'শ্মশান' শব্দটি উচ্চারিত হলেই আমরা মনে মনে বেশ ভীত হয়ে পড়ি। শ্মশান থেকে কেউ ঘুরে এলেই তাকে অপবিত্র ভেবে স্নান করিয়ে তবেই ঘরে ঢুকতে দিই, মনে করি শ্মশান অপবিত্র স্থান। কিন্তু, বাইরে অপবিত্র হলেও শ্মশান ঘুরলে মনের অপবিত্র ভাব আপনিই দূর হয়ে যায়।
শ্মশানের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা জানলে মানুষের কামনা বাসনা এমনিই পালিয়ে যাবে। শত শত তীর্থ ভ্রমণ করে যে সাধন-শিক্ষা লাভ না হয়, শ্মশানে কিছুদিন যদি মানুষ থাকে তবে তার সাধনার ভিত মজবুত হয় ও শিক্ষা লাভ হয়। তখন সাধকের কামনা শূন্য হৃদয়ে মহাশক্তি কালী সহসাই উপস্থিত হন। তাই সাধু ও শব শ্মশানেই বাস করেন, কারণ শ্মশান খুব পবিত্র স্থান !
বাস্তব জগতে যেমন শ্মশান আছে ঠিক তেমনই মানুষের দেহেও শ্মশান আছে। আমাদের দেহের মস্তিষ্কের নীচের দিকে -- ইড়া, পিঙ্গলা নাড়ীর মধ্যে শুষুম্না নাড়ীর সঙ্গমস্থল বা ত্রিবেণী হল সেই শ্মশান। যোগশাস্ত্রে এই স্থানকে আজ্ঞাচক্র বলেন। ভগবান ভোলানাথ সেই শ্মশানে অবস্থান করে আপন মনে ধ্যানজপ করেন।
যাদের চিত্ত কামনা-বাসনা বিরহিত হয়ে শুদ্ধ হয়, যে সাধক পরমব্রহ্মে শরণাগত, খুব জপ করে, তারা কালীর ডাক শুনতে পায়। যে সাধক ধ্যান-জপ নিয়মিত করে না, যে সাধক একাগ্র ও আকুল নয় তাদের কাছে কালী ঘুমিয়েই থাকে। যে সাধক অনুক্ষণ কেবল কালী-স্মরণ করে তার হৃদয়ে কালী সদা জাগ্রত হয়ে থাকে, ধ্যান-জপ নিয়মিত হলেই সেই সাধকের হৃদয়ে কালীস্থিতি অনুভুত হয়। কালী তখন সেই সাধকের সামনেই প্রকট হয়ে কর্ম্মক্ষয় করে দিয়ে সাধকপ্রবরকে সন্তানস্নেহে কোলে তুলে নেয়, সাধকের পুনর্জন্ম আর হয় না।
কালী কালী
লিখেছেনঃ
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন