এবার রামায়ন কাব্যের প্রধান অশুভ চরিত্রের বর্ণনা করা যাক । ভগবান বিষ্ণুর কাছে পরাজিত হয়ে রাক্ষসেরা পাতালে পালিয়েছিলো। এই মুহূর্তে লঙ্কা ছিলো খালি । ব্রহ্মার বংশজ পুলস্ত্য ঋষির বংশধর মহর্ষি বিশ্বশ্রবা মুনির বিবাহ হয়েছিলো ভরদ্বাজ কন্যা লতার সাথে। তাঁহাদের পুত্র কুবের যক্ষ দের নিয়ে লঙ্কাতে বাস করতে থাকলেন । পাতালে থাকা মাল্যবান ও সুমালী মনের মধ্যে লঙ্কা ফিরে পাবার আশাকে জিইয়ে রাখলো ।
গণনা করে দেখলো মহর্ষি বিশ্বশ্রবার সাথে মাল্যবানের কন্যা কেকসীর বিবাহ হলে তাঁদের এক বলশালী পুত্র হবে। সে রাক্ষসদের হৃত গৌরব মর্যাদা ফিরিয়ে আনবে। প্রাচীন ভারতে আর্য অনার্য বিবাহ হোতো । পরম রূপসী রাক্ষসী কেকসী , বিশ্বশ্রবাকে মায়াতে ফেলে তাকে বিবাহ করে। মুনি বিশ্বশ্রবা সন্ধ্যাকালে স্ত্রীসঙ্গ করে । এমন বলা হয় সন্ধ্যায় স্ত্রীসঙ্গ করলে ভূমিষ্ঠ সন্তান রাক্ষস হয় । সেজন্য হিন্দু ধর্মে সন্ধ্যাকালে কেশ বিন্যাস, তৈল মর্দন, মৈথুন, আহার, নিদ্রা, মলিন বস্ত্র পরিধান করতে মানা আছে । এই সময় সন্ধ্যা আরতি , বীজ মন্ত্র জপ, তুলসী বৃক্ষে প্রদীপ নিবেদনের প্রথা আছে । কেকসীর যখন প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হোলো তখন আকাশে বিনা মেঘে বজ্রপাত, রক্ত বৃষ্টি, চিল শকুনের রব, শেয়াল গর্দভ এর কান্না, নানা রকম অশুভ চিহ্ন ইত্যাদি হোলো । জন্মে সেই শিশু এমন রব করলো যে চতুর্দিক কম্পিত হতে লাগলো। দারুন রব করবার জন্য তার নাম হোলো রাবণ ।
এরপর কেকসি এর একটি শক্তিশালী পুত্রের জন্ম দেন, তার নাম কুম্ভকর্ণ । তার পড়ে শুভ লগ্নে যখন নানা শুভ চিহ্ন দেখা গেলো তখন কেকসির গর্ভ হতে একটি শিশু প্রসব হোলো, তাঁর নাম বিভীষণ । এরপর পুনঃ অশুভ লগ্নে কেকসি একটি কন্যার জন্ম দেন, তাঁর নাম শূর্পনাখা । রাবণ প্রথম জীবনে পিতার নিকট বেদাদি শাস্ত্র পাঠ, আয়ুর্বেদ শাস্ত্র, সঙ্গীত শাস্ত্র ইত্যাদি রপ্ত করেছিলো, কিন্তু মাতৃকূল থেকে রাক্ষস সংস্কৃতি লাভ করলো । লঙ্কায় গিয়ে কুবেরকে তাড়িয়ে কুবের এর সব সম্পদ হস্তগত করলো। এমনকি পুস্পক বিমান অবধি। কুবের কৈলাসে আশ্রয় নিলেন যক্ষ দের সহিত । পুনঃ লঙ্কায় রাক্ষস দের আধিপত্য কায়েম হোলো । রাবণ, কুম্ভকর্ণ,বিভীষণ,শূর্পনাখা কঠিন তপস্যা করে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করলো । ব্রহ্মার কাছে রাবণ অমর হবার বর চাইলে ব্রহ্মা দিলেন না। তিনি রাবনের পেটে অমৃত কুম্ভ স্থাপন করে বললেন- “হে রাবণ! যতকাল তোমার উদরে অমৃত কুম্ভ পূর্ণ থাকবে, তোমার মরণ হবে না। তুমি কেবল নর বানরের হাতে মরবে। আজ হতে তুমি আমার বরে নয় টি মস্তক প্রাপ্ত করবে মোট ১০ টি মস্তক হবে তোমার । তোমার নাম হবে দশগ্রীব, দশানন । ” কুম্ভকর্ণ বর চাইতে গেলে দেবতারা দেখলেন এই শক্তিশালী কুম্ভকর্ণ যদি আরোও শক্তি পায় তো ত্রিলোক ধ্বংস করবে। দেবতারা দেবী সরস্বতীর শরণাপন্ন হলেন । দেবী সরস্বতী অভয় দিয়ে কুম্ভকর্ণের জিহ্বায় অধিষ্ঠান করলেন ।
সরস্বতী প্রভাবে কুম্ভকর্ণ বর চাইলেন – “হে প্রজাপতি। তপস্যা করে আমি ক্লান্ত। আমাকে বর দিন যেনো আমি ছ মাস ঘুমাই আর একদিন মাত্র জাগি।” ব্রহ্মা বললেন- “তথাস্তু। কিন্তু অকালে তোমার নিদ্রাভঙ্গ করলে তোমার মৃত্যু নিশ্চিত।” বিভীষণ কিছুই চাইলো না। ব্রহ্মা বললেন- “বিভীষণ তুমি উদার, সাত্ত্বিক। তোমাকে ইচ্ছা মৃত্যুর বর দিলাম ।” শূর্পনাখাকে বর দিলেন- “মায়া বিদ্যায় পারঙ্গদা হবার।” ব্রহ্মার বর পেয়ে রাবণ ত্রিলোক বিজেতা রূপে যুদ্ধে জয়ী হোলো। শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতে রাক্ষস দের তীব্র উৎপীড়ন শুরু হোলো। ময় দানবের রাজ্য আক্রমণ করে রাবন ময় দানবের কন্যা মন্দাদোরী কে বিবাহ করলো । যদিও রাবন একাধিক বিয়ে করেছিলো । কুম্ভকর্ণের বিবাহ হয়েছিলো ত্রিশালা নামক এক রাক্ষসী কন্যার সাথে, বিভীষণ ধর্মমতী সরমা নামক এক গন্ধর্ব কন্যাকে বিবাহ করেছিলেন। শূর্পনাখার সাথে এক রাক্ষসের ভালোবাসা হয়েছিলো, তারা পালিয়ে বিবাহ করেছিলো। কারন সেই রাক্ষস রাবণের সমকক্ষ ছিলো না, ফলে উভয়ের প্রকাশ্যে বিবাহ হবার কোনো সুযোগ ছিলো না । এরপর রাবণ তাদের খুজে বোনের স্বামীকে হত্যা করে। শূর্পনাখা প্রতিশোধের বীজ বুকে নিয়ে বিধবা হয়ে লঙ্কায় থাকতে লাগলো ।
( ক্রমশঃ )
এই পেজের অনুমতী ব্যতিরেক কেউ নিজের নামে লেখাগুলি কপি করলে বা ব্লগে দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কপি নয় বরং শেয়ার করে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবীদের শ্রীরামের পবিত্র লীলা জানান ।
◄Like our fb page ► ☑ www.facebook.com/shonatonsondesh
এরপর কেকসি এর একটি শক্তিশালী পুত্রের জন্ম দেন, তার নাম কুম্ভকর্ণ । তার পড়ে শুভ লগ্নে যখন নানা শুভ চিহ্ন দেখা গেলো তখন কেকসির গর্ভ হতে একটি শিশু প্রসব হোলো, তাঁর নাম বিভীষণ । এরপর পুনঃ অশুভ লগ্নে কেকসি একটি কন্যার জন্ম দেন, তাঁর নাম শূর্পনাখা । রাবণ প্রথম জীবনে পিতার নিকট বেদাদি শাস্ত্র পাঠ, আয়ুর্বেদ শাস্ত্র, সঙ্গীত শাস্ত্র ইত্যাদি রপ্ত করেছিলো, কিন্তু মাতৃকূল থেকে রাক্ষস সংস্কৃতি লাভ করলো । লঙ্কায় গিয়ে কুবেরকে তাড়িয়ে কুবের এর সব সম্পদ হস্তগত করলো। এমনকি পুস্পক বিমান অবধি। কুবের কৈলাসে আশ্রয় নিলেন যক্ষ দের সহিত । পুনঃ লঙ্কায় রাক্ষস দের আধিপত্য কায়েম হোলো । রাবণ, কুম্ভকর্ণ,বিভীষণ,শূর্পনাখা কঠিন তপস্যা করে ব্রহ্মাকে তুষ্ট করলো । ব্রহ্মার কাছে রাবণ অমর হবার বর চাইলে ব্রহ্মা দিলেন না। তিনি রাবনের পেটে অমৃত কুম্ভ স্থাপন করে বললেন- “হে রাবণ! যতকাল তোমার উদরে অমৃত কুম্ভ পূর্ণ থাকবে, তোমার মরণ হবে না। তুমি কেবল নর বানরের হাতে মরবে। আজ হতে তুমি আমার বরে নয় টি মস্তক প্রাপ্ত করবে মোট ১০ টি মস্তক হবে তোমার । তোমার নাম হবে দশগ্রীব, দশানন । ” কুম্ভকর্ণ বর চাইতে গেলে দেবতারা দেখলেন এই শক্তিশালী কুম্ভকর্ণ যদি আরোও শক্তি পায় তো ত্রিলোক ধ্বংস করবে। দেবতারা দেবী সরস্বতীর শরণাপন্ন হলেন । দেবী সরস্বতী অভয় দিয়ে কুম্ভকর্ণের জিহ্বায় অধিষ্ঠান করলেন ।
সরস্বতী প্রভাবে কুম্ভকর্ণ বর চাইলেন – “হে প্রজাপতি। তপস্যা করে আমি ক্লান্ত। আমাকে বর দিন যেনো আমি ছ মাস ঘুমাই আর একদিন মাত্র জাগি।” ব্রহ্মা বললেন- “তথাস্তু। কিন্তু অকালে তোমার নিদ্রাভঙ্গ করলে তোমার মৃত্যু নিশ্চিত।” বিভীষণ কিছুই চাইলো না। ব্রহ্মা বললেন- “বিভীষণ তুমি উদার, সাত্ত্বিক। তোমাকে ইচ্ছা মৃত্যুর বর দিলাম ।” শূর্পনাখাকে বর দিলেন- “মায়া বিদ্যায় পারঙ্গদা হবার।” ব্রহ্মার বর পেয়ে রাবণ ত্রিলোক বিজেতা রূপে যুদ্ধে জয়ী হোলো। শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতে রাক্ষস দের তীব্র উৎপীড়ন শুরু হোলো। ময় দানবের রাজ্য আক্রমণ করে রাবন ময় দানবের কন্যা মন্দাদোরী কে বিবাহ করলো । যদিও রাবন একাধিক বিয়ে করেছিলো । কুম্ভকর্ণের বিবাহ হয়েছিলো ত্রিশালা নামক এক রাক্ষসী কন্যার সাথে, বিভীষণ ধর্মমতী সরমা নামক এক গন্ধর্ব কন্যাকে বিবাহ করেছিলেন। শূর্পনাখার সাথে এক রাক্ষসের ভালোবাসা হয়েছিলো, তারা পালিয়ে বিবাহ করেছিলো। কারন সেই রাক্ষস রাবণের সমকক্ষ ছিলো না, ফলে উভয়ের প্রকাশ্যে বিবাহ হবার কোনো সুযোগ ছিলো না । এরপর রাবণ তাদের খুজে বোনের স্বামীকে হত্যা করে। শূর্পনাখা প্রতিশোধের বীজ বুকে নিয়ে বিধবা হয়ে লঙ্কায় থাকতে লাগলো ।
( ক্রমশঃ )
এই পেজের অনুমতী ব্যতিরেক কেউ নিজের নামে লেখাগুলি কপি করলে বা ব্লগে দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কপি নয় বরং শেয়ার করে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবীদের শ্রীরামের পবিত্র লীলা জানান ।
◄Like our fb page ► ☑ www.facebook.com/shonatonsondesh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন