১। সৃষ্টির শুরুতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জড়জগৎ সৃষ্টির সমস্ত উপাদান সহ মহাবিষ্ণু হিসেবে প্রকট হন ।তখন তাঁর প্রতিটি প্রশ্বাস থেকে প্রতিমুহূর্তে কোটি কোটি নক্ষত্র সৃষ্টি হয়।
২। মহা বিষ্ণু তাঁর মায়ার দ্বারা চিরন্তন জড়জগতের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন এবং তাঁর অসংখ্য রূপের অন্যতম বিশেষ একটি রূপ স্বয়ম্ভু ( প্রভু শিব) হিসেবে জড়জগতের প্রতিটি প্রাণীর ভিতর আত্মা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সুতরাং জীবজগতের প্রতিটি প্রাণী চিরন্তন এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অণু অংশ।
৩। মহা বিষ্ণু গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণু হিসেবে প্রকটিত হন এবং অনন্ত কোটি নক্ষত্রে প্রবেশ করেন।
৪) গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণু সমস্ত বেদ সৃষ্টি করেন এবং ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু রূপে প্রতিটি অণু পরমাণুর ভিতর প্রবেশ করেন ।ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু প্রতিটি জীবের ভিতর পরমাত্মা রূপে বিরাজ করেন।
৫) গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণুর নাভিকমল থেকে একটি পদ্মফুল বিকশিত হয় যার ভিতর থেকে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রথম সৃষ্ট জীব ব্রহ্মার আবির্ভাব ঘটে।
৬) ক্ষীরোদকশায়ী বিষ্ণু ব্রহ্মার হৃদয়ের অভ্যন্তরে পরমাত্মারূপে বিরাজ করেন এবং ব্রহ্মার হৃদয়ভ্যন্তর থেকে ব্রম্মাকে বেদের জ্ঞান দান করেন। ব্রহ্মা বেদের এই জ্ঞান পরে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু ( গ্রহ, ঋষি, প্রাণিজগৎ,দেবতা প্রভৃতি) সৃষ্টি করার কাজে ব্যাবহার করেন।
৭) ব্রহ্মার কপাল থেকে প্রভু শিবের আবির্ভাব ঘটে, যিনি সদাশিবের( প্রভু শিবের আধ্যাত্মিক প্রকাশ) একটি অংশ। প্রভু শিব প্রাণীজগতের সৃষ্টি এবং ধ্বংসের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন, এবং প্রভু শিবের এই ভূমিকাকে রুদ্র নামে অভিহিত করা হয়।
৮) ৩১১০৪০০০০০০০০০০ বছর পর প্রভু শিব এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু ধ্বংস করে দেবেন এবং সেই সময় বিশ্বব্রহ্মাণ্ড মহাশূন্যে রুপান্তরিত হবে এবং সেই মহাশূন্য মহাবিষ্ণুর নিঃশ্বাসের সহিত মহাবিষ্ণুর দেহে বিলিন হয়ে যাবে।
৯) শূন্য কোন বস্তু অথবা হঠাৎ কোন বিস্ফোরণ অথবা কোন অদৃশ্য শক্তি থেকে কোন কিছুর সৃষ্টি হতে পারে না। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হয়েছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অসীম শক্তি থেকে যিনি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু প্রতিপালন করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অসীম লীলা জড়জগতের মানুষের বোধগম্যতার বাইরে।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন " হে অর্জুন, অধিক আর কি বলব, এইমাত্র জেনে রাখ যে, আমি আমার এক অংশের দ্বারা সমগ্র জগতে ব্যাপ্ত হয়ে রয়েছি।" শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১০।৪২
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন " এই জগত আমারই প্রকৃতির অধীন, তারা প্রকৃতির বশে অবশ হয়ে আমার দ্বারা পুনঃ পুনঃ সৃষ্ট হয় এবং আমারই ইচ্ছায় অন্তকালে বিনষ্ট হয়।" শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৯।৮
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন "আমিই এই জগতের পিতা, মাতা, সর্বপ্রাণীর কর্মফল প্রদাতা, এবং পিতামহ। আমিই ঋক, সাম এবং যজুঃ( বেদসমূহ) " শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৯।১৭
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন " আমি জড় এবং চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। সব কিছুই আমার থেকেই প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে যারা শুদ্ধভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন, তাঁরাই যথার্থ তত্ত্বজ্ঞানী। " শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১০।৮
courtesy by: প্রশ্ন করুন, উত্তর পাবেন। সনাতন ধর্মের হাজারও প্রশ্ন এবং উত্তর
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন