মহর্ষি বাল্মিকীর কণ্ঠে দেবী সরস্বতী নিবাস করলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না কিভাবে রামায়ন রচনা করবেন । কারন কবিতা লেখতে ছন্দ, অলংকার এর প্রয়োজন হয়। যেগুলো না থাকলে কাব্যাকারে রচিত রামায়ন শ্রুতি মধুর হবে না । একদিনের কথা। মহর্ষি নদীতে আহ্নিক করতে গিয়েছেন । ফুলে ফলে শোভিত বন মাঝে কুলকুল রবে প্রবাহিত হচ্ছিল্ল নদী, আর মুনি সেই নদীর মধ্যে অর্ধ নিমজ্জিত অবস্থায় ধ্যান করছেন । নদী তটে একটি পুরুষ বক ও একটি নারী বক ঘুরছিলো। সেই জোড়া বক প্রেম বিনিময় করে মৈথুনে নিমগ্ন হয়েছিলো। সেসময় এক ব্যধ এসে বাণ মেরে যুগলের একটি বক কে বধ করে । অপর বকটি এই দেখে শোকে মাথা ঠুকে মারা যায় । মুনি এই দেখে ব্যাধকে শাপ দিয়ে বলেন-
“বিনা কারণে হিংসা কর তুমি পক্ষী জাতি।
এই পাপে নরকেতে হৈবে তোমার স্থিতি ।।”
মুনি বাল্মিকী শাপ দেবার পর ভাবতে লাগলেন, আরে এই তো ছন্দাকারে শাপ বাক্য তাঁর মুখ হতে নিঃসৃত হয়েছে । “জাতি” ‘তি’ আর “স্থিতি”র ‘তি’- পদের অন্তে অন্তে মিল আছে, এটাই তো ছন্দ । এরপর মুনি বাল্মিকী “রামায়ন” গ্রন্থ রচনা করতে বসলেন ।
অপরদিকে ত্রেতা যুগের শেষে রাক্ষস শক্তি মাথাচাড়া দিয়েছিলো । “রাক্ষস” বলতে কেউ কেউ অনার্য বুঝিয়েছেন । মানে যারা ‘আর্য’ ভাব সংস্কৃতি নেয় নি । বা এদের তামসিক শক্তি বলা যেতে পারে। অখাদ্য, কুখাদ্য এমনকি নর মাংস আহার করতো, কৃত্তিবাসী রামায়নে এমনই লেখা । মালী, সুমালি, মাল্যবাণ নামক তিন রাক্ষস , প্রজাপতি ব্রহ্মার তপস্যা করে প্রজাপতি কে সন্তুষ্ট করে দক্ষিণের ভারত মহাসাগড়ের মধ্যে দ্বীপে বিশ্বকর্মা কে দিয়ে লঙ্কা নগরী স্থাপন করে রাজত্ব করতে লাগলেন । এই রাক্ষস দের আশা তবুও মিটলো না। দক্ষিণ ভারত থেকে ‘আর্য’ সংস্কৃতি বিনষ্ট করে মুনি ঋষি দের তাড়িয়ে দিলো, দক্ষিণ ভাগ হোলো রাক্ষস দের আক্রমণের জায়গা । সেসময় তেমন শক্তিশালী নৃপতি ছিলো না যে কিনা দক্ষিণ ভাগ রাক্ষস আতঙ্কমুক্ত করতে পারে । এই রাক্ষসদের সাহস এত বৃদ্ধি পেলো যে স্বর্গ রাজ্য আক্রমণ করার পরিকল্পনা নিলো। দেবতারা এই জেনে নারদ মুনিকে শান্তিদূত রূপে পাঠালেন। কারণ ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত রাক্ষস দের বিনাশের শক্তি ইন্দ্রের ছিলো না । নারদ মুনি এসে মালী, সুমালি, মাল্যবাণ কে জানালো- “আপনারা যদি স্বর্গ আক্রমণ করেন, তবে দেবতারা শ্রী হরির সহায়তা নেবেন।” রাক্ষসেরা জানালো- “শ্রী হরি যুদ্ধে আসুন। আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি যেনো যুদ্ধে সুদর্শন প্রয়োগ না করেন। এটা যুদ্ধের শর্ত।”
দেবতাদের আক্রমণ করলো রাক্ষসেরা। যুদ্ধ চলতে লাগলো। রাক্ষসেরা মায়াবিদ্যার সাহায্য নিলে শ্রী হরি গরুড়ে আসীন হয়ে যুদ্ধে আসলেন । ভগবান নারায়ন বিপুল বেগে অস্ত্র চালনা করে রাক্ষসদের বধ করতে লাগলেন। এই দেখে দেবতারা আনন্দে জয়ধ্বনি দিলেন । রাক্ষস দের বারবার মায়াবিদ্যা করতে দেখে ভগবান নারায়ন সুদর্শন চালনা করলে রাক্ষসেরা বলতে লাগলো- “হে নারায়ন। আপনি যুদ্ধের শর্ত ভঙ্গ করছেন। এই যুদ্ধে শর্ত দিয়েছিলাম আপনি সুদর্শন ধারন করতে পারবেন না।” সকল রাক্ষসেরা নারায়ন কে চক্র ফিরিয়ে নিতে বললে রাক্ষস মালী বললেন- “হে জনার্দন, হে মাধব, আপনার নাম স্মরণেই মহা অপবিত্র মানবও পবিত্র হয়। হে লক্ষ্মীপতি যুদ্ধে আপনার হাতে নিহত হলে আমি অবশ্যই আপনার শাশ্বত ধাম প্রাপ্ত করবো, এই রাক্ষস জন্ম থেকে মুক্তি পাবো। হে দয়ানিধান দর্পহারী নারায়ন, আপনি সুদর্শন দ্বারা আমাকে মুক্তি প্রদান করুন ।” মালীর প্রার্থনায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন বললেন- “তথাস্তু।” এরপর ভগবান নারায়ণের সুদর্শন চক্র তীব্র গর্জনে ঘুরতে ঘুরতে কোটি সূর্যের দীপ্তির ন্যায় হয়ে মালীর মুণ্ডচ্ছেদ করলো । বাকী রাক্ষসেরা সুমালী, মাল্যবানের সাথে পাতালে প্রবেশ করলো ।
জয় জয় নারায়ন নারায়ন হরি হরি
তেরি লীলা হে ন্যায়ারী ন্যায়ারী
জয় জয় নারায়ন নারায়ণ হরি হরি
স্বামী নারায়ণ নারায়ণ হরি
জয় নারায়ণ ,
হরি হরি
শ্রীমন নারায়ণ
হরি হরি
( চলবে )
এই পেজের অনুমতী ব্যতিরেক কেউ নিজের নামে লেখাগুলি কপি করলে বা ব্লগে দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কপি নয় বরং শেয়ার করে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবীদের শ্রীরামের পবিত্র লীলা জানান ।
◄Like our fb page ► ☑ www.facebook.com/shonatonsondesh
“বিনা কারণে হিংসা কর তুমি পক্ষী জাতি।
এই পাপে নরকেতে হৈবে তোমার স্থিতি ।।”
মুনি বাল্মিকী শাপ দেবার পর ভাবতে লাগলেন, আরে এই তো ছন্দাকারে শাপ বাক্য তাঁর মুখ হতে নিঃসৃত হয়েছে । “জাতি” ‘তি’ আর “স্থিতি”র ‘তি’- পদের অন্তে অন্তে মিল আছে, এটাই তো ছন্দ । এরপর মুনি বাল্মিকী “রামায়ন” গ্রন্থ রচনা করতে বসলেন ।
অপরদিকে ত্রেতা যুগের শেষে রাক্ষস শক্তি মাথাচাড়া দিয়েছিলো । “রাক্ষস” বলতে কেউ কেউ অনার্য বুঝিয়েছেন । মানে যারা ‘আর্য’ ভাব সংস্কৃতি নেয় নি । বা এদের তামসিক শক্তি বলা যেতে পারে। অখাদ্য, কুখাদ্য এমনকি নর মাংস আহার করতো, কৃত্তিবাসী রামায়নে এমনই লেখা । মালী, সুমালি, মাল্যবাণ নামক তিন রাক্ষস , প্রজাপতি ব্রহ্মার তপস্যা করে প্রজাপতি কে সন্তুষ্ট করে দক্ষিণের ভারত মহাসাগড়ের মধ্যে দ্বীপে বিশ্বকর্মা কে দিয়ে লঙ্কা নগরী স্থাপন করে রাজত্ব করতে লাগলেন । এই রাক্ষস দের আশা তবুও মিটলো না। দক্ষিণ ভারত থেকে ‘আর্য’ সংস্কৃতি বিনষ্ট করে মুনি ঋষি দের তাড়িয়ে দিলো, দক্ষিণ ভাগ হোলো রাক্ষস দের আক্রমণের জায়গা । সেসময় তেমন শক্তিশালী নৃপতি ছিলো না যে কিনা দক্ষিণ ভাগ রাক্ষস আতঙ্কমুক্ত করতে পারে । এই রাক্ষসদের সাহস এত বৃদ্ধি পেলো যে স্বর্গ রাজ্য আক্রমণ করার পরিকল্পনা নিলো। দেবতারা এই জেনে নারদ মুনিকে শান্তিদূত রূপে পাঠালেন। কারণ ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত রাক্ষস দের বিনাশের শক্তি ইন্দ্রের ছিলো না । নারদ মুনি এসে মালী, সুমালি, মাল্যবাণ কে জানালো- “আপনারা যদি স্বর্গ আক্রমণ করেন, তবে দেবতারা শ্রী হরির সহায়তা নেবেন।” রাক্ষসেরা জানালো- “শ্রী হরি যুদ্ধে আসুন। আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি যেনো যুদ্ধে সুদর্শন প্রয়োগ না করেন। এটা যুদ্ধের শর্ত।”
দেবতাদের আক্রমণ করলো রাক্ষসেরা। যুদ্ধ চলতে লাগলো। রাক্ষসেরা মায়াবিদ্যার সাহায্য নিলে শ্রী হরি গরুড়ে আসীন হয়ে যুদ্ধে আসলেন । ভগবান নারায়ন বিপুল বেগে অস্ত্র চালনা করে রাক্ষসদের বধ করতে লাগলেন। এই দেখে দেবতারা আনন্দে জয়ধ্বনি দিলেন । রাক্ষস দের বারবার মায়াবিদ্যা করতে দেখে ভগবান নারায়ন সুদর্শন চালনা করলে রাক্ষসেরা বলতে লাগলো- “হে নারায়ন। আপনি যুদ্ধের শর্ত ভঙ্গ করছেন। এই যুদ্ধে শর্ত দিয়েছিলাম আপনি সুদর্শন ধারন করতে পারবেন না।” সকল রাক্ষসেরা নারায়ন কে চক্র ফিরিয়ে নিতে বললে রাক্ষস মালী বললেন- “হে জনার্দন, হে মাধব, আপনার নাম স্মরণেই মহা অপবিত্র মানবও পবিত্র হয়। হে লক্ষ্মীপতি যুদ্ধে আপনার হাতে নিহত হলে আমি অবশ্যই আপনার শাশ্বত ধাম প্রাপ্ত করবো, এই রাক্ষস জন্ম থেকে মুক্তি পাবো। হে দয়ানিধান দর্পহারী নারায়ন, আপনি সুদর্শন দ্বারা আমাকে মুক্তি প্রদান করুন ।” মালীর প্রার্থনায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন বললেন- “তথাস্তু।” এরপর ভগবান নারায়ণের সুদর্শন চক্র তীব্র গর্জনে ঘুরতে ঘুরতে কোটি সূর্যের দীপ্তির ন্যায় হয়ে মালীর মুণ্ডচ্ছেদ করলো । বাকী রাক্ষসেরা সুমালী, মাল্যবানের সাথে পাতালে প্রবেশ করলো ।
জয় জয় নারায়ন নারায়ন হরি হরি
তেরি লীলা হে ন্যায়ারী ন্যায়ারী
জয় জয় নারায়ন নারায়ণ হরি হরি
স্বামী নারায়ণ নারায়ণ হরি
জয় নারায়ণ ,
হরি হরি
শ্রীমন নারায়ণ
হরি হরি
( চলবে )
এই পেজের অনুমতী ব্যতিরেক কেউ নিজের নামে লেখাগুলি কপি করলে বা ব্লগে দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কপি নয় বরং শেয়ার করে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবীদের শ্রীরামের পবিত্র লীলা জানান ।
◄Like our fb page ► ☑ www.facebook.com/shonatonsondesh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন