০৮ মে ২০১৭

পণাতীর্থের উৎপত্তি কথা

No automatic alt text available.হরেকৃষ্ণ! শ্রীঅদ্বৈত প্রভুর জননী শ্রীমতি নাভাদেবীর একবার গঙ্গাস্নানের বাসনা হয়। তিনি শেষরাতে স্বপ্নে দেখেন- তোঁর কোলের শিশুটি চতুর্ভূজ জ্যোতির্ময় সর্বমঙ্গলময় স্বয়ং মহাবিষ্ণু। এরূপ দিব্য দর্শনে শ্রীমতি নাভাদেবী তাঁর স্তবস্তুতি করেন। ঐশ্বর্য ভাবান্বিতা মাতৃদেবীকে তিনি সান্তনা প্রদান করে সমস্ত তীর্থ এনে তাতে তাঁকে স্নান করাবার কথা বলেন। শ্রীমতি নাভাদেবী নিদ্রা ভঙ্গে স্বপ্নের বিষয় স্মরণ করে চিন্তামগ্ন হন। তিনি স্বপ্নের বিষয় প্রথমে অঙ্গীকার করলেও পরে পুত্রের অনুরোধে তা প্রকাশ করে রোদন করতে থাকেন। আমি ‘পণ’ অর্থাৎ প্রতিজ্ঞঅ করে বলছি- তোমার ইচ্ছে পূরণের জন্য আমি আজ রাতে সকল তীর্থকে আনয়ন করব তাতে তুমি স্নান করবে। অদ্বৈত প্রভু রাতেই যোগাবলম্বন পূর্বক তীর্থগণকে আকর্ষন করলে, সমস্ত তীর্থ শ্রীঅদ্বৈত প্রভূর কাছে উপস্থিত হয়ে তাদের আহ্বানের কারণ জিজ্ঞেস করেন। শ্রীঅদ্বৈত প্রভু বলেন- কধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে (মহাবারুণি) তোমরা সকলে এখানে পর্বতোপরি বিহার করবে- সকলে আমার কাছে এই ‘পণ’ করো। গঙ্গা-যমুনাদি সকল তীর্থই শ্রীঅদ্বৈতাচার্য প্রভূর আজ্ঞা স্বীকার করে পর্বতে বিহার করতে থাকেন।
শ্রীদ্বৈতচন্দ্র প্রভাতকালে জননী নাভাদেবীকে বলেন- মা! পর্বতপরি সমস্ত তীর্থ এসেছে, তুমি সেখানে গিয়ে স্নান করো। শ্রীমতি নাভাদেবী কৌতুহলবশত পুত্রসহ সেখানে যান। শ্রীঅদ্বৈতচন্দ্র জননী নাভাদেবীর পাশে দাঁড়িয়ে শঙ্গ-ঘন্টা বাজিয়ে ঊচ্চেঃস্বরে হরিধ্বনি করতে থাকেন। হরিধ্বনি করামাত্রই অঝোরে জলের প্রবাহ পতিত হতে থাকে। শ্রীঅদ্বৈতচন্দ্র তখন বলেন, - দেখ মা তীর্থের জল পড়ছে। এখানে এখন সকল তীর্থ অবস্থান করছে। ঐদেখ মা, মেঘের মতো যমুনার জল তোমাকে ভিজিয়ে ফেলেছে, গঙ্গার পুণ্যসলিলবিন্দু তোমাকে সিক্ত করছে। এভাবে অন্যাণ্য সকল তীর্থরে পূণ্য সলিলরাশি পতিত হতে থাকে। অতি আশ্চর্য এ দৃশ্য দর্শন করে এবং পুত্রের বাক্য শ্রবণে শ্রীমতি নাভাদেবীর বিশ্বাস হয় যে, সত্য সত্যই এখানে তীর্থ সকল এসেছেন। তিনি অত্যন্ত ভক্তিভরে তীর্থসমূহকে প্রণাম করে সেই জলে স্নান করলেন। সেই থেকে এ স্থান ‘পণাতীর্থ’ নামে খ্যাত হয়। শ্রীঅদ্বৈত প্রভু কর্তৃক স্বীয় জননী নাভাদেবীর অভিলাষ পূর্ণ করার জন্য এবং তীর্থগনের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে (মহাবারুণি) এখানে আবির্ভূত হওয়ার জন্য ‘পণ’ করার কারণেই পণাতীর্থের প্রসিদ্ধি। মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদর্শীতে এখানে মেলা বসে। ঐ পূণ্য স্নানের দিনে অদ্যাপিও লক্ষ-লক্ষ তীর্থযাত্রীর সমাগম হয়।


 Courtesy by: প্রশ্ন করুন, উত্তর পাবেন। সনাতন ধর্মের হাজারও প্রশ্ন এবং উত্তর
Share:

Total Pageviews

4506580

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।