সন্তানকে নাড়ি-ছেঁড়া ধন বলা হয়। মাতৃজঠরে ১০ মাস ধরে তিলে তিলে একটি ভ্রূণ বেড়ে ওঠে। গর্ভে থাকাকালীন তার সব চাহিদা মা-ই মেটায় তার রক্ত দিয়ে, রক্তের মাধ্যমে যাবতীয় পুষ্টি-পদার্থ অনায়াসে চলে যায় ভ্রূণে, আর যা কিছু বর্জনীয়, তাও ঐ মা-ই তার নিজ শরীরের মাধ্যমে বাইরে বের করে দেয়। একটা পেশল শক্তিশালী নাড়ির বাঁধনে গর্ভস্থ শিশুটি মাতৃজঠরে আটকে থাকে। আর চারদিকে থাকে কয়েক স্তরের রক্ষা-আবরণ। তারপর যখন সময় হয় ভূমিষ্ঠ হওয়ার অর্থাত্ পৃথিবীর আলো দেখার, তখন ঐ মা-ই তীব্র প্রসব-যন্ত্রণা সহ্য করে শিশুটিকে পৃথিবীতে আনে, কঠিন বন্ধনে আবদ্ধ নাড়ির বাঁধন কেটে শিশুকে বাইরে আনা হয়, শিশুটি সজোরে কেঁদে উঠে তার আগমন-বার্তা জানান দেয়। নাড়ি থেকে ছুটে যায় ঠিকই, কিন্তু পরম মমতা ঝরে পড়ে মার স্তন-যুগল হতে। দুধপানরত শিশুর হাস্যোজ্জ্বল মুখ যে দেখেছে, সে জানে স্বর্গীয় সুখ কাকে বলে।
ধীরে ধীরে শিশুটি বাবা-মা সবাইকে চিনতে শিখে, সবার আগে চিনে নেয় তার মাকে, এমনকি মায়ের আঁঁচলটিও তার চেনা হয়ে যায়। তারপর বোল ফোটে কচি মুখে, হামাগুড়ি দেয়, উঠে দাঁড়ায়, হাঁটি হাঁটি পা পা করে সামনে এগোয়। বাবা-মাও শিশুর ভবিষ্যত্ ভাবনায় নিমগ্ন হয়। সব বাবা-মা'ই চায় তাদের সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে। তারা চায় যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে ওঠে তাদের আদরের মানিক। এ লক্ষ্যেই তারা নিজেদের কথা ভুলে গিয়ে ,অশেষ কষ্ট স্বীকার করে, তাদের রক্তজল করা অর্থ-সম্পদে সন্তানকে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়। যেদিন তাদের সন্তান প্রথম স্কুলে যায়, সেকি আনন্দ, কি উচ্চাশা তাদের মনের মুকুরে উঁকি দিয়ে যায়। যদি তারা অশিক্ষিত হয়, তবু সাধ্যমত চেষ্টা করে সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে। আর শিক্ষিত ও সচেতন বাবা-মা শত কাজের মধ্যেও সময় করে সন্তানকে সুশিক্ষার আলোকে আলোকিত করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। মেধার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে যখন সন্তান কাছে এসে দাঁড়ায়, অনাবিল আনন্দে ভরে যায় তাদের বুক। এভাবে শিক্ষাজগতের ধাপে ধাপে সফলতার ছাপ রেখে যখন তাদের সন্তান দৃপ্ত কদমে এগিয়ে চলে, বাবা-মা'র মনও আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠে। সুখ-স্বপ্নেরা ভিড় করে আসে, বাবা-মা সেগুলো চয়ন করে সুখের নীড় রচনা করে।
কখনও তাদের সুখ-নীড় বাস্তবেও অটল থাকে, যেন কত জনমের পুণ্যফল জমে ছিল, তাই এ পরম পাওয়া। আবার কখনওবা স্বপ্ননীড় ভেঙে খান খান হয়ে যায়, সন্তানের অবাধ্যতায়, অপরিণাম দর্শিতায়। যখন তারা ছাত্র-জীবনকে সঠিকভাবে কাজে না লাগিয়ে হেলায় নষ্ট করে, আর উচ্চশিক্ষার শেষ সোপানে পিছলে পড়ে, ফল আশানুরূপ হয় না। বাবা-মা'র বুক তখন বিদীর্ণ হয়ে যায় তীব্র হতাশায়। তারা কিছুতেই সন্তানের এই হেরে যাওয়া মেনে নিতে পারেন না। কষ্টের তীব্রতা বাড়ে, কারণ তারা তো কর্তব্যে কোন কার্পণ্য করেননি, পদে পদে সতর্ক করে দিয়েছেন, ছাত্রজীবনের মূল লক্ষ্যে অবিচল থাকতে বলেছেন, কিন্তু সন্তান সে কথা শোনেনি, যখন ছোট ছিল, কাছে ছিল, কোন পরীক্ষায় হারতে দেননি তারা, কিন্তু উচ্চশিক্ষার্থে যখন কাছ-ছাড়া হল, তখনই কেমন যেন বদলে যেতে লাগল তাদের আদরের সন্তান, যাদের জন্য কত বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন তারা, নিজে না খেয়ে খাইয়েছেন, কোন অপ্রতিকূলতার আঁঁচ লাগতে দেননি গায়ে।
কিন্তু সব আনন্দ, সব প্রাপ্যতা ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে সন্তান যখন বিপথগামী হয়, কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, তখন বাবা-মা সে দুঃখ, সে বেদনা সইতে পারেন না, তাদের চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ে সে তীব্রতা, অকালে বুড়িয়ে যান তারা, কিন্তু সন্তানেরা তা বুঝতেই পারে না। অথচ বাবা-মা যেমন সন্তানের প্রতি তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেন, সন্তানেরও দায়িত্ব থাকে বাবা-মার প্রতি। বাবা-মা যেন কখনই দুঃখ না পান, সেদিকে খেয়াল রাখা সন্তানেরই কর্তব্য। অনর্থক অর্থের অপচয় করা তাদের শোভা পায় না। ধনাঢ্য বন্ধুদের দেখাদেখি অনেক মধ্যবিত্তের সন্তান সে মত চলতে চায়, আর তাতেই আভিজাত্য মনে করে। কিন্তু এ ধারনাটাই তাদের ভুল। প্রত্যেকেরই তাদের শিকড়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যত্নবান হওয়া উচিত। এ বোঝার মধ্যে, একে মেনে নেয়ার মধ্যে কোন দীনতা নেই, বরং বাবা-মা'র পাঠানো স্বল্প টাকায় যে সন্তান সাধারণভাবে চলার দৃঢ়তা দেখায়, তারাই পরবর্তীতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে সসম্মানে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়।
আরও একটা বিষয়ে সন্তানরা ভুল করে থাকে, তাহল প্রতিষ্ঠিত না হয়েই আর একটি জীবনের সাথে জড়িয়ে যাওয়া। এজন্য তাদের লেখাপড়ায় যেমন বিঘ্ন ঘটে, তেমনি পায়ের নিচের মাটিও শক্ত হয় না, ফলে জীবনীশক্তিরও নিম্নগতি শুরু হয়। সংসার জীবন শুরু করার আগে বাবা-মা'র প্রতিও সন্তানের কিছু কর্তব্য থাকে। ভাই-বোনের প্রতি দায়িত্ব থাকে। সেগুলোর কিছুটা হলেও পালন করতে হয়। বাবা-মা'ই সঠিক সময়ে নতুন সংসার শুরু করার সব বন্দোবস্ত করে দেন। তাই এ বিষয়ে তাদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়, তাতে বাবা-মা'র মন যেমন শান্তি পায়, তেমনি তাদের বর্ষিত আশীর্বাদে সন্তানের চলার পথ সুগম হয়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় সন্তানরা সে পথে না গিয়ে ভুল সিদ্ধান্তে দিক হারায়। তার ফলশ্রুতিতে তারা যেমন জীবনে সার্থকতা লাভ করতে পারে না, তেমনি বাবা-মাও সন্তানের অধঃপতনে অসুখী হন।
তীব্র অভিমানে সন্তানদের কাছ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেন। বড় কঠিন সে সরে যাওয়া, বড় বেদনার সে অন্তরাল। যা কারো জন্যই শুভ ফল দেয় না। দিতে পারে না। দিন বদলাতে পারে, যুগ পাল্টাতে পারে, কিন্তু সন্তানস্নেহ কখনও পাল্টায় না, পাল্টাতে পারে না। সেটি আজও অমলিন, আজও চির জাগরুক প্রত্যেক বাবা-মার অন্তরের অন্তঃস্থলে। তাই প্রত্যেক সন্তানের উচিত বাবা-মা যেন কখনও অসুখী না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখা ও অধিক যত্নবান হওয়া।
-
আমাদের জন্মভূমিও মায়ের সমান। তাই জন্মভূমি ভারতবর্ষের অবমাননাকারী, হিংসাকারী, দেশবিরোধী, কালোবাজারী, সংস্কৃতি-ধ্বংসকাী, সংবিধান-অমান্যকারীদের তীব্র নিন্দা করুন। জয় ভারতমাতা
-
শ্রীরাম........
সীতারাম......
সীতারাম.............
জয় জয় রাম ..............
Courtesy by: Prithwish Ghosh
ধীরে ধীরে শিশুটি বাবা-মা সবাইকে চিনতে শিখে, সবার আগে চিনে নেয় তার মাকে, এমনকি মায়ের আঁঁচলটিও তার চেনা হয়ে যায়। তারপর বোল ফোটে কচি মুখে, হামাগুড়ি দেয়, উঠে দাঁড়ায়, হাঁটি হাঁটি পা পা করে সামনে এগোয়। বাবা-মাও শিশুর ভবিষ্যত্ ভাবনায় নিমগ্ন হয়। সব বাবা-মা'ই চায় তাদের সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে। তারা চায় যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে ওঠে তাদের আদরের মানিক। এ লক্ষ্যেই তারা নিজেদের কথা ভুলে গিয়ে ,অশেষ কষ্ট স্বীকার করে, তাদের রক্তজল করা অর্থ-সম্পদে সন্তানকে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়। যেদিন তাদের সন্তান প্রথম স্কুলে যায়, সেকি আনন্দ, কি উচ্চাশা তাদের মনের মুকুরে উঁকি দিয়ে যায়। যদি তারা অশিক্ষিত হয়, তবু সাধ্যমত চেষ্টা করে সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে। আর শিক্ষিত ও সচেতন বাবা-মা শত কাজের মধ্যেও সময় করে সন্তানকে সুশিক্ষার আলোকে আলোকিত করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। মেধার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে যখন সন্তান কাছে এসে দাঁড়ায়, অনাবিল আনন্দে ভরে যায় তাদের বুক। এভাবে শিক্ষাজগতের ধাপে ধাপে সফলতার ছাপ রেখে যখন তাদের সন্তান দৃপ্ত কদমে এগিয়ে চলে, বাবা-মা'র মনও আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠে। সুখ-স্বপ্নেরা ভিড় করে আসে, বাবা-মা সেগুলো চয়ন করে সুখের নীড় রচনা করে।
কখনও তাদের সুখ-নীড় বাস্তবেও অটল থাকে, যেন কত জনমের পুণ্যফল জমে ছিল, তাই এ পরম পাওয়া। আবার কখনওবা স্বপ্ননীড় ভেঙে খান খান হয়ে যায়, সন্তানের অবাধ্যতায়, অপরিণাম দর্শিতায়। যখন তারা ছাত্র-জীবনকে সঠিকভাবে কাজে না লাগিয়ে হেলায় নষ্ট করে, আর উচ্চশিক্ষার শেষ সোপানে পিছলে পড়ে, ফল আশানুরূপ হয় না। বাবা-মা'র বুক তখন বিদীর্ণ হয়ে যায় তীব্র হতাশায়। তারা কিছুতেই সন্তানের এই হেরে যাওয়া মেনে নিতে পারেন না। কষ্টের তীব্রতা বাড়ে, কারণ তারা তো কর্তব্যে কোন কার্পণ্য করেননি, পদে পদে সতর্ক করে দিয়েছেন, ছাত্রজীবনের মূল লক্ষ্যে অবিচল থাকতে বলেছেন, কিন্তু সন্তান সে কথা শোনেনি, যখন ছোট ছিল, কাছে ছিল, কোন পরীক্ষায় হারতে দেননি তারা, কিন্তু উচ্চশিক্ষার্থে যখন কাছ-ছাড়া হল, তখনই কেমন যেন বদলে যেতে লাগল তাদের আদরের সন্তান, যাদের জন্য কত বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন তারা, নিজে না খেয়ে খাইয়েছেন, কোন অপ্রতিকূলতার আঁঁচ লাগতে দেননি গায়ে।
কিন্তু সব আনন্দ, সব প্রাপ্যতা ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে সন্তান যখন বিপথগামী হয়, কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, তখন বাবা-মা সে দুঃখ, সে বেদনা সইতে পারেন না, তাদের চোখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ে সে তীব্রতা, অকালে বুড়িয়ে যান তারা, কিন্তু সন্তানেরা তা বুঝতেই পারে না। অথচ বাবা-মা যেমন সন্তানের প্রতি তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেন, সন্তানেরও দায়িত্ব থাকে বাবা-মার প্রতি। বাবা-মা যেন কখনই দুঃখ না পান, সেদিকে খেয়াল রাখা সন্তানেরই কর্তব্য। অনর্থক অর্থের অপচয় করা তাদের শোভা পায় না। ধনাঢ্য বন্ধুদের দেখাদেখি অনেক মধ্যবিত্তের সন্তান সে মত চলতে চায়, আর তাতেই আভিজাত্য মনে করে। কিন্তু এ ধারনাটাই তাদের ভুল। প্রত্যেকেরই তাদের শিকড়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যত্নবান হওয়া উচিত। এ বোঝার মধ্যে, একে মেনে নেয়ার মধ্যে কোন দীনতা নেই, বরং বাবা-মা'র পাঠানো স্বল্প টাকায় যে সন্তান সাধারণভাবে চলার দৃঢ়তা দেখায়, তারাই পরবর্তীতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে সসম্মানে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়।
আরও একটা বিষয়ে সন্তানরা ভুল করে থাকে, তাহল প্রতিষ্ঠিত না হয়েই আর একটি জীবনের সাথে জড়িয়ে যাওয়া। এজন্য তাদের লেখাপড়ায় যেমন বিঘ্ন ঘটে, তেমনি পায়ের নিচের মাটিও শক্ত হয় না, ফলে জীবনীশক্তিরও নিম্নগতি শুরু হয়। সংসার জীবন শুরু করার আগে বাবা-মা'র প্রতিও সন্তানের কিছু কর্তব্য থাকে। ভাই-বোনের প্রতি দায়িত্ব থাকে। সেগুলোর কিছুটা হলেও পালন করতে হয়। বাবা-মা'ই সঠিক সময়ে নতুন সংসার শুরু করার সব বন্দোবস্ত করে দেন। তাই এ বিষয়ে তাদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়, তাতে বাবা-মা'র মন যেমন শান্তি পায়, তেমনি তাদের বর্ষিত আশীর্বাদে সন্তানের চলার পথ সুগম হয়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় সন্তানরা সে পথে না গিয়ে ভুল সিদ্ধান্তে দিক হারায়। তার ফলশ্রুতিতে তারা যেমন জীবনে সার্থকতা লাভ করতে পারে না, তেমনি বাবা-মাও সন্তানের অধঃপতনে অসুখী হন।
তীব্র অভিমানে সন্তানদের কাছ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেন। বড় কঠিন সে সরে যাওয়া, বড় বেদনার সে অন্তরাল। যা কারো জন্যই শুভ ফল দেয় না। দিতে পারে না। দিন বদলাতে পারে, যুগ পাল্টাতে পারে, কিন্তু সন্তানস্নেহ কখনও পাল্টায় না, পাল্টাতে পারে না। সেটি আজও অমলিন, আজও চির জাগরুক প্রত্যেক বাবা-মার অন্তরের অন্তঃস্থলে। তাই প্রত্যেক সন্তানের উচিত বাবা-মা যেন কখনও অসুখী না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখা ও অধিক যত্নবান হওয়া।
-
আমাদের জন্মভূমিও মায়ের সমান। তাই জন্মভূমি ভারতবর্ষের অবমাননাকারী, হিংসাকারী, দেশবিরোধী, কালোবাজারী, সংস্কৃতি-ধ্বংসকাী, সংবিধান-অমান্যকারীদের তীব্র নিন্দা করুন। জয় ভারতমাতা
-
শ্রীরাম........
সীতারাম......
সীতারাম.............
জয় জয় রাম ..............
Courtesy by: Prithwish Ghosh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন