন করলেন, হে পিতা, ব্রাহ্মণেরা যদি প্রত্যহ কৃষ্ণ-প্রসাদ না গ্রহণ করে অন্য কোন খাদ্য গ্রহণ করে তবে দোষ কি ?
ব্রহ্মা বললেন, পণ্ডিতেরা সেই খাদ্য কে অখাদ্য বলে বর্ণনা করেছেন । সেই অন্ন বিষ্টা সম, সেই পানীয় মূত্র-সম হয় । কোল ভিন্ন স্লেচ্ছ চণ্ডালেরা ভগবানকে অনিবেদিত অন্ন, রক্তমাংস জাতীয় অমেধ্য বস্তু ভক্ষণ করে থাকে, কিন্তু ব্রাহ্মণ যদি সেই বস্তু ভক্ষণ করে তবে চণ্ডাল-ধম বলে গণ্য হয় ।
হে নারদ, এখন আমি তোমাকে যে নির্দেশ দিতে ইচ্ছা করছি, তা হল এই যে, কৃষ্ণভক্ত শিবকে গুরু-রূপে গ্রহণ করে অচিরেই কৃষ্ণদাস্য ভক্তি লাভ কর । তোমার এরকম নির্জনে বসে তপস্যা করার দরকার নেই । শ্রীকৃষ্ণ-ভক্তিই দুঃখময় সংসার-সমুদ্র উত্তীর্ণ হবার নৌকা স্বরূপ । গুরুদেব সেখানে কর্ণধার স্বরূপ । হে নারদ, তুমি যে দৈব বাণী শুনেছিলে, দেবী সরস্বতীই তোমার উদ্দেশ্যে এই কথা বলে প্রস্থান করেছেন ।
শ্রীব্রহ্মা যখন নারদকে এই সমস্ত কথা বলছিলেন, তখন ব্রহ্মার পুত্র সনৎকুমার বললেন, হে পিতা , আমি কোন কথা বুঝতে পারিনি, দয়া করে আমাকে পুনরায় বলুন । শ্রীকৃষ্ণকে যে আরাধনা করেছে তার আর তপস্যা করা অনর্থক এবং যে শ্রীকৃষ্ণকে আরাধনা করেনি তারও তপস্যা ব্যর্থ হয়, যদি এই দুইজনই তপস্যা-রহিত হয়, তবে তপস্যার স্থান কি ধরনের লোকের প্রতি নির্দিষ্ট থাকল ?
ব্রহ্মা বললেন, হে বুদ্ধিমান, তোমাকে পুত্ররূপে পেয়ে আমার জীবন ধন্য । ‘আরাধিত’ কথাটিতে আ অর্থ বিশেষরূপে ‘রাধিত’ শব্দটি প্রাপ্তবাচক হয় । অতএব যিনি শ্রীহরিকে প্রাপ্ত হয়েছেন, তপস্যার প্রয়োজন নেই । কোনও মুঢ় ব্যক্তি, যখন শ্রীকৃষ্ণ বিমুখ, তার তীর্থ, দান, তপস্যা, পুণ্য, ব্রত তাকে পবিত্র করতে পারে না ।
সনৎকুমার জানতে চাইলেন, হে পিতা, কোন ধরনের ব্যক্তি তপস্যা করবে ?
ব্রহ্মা বললেন, যে ব্যক্তি মূঢ়তম কিংবা যে ব্যক্তি সর্বোৎকৃষ্ট ভক্তিলাভ করেছে, এই উভয় ব্যক্তিই সুখী । তাদের তপস্যা করার দরকার নেই । কিন্তু মধ্যম লোকেরাই তপস্যা করার অধিকারী হয়ে থাকে । মধ্যম ব্যক্তিরা যারা গৃহস্থ সাধক, সংসারে ব্যাপৃত থেকে পূর্ব কর্মের ফলভোগী হয়ে অভীস্পিত শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্ম পাওয়ার বাসনায় তারা তপস্যা করে ।
সনৎকুমার প্রশ্ন করলেন, হে পিতা, কি রকম তপস্যা করবে ?
ব্রহ্মা বললেন, শ্রীকৃষ্ণের সেবা, ধ্যান, নাম জপ-কীর্তন, চরণামৃত ও মহা-প্রসাদ সেবন করাই সকলের বাঞ্ছিত শ্রেষ্ঠ ধর্ম ।
-হে পিতা, অধিকাংশ লোকেরই তা হলে শ্রীকৃষ্ণ-ভক্তিমূলক তপস্যার প্রয়োজন আছে । তবুও আমার জানতে ইচ্ছে করে যে, সংসারে সব লোক কৃষ্ণ-ভজন করে না কেন ?
-হে বৎস যার বুদ্ধি পূর্বজম্মকৃত কর্মদোষে মন্দ হয়েছে এবং অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে গুরু-রূপে গ্রহণ করেছে, তারা তমোগুণের অধীন হয়ে থাকে । তার ফলে তারা ত্রিগুণের অতীত ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারে না, এমনকি জানতে আগ্রহ ও থাকে না । সংসারে সেই সব লোক তাই কৃষ্ণ-ভজন করবে না ।
-হে পিতা তাহলে সংসারের সেই সব কৃষ্ণ-বিমুখদের কিভাবে সদ্গতি হবে ?
- হে পুত্র, অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে, সাধুসঙ্গ-ক্রমে কিংবা সৌভাগ্যক্রমে কেউ যদি অপ্রসাদভোজী না হয়ে কৃষ্ণপ্রসাদভোজী হয়, তা হলে, তার হৃদয়ে সমস্ত পাপ ক্ষয় হবে, সে দেহত্যাগের পর দিব্যরথে করে গোলোক কিংবা উৎকৃষ্ট কোনও গ্রহলোকে স্বেচ্ছামতো গমন করতে সমর্থ হবে ।
সংগ্রহ : মহাজন উপদেশ ( ইসকন্ ) সৃষ্টির সমস্ত জীব হতে ব্রহ্মা বয়োবৃদ্ধ ও জ্ঞানবৃদ্ধ । প্রথমে চিন্তা করলেন, “আমি কোথা হতে এলাম । কেউ তো কোথাও নেই, কেবল আমি একা ।” ভাবলেন এই পদ্মের নাল বেয়ে নিচে নামবেন কিনা। শেষ পর্যন্ত তিনি ধ্যানস্থ হয়ে তার সৃষ্টির উৎস সম্বন্ধে সন্ধিৎসু হলেন ।
বহু বর্ষ পরে ভগবান শ্রীহরি দর্শন দান করলেন । ভগবান বললেন, হে ব্রহ্মা এই দেখো চৌদ্দ ভুবন । সমস্ত ভুবন জীবে পরিপূর্ণ কর । ভগবান শ্রীব্রহ্মার মধ্যে সৃষ্টিশক্তি সঞ্চার করলেন । ব্রহ্মা ভগবানের শক্ত্যাবেশ অবতার । সৃষ্টিকার্যে তিনি নিয়োজিত । ব্রহ্মা নিজ অঙ্গ হতে মুনি ঋষি এবং মরীচি প্রমুখ প্রজাপতির সৃষ্টি করলেন । তিনি কাউকে তপস্যা আচরণের নির্দেশ দিলেন, কাউকে বা সাংসারিক কার্যে নিয়োজিত করলেন ।
তারপর ব্রহ্মা চিন্তা করলেন আর নিজের থেকে এভাবে সৃষ্টি না করে, নারী-পুরুষের মাধ্যমে সংসার সৃষ্টি হোক । তার সংকল্প অনুসারে মানস পুত্ররূপে মনু ও মনুর অর্ধাঙ্গিনী-রূপে শতরূপাকে সৃষ্টি করলেন । তা৺রা মিলিত হয়ে প্রিয়ব্রত ও উত্তানপাদ নামে দুই পুত্র এবং আকুতি, প্রসুতি ও দেবহুতি নামে তিন কন্যার জম্ম দেন । তা৺দেরকে উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীর হাতে সমর্পণ করা হয় । ক্রমে ক্রমে ব্রহ্মার দ্বারাই সৃষ্টিকার্য ব্যাপকভাবে পরিচালিত হতে লাগল।
সৃষ্টি করবার জন্য ভগবান ব্রহ্মাকে রজোগুণ দিয়েছিলেন । রজোগুণের মধ্যে রয়েছে সংকল্প, আগ্রহ ও প্রচেষ্টা । চতুর্মুখ ব্রহ্মা রজোগুণের প্রভাবে স্থাবর, জঙ্গম, খেচর, ভূচর, জলচর, উভয়চর প্রাণী প্রজাতির সৃষ্টি করলেন । নয় লক্ষ রকমের জলজ প্রাণী, কুড়ি লক্ষ রকমের গাছপালা, এগার লক্ষ রকমের কীটপতঙ্গ, দশ লক্ষ রকমের পাখী, ত্রিশ লক্ষ রকমের গাছপালা পশু এবং চার লক্ষ রকমের মানুষ প্রজাতি সৃষ্টি করলেন ।
একদিন ব্রহ্মা অহংকার বশতঃ মনে করলেন, ‘ আমিই সবকিছু করেছি । আমিই সমগ্র মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা । আমিই ব্রহ্মাণ্ডের মালিক ।’
শ্রীমদ্ভাগবতে বর্ণিত আছে দ্বারকাতে শ্রীকৃষ্ণ শ্রীব্রহ্মাকে আহ্বান করলেন । ব্রহ্মা এসে পৌঁছালে কৃষ্ণের দ্বারপালগণ জিজ্ঞাসে করেন, ‘আপনি কোন ব্রহ্মা ।’ ব্রহ্মা তখন বিস্মিত হয়ে বললেন, চতুর্মুখ ব্রহ্মা । তারপর সভাকক্ষে প্রবেশ করে দেখলেন বহু বহু ব্রহ্মাণ্ড থেকে আগত অসংখ্য ব্রহ্মা সেখানে উপস্থিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে প্রণতি নিবেদন করেছেন । আমাদের চতুর্মুখ ব্রহ্মা নিজেকে সবচেয়ে ছোট বলে অনুভব করলেন । শ্রীকৃষ্ণ প্রত্যেক ব্রহ্মার সঙ্গে কুশল-বার্তা জিজ্ঞাসা করে একে একে তাদের বিদায় দিলেন । তখন চর্তুমখ ব্রহ্মার বিষণ্ণ মুখ দর্শন করে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে ব্রহ্মা, বলুন আপনার কি অভিপ্রায় ?
ব্রহ্মা বললেন, আমি বড় অভিমানী, আমি মনে করেছি আমি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি । কিন্তু সেই মোহ আমার দুর হয়েছে, আমার চেয়েও অসংখ্য কোটি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি রয়েছেন, তা আমি এখন বুঝতে পারলাম । আমার এই চৌদ্দ-ভুবন বিশিষ্ট ব্রহ্মাণ্ড ছাড়াও আরও অনন্তকোটি ব্রহ্মাণ্ড রয়েছে- এবার আমার সেই বুদ্ধি জম্মেছে । হে ভগবান, এখন আমি বুঝেছি যে, আমিই সবার চেয়ে ক্ষুদ্র, আমার চিন্তাধারা অতি তুচ্ছ । আপনি দয়া করে আমার সমস্ত অভিমান ও অহংকার দুর করুন এবং আমাকে আপনার চরণে শুদ্ধ-ভক্তি প্রদান করুন ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে ব্রহ্মা, অভিমান অহংকার যাতে না হয় সেজন্য এখানে আহ্বান করেছি, এখন আপনার মঙ্গল হোক । তারপর ব্রহ্মা শ্রীকৃষ্ণকে প্রণতি নিবেদন করে আপন স্থান সত্যলোকে গমন করলেন ।
একসময় নারদমুনি মন্দাকিনীর তটে তপস্যা করছিলেন । কিন্তু তিনি দৈববাণী শুনতে পেলেন- ‘শ্রীহরি যদি আরাধিত না হন, তবে তপস্যার কি দরকার ? শ্রী হরি যদি আরাদিত হন তবে তপস্যারই কি দরকার ? ’ দৈববাণী শুনে নারদ শ্রীহরি স্মরণ করছিলেন, তখন পিতৃদেব ব্রহ্মাকে দেখতে পেলেন । ব্রহ্মাকে প্রণতি নিবেদন করে জলপূর্ণ নয়নে নারদ বললেন, এই দৈববাণীর অর্থ কি ?
ব্রহ্মা বললেন হে বৎস ! যদি ব্যক্তি ভক্তি সহকারে শ্রীহরির আরাধনা করেন, তবে সেই ব্যক্তির তীর্থভ্রমণ, তপস্যার প্রয়োজন নেই । ভারতবর্ষে কৃষ্ণ-মন্ত্র-উপাসক জীবন্মুক্ত ব্যক্তির তপস্যার প্রয়োজন হয় না । হে নারদ, শ্রীকৃষ্ণ নাম-মন্ত্র গ্রহণ মাত্রেই তার বংশের শত পুরুষ ও বন্ধুবান্ধবরা ও অনায়াসে পবিত্র হয় । শ্রীকৃষ্ণ সেবা থেকে অন্য কোন ধর্ম বড় নয়, অন্যকোন তপস্যা শ্রেয় নয় । কৃষ্ণ-সেবা পরায়ণ ব্যক্তিদের তপস্যার পরিশ্রম অনাবশ্যক । হে পুত্র, কৃষ্ণ-মন্ত্রে ব্রতী ব্যক্তিই মহা পবিত্র । তার তীর্থস্থান, তার অনশন, তার বেদ অধ্যয়ন বিড়ম্বনা মাত্র । হে বৎস, আগুন পবিত্র, নির্মল জল পবিত্র, ভারতবর্ষ পবিত্র এবং তীর্থস্বরূপ তুলসী-পত্র পরম পবিত্র । কিন্তু কৃষ্ণনাম পরায়ণ, কৃষ্ণ-সেবা পরায়ণ ব্যক্তি অবলীলা ক্রমে পবিত্র করেন, আর এরাও সাদরে কৃষ্ণভক্ত ব্যক্তির স্পর্শ বাঞ্ছা করেন । বসুন্ধরা হরিভক্তের পদধূলি দ্বারা তৎক্ষণাৎ পবিত্র হন । হে নারদ, জানবে যে, ব্রহ্মাণ্ডে শ্রীকৃষ্ণ-সেবক অপেক্ষা কোন বস্তু বা কোনও ব্যক্তি অধিক পবিত্র নয় ।
যে ব্যক্তি প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণ পূজা করে এবং শ্রীকৃষ্ণ-চরণামৃত ও মহা-প্রসাদ গ্রহণ করে, সেই মহা পবিত্র । হে নারদ, কৃষ্ণ ভক্ত যে বংশে জম্মগ্রহন করে সেই বংশ পবিত্র হয় । জগতে যে ব্যক্তি কৃষ্ণ-ভজনা করে না, তার তপস্যা, তার কর্মপ্রচেষ্টা তার পরিশ্রম বৃথা । গঙ্গা জল যেমন মদের ভাণ্ডকে পবিত্র করতে পারে না, সেরকম বৈদিক কর্মকাণ্ডীয় যজ্ঞ, উপবাস, তপস্যা, ব্রত, দান, শুভকর্ম- এসবই অভক্ত ব্যক্তিকে পবিত্র করতে পারে না । শ্রীকৃষ্ণে যে ভক্তিপরায়ন নয়, সেই ব্যক্তি যদি তীর্থে স্নান করতে যান তবে তীর্থ বিচলিত হন । বসুন্ধরা অভক্তের ভারে দুঃখে কম্পিত হয়ে থাকেন ।
হে বৎস, শ্রীকৃষ্ণের কথাই বেদ-শাস্ত্রের সারবস্তু । যে মহাত্মা স্বপ্নে ও জাগরণে শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা করেন , তিনি নিষ্পাপ হয়ে জগৎকে পবিত্র করেন , ভগবানের সুদর্শন চক্র সেই আত্মাকে সুরক্ষিত করেন । শ্রীকৃষ্ণের নিরন্তর স্মরণকারী ভক্ত অপেক্ষা আত্মা, প্রাণ, দেহ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, আমি, শিব তার কাছে কিছুই পবিত্র নয় । পরম-প্রভু শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন ভক্ত-গত প্রাণ এবং ভক্ত-গন হচ্ছেন কৃষ্ণ-গত প্রাণ । ভক্ত শ্রীকৃষ্ণকে ধ্যান করেন, শ্রীকৃষ্ণ ভক্তের ধ্যান করেন ।
হে নারদ, যারা ব্রাহ্মণ অথচ কৃষ্ণ ভক্ত নয়, তারা ধর্মভ্রষ্ট পতিত জীব । কৃষ্ণভক্ত-হীন ব্রাহ্মণ অপেক্ষা স্বধর্মাচারশীল চণ্ডাল, স্লেচ্ছ এমনকি কুকুর-শুকুরেরাও ভালো । হে নারদ, ধর্মহীন ব্রাহ্মণেরা যা আহার্যরূপে গ্রহণ করা উচিত নয়, সেইগুলিও তারা ভক্ষণ করে । প্রতিদিন বিপরীত ধর্মাচার দ্বারা পতিত হয়ে চণ্ডাল অপেক্ষাও অধম হয় ।
নারদমুনি প্রশ্ন করলেন, হে পিতা, ব্রাহ্মণদের স্বধর্ম কি ? তাদের ভক্ষ্য বস্তু কি ?
ব্রহ্মা বললেন, হে পুত্র, ব্রাহ্মণদের নিরন্তর কৃষ্ণ-সেবন করাই স্বধর্ম । এই জন অন্যান্য লোকেরা ব্রাহ্মণকে সশ্রদ্ধ সম্মান জ্ঞাপন করে থাকে, ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ট ও পদ-ধৌত জল পান করে থাকে । ব্রাহ্মণরা প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণকে ভোগ নিবেদন করেন এবং শ্রীকৃষ্ণ-প্রসাদই তাদের আহার্য বস্তু ।
নারদমুনি প্রশ্ন করলেন, হে পিতা, ব্রাহ্মণেরা যদি প্রত্যহ কৃষ্ণ-প্রসাদ না গ্রহণ করে অন্য কোন খাদ্য গ্রহণ করে তবে দোষ কি ?
ব্রহ্মা বললেন, পণ্ডিতেরা সেই খাদ্য কে অখাদ্য বলে বর্ণনা করেছেন । সেই অন্ন বিষ্টা সম, সেই পানীয় মূত্র-সম হয় । কোল ভিন্ন স্লেচ্ছ চণ্ডালেরা ভগবানকে অনিবেদিত অন্ন, রক্তমাংস জাতীয় অমেধ্য বস্তু ভক্ষণ করে থাকে, কিন্তু ব্রাহ্মণ যদি সেই বস্তু ভক্ষণ করে তবে চণ্ডাল-ধম বলে গণ্য হয় ।
হে নারদ, এখন আমি তোমাকে যে নির্দেশ দিতে ইচ্ছা করছি, তা হল এই যে, কৃষ্ণভক্ত শিবকে গুরু-রূপে গ্রহণ করে অচিরেই কৃষ্ণদাস্য ভক্তি লাভ কর । তোমার এরকম নির্জনে বসে তপস্যা করার দরকার নেই । শ্রীকৃষ্ণ-ভক্তিই দুঃখময় সংসার-সমুদ্র উত্তীর্ণ হবার নৌকা স্বরূপ । গুরুদেব সেখানে কর্ণধার স্বরূপ । হে নারদ, তুমি যে দৈব বাণী শুনেছিলে, দেবী সরস্বতীই তোমার উদ্দেশ্যে এই কথা বলে প্রস্থান করেছেন ।
শ্রীব্রহ্মা যখন নারদকে এই সমস্ত কথা বলছিলেন, তখন ব্রহ্মার পুত্র সনৎকুমার বললেন, হে পিতা , আমি কোন কথা বুঝতে পারিনি, দয়া করে আমাকে পুনরায় বলুন । শ্রীকৃষ্ণকে যে আরাধনা করেছে তার আর তপস্যা করা অনর্থক এবং যে শ্রীকৃষ্ণকে আরাধনা করেনি তারও তপস্যা ব্যর্থ হয়, যদি এই দুইজনই তপস্যা-রহিত হয়, তবে তপস্যার স্থান কি ধরনের লোকের প্রতি নির্দিষ্ট থাকল ?
ব্রহ্মা বললেন, হে বুদ্ধিমান, তোমাকে পুত্ররূপে পেয়ে আমার জীবন ধন্য । ‘আরাধিত’ কথাটিতে আ অর্থ বিশেষরূপে ‘রাধিত’ শব্দটি প্রাপ্তবাচক হয় । অতএব যিনি শ্রীহরিকে প্রাপ্ত হয়েছেন, তপস্যার প্রয়োজন নেই । কোনও মুঢ় ব্যক্তি, যখন শ্রীকৃষ্ণ বিমুখ, তার তীর্থ, দান, তপস্যা, পুণ্য, ব্রত তাকে পবিত্র করতে পারে না ।
সনৎকুমার জানতে চাইলেন, হে পিতা, কোন ধরনের ব্যক্তি তপস্যা করবে ?
ব্রহ্মা বললেন, যে ব্যক্তি মূঢ়তম কিংবা যে ব্যক্তি সর্বোৎকৃষ্ট ভক্তিলাভ করেছে, এই উভয় ব্যক্তিই সুখী । তাদের তপস্যা করার দরকার নেই । কিন্তু মধ্যম লোকেরাই তপস্যা করার অধিকারী হয়ে থাকে । মধ্যম ব্যক্তিরা যারা গৃহস্থ সাধক, সংসারে ব্যাপৃত থেকে পূর্ব কর্মের ফলভোগী হয়ে অভীস্পিত শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্ম পাওয়ার বাসনায় তারা তপস্যা করে ।
সনৎকুমার প্রশ্ন করলেন, হে পিতা, কি রকম তপস্যা করবে ?
ব্রহ্মা বললেন, শ্রীকৃষ্ণের সেবা, ধ্যান, নাম জপ-কীর্তন, চরণামৃত ও মহা-প্রসাদ সেবন করাই সকলের বাঞ্ছিত শ্রেষ্ঠ ধর্ম ।
-হে পিতা, অধিকাংশ লোকেরই তা হলে শ্রীকৃষ্ণ-ভক্তিমূলক তপস্যার প্রয়োজন আছে । তবুও আমার জানতে ইচ্ছে করে যে, সংসারে সব লোক কৃষ্ণ-ভজন করে না কেন ?
-হে বৎস যার বুদ্ধি পূর্বজম্মকৃত কর্মদোষে মন্দ হয়েছে এবং অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে গুরু-রূপে গ্রহণ করেছে, তারা তমোগুণের অধীন হয়ে থাকে । তার ফলে তারা ত্রিগুণের অতীত ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারে না, এমনকি জানতে আগ্রহ ও থাকে না । সংসারে সেই সব লোক তাই কৃষ্ণ-ভজন করবে না ।
-হে পিতা তাহলে সংসারের সেই সব কৃষ্ণ-বিমুখদের কিভাবে সদ্গতি হবে ?
- হে পুত্র, অজ্ঞানে বা সজ্ঞানে, সাধুসঙ্গ-ক্রমে কিংবা সৌভাগ্যক্রমে কেউ যদি অপ্রসাদভোজী না হয়ে কৃষ্ণপ্রসাদভোজী হয়, তা হলে, তার হৃদয়ে সমস্ত পাপ ক্ষয় হবে, সে দেহত্যাগের পর দিব্যরথে করে গোলোক কিংবা উৎকৃষ্ট কোনও গ্রহলোকে স্বেচ্ছামতো গমন করতে সমর্থ হবে ।
by অমিত সরকার শুভ
1 Comments:
ব্রহ্মাণ্ড সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দ্বারা সৃষ্টি হয়নি।
ব্রহ্মাণ্ডের অফুরন্ত শক্তির দ্বারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সৃষ্টি।
ব্রহ্মাণ্ডের অফুরন্ত অতি ক্ষুদ্র বিষয় পুঙ্খানুপু সন্ধান নিতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর মানব সৃষ্টি করেছেন।
অদৃশ্য বলএরপ্রভাব,জগতের মঙ্গল কামনায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন