বৈশাখী শুক্লা চতুর্দশীর সন্ধ্যায় শ্রী হরির অবতার রূপে নর সিংহ ভগবান প্রকট হয়েছিলেন বহু লক্ষ বৎসর পূর্বে। কিন্তু এই কলি যুগেও তাঁর আবির্ভাব ও আশীর্বাদ থেকে ভক্তরা বঞ্চিত হন নি। তার ২ টি উদাহরন দিচ্ছি।
আজ থেকে সহস্রাধিক বৎসর পূর্বে ভগবৎ পাদ শঙ্কর আচার্য যখন দিগবিজয়ে বেরিয়ে সনাতন হিন্দু ধর্মের বিজয় পতাকা ভারতের নানা প্রান্তে উড্ডীন করছেন ,সেই সময় তিনি বেশ কয়েক বার বিরুদ্ধবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। একবার দক্ষিণ ভারতের শ্রী শৈল ম তীর্থে শঙ্কর এক দুষ্ট কাপালিকের কবলে পড়েন। কাপালিক তাঁকে বলি দেয়ার চেষ্টায় ছিল। শঙ্কর তা বুঝেও নির্বিকার ভাবে ভগবৎ চিন্তায় মগ্ন ছিলেন। এইসময় সহসা শঙ্করের অন্যতম শিষ ও পদ্মপাদ সেখানে উগ্র মূর্তিতে প্রবেশ করেন ও গর্জন করতে করতে বলির খাঁড়া দিয়ে কাপালিক কে বধ করেন। পরে প্রক্রিতস্থ হলে তিনি শঙ্করকে জানান যে ছোট বেলা থেকেই পদ্মপাদ নর সিংহ ভক্ত। একবার প্রভু পদ্মপাদকে দেখা দিয়ে বলেছিলেন যে ভয়ানক বিপদ কালে তিনি আবির্ভূত হয়ে তাঁকে রক্ষা করবেন। বাস্তবেও তাই হল। নর সিংহ ভগবান পদ্মপাদের শরীরে আবিষ্ট হয়ে দুষ্ট দমন করলেন। ভারত ও হিন্দু ধর্ম তার ফলে আচার্য শঙ্কর কে আরও অনেক দিন জীবিত ভাবে পেল এবং অগ্র গতির দিকে এইভাবে আর -ও এগিয়ে গেল।
সাম্প্রতিক অতীতে এ সি ভক্তি বেদান্ত দ্বারা "আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সঙ্ঘ" বা ইস্কন স্থাপিত হবার পর যখন নানারকম প্রতিকূলতার মধ্যে পড়েছিল,বিশেষ করে যখন মায়াপুর মূল কেন্দ্রে বার বার ডাকাতের হামলা হচ্ছিল, সেই সময় ইস্কনের পরিচালক গন নর সিংহ ভগবানের উপাসনা করতে মনস্থ করেন। একবার এমনকি ডাকাতেরা প্রধান মন্দির বা চন্দ্রোদয় মন্দিরের বিখ্যাত রাধামাধবের বিগ্রহ কেড়ে নেবার-ও চেষ্টা করেছিল। যাই হোক, কাঞ্চীর বর্তমান শঙ্কর আচার্য পূজ্যপাদ জয়েন্দ্র সরস্বতীর পরামর্শ ক্রমে নর সিংহ ভগবান মায়া পুরে স্থাপিত হন ।এর পর থেকে ইস্কনের সঙ্কট দূর হতে থাকে ও আরও অগ্র গতি হতে থাকে ।এই ঘটনাটি আরও তাৎপর্য পূর্ণ এই কারনে যে , নর সিংহ ভগবানের বিগ্রহ স্থাপনের পূর্বে কৃষ্ণ ভিন্ন অন্য দেবতা মূল মন্দিরে পূজিত হতেন না।হয়ত সংস্থার পরিচালক গন কৃষ্ণ ভিন্ন অন্য দেবতাদের দাস দাসী জ্ঞান করে অন্য দেবগনের উপাসনা করায় উৎসাহ দিতেন না। কিন্তু বিপদ সৃষ্টি করে শ্রী ভগবান, নর সিংহ (তন্ত্রের বিচারে যিনি সাক্ষাৎ ভৈরব বা শিব) দেবের পূজা করিয়ে গোঁড়ামি মুক্ত সনাতন হিন্দুত্বের ঐক্যবদ্ধ বিরাটত্বের বাণী আমাদের সকলকে শিখিয়েছেন।
এই বাণী সকল সনাতন হিন্দুর শোণিত ধারায় গুঞ্জরিত হোক।
জয় নর সিংহ ভগবানের জয়। জয় সনাতন হিন্দু ধর্মের জয়।
ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুন।
(Written by Debasish Singha)