আমাদের হিন্দু/সনাতন সমাজে নানা কুপ্রথা, কুসংস্কারে জজ্জরিত হইয়া
পড়িয়া ছিল, যদিও বর্তমান যুবক সমাজের কল্যানে আমাদের অনেক উন্নতি ঘটিয়াছে
আরোও উন্নতির প্রয়োজন। স্বামী বিবেকানন্দ এই কুপ্রথা ও কুসংস্কার হইতে জাতি
কে উদ্ধার করিবার লক্ষ্যে নানা গবেষণা করিয়াছেন, তাহা যুব সমাজকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিয়াছেন, আজ এখানে কিছু অংশ সকলের কল্যান কামনায় প্রচার করিলাম-
শঙ্করাচার্য প্রভৃতি যুগাচার্য-জাতিগঠনকারী ছিলেন। তাঁহারা যে-সব অদ্ভুত ব্যাপার করিয়াছিলেন, তাহা আমি তোমাদিগকে বলিতে পারি না, আর তোমাদের মধ্যে কেহ, আমি যাহা বলিতে যাইতেছি, তাহাতে বিরক্ত হইতে পারো।
কিন্তু আমার ভ্রমণ ও
অভিজ্ঞতায় আমি ইহার সন্ধান পাইয়াছি, আর আমি ঐ গবেষণায় অদ্ভুত ফল লাভ
করিয়াছি। সময়ে সময়ে তাঁহারা দলকে দল বেলুচি লইয়া এক মুহূর্তে তাহাদিগকে
ক্ষত্রিয় করিতে ফেলিতেন; দলকে দল জেলে লইয়া এক মুহূর্তে ব্রাহ্মণ করিয়া
ফেলিতেন। তাঁহারা সকলেই
ঋষি-মুনি ছিলেন—আমাদিগকে তাঁহাদের কার্যকলাপ ভক্তিশ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখিতে হইবে।
তোমাদিগকেও ঋষি—মুনি হইতে হইবে। ইহাই কৃতকার্য হইবার গোপন রহস্য। অল্পাধিক পরিমাণে সকলকেই ঋষি হইতে হইবে। 'ঋষি' শব্দের অর্থ কি? বিশুদ্ধস্বভাব ব্যক্তি। আগে শুদ্ধচিত্ত হও—তোমাতেই শক্তি আসিবে। কেবল 'আমি ঋষি' বলিলেই চলিবে না; যখনই তুমি যথার্থ ঋষিত্ব লাভ করিবে, দেখিবে—অপরে তোমার কথা কোন না কোন ভাবে শুনিতেছে। তোমার ভিতর হইতে এক আশ্চর্য শক্তি আসিয়া অপরের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করিবে; তাহারা বাধ্য হইয়া তোমার অনুবর্তী হইবে, বাধ্য হইয়া তোমার কথা শুনিবে, এমন কি তাহাদের অজ্ঞাতসারে নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও তোমরা সংকল্পিত কার্যে সহায়ক হইবে। ইহাই ঋষিত্ব।
অবশ্য যাহা বলিলাম তাহাতে কার্যপ্রণালী বিশেষ কিছু বর্ণনা করা হইল না। বংশপরম্পরাক্রমে পূর্বোক্ত ভাব লইয়া কাজ করিতে করিতে বিশেষ বিশেষ কার্যপ্রণালী আবিষ্কৃত হইবে। বিবাদ-বিসংবাদের যে কিছুমাত্র প্রয়োজন নাই, তাহা দেখাইবার জন্য আমি দুই-একটি কথার আভাস দিলাম মাত্র। আমার অধিকতর দুঃখের কারণ এই যে, আজকাল বিভিন্ন জাতির মধ্যে পরস্পর ঘোর বাদ—প্রতিবাদ চলিতেছে। এটি বন্ধ হওয়া চাই। কোন পক্ষেরই ইহাতে কিছু লাভ নাই। উচ্চতর বর্ণের, বিশেষতঃ ব্রাহ্মণের ইহাতে লাভ নাই;কারণ একচেটিয়া অধিকারের দিন গিয়াছে। প্রত্যেক অভিজাত জাতির কর্তব্য—নিজের সমাধি নিজে খনন করা;আর যত শীঘ্র তাহারা এ-কার্য করে, ততই তাহাদের পক্ষে মঙ্গল। যত বিলম্ব হইবে, ততই তাহারা পচিবে আর ধ্বংসও তত ভয়ানক হইবে। এই কারণে ব্রাহ্মণজাতির কর্তব্য—ভারতের অন্যান্য সকলজাতির উদ্ধারের চেষ্টা করা;ব্রাহ্মণ যদি উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং যতদিনই ইহা করেন, ততদিনই তিনি ব্রাহ্মণ;তিনি যদি শুধু টাকার চেষ্টায় ঘুরিয়া বেড়ান, তবে তাঁহাকে ব্রাহ্মণ বলা যায় না। আবার তোমাদেরও প্রকৃত ব্রাহ্মণকেই সাহায্য করা উচিত, তাহাতে স্বর্গলাভ হইবে। কিন্তু অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে দান করিলে স্বর্গলাভ না হইয়া বীপরিত ফল হয়—আমাদের শাস্ত্র এই কথা বলে। এই বিষয়ে তোমাদিগকে সাবধান হইতে হইবে।
চলিবে........................।।
๑۩๑ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্কুল ๑۩๑
শঙ্করাচার্য প্রভৃতি যুগাচার্য-জাতিগঠনকারী ছিলেন। তাঁহারা যে-সব অদ্ভুত ব্যাপার করিয়াছিলেন, তাহা আমি তোমাদিগকে বলিতে পারি না, আর তোমাদের মধ্যে কেহ, আমি যাহা বলিতে যাইতেছি, তাহাতে বিরক্ত হইতে পারো।
ঋষি-মুনি ছিলেন—আমাদিগকে তাঁহাদের কার্যকলাপ ভক্তিশ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখিতে হইবে।
তোমাদিগকেও ঋষি—মুনি হইতে হইবে। ইহাই কৃতকার্য হইবার গোপন রহস্য। অল্পাধিক পরিমাণে সকলকেই ঋষি হইতে হইবে। 'ঋষি' শব্দের অর্থ কি? বিশুদ্ধস্বভাব ব্যক্তি। আগে শুদ্ধচিত্ত হও—তোমাতেই শক্তি আসিবে। কেবল 'আমি ঋষি' বলিলেই চলিবে না; যখনই তুমি যথার্থ ঋষিত্ব লাভ করিবে, দেখিবে—অপরে তোমার কথা কোন না কোন ভাবে শুনিতেছে। তোমার ভিতর হইতে এক আশ্চর্য শক্তি আসিয়া অপরের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করিবে; তাহারা বাধ্য হইয়া তোমার অনুবর্তী হইবে, বাধ্য হইয়া তোমার কথা শুনিবে, এমন কি তাহাদের অজ্ঞাতসারে নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেও তোমরা সংকল্পিত কার্যে সহায়ক হইবে। ইহাই ঋষিত্ব।
অবশ্য যাহা বলিলাম তাহাতে কার্যপ্রণালী বিশেষ কিছু বর্ণনা করা হইল না। বংশপরম্পরাক্রমে পূর্বোক্ত ভাব লইয়া কাজ করিতে করিতে বিশেষ বিশেষ কার্যপ্রণালী আবিষ্কৃত হইবে। বিবাদ-বিসংবাদের যে কিছুমাত্র প্রয়োজন নাই, তাহা দেখাইবার জন্য আমি দুই-একটি কথার আভাস দিলাম মাত্র। আমার অধিকতর দুঃখের কারণ এই যে, আজকাল বিভিন্ন জাতির মধ্যে পরস্পর ঘোর বাদ—প্রতিবাদ চলিতেছে। এটি বন্ধ হওয়া চাই। কোন পক্ষেরই ইহাতে কিছু লাভ নাই। উচ্চতর বর্ণের, বিশেষতঃ ব্রাহ্মণের ইহাতে লাভ নাই;কারণ একচেটিয়া অধিকারের দিন গিয়াছে। প্রত্যেক অভিজাত জাতির কর্তব্য—নিজের সমাধি নিজে খনন করা;আর যত শীঘ্র তাহারা এ-কার্য করে, ততই তাহাদের পক্ষে মঙ্গল। যত বিলম্ব হইবে, ততই তাহারা পচিবে আর ধ্বংসও তত ভয়ানক হইবে। এই কারণে ব্রাহ্মণজাতির কর্তব্য—ভারতের অন্যান্য সকলজাতির উদ্ধারের চেষ্টা করা;ব্রাহ্মণ যদি উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং যতদিনই ইহা করেন, ততদিনই তিনি ব্রাহ্মণ;তিনি যদি শুধু টাকার চেষ্টায় ঘুরিয়া বেড়ান, তবে তাঁহাকে ব্রাহ্মণ বলা যায় না। আবার তোমাদেরও প্রকৃত ব্রাহ্মণকেই সাহায্য করা উচিত, তাহাতে স্বর্গলাভ হইবে। কিন্তু অনুপযুক্ত ব্যক্তিকে দান করিলে স্বর্গলাভ না হইয়া বীপরিত ফল হয়—আমাদের শাস্ত্র এই কথা বলে। এই বিষয়ে তোমাদিগকে সাবধান হইতে হইবে।
চলিবে........................।।
๑۩๑ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্কুল ๑۩๑
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন