১৬ ডিসেম্বর ২০২০

আজ আমি আপনাদের কামরূপ কামাখ্যা মায়ের মন্দিরের রহস্য ও এক সাধিকার সম্পর্কে কিছু বলব।

সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে বিভিন্ন ধরনের দেব দেবীর মন্দির আর সেইসব মন্দিরের দেবদেবীর দর্শন ভাগ্যের ব্যাপার। তবে এই সকল মন্দির সম্বন্ধে যে সব অজানা রহস্য আছে তা আমাদের অনেকেরই অজানা। তাই সেই অজানাকে জানতে আজ এই লেখাটি মন দিয়ে পড়ুন। আজ আমি আপনাদের কামরূপ কামাখ্যা মায়ের মন্দিরের রহস্য ও এক সাধিকার সম্পর্কে কিছু বলব।

কামরূপ কামাখ্যা মন্দির ভারতের আসামের গৌহাটি নামক স্থানে নিলাচল নামক পাহাড়ে অবস্থিত। এই প্রাচীন মন্দিরে যেখানে আদি শক্তি মা কামাখ্যার পূজো করা হয়। এটি তন্ত্র সাধনারও একটি অন্যতম প্রধান স্থান। মা এখানে খুবই কৃপাময়ী তাই অম্বুবাচী তিথিতে মেলার সময় এখানে খুব ভিড় হয়।


কালিকাপূরান অনুযায়ী জানা যায় যে মাতা সতীর পিতা প্রজাপতি দক্ষরাজ এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন। শিব বিদ্বেষী দক্ষরাজ এই যজ্ঞে সতী ও শিবকে নিমন্ত্রণ করেন না। সেই সময় শিব ও সতীর মধ্যে মনোমালিন্য হয় যজ্ঞকে কেন্দ্র করে। পরবর্তী সময়ে শিবের অনুমতি নিয়ে সতী যজ্ঞ স্থানে আসেন। কিন্তু দক্ষরাজ শিবসহ সতীকে অপমান করেন। স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে যজ্ঞকুণ্ডের আগুনে আত্মহুতি দেন দেবী সতী। সতীহারা শিব প্রচন্ড রাগে সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। সমস্ত সৃষ্টিকে বাঁচতে ও সমস্ত দেবতার অনুরোধে বিষ্ণুদেব তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খন্ড খন্ড করে ৫১ টি অংশে বিভক্ত করেন। পরবর্তীকালে সতীর দেহের ৫১ টি অংশ বহু স্থানে পড়ে তৈরি হয় আদি শক্তির পীঠস্থান। কামাখ্যার নীলাচল পাহাড়ে পড়ে এই অংশটি কালক্রমে প্রস্তরীভুত হয় ও এখানে পূজো হয়।

কামাখ্যা মাকে সবাই তন্ত্র সাধনার দেবী বলেন। তাই তন্ত্র সাধনার মূল স্থান কামরূপ কামাখ্যা মন্দির। এই মন্দিরে দশমহাবিদ্যার মাতঙ্গী ও কমলা রূপটিরও পূজা হয় আর গর্ভগৃহের বাইরে মার বাকি মহাবিদ্যার মন্দির রয়েছে।


এখানে মন্দির সকাল ৮ টায় খোলে এবং সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা থাকে। এখানে মায়ের মন্দির খুব রহস্যময় ও আকর্ষণীয়। যে প্রস্তরটি পূজিত হয় ও ফুল দিয়ে ঢাকা থাকে সই খান থেকে প্রাকৃতিক ভাবে অনবরত জল বের হয়। এই জল কোথা থেকে আসছে তা সকলেরই অজানা। প্রতিবছর তিন রাত ও চারদিন অম্বুবাচী তিথিতে মায়ের মন্দির বন্ধ থাকে। সেই সময় এখানে বিরাট মেলা বসে। এই পীঠস্থানে তান্ত্রিক ও অঘোরীদের খুব যাতায়াত। মা এখানে খুবই কৃপাময়ী। ভগবান শিব ও দেবী সতীর প্রিয় স্তান এই তীর্থভুমি।


সেটা ২০০৪ কি ২০০৫ হবে, অম্বুবাচীর মেলায় চলেছি। হেঁটে উঠছি মূল ফটক ধরে। নীলাচল বাসিনী কামরূপা কামেশ্বরীর টানে নীল পাহাড়ে নেমেছে দেশ বিদেশের সাধুর ঢল। যোগী, গৃহী, যতি, ন্যাসী, শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব, গানপত্য্ কে নেই সেই দলে? নিরঞ্জনী থেকে মূর্তি পূজারী, সাকারী থেকে নিরাকারী পায়ে পায়ে অম্বুবাচীর মহামেলায় সকলেই নীল পাহাড়ের পাদদেশে।


নীলনয়না সুন্দরীর আকর্ষণে কামাখ্যা পাহাড়ের অমোঘ হাতছানি -- কার সাধ্য এড়ায় সেই চোখের ইশারা! পরতে পরতে যাদু টোনার রোমহর্ষক গালগল্প, সুন্দরীর সন্মোহনে পুরুষের ভেড়া হয়ে ম্যাঁ-ম্যাঁ করে ঘুরে বেড়ানোর টান টান পৌরাণিক কাহিনী! নীলাচলের গুহায় গুহায় রাতভর তন্ত্র জাগরণ -- আদিম রাত নামে ঘোরলাগা চোখে। সুপ্রাচীন কাল থেকে তন্ত্র মন্ত্র ও গুপ্ত সাধনার কেন্দ্র ভূমি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে দেবী তীর্থ কামাখ্যা। মা এখানে চিরযৌবনা কামেশ্বরী। ৬৪ কলার গোপন সাধনা কেন্দ্র। এই শক্তিপীঠের কথা দেবী ভাগবত, দেবী পুরান, তন্ত্র চূড়ামণি, কালিকা পুরাণ, যোগিনী তন্ত্র, হেবজ্র তন্ত্র সহ প্রাচীন গ্রন্ত্রে রয়েছ। ভারতবর্ষের শক্তি সাধনার অত্যন্ত সুপ্রচীন কেন্দ্র কামরূপা কামাখ্যা। অবশেষে গুয়াহাটি কাঁপিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছুটে চলেছে দৈ্ত্যকার বাসগুলো। বৃষ্টির কোপে মানুষ যেখানে নিরাপদ ডেরা খুঁজছে সেখানে পথ চলছে অম্বুবাচীর পথিক। কাতারে কাতারে মানুষ চলছে কামেশ্বরী মা কামাখ্যার টানে।

নীলচলের পাহাড়ি পথ গোটাটা-ই মানুষের দখলে। সবার লক্ষ্য মন্দির, একবার মায়ের দরবারে হাজিরা দিতে পারলেই যেন বিশ্বজয় হয়ে গেল। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে স্বেচ্ছাসেবীরা পানীয় জলের যোগান দিচ্ছে। অম্বুবাচীর মহামেলায় নেই কোন জাতপাতের বালাই। গরিয়া (মুসলমান) ছাত্র সংস্থা অন্য হিন্দু সংস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে তিনদিন ধরে কয়েক হাজার মিনারেল ওয়াটারের বোতল তুলে দিচ্ছে পিপাসিত পূণ্যার্থীর হাতে। যত উপরে উঠছি পায়ের নীচে ছোট হয়ে আসছে গুয়াহাটি শহর।


কখন যে বৃষ্টি থেমে গেল, মেঘ ঝরা আকাশে ফুটে উঠেছে দু-চারটি জোনাকির মতো তারারা। দুই পাশের অন্ধকার ঘন জঙ্গল থেকে ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা সঙ্গীত ছাপিয়ে মানুষের বিচিত্র কথনে প্রাচীন প্রাগজ্যোতিষপুরের আবহসঙ্গীতে যেন ইতিহাস ফুঁড়ে উঠেছে। এ কোন ভারতবর্ষ! অষ্ট্রিক দ্রাবিড, মোঙ্গলীয় হাত ধরাধরি চলছে আদিম শক্তি মাতৃ রূপা কামনা পূরণের দেবীর দরবারে বিচিত্র চাওয়া-পাওয়া নিয়ে।

পথের বাঁকে বাঁকে দেবীর আরাধক গণ বিচিত্র সম্ভার বিছিয়ে রেখেছেন। মেলা যে -- তাই ভক্তিরও প্রদর্শনী আছে। গৌরী মা ও সাজিয়ে বসেছেন রাজপাট। রক্তাম্বরী, বয়স খুব বেশি তখন চল্লিশের আশেপাশে। টল টলে দুটো চোখ কিন্ত নেশার ঘোরে ঘূর্ণায়মান। লম্বা একরাশ চুল পিঠে ছড়ানো, আবার জটও আছে। যে কোন ভদ্র লোকের ঘরের মানান সই গিন্নি হওয়ার ক্ষমতা রাখে। গায়ের রঙ ধবধবে ফরসা। কপালে আধুলি সাইজে লাল সিঁদুরের টিপ। সিঁথিতে লাল রঙ বীভৎস ভাবে লেপ্টে আছে। বুকটা দপ করে উঠল এই মেয়ে এখানে কেন? অম্বুবাচীর মহামেলার প্রদর্শনীতে এ কী করে এলো?

গৌরী মাকে ঘিরে বেশ বড় জটলা। কাছে কী করে যাওয়া যায়! ওই ষন্ডামার্কা ভৈরব কি ওর রক্ষক? লাঠি দিয়ে ভিড় তাড়াচ্ছে যেন মশা মারচ্ছে পটাস পটাস করে। এক কোনে দাঁড়িয়ে আছি। লোকজন প্রনামী নিয়ে আসছে, গৌরী মার ঘোর নামছে। চোখ দুটো আনমনা হয়ে গেল, হঠাৎ বিকট শব্দ করে গৌরী ভাবে পড়ে গেল। ষন্ডাভৈরবকে নীচে ফেলে গৌরী চড়ে বসল তার উপর। যেন শিবের উপর কালী।

চারদিক কাঁপিয়ে শাঁখ করতাল ঊলু ধ্বনি শিঙ্গা বেজে উঠল। দৌড়াদৌড়ি হুড়াহুড়ির মধ্যে ছিটকে পড়লাম। ভাব ধরেছে, ভাব ধরেছে। জবাব উঠছে -- 'আয়, যার যা জানার জেনে নে, যার যা পাওয়ার চেয়ে নে। মা ভরে পড়েছেন।'

আমি এই সব পছন্দ করি না, তাই তাড়াতাড়ি সেই জায়গা ছেড়ে হাঁটা দিলাম।

এরপর কয়েকদিন ধরেই তাকে, কেন জানি না, খুঁজে চলেছি, মন্দিরের পাশে বলিঘরের মধ্যে খুঁজলাম, এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি গৌরী বা কড়ি-মা মূল মন্দিরের পেছনে দিকে, এটাই মনে হয় ওর মূল বসার জায়গা। কড়িমার সঙ্গে পরিচয়ে জানলাম যে ও এই পথে বহু বছর হয়ে গেল। অনেক বছর ধরে এই সময়ে সে না কি কামাখ্যা আসে।

আলাপ থেকে অন্তরঙ্গতা ও বন্ধুত্ব। কড়ির সমস্ত শরীর জুড়ে কড়ির গহনা। কোমরে, হাতে, পায়ে, গলায় অজস্র কড়ির গহনা। কড়ি আসে তারাপীঠ থেকে। ওখানে ওর নাম গৌরী, কেউ বলে কুক্কুরী মা। আটটি কুকুর পাহারা দেয় ওর তারাপীঠের আসন। সেই আসন ও আমাকে ছেড়ে দিতে রাজী আছে, বন্ধুত্ব বলে কথা।

কড়িকে জিজ্ঞেস করলাম - ‘তোমার সাধনা কি?’

চটজলদি জিহ্বাগ্র সূচালো করে কড়ি ‘লিঙ্গ মুদ্রা’ দেখিয়ে দিল। আরেকটি হাত উঠে এলো নাকের ফুটোতে। এই দুই মিলনে শক্তি লাভ। বামাচারী তন্ত্রের কথা বলছে নিরক্ষর কড়ি। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে লিঙ্গ যোনির সঙ্গম- ‘জলে নামিবি সাঁতার কাটিবি …তবু চুল ভিজাবি না’।


কড়ির হাতের বিশাল ত্রিশূলটা ছুঁয়ে দেখতে যেতেই ফোঁস করে উঠল কড়ি -- ‘এ্যাই খবরদার কইছি। ত্রিশূলে হাত দিবি না। ভস্ম হয়ে যাবি’।

আমি বললাম -- ‘ও সব ভণ্ডামি অন্যের কাছে করবি কড়ি। তোর ত্রিশূলে কি ভূত প্রেত রয়েছে?’

কড়ি রাগে অগ্নি শর্মা হয়ে আমার কপালে ত্রিশূল উঁচিয়ে ধরলো। এক ভৈরবীর এই ব্যবহারে খুব রাগ হল আমার, কোথা থেকে বল এলো জানি না। ওর হাতের ত্রিশূল কেড়ে নিয়ে উল্টো করে ওর দিকে তাক করলাম এইবার --

বিস্ময়ে কড়ির চক্ষু চড়ক গাছ -- ‘ও মা গো, তুই কি কালীর অবতার!’

এইবার আমার মুচকি হাসার পালা। কত সহজে এরা বন্ধু বনে ও বানায়।

আমি বললাম -- ‘কালীর বাপের বাপ গো, চিনলি না আমাকে!’ তারপর থেকে কড়ি আমার খুব ভালো বন্ধু।

অম্বুবাচীর রাতজাগা সাধনায় ক্লান্ত কড়ি। চোখের নীচে কালি, নতুন বস্ত্রের গরম ও অনিদ্রা তার চকমকে ভাবটি অনেক খানিই ম্লান হয়ে গেছে। লোকে আশীর্বাদ নিতে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

কড়ির বসার আসনের পেছনে একটি কাপড়ের পুটুলি খক্ খক্ করে কেশে উঠল। একটা মুখ বেরিয়ে এল, কড়ি তাড়াতাড়ি লাল রঙের তরল পদার্থ কাপড়ের পুটুলির মুখ ফাঁকা করে ঢেলে দিল।

-- মানুষ নাকি রে?

কড়ি চোখ টিপে কানে কানে বলল -- ‘আমার গুরু গো। মিনসে সারা রাত চক্রে বসেছিল। গাঁজা চরস এক সঙ্গে টেনে মরতে বসেছে। বুকের হাপরের টান। মানা করলাম, একদমই শুনলো না’।

বোকার মত জিজ্ঞাসা করলাম -- ‘চক্র’ কি রে?’ চোখ মটকে কড়ি আবার জিহ্বা বের মুদ্রা দেখালো।

আমি বললাম -- ‘ওরে বাবা এই বয়সেও!’

কড়ি বললো --- 'আমার গুরু গো, এর হাত ধরে এই পথে এতদুর এয়েছি যে। ফেলাতে পারি না তো। কুকুর শেয়াল থেকে বহুবার বাঁচিয়েছে যে।’

কড়ির চোখের কোনে কি জল? ভৈরবীর কি দয়া মায়াও আছে? গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি তো অটল দেখছি!

কড়ির চোখে উদাসীন দৃষ্টি -- গল্পের গন্ধ পেলাম, পূর্বজীবনের গল্প -- ‘ছিলাম গৌরী সরকার, হইলাম কুক্কুরী মা। তারাপীঠের জাগ্রত ভৈরবী। গৌরী আর দশটা বাঙালি মেয়ের মতোই মা-বাবার সংসারে বড় হচ্ছিল স্বপ্ন নিয়ে।

বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের সাধারণ বাঙালি মেয়ে, স্কুলের মুখ দেখিনি। গরীবের সংসারে লেখাপড়া শিইখ্যা কে কবে লাট-হাকিম হইছে। দেখতে তো ফেলনা নয়। গায়ের চামড়া ফুটফুটা। এক দূর সম্পর্কের ভাইগনার মধ্যস্থতায় বিয়ে ঠিক হইল কালী মন্দিরের এক সেবায়ইতের সঙ্গে।

শ্বশুর বাড়িতে প্রথম রাতে স্বোয়ামীর বদলে ফুলশয্যায় আইলেন মন্দিরের পুজারী। ইয়া তাগড়া চেহারা। দেখে ভয়ে সিটকাই যাই। ও মা গো। 'হে মা কালী বাঁচাও গো'- কত আর্তনাথ করলাম গো। মিনসে ভাগাল-পা, বুড়া সাপ লাজা দিয়্যা বান্ধাইয়া পালাইল গো!

না কেউ বাঁচাতে আসে নাই গো। কেউ আসে না গো। ওই সব কালী দুগ্গা সব মিছা। কামাখ্যা, তারা সব মিছা -- মেয়েছেলের শরম বাচাইতে। সোয়ামী মিনসে বলল গুরুদেবকে তুষ্টি কইরলে ভগমান শক্তি দিবে। আমার জীবন ওই দিনই ঠিক হইয়া গেছে রে। তারপরে কত হাত বদল। শেষে ভাসতে ভাসতে তারাপীঠে আইলাম রে। এই গুরু আশ্রয় দিল, দীক্ষা দিল। এখন কোন পুরুষরে ডরাই না গো। এখন পায়ের তলে পিষে রাখি’।

কড়ির পুরুষ পিটানোও সচক্ষে দেখা গেল। হাতের হরিণের চামডা দিয়ে বানানো বেত, আশীর্বাদ প্রার্থীদের নীল ডাউন করিয়ে পিঠে দু ঘা মেরে বলছে -- ‘যা তোর মঙ্গল হবে’।

প্রণামী না পেলেই হুঙ্কার -- ‘এ্যাই প্রণামী দিলি না’। পিঠে দুই ঘা, তার উপরে প্রণামী।

বেশ আছে কড়িমা গৌরী! অনেক শিক্ষিত মানুষরাও তার আশীর্বাদ প্রার্থী যে!

রাত হলে ঘোর নামে। তন্ত্র মন্ত্রে কামাখ্যাধাম রহস্যময়ী হয়ে উঠে। ভাঙ গাঁজা চরস ভাঙের খোলা ঢালাও ব্যবস্থা। বিনা লাইসেন্সে খুব কম পয়সায় দম দমাদম চলছে। ভৈরবের সঙ্গে ভৈরবী। কেষ্ট ঠাকুরের সঙ্গে রাধারানী। সব ভাবে ভারে পড়ছে। লাখো লাখো লোক চিৎকার করছে, --- ‘জয় মা কামাখ্যা! জয় সিদ্ধেশ্বরী, জয় বিন্ধ্যবাসিনী, জয় রাধারানী, জয় ভুবনেশ্বরী’।

মোহময় রাত, তন্দ্রাহারা রাত, অম্বুবাচীর পুণ্যলগ্নে নিমেষ হারা হয়ে তাকিয়ে থাকে। আসলে অম্বুবাচীতে কামাখ্যাধামে কোন দিন রাত নেই। বরং রাতই জমে উঠে ষোড়শী মেজাজে। রজশ্বলা চিরযৌবনা ষোড়শী কন্যার ৬৪ উপাচারে অঘোরী, বামাচারী, দক্ষিণা ও শৈব-বৈষ্ণবের মাখোমাখো সাধনায় আদিভৌতিক পৃথিবী লাল গেরুয়া সাজে জেগে উঠে তিন দিনের জন্য।

লিখেছেনঃ Prithwish Ghosh

Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।