মহাপ্রভু যখন প্রবলভাবে হরিনাম আন্দোলন শুরু করেছেন তখন কিছু গোঁড়া ব্রাহ্মণ তাঁর এবং ভক্তদের বিরুদ্ধে চাঁদ কাজীর কাছে অভিযোগ করে। নবদ্বীপের মুসলমান কাজী ব্রাহ্মণদের এই অভিযোগটিতে প্রভূত গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রথমে তিনি মহাপ্রভুর অনুগামীদের উচ্চস্বরে হরিনাম সংকীর্তন করতে নিষেধ করেন। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর অনুগামীদর কাজীর সেই নির্দেশ অমান্য করতে নির্দেশ দেন, এবং তাঁরা পূর্বের মতোই সংকীর্তন করে যেতে থাকেন। কাজী তখন সেই সংকীর্তন বন্ধ করার জন্য তাঁর পেয়াদা পাঠান এবং তারা সংকীর্তন কারীদের কয়েকটি মৃদঙ্গ ভেঙে দেয়। এই ঘটনার কথা শুনে মহাপ্রভু অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন। তিনি এক বিরাট আইন-অমান্য আন্দোলন করেন। তিনি সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভারতবর্ষে প্রথম আইন-অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। হাজার হাজার মৃদঙ্গ এবং করতাল সহ লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিয়ে এক বিরাট শোভাযাত্রার আয়োজন করেন, এবং কাজীর আইন অমান্য করে এই শোভাযাত্রা নবদ্বীপের পথে পথে হরিনাম কীর্তন করতে করতে কাজীর বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়।
অবশেষে যখন শোভাযাত্রাটি কাজীর বাড়িতে এসে পৌঁছায়, তখন ভয়ে কাজী তাঁর বাড়ির উপরতলার একটি ঘরে লুকিয়ে থাকেন। সেই বিশাল জনসমাবেশ কাজীর বাড়ির সামনে সমবেত হয়ে প্রচণ্ড ক্রোধ প্রকাশ করতে থাকে, কিন্তু মহাপ্রভু তাদের শান্ত হতে বলেন। মহাপ্রভুর আশ্বাস পেয়ে অবশেষে কাজী তাঁর ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং তাদের মধ্যে কোরান ও হিন্দু-শাস্ত্র সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেই আলোচনায় তিনি গো-বধের ভয়াবহ পরিনাম তুলে ধরেন।
“তোমরা জীয়াইতে নার-বধমাত্র সার।
নরক হইতে তোমার নাহিক নিস্তার।।
গো-অঙ্গে যত লোম, তত সহস্র বৎসর।
গো-বধী রৌরব মধ্যে পচে নিরন্তর।।”
এভাবে মহাপ্রভু শাস্ত্র যুক্তির মাধ্যমে গো-বধ এবং সবধরণের যজ্ঞ নিষিদ্ধ করলেন। তিনি একমাত্র যজ্ঞ হিসেবে হরিনাম সংকীর্তনকে জগতমাঝে প্রতিষ্ঠা করলেন। তখন কাজী মহাপ্রভুর চরণাশ্রয় গ্রহণ করলেন এবং ঘোষণা করলেন যে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রবর্তিত সংকীর্তন যজ্ঞে কেউ যেন কখনও বাধা না দেয়, এবং তিনি তাঁর উইলে লিখে যান যে, তাঁর বংশের কেউ যদি সংকীর্তনে বাধা দেয়, তাহলে সে তৎক্ষণাৎ বংশচ্যুত হবে। নবদ্বীপে মায়াপুরের সন্নিকটে এখনও শ্রীচাঁদ কাজীর সমাধী আছে।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নিরীহ বৈষ্ণব ছিলেন না। বৈষ্ণব হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবানের ভক্ত এবং প্রয়োজন হলে তিনি সিংহবিক্রমে যথার্থ সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
courtesy by: প্রশ্ন করুন, উত্তর পাবেন। সনাতন ধর্মের হাজারও প্রশ্ন এবং উত্তর
অবশেষে যখন শোভাযাত্রাটি কাজীর বাড়িতে এসে পৌঁছায়, তখন ভয়ে কাজী তাঁর বাড়ির উপরতলার একটি ঘরে লুকিয়ে থাকেন। সেই বিশাল জনসমাবেশ কাজীর বাড়ির সামনে সমবেত হয়ে প্রচণ্ড ক্রোধ প্রকাশ করতে থাকে, কিন্তু মহাপ্রভু তাদের শান্ত হতে বলেন। মহাপ্রভুর আশ্বাস পেয়ে অবশেষে কাজী তাঁর ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং তাদের মধ্যে কোরান ও হিন্দু-শাস্ত্র সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেই আলোচনায় তিনি গো-বধের ভয়াবহ পরিনাম তুলে ধরেন।
“তোমরা জীয়াইতে নার-বধমাত্র সার।
নরক হইতে তোমার নাহিক নিস্তার।।
গো-অঙ্গে যত লোম, তত সহস্র বৎসর।
গো-বধী রৌরব মধ্যে পচে নিরন্তর।।”
এভাবে মহাপ্রভু শাস্ত্র যুক্তির মাধ্যমে গো-বধ এবং সবধরণের যজ্ঞ নিষিদ্ধ করলেন। তিনি একমাত্র যজ্ঞ হিসেবে হরিনাম সংকীর্তনকে জগতমাঝে প্রতিষ্ঠা করলেন। তখন কাজী মহাপ্রভুর চরণাশ্রয় গ্রহণ করলেন এবং ঘোষণা করলেন যে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রবর্তিত সংকীর্তন যজ্ঞে কেউ যেন কখনও বাধা না দেয়, এবং তিনি তাঁর উইলে লিখে যান যে, তাঁর বংশের কেউ যদি সংকীর্তনে বাধা দেয়, তাহলে সে তৎক্ষণাৎ বংশচ্যুত হবে। নবদ্বীপে মায়াপুরের সন্নিকটে এখনও শ্রীচাঁদ কাজীর সমাধী আছে।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় যে, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নিরীহ বৈষ্ণব ছিলেন না। বৈষ্ণব হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবানের ভক্ত এবং প্রয়োজন হলে তিনি সিংহবিক্রমে যথার্থ সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
courtesy by: প্রশ্ন করুন, উত্তর পাবেন। সনাতন ধর্মের হাজারও প্রশ্ন এবং উত্তর
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন