১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩

শ্রীকৃষ্ণের ১৬০০০ মহীয়সী !!


যিনি রাধাকৃষ্ণ জানতে পেরেছেন চিনতে পেরেছেন এই তত্ত্ব তাঁকে কোনদিন ভাবায়নি কেন না তিনি অজ্ঞানতার গভীর অন্ধকার থেকে মুক্ত । সৌর জগতে নানা কিছু বিদ্যমান যাহা বিজ্ঞান আমাদের একটি কাল্পনিক ধারণা তৈরি করে বুঝাতে চেষ্টা করে মাত্র । এখনকার অভিজান এই সৌর জগতের বাহিরে কি আছে তাই জানার উদ্দেশ্যে, হয়ত কিছুদিন পর আরেকটি কাল্পনিক ধারণা মাত্র উপস্থাপন করবে ।
আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী আমাদের প্রবিত্র ধর্ম গ্রন্থ বেদ ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা। বেদ অর্থে আমরা পরিচিতি পাই "জ্ঞান" ,বেদ শব্দটি এসেছে "বিদ" থেকে যার অর্থ "জানা, পবিত্র জ্ঞান"। এই জ্ঞান আমাদের বর্ননা করে বুঝানো হয়েছে উপনিষদ ও পুরাণের মাধ্যমে । কোন কঠিন বিষয় বুঝানোর জন্য আমরা নানা উদাহরণ যোগ করি যেন যাকে বোঝানো হইতেছে সেযেন বুঝে উঠতে পারে, তাই পূরাণ এখন তাহলে প্রশ্ন আসবে এই সকল চরিত্র কি কাল্পনিক না কাল্পনিক নয়, আমাদের বোঝানের জন্য বিশ্লেষন কারীর অভাব তাই আজ আমরা নানা জনের প্রশ্নের সামনে মাথা নত করে দাঁড়াই । আমি ও একজন সেই দলের মহাত্মা স্বামীবিবেকানন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র, শ্রীলপ্রভুপাদ, শ্রীধর গোস্বামী সহ নানা ভাগবতের রচিত গ্রন্থ পাঠে আমি কিঞ্চিৎ জানতে পেরেছে, আমার এই সল্প জ্ঞান নিয়েই আমি এত বড় দুঃসাহস দেখাইতেছি,

শ্রীকৃষ্ণের জীবনী সম্বন্ধে একমাত্র গ্রহনযোগ্য গ্রন্থ ব্যসদেব এর মহাভারত।সেই ব্যসদেব মহাভারতে তাঁর সম্বন্ধে কি লেখা আছে দেখা যাক-
"শ্রীকৃষ্ণের একমাত্র স্ত্রী ছিলেন রুক্সিনীদেবী যিনি ছিলেন পরম ধার্মিক,বিদূষী ও পতিব্রতা।সন্তান জন্মদানের পূর্বে তাঁরা উভয়েই বদরিকাশ্রমে যান ও দীর্ঘ বারবছর কঠোর ব্রহ্মচর্য পালন করেন।এরপর রুক্সিনীদেবী এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন যার নাম রাখা হয় প্রদ্যুম্ন।"
[ব্যসকৃত মহাভারত,সৌপ্তিকাপর্ব, ২/২৯-৩০,তথ্যসূত্র- শ্রীকৃষ্ণের জীবনী নিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ৩৬ বছরের সুদীর্ঘ গবেষনালব্ধ ফলাফল]

পূরাণে যে কত জন মহিয়ষিনীর নাম পাওয়া যায় তত্ত্ববিচার করিলে তাঁহারা সকলেই একজনই । মূলকথা এখনও আমরা শ্রীকৃষ্ণ কে চিনতে পারি নাই তাই আমাদের এই অজ্ঞানতা ।
বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছিলেন- ভারতবর্ষের অধিকাংশ হিন্দুর, বাঙ্গালা দেশের সকল হিন্দুর বিশ্বাস যে, শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বরের অবতার। কৃষ্ণস্তু ভগবান্ স্বয়ং—ইহা তাঁহাদের দৃঢ় বিশ্বাস। বাঙ্গালা প্রদেশে, কৃষ্ণের উপাসনা প্রায় সর্বব্যাপক। গ্রামে গ্রামে কৃষ্ণের মন্দির, গৃহে গৃহে কৃষ্ণের পূজা, প্রায় মাসে মাসে কৃষ্ণোৎসব, উৎসবে উৎসবে কৃষ্ণযাত্রা, কণ্ঠে কণ্ঠে কৃষ্ণগীতি, সকল মুখে কৃষ্ণনাম। কাহারও গায়ে দিবার বস্ত্রে কৃষ্ণনামাবলি, কাহারও গায়ে কৃষ্ণনামের ছাপ। কেহ কৃষ্ণনাম না করিয়া কোথাও যাত্রা করেন না; কেহ কৃষ্ণনাম না লিখিয়া কোন পত্র বা কোন লেখাপড়া করেন না; ভিখারী “জয় রাধে কৃষ্ণ” না বলিয়া ভিক্ষা চায় না। কোন ঘৃণার কথা শুনিলে “রাধে কৃষ্ণ‌!” বলিয়া আমরা ঘৃণা প্রকাশ করি; বনের পাখী পুষিলে তাহাকে “রাধে কৃষ্ণ” নাম শিখাই। কৃষ্ণ এদেশে সর্বব্যাপক।
কৃষ্ণস্তু ভগবান্ স্বয়ং। যদি তাহাই বাঙ্গালীর বিশ্বাস, তবে সর্বসময়ে কৃষ্ণরাধনা, কৃষ্ণনাম, কৃষ্ণকথা ধর্মেরই উন্নতিসাধক। সকল সময়ে ঈশ্বরকে স্মরণ করার অপেক্ষা মনুষ্যের মঙ্গল আর কি আছে? কিন্তু ইঁহারা ভগবান্‌কে কি রকম ভাবেন? ভাবেন, ইনি বাল্যে চোর—ননী মাখন চুরি করিয়া খাইতেন; কৈশোরে পারদারিক—অসংখ্য গোপনারীকে পাতিব্রত্যধর্ম হইতে ভ্রষ্ট করিয়াছিলেন; পরিণত বয়সে বঞ্চক ও শঠ-বঞ্চনার দ্বারা দ্রোণাদির প্রাণহরণ করিয়াছিলেন। ভগবচ্চরিত্র কি এইরূপ? যিনি কেবল শুদ্ধসত্ত্ব, যাঁহা হইতে সর্বপ্রকার শুদ্ধি, যাঁহার নামে অশুদ্ধি, অপুণ্য দূর হয়, মনুষ্যদেহ ধারণ করিয়া সমস্ত পাপাচরণ কি সেই ভগবচ্চরিত্রসঙ্গত? https://www.facebook.com/gitaschool
ভগবচ্চরিত্রের এইরূপ কল্পনায় ভারতবর্ষের পাপস্রোত বৃদ্ধি পাইয়াছে, সনাতনধর্মদ্বেষিগণ বলিয়া থাকেন। এবং সে কথার প্রতিবাদ করিয়া জয়শ্রী লাভ করিতেও কখনও কাহাকে দেখি নাই। আমি নিজেও কৃষ্ণকে স্বয়ং ভগবান্ বলিয়া দৃঢ় বিশ্বাস করি; পাশ্চাত্য শিক্ষার পরিণাম আমার এই হইয়াছে যে, আমার সে বিশ্বাস দৃঢ়ীভূত হইয়াছে। ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণের যথার্থ কিরূপ চরিত্র পুরাণেতিহাসে বর্ণিত হইয়াছে, তাহা জানিবার জন্য, আমার যতদূর সাধ্য, আমি পুরাণ ইতিহাসের আলোচনা করিয়াছি। তাহার ফল এই পাইয়াছি যে, কৃষ্ণসম্বন্ধীয় যে সকল পাপোপাখ্যান জনসমাজে প্রচলিত আছে, তাহা সকলই অমূলক বলিয়া জানিতে পারিয়াছি, এবং উপন্যাসকারকৃত কৃষ্ণসম্বন্ধীয় উপন্যাস সকল বাদ দিলে যাহা বাকি থাকে, তাহা অতি বিশুদ্ধ, পরমপবিত্র, অতিশয় মহৎ, ইহাও জানিতে পারিয়াছি। জানিয়াছি—ঈদৃশ সর্বগুণান্বিত, সর্বপাপসংস্পর্শশূন্য, আদর্শ চরিত্র আর কোথাও নাই। কোন দেশীয় ইতিহাসেও না, কোন দেশীয় কাব্যেও না।
কি প্রকার বিচারে আমি এরূপ সিদ্ধান্তে উপস্থিত হইয়াছি, তাহা বুঝান এই গ্রন্থের একটি উদ্দেশ্য। কিন্তু সে কথা ছাড়িয়া দিলেও এই গ্রন্থের বিশেষ প্রয়োজন আছে। আমার নিজের যাহা বিশ্বাস, পাঠককে তাহা গ্রহণ করিতে বলি না, এবং কৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব সংস্থাপন করাও আমার উদ্দেশ্য নহে। এ গ্রন্থে আমি তাঁহার কেবল মানবচরিত্রেরই সমালোচনা করিব। তবে এখন হিন্দুধর্মের আলোচনা কিছু প্রবলতা লাভ করিয়াছে। ধর্মান্দোলনের প্রবলতার এই সময়ে কৃষ্ণচরিত্রের সবিস্তারে সমালোচনা প্রয়োজনীয়।
(চলবে) হয়ত আমার এই অনুসন্ধান সম্পুর্ন নয় তারপরেও আমার প্রত্যাশা আমাদের অজ্ঞানতা একদিন দূরীভূত হবেই হবে আর আমরা এইতত্ত্ব সেইদিন বুঝিয়া উঠিতে পারিব ।

বেদবাণীঃ ঋগবেদ এর তিনটি মন্ত্র যথাক্রমে ১.২৪.৭,৪.৩.২ ও ১০.৭১.৪ এ বলা হয়েছে "যায়েব পত্য উষতে সুভাসহ অর্থাত্‍ যেভাবে জ্ঞানীগন জ্ঞানপ্রাপ্ত হন ঠিক সেভাবে একক পতি-পত্নীযুক্ত সংসার আনন্দ ও সুখ লাভ করে।

ঋগবেদ ১০.৮৫.২৩ এ বলা হয়েছে স্বামী ও স্ত্রীর সবসময় উচিত পুনরায় বিয়ে না করার ব্যপারে সংযমী হওয়া।

অথর্ববেদ ৭.৩৮.৪ বলেছে "স্বামীর উচিত শুধু একমাত্র স্ত্রীর প্রতি অনুরক্ত থাকা।দ্বিতীয় কোন নারীর প্রতি অনুরাগ তো দুরে থাক,অন্যকোন নারী সম্বন্ধে তার আলোচনাও করা উচিত নয়।"
বহুবিবাহ নিষিদ্ধের এর চেয়ে স্পষ্ট নিদর্শন আর কি থাকতে পারে!

ঋগবেদ ১০.১০৫.৮ বলেছে যে একাধিক স্ত্রীর অস্তিত্ব মানেই জাগতিক সকল দুঃখের আনায়ন।

ঋগবেদ ১০.১০১.১১ বলেছে দুই স্ত্রীযুক্ত ব্যক্তিকে সেভাবেই কাঁদতে হয় ঠিক যেভাবে চলমান রথের ঘোড়া উভয় দিক থেকে চাবুক এর আঘাতে হ্রেষা রব করে!

ঋগবেদ ১০.১০১.১১ এও বলেছে যে একাধিক স্ত্রী জীবনকে লক্ষহীন করে তোলে।

অথর্ববেদ ৩.১৮.২ বলেছে একজন নারীর কখনো যেন কোন সতীন(Co-wife) না হয়।

[ঈশ্বর মঙ্গলময়, কৃষ্ণকৃপা হলে ভক্তের কোন তত্ত্বই অজ্ঞাত থাকে না ]

পিতৃদেব ডাঃ সুদেব চন্দ্র দাসের আশির্বাদে,
দাসানুদাস শ্রীমান কৃষ্ণকমল ।
মেহারকালীবাড়ি , শাহ্‌রাস্তি, চাঁদপুর, বাংলাদেশ ।
๑۩๑ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্কুল ๑۩๑
Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।