রাখালদাস বন্দোপাধ্যায়
(১৮৮৫ সালের ১২ এপ্রিল - ১৯৩০ সালের ২৩ মে)
ইতিহাসবিদ, প্রত্নতত্ত্ববিদ ও লিপিবিশারদ রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মুর্শিদাবাদের বাহরামপুরে ১৮৮৫ সালের ১২ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তাকে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্বের অগ্রনায়ক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি মহেঞ্জোদারো-হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কারক হিসাবে বেশি পরিচিত।
তিনি খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সালের মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ও হরপ্পা সভ্যতার প্রধান স্থানগুলো আবিষ্কার করেন। এ সভ্যতার বিশদ ব্যাখ্যা করে কয়েকটি প্রবন্ধ ও বই লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- ‘অ্যান ইন্ডিয়ান সিটি ফাইভ থাউজেন্ড ইয়ার্স এগো’ (১৯২৮), ‘মোহেন-জোদারো’, ‘প্রিহিস্ট্রিক, অ্যানসিয়েন্ট অ্যান্ড হিন্দু ইন্ডিয়া’ (১৯৩৪) এবং ‘মহেঞ্জোদারো- এ ফরগোটেন রিপোর্ট’ (১৯৮৪)। ‘দ্য অরিজিন অব দ্য বেঙ্গলি স্ক্রিপ্ট’ (১৯১৯) বইয়ের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবিলি রিসার্চ প্রাইজ লাভ করেন। তিনিই প্রথমবারের মতো বাংলা লিপির মুল উৎস প্রোটো-বাংলা লিপি নিয়ে কাজ করেন। তার ধ্রুপদী কাজের মধ্যে রয়েছে মধ্যযুগীর ভারতের মুদ্রা এবং ভারতের মূর্তিশিল্প বিশেষ করে গুপ্ত ভাস্কর্য ও স্থাপত্যের ওপর গবেষণা। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বই ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত ‘ইস্টার্ন ইন্ডিয়ান মিডায়েভ্যাল স্কুল অব স্কালর্চার’।
তিনি ‘হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’ (১৯২৪) ও ‘এ জুনিয়র হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’ (১৯২৮) নামে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দুটি পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন। ১৯২৪ সালে দেওয়া বক্তৃতা নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘দ্য এজ অব দ্য ইম্পেরিয়াল গুপ্তস’ (১৯৩৩)। দুই খণ্ডে লিখেছেন ‘বাংলার ইতিহাস’ (১৯১৪ ও ১৯১৭)। এটি বাংলা ইতিহাস নিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে লেখা প্রথম দিকের কাজগুলোর একটি। দুই খণ্ডে লিখেছেন ‘হিস্ট্রি অব উড়িষ্যা : ফ্রম দ্য আর্লিয়েস্ট টাইমস টু দ্য ব্রিটিশ পিরিয়ড’ (১৯৩০ ও ১৯৩১)। গবেষণামুলক আরও কিছু বই হলো- ‘প্রাচীন মুদ্রা’ (১৯১৫), ‘দ্য পালাস অব বেঙ্গল’ (১৯১৫), ‘দ্য টেম্পল অব দ্য শিবা অ্যাট ভূমারা’ (১৯২৪), ‘দ্য পালিওগ্রাফি অব হাতি গুম্পা অ্যান্ড নানাঘাট ইন্সক্রিপ্টশনস’ (১৯২৪), ‘বাস রিলিফস অব বাদামি’ (১৯২৮) এবং ‘দ্য হায়হাইয়াস অব ত্রিপুরা অ্যান্ড দেয়ার মনুমেন্টস’ (১৯৩১)। এ ছাড়া তিনি কিছু উপন্যাস লিখেছেন। এর মধ্যে কিছু উপন্যাস ইতিহাস আশ্রয়ী।
রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় ১৯৩০ সালের ২৩ মে মৃত্যুবরণ করেন।
Written by: Prithwish Ghosh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন