‘যারা বলেন যে, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা
সম্ভব নয়, তারা হয় বাংলা জানেন
না, নয়তো বিজ্ঞান জানেন না।’
-আগামী
প্রজন্মের উদ্দেশে এই চিরস্মরণীয়
উক্তিটি যিনি করেছিলেন, তিনি হলেন উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠতর প্রতিভাদের একজন ‘সত্যেন্দ্রনাথ বসু’।
যে সময়টাতে জন্মেছিলেন বিজ্ঞানের চার
কিংবদন্তি_ পরমাণু বিজ্ঞানী লিস মিটনার, অটোহ্যান,
আলবার্ট
আইনস্টাইন ও ম্যাক্সভন লু-এর মতো প্রতিভাবান
বিজ্ঞানীরা; সময়ের সেই সুবর্ণ ধারায় এ উপমহাদেশে
রামানুজন, মেঘনাদ সাহা, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু এবং রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি জন্মগ্রহণ করেন আরেক যোগ্য উত্তরসূরি
সত্যেন্দ্রনাথ বসু।
পৃ্থিবীর মোট ১৮টি মৌলিক কণার মধ্যে ১৭টি
আবিস্কৃত (সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা,শারদীয় সংখ্যা ১৪১৯)
হলেও বাকি ১টি কণা যা অন্য সব কণার ভরের কারন তার প্রথম ধারণা দেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। পৃথিবীর যেকোন বস্তু
সৃস্টির কারনও এই কণা। এই কণার নাম হল ঈস্বর
কণা বা (GOD PARTICLE)।
প্রথম দিকে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সির কলেজে
অধ্যাপনা করলেও পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
থাকা অবস্থায় তিনি এই কণার ধারণা দেন এবং একটি নিবন্ধ লিখে জার্মানীর একটি বিখ্যাত
বিজ্ঞান সাময়িকীর কাছে তা প্রকাশ করার জন্য পাঠান। কিন্তু সাময়িকীটি তা অবহেলায় না ছাপালে তিনি
তা সরাসরি আইনস্টাইনের ঠিকানায় পাঠান। আইনস্টাইন এর গুরুত্ব অনুধাবন করে নতুন একটি তত্ব দেন যা “বোস-আইনস্টাইন তত্ব”নামে পরিচিত। পরে পিটার হিগস্ এই
তত্বের উপর গবেষনা করেন এবং এই কণিকার নাম দেন “বোসন” কণা (বসু থেকে বোসন)।
সর্বশেষে এ সম্পর্কিত বই বাজারে বেশী বিক্রি
এবং মানুষকে আকর্ষন করতে এই কণার নাম দেওয়া হয় “ঈশ্বর কণা বা (GOD PARTICLE)।
সত্যেন্দ্রনাথ বসু তার জীবনের সেরা কাজটি করেছিলেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের একটি কক্ষে বসে। তাঁর মাধ্যমেই
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বপ্রেক্ষাপটে পরিচিত নাম হয়ে ওঠে। অথচ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই বসুর নাম মনে
রাখেনি। তার বাস করা বাড়িটি ভেঙে ফেলেছে। তাঁর
নথিপত্রও সংরক্ষণ করতে পারেনি। আসলে
আমাদের দেশের মাটি কৃতজ্ঞতাবোধ জিনিসটা বোঝে না। ইতিহাস জিনিসটা তাদের কাছে অর্থহীন। দ্রুত
মন থেকে মুছে ফেলাটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।
“কিন্তু, পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে বোসের
নাম বোসন কণা হিসেবে চিরস্থায়ী আসন নেয়।”
----------------------------------------
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনাঃ শ্রী জয় রায়