সমস্ত শাস্ত্রের মূল কথা হইতেছে – পরম পবিত্র বেদ । বেদ চারিভাগে বিভক্ত- ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ , সামবেদ ও অথর্ববেদ। সৃষ্টির প্রথমে আদিপুরুষ ভগবান ব্রহ্মা যোগাসনে সমীসন হইয়া স্থিরচিত্তে পরমাত্ম-চিন্তায় নিমগ্ন আছেন; এমন সময় কল্যানময় পরমেশ্বরের কৃপায় তাহার হৃদয় কন্দরে একটি অস্ফুট নাদ-ধ্বনি প্রকাশ পাইল। পরে তাহা হইতে সর্ববেদের বীজরূপী ব্রহ্মনাম ‘প্রনব’ এবং স্বর- ব্যঞ্জনময় বর্ণরাশি একে একে অভিব্যক্ত হইল । তখন ভগবান ব্রহ্মা সেই বর্ণরাশির সহায়ে যে শব্দসমহ উচ্চারণ করিলেন, তাহাইজগতে বেদবিদ্যা বলিয়া বিখ্যাত হইল ।
অতঃপর ভগবান ব্রহ্মা সেই অপূর্ব বেদবিদ্যার বিস্তার করিবার ইচ্ছায় মরীচি, অত্রী, অঙ্গিরা প্রভৃতি ঋষিগনকে তাহা শিক্ষা দিতে লাগিলেন । ক্রমে বৈদিকজ্ঞান জগতে প্রসার লাভ করিল। এইরূপে গুরু-শিষ্যানুক্রমে যুগ যুগান্তর চলিতে লাগিল । ক্রমে দ্বাপর যুগ আসিয়া পড়িল । মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস হইয়া পড়িল । তখন-
পরাশরাৎ সত্যবত্যামংশাংশ-কলয়া বিভুঃ ।
অবতীর্ণো মহাভাগো বেদং চক্রে চতুবির্ধম্ ।।
ঋগথর্ব-যজুঃ-সাম্নাং রাশীনুদ্ধৃত্য বর্গশঃ।
চতস্রঃ সংহিতাশ্চচক্রে মন্ত্রৈ-মনির্গণা ইব ।।
অনুবাদঃ ভগবান নারায়ন, পরাশরের ওরসে মাতা সত্যবতীর গর্ভে পুত্ররূপে আবির্ভুত হইলেন । তাহার নাম হইল-‘কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন’ । তিনি বেদশিক্ষার সুবিধার্থে এক এক শ্রেনীর মন্ত্রসমুহ একত্র সংগ্রহ করিয়া ঋক্, যজুঃ, সাম ও অথর্ব নামে এক বেদকে চারটি ভাগে ভাগ করিলেন, এইভাবে বেদকে বিভাগ করিভার জন্য তখন হইতে তাহার অপর নাম হইল- ‘বেদব্যাস’।
মহর্ষি ব্যাসদেব বেদকে চারভাগে বিভক্ত করিয়া তাহার বহুল প্রচারোদ্দেশ্যে স্বীয় শিষ্য পৈলকে ঋগ্বেদ, বৈশম্পায়নকে যজুর্বেদ , জৈমনিকে সামবেদ এবং সুমন্তকে অথর্ববেদ শিক্ষা দিলেন । পরে তাহারাও আবার স্বীয় স্বীয় শিষ্যমণ্ডলীকে যথাযথরূপে চতুর্বেদ শিক্ষা দিতে লাগিলেন । এইরূপে এক বেদ বহু শাখাপ্রশাখায় বিভক্ত হইয়া পড়িল ।
ওম শান্তি শান্তি শান্তি
তথসুত্রঃ স্বামী অরুণানন্দ রচিত ''বেদসার- সংগ্রহ'' হতে ।
অতঃপর ভগবান ব্রহ্মা সেই অপূর্ব বেদবিদ্যার বিস্তার করিবার ইচ্ছায় মরীচি, অত্রী, অঙ্গিরা প্রভৃতি ঋষিগনকে তাহা শিক্ষা দিতে লাগিলেন । ক্রমে বৈদিকজ্ঞান জগতে প্রসার লাভ করিল। এইরূপে গুরু-শিষ্যানুক্রমে যুগ যুগান্তর চলিতে লাগিল । ক্রমে দ্বাপর যুগ আসিয়া পড়িল । মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস হইয়া পড়িল । তখন-
পরাশরাৎ সত্যবত্যামংশাংশ-কলয়া বিভুঃ ।
অবতীর্ণো মহাভাগো বেদং চক্রে চতুবির্ধম্ ।।
ঋগথর্ব-যজুঃ-সাম্নাং রাশীনুদ্ধৃত্য বর্গশঃ।
চতস্রঃ সংহিতাশ্চচক্রে মন্ত্রৈ-মনির্গণা ইব ।।
অনুবাদঃ ভগবান নারায়ন, পরাশরের ওরসে মাতা সত্যবতীর গর্ভে পুত্ররূপে আবির্ভুত হইলেন । তাহার নাম হইল-‘কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন’ । তিনি বেদশিক্ষার সুবিধার্থে এক এক শ্রেনীর মন্ত্রসমুহ একত্র সংগ্রহ করিয়া ঋক্, যজুঃ, সাম ও অথর্ব নামে এক বেদকে চারটি ভাগে ভাগ করিলেন, এইভাবে বেদকে বিভাগ করিভার জন্য তখন হইতে তাহার অপর নাম হইল- ‘বেদব্যাস’।
মহর্ষি ব্যাসদেব বেদকে চারভাগে বিভক্ত করিয়া তাহার বহুল প্রচারোদ্দেশ্যে স্বীয় শিষ্য পৈলকে ঋগ্বেদ, বৈশম্পায়নকে যজুর্বেদ , জৈমনিকে সামবেদ এবং সুমন্তকে অথর্ববেদ শিক্ষা দিলেন । পরে তাহারাও আবার স্বীয় স্বীয় শিষ্যমণ্ডলীকে যথাযথরূপে চতুর্বেদ শিক্ষা দিতে লাগিলেন । এইরূপে এক বেদ বহু শাখাপ্রশাখায় বিভক্ত হইয়া পড়িল ।
ওম শান্তি শান্তি শান্তি
তথসুত্রঃ স্বামী অরুণানন্দ রচিত ''বেদসার- সংগ্রহ'' হতে ।
2 Comments:
প্রকৃত পক্ষে আমরা বেদ কে প্রধান ধর্ম গ্রন্থ মানলে ও তার সম্পর্কে কিছুই জানি না এবং জানার সুযোগ ও হয়না। আপনার এ চেষ্টা কে সাধুবাদ জানায়। ইন্টারনেট এ আমরা অনেক অযথা সময় নষ্ট করি। সবার একটা সুযোগ হবে জানার। ধন্যবাদ।
ধর্ম বা ধর্মীয় কোন গ্রন্থ সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞানই নেই , তারপরেও যতটুকু শুনেছি তার সাথে উপরের লেখার কিছুটা অমিল পাচ্ছি , তাই জানার জন্য জিজ্ঞাস্য ব্রহ্মাকে কি ভগবান বলা যায় ? উপরের লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে যে , সৃষ্টির প্রথমে আদি পুরুষ ভগবান ব্রহ্মা যোগাসনে সমীসন হইয়া স্থিরচিত্তে পরমাত্ম-চিন্তায় নিমগ্ন আছেন; এমন সময় কল্যানময় পরমেশ্বরের কৃপায় তাহার হৃদয় কন্দরে একটি অস্ফুট নাদ-ধ্বনি প্রকাশ পাইল। পরে তাহা হইতে সর্ববেদের বীজরূপী ব্রহ্মনাম ‘প্রনব’ এবং স্বর- ব্যঞ্জনময় বর্ণরাশি একে একে অভিব্যক্ত হইল । তখন ভগবান ব্রহ্মা সেই বর্ণরাশির সাহায্যে যে শব্দসমুহ উচ্চারণ করিলেন, তাহাইজগতে বেদবিদ্যা বলিয়া বিখ্যাত হইল ।
অতঃপর ভগবান ব্রহ্মা সেই অপূর্ব বেদবিদ্যার বিস্তার করিবার ইচ্ছায় মরীচি, অত্রী, অঙ্গিরা প্রভৃতি ঋষিগনকে তাহা শিক্ষা দিতে লাগিলেন । ক্রমে বৈদিকজ্ঞান জগতে প্রসার লাভ করিল। এইরূপে গুরু-শিষ্যানুক্রমে যুগ যুগান্তর চলিতে লাগিল । এ কথাগুলো কি ঠিক ? আমি সঠিক সত্য জানতে চাচ্ছি । দয়া করে জানাবেন এটা আমার অনুরোধ ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন