কুমারী পুজা মহৎ উদ্দেশে হলে ও অনেকে একে ব্যঙ্গ করে। এই ব্যঙ্গ করার মূল
কারন হল এরা এর মূল তত্ত্ব জানে না। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন: কুমারী পূজা করে
কেন? সব স্ত্রীলোক ভগবতীর এক একটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ। দুর্গাপূজার অষ্টমী বা নবমীতে সাধারণ
৫ থেকে ৭ বছরের
একটি কুমারীকে প্রতিমার
পাশে বসিয়ে দেবী প্রতিমা
এটা মাতৃভাবের প্রতিই
শ্রদ্ধা নিবেদন। চণ্ডীতে বলা হয়েছে—
যা দেবী সর্বভূতেষু
মাতৃরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্য মধ্যে মায়ের রূপ
ধরে যে দেবী বিরাজিতা, তাঁকে পুনঃপুন নমস্কার করি।
কুমারী কাকে বলে?
বছর বয়স থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত অজাতপুষ্পবালাকে কুমারী বলে। মাতৃভাব বিকাশের জন্য রামকৃষ্ণ মঠ বিশেষভাবে এ
পূজা করে থাকে। দুর্গাপূজার
সময় বা জগদ্ধাত্রী পূজার
সময় এ পূজা অনেক
আগে থেকেই প্রচলিত। ঠিক
ঠিকভাবে পূজা হলে মন বিশুদ্ধ হয়, ঈশ্বরের কৃপালাভ
হয়। বয়স অনুসারে কুমারীর
নানা শাস্ত্রীয় নাম
হয়ে থাকে। যেমন— কালিকা,
সুভগা, উমা, মালিনী ইত্যাদি। শান্ত, পবিত্র, সর্তশীলা এসব দৈবী সম্পদের
অধিকারিণী কুমারীই
জগজ্জননীর
প্রতিমারূপে গ্রহণে বিধান আছে। ব্রহ্ম ও শক্তি অভিন্ন। যাঁকে ঈশ্বর, হরি, গড প্রভৃতি বলা হয়, তাঁকেই
মাতৃভাবে সাধনার সময়
বলা হয় জগজ্জননী। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানবজাতির
ক্ষেত্রে মায়ের নীরব
অবদানের ঋণ পরিশোধ
করা অসম্ভব।
নারী শক্তিরূপিণী। তাঁর
সঠিক মূল্যায়নের অভাবে আমাদের অবক্ষয়
নেমে আসে। আবার তাঁর
উপযুক্ত মর্যাদায় সমাজ হয় কল্যাণমুখী।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন
— ‘মেয়েদের পূজা করেই সব জাত বড় হয়েছে। যে দেশে,
যে জাতে মেয়েদের
পূজা নেই, সে দেশ, সে জাত
কখনও বড় হতে পারেনি,
কস্মিন্কালেও পারবে না।
মনু বলেছেন, ‘যত্র নার্যস্তু পূজ্যন্তে রমন্তে তএ দেবতা:।
যত্রৈতাস্তু ন
পূজ্যতে সর্বাস্তত্রাফলা : ক্রিয়া:।’ অর্থাত্,
যেখানে নারীগণ পূজিতা হন,
সেখানে দেবতারা প্রজসন্ন।
যেখানে নারীগণ
সম্মানিতা হন না,
সেখানে সকল কাজই নিষ্ফল। (মনুসংহিতা, ৩.৫৬)
যেখানে স্ত্রীলোকের আদর
নেই, স্ত্রীলোকেরা নিরানন্দে অব করে, সে সংসারের,
সে দেশের কখনও উন্নতির আশা নেই।’ মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তব রূপ কুমারী পূজা।
কুমারীতে সমগ্র মাতৃজাতির
শ্রেষ্ঠ শক্তি—পবিত্রতা, সৃজনী ও পালনী শক্তি, সকল
কল্যাণী শক্তি সূক্ষ্মরূপে বি
তাই কুমারী পূজা।
কুমারী প্রতীকে আমাদের
মাতৃরূপে অবস্থিত।
সর্বব্যাপী ঈশ্বরেরই মাতৃভাবে আরাধনা।
যে জাতির মধ্যে শুদ্ধা,
শিক্ষিতা, করুণাময়ী মায়ের
সংখ্যা বেশি সে মাতৃজাতির
সন্তানেরা সমাজের আদর্শ
সন্তান। নিজ নিজ শক্তির বিকাশের জন্য সমগ্র
নারী জাতির প্রতি প্রয়োজন
নিজের মায়ের শ্রদ্ধা। তাই
কুমারী পূজার
মাধ্যমে সৃষ্টির সেরা জীব
মানুষ শ্রদ্ধা জানায়। যিনি সকল প্রাণীতে মাতৃরূপে আছেন,
তাকে প্রণাম। কুমারী পূজার
প্রণামে আছে তিনি পরমভাগ্ নীম এবং ভুবনবাক কুমারীং ভজে। অর্থাত্,
কুমারী প্রতীকে জগজ্জননীর
পূজায় পরম সৌভাগ্য লাভ
হয়। এ কুমারী সমগ্র জগতের বাক্যস্বরূপা, বিদ্যাস্বরূপা। তিনি এক হাতে অভয় এবং অন্য হাতে বর প্রদান করেন। অন্য ধ্যান আছে— ভদ্রবিদ্যাপ্রকা শিনীম। তিনি সকল শুভ বিদ্যার প্রকাশিকা।
তাই মাতৃজাতির প্রতি যথার্থ
শ্রদ্ধা দেখিয়ে আমরা আমাদ
সমাজ ও জীবনকে মহত্ করে তুলতে পারি।
লেখক: স্বামী অমেয়ানন্দ;
অধ্যক্ষ, রামকৃষ্ণ মঠ ও
রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা
৫ থেকে ৭ বছরের
একটি কুমারীকে প্রতিমার
পাশে বসিয়ে দেবী প্রতিমা
এটা মাতৃভাবের প্রতিই
শ্রদ্ধা নিবেদন। চণ্ডীতে বলা হয়েছে—
যা দেবী সর্বভূতেষু
মাতৃরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্য মধ্যে মায়ের রূপ
ধরে যে দেবী বিরাজিতা, তাঁকে পুনঃপুন নমস্কার করি।
কুমারী কাকে বলে?
বছর বয়স থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত অজাতপুষ্পবালাকে কুমারী বলে। মাতৃভাব বিকাশের জন্য রামকৃষ্ণ মঠ বিশেষভাবে এ
পূজা করে থাকে। দুর্গাপূজার
সময় বা জগদ্ধাত্রী পূজার
সময় এ পূজা অনেক
আগে থেকেই প্রচলিত। ঠিক
ঠিকভাবে পূজা হলে মন বিশুদ্ধ হয়, ঈশ্বরের কৃপালাভ
হয়। বয়স অনুসারে কুমারীর
নানা শাস্ত্রীয় নাম
হয়ে থাকে। যেমন— কালিকা,
সুভগা, উমা, মালিনী ইত্যাদি। শান্ত, পবিত্র, সর্তশীলা এসব দৈবী সম্পদের
অধিকারিণী কুমারীই
জগজ্জননীর
প্রতিমারূপে গ্রহণে বিধান আছে। ব্রহ্ম ও শক্তি অভিন্ন। যাঁকে ঈশ্বর, হরি, গড প্রভৃতি বলা হয়, তাঁকেই
মাতৃভাবে সাধনার সময়
বলা হয় জগজ্জননী। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানবজাতির
ক্ষেত্রে মায়ের নীরব
অবদানের ঋণ পরিশোধ
করা অসম্ভব।
নারী শক্তিরূপিণী। তাঁর
সঠিক মূল্যায়নের অভাবে আমাদের অবক্ষয়
নেমে আসে। আবার তাঁর
উপযুক্ত মর্যাদায় সমাজ হয় কল্যাণমুখী।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন
— ‘মেয়েদের পূজা করেই সব জাত বড় হয়েছে। যে দেশে,
যে জাতে মেয়েদের
পূজা নেই, সে দেশ, সে জাত
কখনও বড় হতে পারেনি,
কস্মিন্কালেও পারবে না।
মনু বলেছেন, ‘যত্র নার্যস্তু পূজ্যন্তে রমন্তে তএ দেবতা:।
যত্রৈতাস্তু ন
পূজ্যতে সর্বাস্তত্রাফলা : ক্রিয়া:।’ অর্থাত্,
যেখানে নারীগণ পূজিতা হন,
সেখানে দেবতারা প্রজসন্ন।
যেখানে নারীগণ
সম্মানিতা হন না,
সেখানে সকল কাজই নিষ্ফল। (মনুসংহিতা, ৩.৫৬)
যেখানে স্ত্রীলোকের আদর
নেই, স্ত্রীলোকেরা নিরানন্দে অব করে, সে সংসারের,
সে দেশের কখনও উন্নতির আশা নেই।’ মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তব রূপ কুমারী পূজা।
কুমারীতে সমগ্র মাতৃজাতির
শ্রেষ্ঠ শক্তি—পবিত্রতা, সৃজনী ও পালনী শক্তি, সকল
কল্যাণী শক্তি সূক্ষ্মরূপে বি
তাই কুমারী পূজা।
কুমারী প্রতীকে আমাদের
মাতৃরূপে অবস্থিত।
সর্বব্যাপী ঈশ্বরেরই মাতৃভাবে আরাধনা।
যে জাতির মধ্যে শুদ্ধা,
শিক্ষিতা, করুণাময়ী মায়ের
সংখ্যা বেশি সে মাতৃজাতির
সন্তানেরা সমাজের আদর্শ
সন্তান। নিজ নিজ শক্তির বিকাশের জন্য সমগ্র
নারী জাতির প্রতি প্রয়োজন
নিজের মায়ের শ্রদ্ধা। তাই
কুমারী পূজার
মাধ্যমে সৃষ্টির সেরা জীব
মানুষ শ্রদ্ধা জানায়। যিনি সকল প্রাণীতে মাতৃরূপে আছেন,
তাকে প্রণাম। কুমারী পূজার
প্রণামে আছে তিনি পরমভাগ্ নীম এবং ভুবনবাক কুমারীং ভজে। অর্থাত্,
কুমারী প্রতীকে জগজ্জননীর
পূজায় পরম সৌভাগ্য লাভ
হয়। এ কুমারী সমগ্র জগতের বাক্যস্বরূপা, বিদ্যাস্বরূপা। তিনি এক হাতে অভয় এবং অন্য হাতে বর প্রদান করেন। অন্য ধ্যান আছে— ভদ্রবিদ্যাপ্রকা শিনীম। তিনি সকল শুভ বিদ্যার প্রকাশিকা।
তাই মাতৃজাতির প্রতি যথার্থ
শ্রদ্ধা দেখিয়ে আমরা আমাদ
সমাজ ও জীবনকে মহত্ করে তুলতে পারি।
লেখক: স্বামী অমেয়ানন্দ;
অধ্যক্ষ, রামকৃষ্ণ মঠ ও
রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন