১৯ জুন ২০১৩

অম্বুবাচীর বা অমাবতির কথা


বর্ষাকাল এসে গেলেই আমাদের হিন্দুদের বিভিন্ন  আনুষ্ঠানিক ক্রিয়া ইত্যাদি শুরু হয়ে যায় এই আষাঢ়ে বেশ কিছু ধর্মকৃত্য সম্পন্ন হয় আমাদেরতার মধ্যে রথযাত্রা, অম্বুবাচী, বিভিন্ন ব্রত যেমন শায়নৈকাদী ব্রত ,শ্রীশ্রী মনষাদেবীর পূজা (লৌকিক ধর্ম) ইত্যাদি

আজ অম্বুবাচী নিয়ে কিছু বলি এটা নিয়ে অনেকরই মনে প্রশ্ন আছে যা হোক অম্বুবাচীকে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতি ও বলে এখন দেখব এটা আসলে কি আমাদের হিন্দুদের শাস্ত্রে পৃথিবীকে মা বলা হয় বেদে এই রকমই বলা হয়েছে তিনি আমাদের মা পৌরানিক যুগেও পৃথিবীকে ধরিত্রী মাতা বলা হত

তাহলে দেখা যাচ্ছে পৃথিবী আমাদের মা ,কারন সেখানেই আমাদের জন্ম ,শুধু আমাদের কেন ফুল ,পাখী ,প্রকৃতি এক কথায় সবাই আমরা পৃথিবীর সন্তান
মহাজাগতিক ধারায় পৃথিবী যখন সূর্যের মিথুন রাশিস্থ আদ্রানক্ষত্রে অবস্থান করে সেদিন থেকে বর্ষাকাল শুরু ধরা হয়

আমরা জানি মেয়েদের ঋতুকাল বা রজঃস্বলা হয় এবং একজন নারী তারপরই সন্তান ধারনে সক্ষম হয় ঠিক তেমনি প্রতিবছর অম্বুবাচীর এই তিনদিনকে পৃথিবীর ঋতুকাল ধরা হয়।। এর সাথে প্রাচীন কৃষি ব্যাবস্থা জড়িয়ে আছে এই তিন দিন জমিতে চাষ কোন করা হয় না বর্ষায় সিক্তা পৃথিবী নতুন বছরে নতুন ফসল উত্পাদের উপযোগী হয় উর্ব্বরতা কেন্দ্রিক কৃষিধারায় নারী এবং ধরিত্রী সমার্থক বলে গন্য করা হয়

আষাড় মাসের শুরুতে পৃথিবী বা বসুমতি মাতা যখন বর্ষার নতুন জলে সিক্ত হয়ে ওঠে তখন তাকে ঋতুমতি নারী রূপে গন্য করা হয় এবং শুরু হয় অম্বুবাচী প্রবৃত্তি ঠিক তিন দিন পরে সেটা শেষ হয় ,সেটা হল অম্ববুচি নিবৃত্তি

এই নিবৃত্তির পরই প্রাচীন কালে জমি চাষ করত কৃষকেরা এখন ও বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ম রক্ষা হয় ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে এটা রজোউত্সব নামে ও পালিত
হয় আসামের কামরুপে কামাখ্যা দেবীর মন্দির এই তিনদিন বন্ধ থাকে আমাদের প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ঋতুকালে মেয়েরা অশুচি থাকে একই ভাবে পৃথিবী এই অম্বুবাচী বা অমাবতির তিন দিন আশুচি থাকে বলে চিন্তা করা হয়ে

এ সময় যারা ব্রহ্মচার্য পালন করেন যেমন :ব্রহ্মচারী ,সাধু ,সন্নাসী ,যোগীপুরুষ ,বিধবা মহিলা (সেই সব বিধবা মহিলা যারা ব্রহ্মচার্য পালন করেন অর্থাত্ আমিষ গ্রহন করেন না নিরামিষ খান তারা ) এরা কেউই অশুচি পৃথিবীর উপর আগুনের রান্না কিছু খান না বিভিন্ন ফলমূল খেয়ে থাকেন এই তিন দিন

যা হোক এটা ধর্মের একটা লৌকিক আচার প্রতি বছর আষাঢ় এর ৭ তাখিরে এটা শুরু হয় এবং ১০তারিখে শেষ হয় নমষ্কার

-----------------------------
কৃতজ্ঞতাঃ সম্পদ দাশ (Agni Sampad)  
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।