মহাভারতে যে সময়ের এবং শহরগুলোর কথা বলা হয়েছে সেই শহরগুলোর বর্তমান অবস্থা কি, এবং ঠিক কোথায় এই শহরগুলো অবস্থিত সেটাই আমাদের আলোচনার বিষয়। আর এই আলোচনার তাগিদে আমরা যেমন অতীতের অনেক ঘটনাকে সামনে নিয়ে আসবো, তেমনি বর্তমানের পরিস্থিতির আলোকে শহরগুলোর অবস্থা বিচার করবো। আশা করি পাঠকেরা জেনে সুখী হবেন যে, মহাভারতের শহরগুলো কোনো কল্পিত শহর ছিল না। প্রাচীনকালের সাক্ষ্য নিয়ে সেই শহরগুলো আজও টিকে আছে এবং নতুন ইতিহাস ও আঙ্গিকে এগিয়ে গেছে অনেকদূর।
তক্ষশীলা প্রাচীন ভারতের একটি শিক্ষা-নগরী । পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি জেলায় অবস্থিত শহর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। তক্ষশীলার অবস্থান ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চল এবং পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার (২০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে; যা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে খুব কাছে। তক্ষশীলা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৪৯ মিটার (১,৮০১ ফিট) উচ্চতায় অবস্থিত। ভারতবিভাগ পরবর্তী পাকিস্তান সৃষ্টির আগ পর্যন্ত এটি ভারতবর্ষের অর্ন্তগত ছিল।
১৬ নাম্বার গুহা, যা কৈলাশ অথবা কৈলাশনাথ নামেও পরিচিত, যা অপ্রতিদ্বন্দ্বীভাবে ইলোরা’র কেন্দ্র। এর ডিজাইনের জন্য একে কৈলাশ পর্বত নামে ডাকা হয়। যা শিবের বাসস্থান, দেখতে অনেকটা বহুতল মন্দিরের মত কিন্তু এটি একটিমাত্র পাথরকে কেটে তৈরী করা হয়েছে। যার আয়তন এথেন্সের পার্থেনন এর দ্বিগুণ। প্রধানত এই মন্দিরটি সাদা আস্তর দেয়া যাতে এর সাদৃশ্য কৈলাশ পর্বতের সাথে বজায় থাকে। এর আশাপ্সহ এলাকায় তিনটি স্থাপনা দেখা যায়। সকল শিব মন্দিরের ঐতিহ্য অনুসারে প্রধান মন্দিরের সম্মুখভাগে পবিত্র ষাঁড় “নন্দী” –র ছবি আছে।
১৯ বছর পর আজ সেই দিন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে সোমবার দেবতার মূর্তির ‘আত্মা পরিবর্তন’ করা হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে। ‘নব-কলেবর’ নামের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবতার পুরোনো মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তি বসানো হবে। পুরোনো মূর্তির ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে সঞ্চারিত হবে, পূজারীদের বিশ্বাস। এ জন্য ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, সুভদ্রা আর বলভদ্রের নতুন কাঠের মূর্তি তৈরী হয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরে ‘গর্ভগৃহ’ বা মূল কেন্দ্রস্থলে এই অতি গোপনীয় প্রথার সময়ে পুরোহিতদের চোখ আর হাত বাঁধা থাকে, যাতে পুরোনো মূর্তি থেকে ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে গিয়ে ঢুকছে এটা তাঁরা দেখতে না পান। পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা পরিচালনা করেন পুরোহিতদের যে বংশ, নতুন বিগ্রহ তৈরী তাদেরই দায়িত্ব থাকে।
বৃন্দাবনের পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ নিধিবন মন্দির। এই মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। যা আজও পর্যটকদের সমান ভাবে আকর্ষিত করে। নিধিবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য-ঘেরা সব গল্পের আদৌ কোনও সত্যভিত্তি আছে কিনা, তা জানা না গেলেও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই লীলাভূমিতে এসে আপনি মুগ্ধ হবেনই। চোখ টানবে মন্দিরের ভেতর অদ্ভুত সুন্দর কারুকার্যে ভরা রাধা-কৃষ্ণের মুর্তি।
ভগবদগীতা মহাভারতের ভীষ্মপর্বের একটি অংশ । ২৫ অধ্যায় হতে ৪২ অধ্যায় পর্যন্ত এই ১৮ অধ্যায়কে শ্রীমদভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ বলা হয়। ১৮ অধ্যায় সমন্বিত ভগবদগীতাকে বৈষ্ণব আচার্যরা মূখ্যতঃ তিন ভাগে বিভক্ত করেছে। প্রথম ছয়টি কে বলা হয় কর্ম-ষটক, মাঝের ছয়টি কে বলা হয় ভক্তি-ষটক এবং শেষ ছয়টি কে বলা হয় জ্ঞান-ষটক । শ্রীমদভগবদগীতায় পাঁচটি বিষয় বা তত্ত্ব মুখ্যতঃ আলোচিত হয়েছে । এগুলো হলো - জীব, ঈশ্বর, প্রকৃতি, কর্ম এবং কাল ।
গীতাজ্ঞান ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সখা ও শিষ্য অর্জুনকে কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে যুদ্ধের পূর্ব মুহূর্তে প্রদান করেছিলেন । কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধে কি হচ্ছে তা হস্তিনাপুর হতে সঞ্জয় দেখতে পেয়েছিলেন। কারন সঞ্জয় ছিলেন শ্রীল ব্যাসদেবের শিষ্য । শ্রীল ব্যাসদেবের কৃপায় সঞ্জয় দিব্যদৃষ্টি লাভ করেছিলেন ফলে তিনি জম্মান্ধ ধৃতরাষ্টকে সে সমস্ত ঘটনা বর্ননা করেছিলেন । যুদ্ধের প্রথমদিকে কৌরব পক্ষের সেনাপতি ছিল পিতামহ ভীষ্মদেব।
কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের পূর্বে শ্রীকৃষ্ণ পাঞ্চজন্য, অর্জুন দেবদত্ত, ভীম পৌন্ড্র, যুধিষ্ঠির অনন্ত বিজয়, নকুল সুঘোষ ও সহদেব মনিপুষ্পক নামক শঙ্খ বাজিয়েছিলেন । চলবে.........
“কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং”। আমাদেরসমগ্র হিন্দুর ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনপ্রবাহের আলোচনা ও বিশ্লেষণ করলে
দেখা যায়- শ্রীকৃষ্ণের জীবন ও চরিত্রই যেন সমস্ত কিছুকে আচ্ছন্ন করে আছে। ভগবান
শ্রীকৃষ্ণের ন্যায় সর্বতোমুখী মহাপ্রতিভাশালী জীবন জগতের ইতিহাসে দেখা যায় না।
অথচ, আজ সেই ধর্ম-সাম্রাজ্য-সংগঠক শ্রীকৃষ্ণের কর্মপ্রতিভা ও কীর্তিকলাপের স্মৃতিগুলি
বিসর্জন দিয়ে তাঁকে বৃন্দাবনের ভাবসাধনার প্রতিমায় সাজিয়ে বসনচোরা, গোপীচোরা
হিসেবেই বেশি প্রচার করা হয়। কিন্তু, এই উচ্চ দর্শন কয় জন বোঝে? অনধিকারীরা ব্যাপক ভাবে এর চর্চা করতে গিয়ে
বিভ্রান্ত হচ্ছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে অতিমানব, মহামানব,অবতার, অবতারী যাই বলা হোক
না কেন তিনি মনুষ্য দেহধারী অমিতগুণ ও শক্তির অধিকারী একজন ঐতিহাসিক পুরুষ। একদিকে
তিনি বাঁশি হাতে বৃন্দাবনের রাখাল ও অন্যদিকে তিনি ধর্মযুদ্ধে অর্জুনের
সিংহনাধকারী সারথি।
আজ চারিদিকে ভগবান ও ধর্মের নামে ভণ্ডামি।
কোথাও কোন আরাধ্য শ্রীকৃষ্ণ মূর্তি চূর্ণিত হতে দেখলে প্রতিবাদ প্রতিকার তো দূরের
কথা, বিপদের আশঙ্খায় প্রাণভয়ে পলায়ন করে সবাই।
সমগ্র হিন্দু জাতির আরাধ্য আদর্শ, হিন্দু ধর্মের ও
জাতীয়তার পরিপূর্ণ বিগ্রহ শ্রীকৃষ্ণের জীবন ও চরিত্রের এই বিকৃতি দূর করে; আর্য
হিন্দুজাতির সংস্কারক, ধর্ম সাম্রাজ্য সংগঠক শ্রীকৃষ্ণের জীবনের যথার্থ ও ঐতিহাসিক
কীর্তিকলাপের প্রচার আবশ্যক। আর তাতেই হিন্দু জাতি সম্মিলিত, সঙ্ঘবদ্ধ,
মহাপরাক্রমশালী, দিগ্বিজয়ী জাতিরূপে গড়ে উঠতে পারে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ
ধর্ম ও কৃষ্টির মূলাধার, তাঁকে যদি আমরাসঠিকভাবে জানতে না পারি তবে সেটা হবে
আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
✿একত্বের মধ্য বহুত্বের প্রকাশ, বহুত্বের
মধ্য একত্বের প্রকাশই "সনাতনধর্ম"। ✿বিভেদ এর মধ্য মিলন, বিচিত্র্যের মধ্য সমন্বয়ই
"সনাতন ধর্ম"।
✿“সনাতন ধর্ম” এক সেট বিশ্বাস ও
রীতি-নীতি। এটিএমন কোনধর্ম নয় যা অন্যান্য ধর্মের মতো কোনো একব্যক্তির
দ্বারা প্রচারিত।
✿“সনাতন ধর্ম” হলো একজন ব্যক্তির
ধর্ম, ব্যক্তির জন্য ধর্ম, ব্যক্তির দ্বারা ধর্ম যার শিকড় রয়েছে বেদ ও গীতার মতো ধর্মগ্রন্থে।
✿আপনি এক ঈশ্বরে বিশ্বাস
করে হিন্দু হতে পারেন। আবার বহু ঈশ্বরে বিশ্বাস করেও হিন্দু হতে পারেন।
✿একজন হিন্দু হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ও বস্তুনিষ্ঠভাবে
চিন্তা-ভাবনা করতে পারি, কোনো প্রকার শর্তাবলী
ছাড়া।
✿আমি একজন হিন্দু কারণ হিন্দুধর্ম অসহিংসতার
ডাক দেয়। 'অহিংসা পরমো ধর্ম' - অসহিংসতা হচ্ছে সর্বোচ্চ
কর্তব্য। আমি একজন হিন্দু কারণ ইহা আমার মনকে কোনো বিশ্বাস ব্যবস্থার সাথে শর্ত জুড়ে দেয়
না।
✿একজন পুরুষ/মহিলা যে তার জন্মগত ধর্ম থেকে
বিচ্যুত হয়, সে হলো নকল/ভন্ড এবং তার নিজস্ব আদর্শ,
সংস্কৃতি ও জীবনের মূল্যবোধকে মূল্য দেয় না।
আজ আমরা একটু আলচনা করিব, পরমহংসদেবের সেই বিশ্বজনীন সনাতন হিন্দুধর্ম স্বামীজী কিরূপ
প্রচার করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন।
(REALISATION OF GOD)
শ্রীরামকৃষ্ণের কথা -- ঈশ্বরকে দর্শন করিতে
হইবে। কতকগুলি মত মুখস্থ
বা শ্লোক মুখস্থ করার নাম ধর্ম নহে। এই ঈশ্বরদর্শন হয়, যদি ভক্ত ব্যাকুল
হইয়া তাঁহাকে ডাকে, এই জন্মেই হউক অথবা জন্মান্তরেই হউক। একদিনের তাঁহার কথাবার্তা
আমাদের মনে পড়ে। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে কথা হইতেছিল।
শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমাচরণ ও অন্যান্য ভক্তদের
প্রতি) -- শাস্ত্র কত পড়বে? শুধু বিচার করলে কি
হবে? আগে তাঁকে লাভ করবার চেষ্টা কর। বই পড়ে কি জানবে? যতক্ষণ না হাটে পৌঁছান যায়, ততঁন দূর হতে কেবল
হো-হো শব্দ। হাটে পৌঁছিলে আর-একরকম, তখন স্পষ্ট স্পষ্ট
দেখতে পাবে, শুনতে পাবে, ‘আলু লও’ ‘পয়সা দাও’।
বই পড়ে ঠিক অনুভব হয় না। অনেক তফাত। তাঁহাকে দর্শনের পর
শাস্ত্র, সায়েন্স সব খড়কুটো বোধ হয়।
“বড়বাবুর সঙ্গে আলাপ দরকার। তাঁর কখানা বাড়ি,
কটা বাগান, কত কোম্পানির কাগজ;
এ-সব আগে জানবার জন্য অত ব্যস্ত কেন? কিন্তু জো-সো করে বড়বাবুর সঙ্গে একবার আলাপ কর, তা ধাক্কা খেয়েই হউক আর বেড়া ডিঙ্গিয়েই হউক, তখন ইচ্ছা হয় তো তিনিই বলে দিবেন, তাঁর কখানা
বাড়ি, কত বাগান, কত কোম্পানির কাগজ। বাবুর সঙ্গে আলাপ হলে আবার চাকর দ্বারবান সব সেলাম করবে।” (সকলের হাস্য)
একজন ভক্ত -- এখন বড়বাবুর সঙ্গে আলাপ কিসে
হয়?
শ্রীরামকৃষ্ণ -- তাই কর্ম চাই। সাধন চাই। ঈশ্বর আছেন বলে বসে
থাকলে হবে না। তাঁর কাছে যেতে হবে। নির্জনে তাঁকে ডাকো, প্রার্থনা করো -- ‘দেখা দাও’ বলে। ব্যকুল হয়ে কাঁদো। কামিনী-কাঞ্চনের জন্য পাগল হয়ে বেড়াতে পার, তবে তাঁর জন্য একটু পাগল হও। লোক বলুক যে, ঈশ্বরের জন্য অমুক পাগল হয়ে গেছে। দিনকতক না হয় সব ত্যাগ করে তাঁকে একলা ডাকো। শুধু ‘তিনি আছেন’ বলে বসে থাকলে কি হবে?
হালদার-পুকুরে বড় মাছ আছে, পুকুরের পাড়ে শুধু বসে থাকলে কি মাছ পাওয়া যায়? চার কর, চার ফেল। ক্রমে গভীর জল থেকে মাছ আসবে আর জল নড়বে। তখন আনন্দ হবে। হয়তো মাছের খানিকটা
একবার দেখা গেল, মাছটা ধপাং করে উঠলো। যখন দেখা গেল,
আরও আনন্দ।[1]
ঠিক এই কথা স্বামীজীও চিকাগোর ধর্মসমিতি সমক্ষে
বলিলেন -- অর্থাৎ ধর্মের উদ্দেশ্য ঈশ্বরকে লাভ করা, দর্শন করা --
"The Hindu does not want to live upon words and
theories. He must see God and that alone can destroy all doubts. So the best
proof of a Hindu sage gives about the soul, about God, is 'I have seen the
soul; I have seen God'. * * * The whole struggle in their system is a constant
struggle to become perfect, to become divine, to reach God and see God; and
their reaching God, seeing God, becoming perfect even 'as the Father in Heaven
is perfect' constitutes the religion of the Hindus."
-- Lecture on Hinduism (Chicago Parliament of Religions.)
আমেরিকার অনেক স্থানে স্বামী বক্তৃতা দিয়েছিলেন,
সকল স্থানেই এই কথা। Hartford
নামক স্থানে বলিয়াছিলেন --
"The next idea that I want to bring to you is that
religion does not consist in doctrines or dogmas. * * * The end of all
religions is the realisation of God in the soul. Ideals and methods may differ
but that is the central point. That is the realisation of God, something behind
this world of sense -- this world of eternal eating and drinking and talking
nonsense -- this world of shadows and selfishness. There is that beyond all
books, beyond all creeds, beyond the vanities of this world, and that is the
realisation of God within yourself. A man may believe in all the churches in
the world, he may carry on his head all the sacred books ever written, he may
baptise himself in all the rivers of the earth; still if he has no perception
of God I would class him with the rankest atheist."
স্বামী তাঁহার ‘রাজযোগ’ নামক গ্রন্থে বলিয়াছেন যে, আজকাল লোক বিশ্বাস করে না যে, ঈশ্বরদর্শন হয়; লোকে বলে, হাঁ ঋষিরা অথবা খ্রীষ্ট প্রভৃতি মহাপুরুষগণ আত্মদর্শন করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু আজকাল আর তাহা হয় না। স্বামীজী বলেন, অবশ্য হয় -- মনের যোগ (Concentration) অভ্যাস কর,
অবশ্য হদয় মধ্যে তাঁহাকে পাইবে --
"The teachers all saw God; they all saw their own souls
and what they saw preached. Only there is this difference that in most of these
religions, especially in modern times, a peculiar claim is put before us and
that claim is that these experiences are impossible at the present day; they
were only possible with a few men, who were the first founders of the religions
that subsequently bore their names. At the present time these experiences have
become obsolete and therefore we have now to take religion on belief. This I
entirely deny. Uniformity is the rigorous law of nature; what once happened can
happen always."
-- Raja-yoga: Introductory.
স্বামী New York নামক নগরে ৯ই জানুয়ারি, ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে
বিশ্বজনীন ধর্ম কাহাকে বলে (Ideal of a Universal Religion) এই বিষয়ে একটি বক্তৃতা দিয়াছিলেন -- অর্থাৎ যে ধর্মে জ্ঞানী, ভক্ত, যোগী বা কর্মী সকলেই
মিলিত হইতে পারে। বক্তৃতা সমাপ্ত হইবার সময় ঈশ্বরদর্শন যে সব ধর্মের উদ্দেশ্য, এই কথা বলিলেন -- জ্ঞান, কর্ম, ভক্তি এগুলি নানা পথ, নানা উপায় -- কিন্তু গন্তব্যস্থান একই অর্থাৎ ঈশ্বরের সাক্ষাৎকার। স্বামী বলিলেন --
"Then again all these various yogas (work or woরship, psychic control or philosophy) have to be
carried out into practice, theories will not do. We have to meditate upon it,
realise it until it becomes our whole life. Religion is realisation, nor talk
nor doctrine nor theories, however beautiful they may be. It is being and
beoming, not hearing or acknowledging. It is not an intellectual assent. By
intellectual assent we can come to hundred sorts of foolish things and change
them next day, but this being and becoming is what is Religion."
মাদ্রাজীদের নিকট তিনি যে পত্র লিখিয়াছিলেন,
তাহাতেও ওই কথা। -- হিন্দুধর্মের বিশেষত্ব ঈশ্বরদর্শন -- বেদের মুখ্য উদ্দেশ্য ঈশ্বরদর্শন
--
"The one idea which distinguishes the Hindu religion
from every other in the world, the one idea to express which the sages almost
exhaust the vocabulary of the Sanskrit language, is that man must realise God.
* * * Thus to realise God, the Brahman as the Dvaitas (dualists) say, or to
become Brahman as the Advaitas say -- is the aim and end of the whole teachings
of the Vedas."
-- Reply to Madras
Address.
স্বামী ২৯শে অক্টোবর (১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দ) লণ্ডন
নগরে বক্তৃতা করেন, বিষয়, ঈশ্বরদর্শন (Realisation)z এই বক্তৃতায় কঠোপনিষৎ
পাঠ করিয়া নচিকেতার কথা উল্লেখ করিলেন। নচিকেতা ঈশ্বরকে দেখিতে চান, ব্রহ্মজ্ঞান চান। ধর্মরাজ যম বলিলেন, বাপু, যদি ঈশ্বরকে জানিতে চাও, দেখিতে চাও, তাহা হইলে ভোগ আসক্তি ত্যাগ করিতে হইবে;
ভোগ থাকিলে যোগ হয় না, অবস্তু ভালবাসিলে বস্তুলাভ হয় না। স্বামী বলিতে লাগিলেন, আমরা বলিতে গেলে সকলেই নাস্তিক, কতকগুলি বাক্যের
আড়ম্বর লইয়া ধর্ম ধর্ম বলিতেছি। যদি একবার ঈশ্বরদর্শন হয়, তাহা হইলেই প্রকৃত বিশ্বাস আসিবে।
"We are all atheists and yet we try to fight the man
who tries to confess it. We are all in the dark; religion is to us a mere
nothing, mere intellectual assent, mere talk -- this man talks well and that
man evil. Religion will begin when that actual realisation in our own souls
begins. That will be the dawn of religion. * * * Then will real faith
begin."
১ যীশুখ্রীষ্ট তাঁহার শিষ্যদের বলিতেন
--"Blessed are the pure in spirit, for they shall see God
আমরা চিম্নয় আত্মা, স্থুল জড় দেহ নই । আর জীবাত্মা হলো পরমেশ্বর ভগবান শ্রী
কৃষ্ণের নিত্য অবিচ্ছেদ্য অংশ । ভগবান হচ্ছে পূর্ণ আর আত্মা তার অংশ । তাই
জীবাত্মার নিত্য ধর্ম হচ্ছে ভগবানের সেবা করা, কেননা অংশের কাজ
হলো পূর্ণের সেবা করা । মনের ধর্ম হলো সংকল্প ও বিকল্প এবং দেহের ধর্ম হলো
ভোগ আর ত্যাগ । দেহের ছয়টি পরিবর্তন হলো
জম্ম-বৃদ্ধি-স্হিতি-সন্তান/সন্ততি সৃষ্টি-ক্ষয়-মৃত্যু । জীবের স্বরূপ হয়
কৃষ্ণের 'নিত্যদাস' - শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত । আত্মার আকার
চুলের অগ্রভাগের দশ হাজার ভাগের এক ভাগ । তা এতই ক্ষুদ্র যে এই জড় চক্ষু
দিয়ে বা যন্ত্রের সাহায্যে আত্মাকে দর্শন করা যায় না । এ ছাড়া আত্মা জড়
পদার্থ নয়, তাই জড়ীয় ইন্দ্রিয় ও যন্ত্র দিয়ে তা দেখা অসম্ভব ।
এই জড় জগৎটি ভগবানের বহিরঙ্গা ত্রিগুনাত্মিকা মায়া শক্তির প্রকাশ । ভূমি,
জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ, মন, বুদ্ধি এবং অহংকার - এই আটটি উপাদান নিয়ে এই জড়
জগৎ তৈরী হয়েছে । পঞ্চ মহাভূত হচ্ছে - ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও বোম ।
ইন্দ্রিয় পাঁচটি বিষয় হলো - রূপ, রস, শব্দ, গন্ধ ও স্পর্শ । পঞ্চ
জ্ঞানেন্দ্রিয় হচ্ছে - নাক, জিভ, চোখ, কান ও ত্বক। পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয় হলো
-বাক, পানি, পাদ, উপস্থ ও বায়ূ । জীবের স্হূল শরীরটি ভূমি, জল,
বায়ূ, অগ্নি ও আকাশ দিয়ে তৈরী । এবং সূক্ষ শরীরটি মন, বুদ্ধি ও অহংকার
নিয়ে গঠিত । জীবের প্রকৃত সমস্যা হলো - জম্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যু । (চলবে........)
বৈদিক সনাতন ধর্মের অনুসারীরা কারো সাথে দেখা
হলে বা কাউকে সম্ভাষণ করার সময় প্রথমে তাকে নমস্কার করে। আবার কোনো মন্দিরে গেলে মন্দিরের বিগ্রহকে
বা পবিত্র কোনো অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার সময়ও নমস্কার প্রদান করে। এই নমস্কারের মাধ্যকে
কি তারা ঐ মনুষ্য দেহকে নমস্কার করে!!! আসুন দেখি বেদ কি বলে -
‘যোগ যেমন পরমাত্মার দর্শনের সাধন বা উপায়,
নমস্কারাদিও অনুরূপ বলিয়া তাঁহাকে নমস্কার জানাই। তিনি কিরূপে?
তিনি দেব অর্থাৎ প্রকাশস্বভাব পরমাত্মা। তিনি কোথায়?
তিনি আছেন অগ্নিতে, জলে,
তৃণ-লতাদিতে, অশ্বথাদি বৃক্ষে,
তিনি এই বিশ্বভুবনে অন্তর্যামীরূপে অনুপ্রবিষ্ট হইয়া আছেন।’
উপোরক্ত শ্লোকে আমরা দেখতে পাচ্ছি,
যোগ যেমন পরমাত্মার দর্শনের সাধন বা উপায় তেমনি নমস্কারও পরমাত্মার
দর্শনের সাধন বা উপায়। তাই যখন আমরা কাউকে নমস্কার করি তখন আমরা সর্বজীবে অন্তর্যামীরূপে অবস্থিত পরমাত্মাকেই
প্রণতি নিবেদন করি কোন মনুষ্যদেহকে নয়। বর্তমানে অনেকে এই নমস্কার শব্দের অপব্যাখ্যা করে প্রচার করছে
এতে করে সনাতন ধর্মের অনুসারীরাও অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে। এজন্য সকলকে অনুরোধ
জানাচ্ছি আপনারা বেদ পড়ুন ও বৈদিক পবিত্র জ্ঞানের আলোক সমগ্রবিশ্বে ছড়িয়ে দিন। নমস্কার । হরে কৃষ্ণ
গণিত
কথাটির অর্থ হল গণনা সম্পর্কীয় শাস্ত্র।এটি বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধানশাখা।গণিতের
শুরু কবে ও কোথায় এ প্রশ্নের সঠিকউত্তর
দেওয়া সম্ভব নয়। অনেকের মতে
গণিতের আদিভূমি মিশর। যদিও এ নিয়েবিতর্ক আছে। এর
কারণ সেই সময়ব্যাবিলন এবং চীন এর পাশাপাশি আমাদের ভারতবর্ষেওউন্নতমানের গণিত চর্চা হত, যার স্বপক্ষে বহু প্রমাণ পাওয়া গেছে।তাই
অনেক পণ্ডিতেরমতে ভারতবর্ষই গণিতশাস্ত্রের
উৎপত্তি স্থল। প্রশ্ন আসতে
পারে এমন দাবি করার পিছনে যুক্তি কী? সিন্ধু
সভ্যতাকেই ধরে নেওয়া হয় ভারতের মাটিতে
গণিতের পথচলার শুরুরসময়কাল। কারণ,
এর আগের কোনো সভ্যতার নিদর্শন আজও আমরা খুঁজে পাইনি। সিন্ধুসভ্যতার
ধ্বংসাবশেষ থেকে যে লিপির নিদর্শন পাওয়াগেছে
তা আজও পাঠ ওমর্মোদ্ধার করা সম্ভব হয় নি।তাই সেযুগের গণিতচর্চার প্রকৃত স্বরূপ আজও আমাদের অজানা। তবে ধ্বংসাবশেষেছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন নিদর্শন দেখে একথা অনুমান করতে
অসুবিধা হয়না যে, এই উপত্যকাবাসীদের গণিতজ্ঞান যথেষ্ট উন্নতমানের ছিল। এই সভ্যতারউন্মেষ
হয়েছিল ৩৫০০ – ৩৩০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের মধ্যে। সুতরাং ভারতীয়গণিতই প্রাচীনতম কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মিশর, সুমেরীয়
বা চীনের থেকেযে পিছিয়ে ছিল না এ কথা
অনস্বীকার্য।
মূলত, ভারতবর্ষে গণিত এর চর্চা
সেই বৈদিক যুগ থেকে হয়ে আসছে।বৈদিক মনীষীগণদ্বারা
গণিতের পরিপূর্ণ চর্চাই ভারতবর্ষের জ্যোতির্বিজ্ঞানকে উৎকর্ষেরশিখরে উঠতে
সাহায্য করেছিল বলে মনে করা হয়।বৈদিক যুগে
গণিতের ভিত্তি বেদেবর্ণিত ১৬ টি সূত্র ও ১৩ টি উপসূত্রে অন্তর্নিহিত ছিল।বৈদিকযুগে মূলতঃ দশমিক পদ্ধতিতেই
গণনাকার্য সম্পন্ন হত।যজুর্বেদ সংহিতায় প্রাপ্ত বিভিন্ন সংখ্যা যেমন; অর্বুদ(১০০০০০০০),
নর্বুদ(১০০০০০০০০),
সমুদ্র(১০০০০০০০০০), পরার্ধ(১০০০০০০০০০০০০)
থেকে জানা যায় যে বিশালায়তনসংখ্যার ধারণাও হিন্দু গণিতজ্ঞদের কল্পনাতীত ছিল না।সমসাময়িক কোনও জাতিসম্ভবত এত
বৃহৎ সংখ্যা কল্পনা করতে সক্ষম ছিল না।নিম্নে
বর্ণিতসংখ্যাপ্রবাহ
দুটিকে লক্ষ্য করা যাকঃ ১,৩,৫,...,৯৯ ২৪,৪৮,৯৬,১৯২,.........,৩৯৩২১৬ প্রথমটির
নাম সমান্তর প্রগতি এবং দ্বিতীয়টির নাম গুণোত্তরপ্রগতি।‘তৈত্তিরীয়
সংহিতা’ ও
‘পঞ্চবিংশ
ব্রাহ্মণ’ এ
যথাক্রমে উপরোক্ত প্রগতিগুলির উল্লেখ
পাওয়া যায়।এত গেলো পাটিগণিতের কথা।‘শতপথ ব্রাহ্মণ’ এহিন্দুদের
জ্যামিতিক জ্ঞানেরও পরিচয় পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই
জানি, বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠানে একটিঅন্যতম উপকরণ ছিল ‘মহাবেদী’; যার আকৃতি
হল সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম।এইসমদ্বিবাহু
ট্রাপিজিয়াম এর ক্ষেত্রফল এবং বাহু-উচ্চতার বিভিন্ন সম্পর্কহিন্দুরা
জানতেন।ঋণাত্মক রাশি সম্পর্কেও তারা
অবগত ছিলেন।সংস্কৃত ভাষায় আরেকটি অন্যতম
সূত্র হল “শুলভা সূত্র”। শুলভা শব্দের অর্থ দড়ি বা ঐ ধরনের
কিছু। এই শুলভা সূত্র ব্যবহার করা হত হিন্দুদেরমৃত্যুর পর
বেদী তৈরীর কাজে।এটি এক ধরনের বৈদিক জ্ঞান,
যেখানে
বিভিন্নধরনের
আগুনে পোড়ানোর বেদীর বিভিন্ন অর্থ তুলে ধরা হয়েছিল। উদাহরণ
স্বরুপবলা
যায়, যারা
স্বর্গে যেতে ইচ্ছুক, শুলভা সূত্র অনুযায়ী
তাদের আগুনেপোড়ানোর
বেদী হবে বকের আকৃতির। যারা ব্রাক্ষনদের মত পৃথিবী জয় করতে চায়,
তাদের
বেদী হত কচ্ছপ আকৃতির।এছাড়া রম্বস আকৃতির হবে তাদের
বেদী, যারা
অজাতশত্রু হতে চায়! বেদ থেকে প্রাপ্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলো হল:
অপাস্তমব্য
বৌধয়ন
মানব
ক্যাত্যায়ন
মৈত্রয়নী
(মানব
এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ)
বরাহ
বধূলা
হিরন্যকেশ
(অপাস্তমব্য এর সাথে সাদৃশ্য পূর্ণ)
এই সূত্রগুলোর বেশির ভাগই আবিষ্কৃত হয় ৮০০ থেকে ২০০
খ্রীষ্টপূর্বে।যাদের মধ্যে সবচাইতে প্রাচীন সূত্র হল
বৌধয়ন।মজার ব্যাপার, অপাস্তমব্য ও বৌধয়নের সাথে পীথাগোরাসের
সূত্র ও পীথাগোরিয়ান এরীয়রসাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতি, যেমন
চতুর্ভূজ ও বর্গেরঅস্তিত্ব
লক্ষ্য করা গেছে বৌধয়নের ভেতর। এছাড়া
আছে, একটি সুনির্দিষ্টজ্যামিতিক
ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলকে অন্য একটি জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলেরূপান্তর করার পদ্ধতি। আরো
একটি বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এই সূত্রের ভিতর √2 এর
মান অত্যন্ত নির্ভুলভাবে বের করার উপায়ও বলা হয়েছে। যা আমরা পানিনি দ্বারাবর্ণিত ইতিহাস থেকে জানতে
পারি।
এরপর প্রায় ১০০০ বৎসরগণিতের
মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে হিন্দুদের বিশেষ একটা অবদান লক্ষ্য করা যায়না। পরবর্তীতে
আর্যভট্ট্(৪৭৬-৫৩০),ব্রহ্মগুপ্ত(৫৮৮-৬৬০ খ্রিঃ),বরাহমিহির(ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ),
গলস্ন
(ষষ্ঠ
শতাব্দীর প্রথম ভাগে),ভাস্কর(ষষ্ঠ
শতাব্দীর শেষ ভাগে),মহাবীরাচার্য
(নবম শতাব্দী ), শ্রীধর আচার্য (একাদশশতাব্দীর প্রথম ভাগ), শ্রীপতি
(একাদশ শতাব্দী), ভাস্করাচার্য (দ্বাদশশতাব্দী)
প্রমুখ মনীষীবৃন্দেরকর্মালোকে
হিন্দু গণিতশাস্ত্র আবার বিশ্বসভায় নিজের স্থান সুদৃঢ় করেতোলে।গণিতশাস্ত্রে
হিন্দু মনীষীদের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অবদান হল দশমিকস্থানিক অঙ্কপাতন পদ্ধতি ও ‘শূন্য’
এর
আবিষ্কার।অবশ্য
এর আগে খ্রীষ্টপূর্ব২০০ তে
পিঙ্গলের ‘ছন্দসূত্রে’ শূন্যের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।আর্যভট্ট
রচিত ‘আর্যভটীয়’ নামক গ্রন্থে দ্বিঘাত প্রথম মাত্রার
অনির্ণেয়সমীকরণের সমাধান ও π এর
নির্ভুল মান এর উল্লেখ পাওয়া যায়।বর্গমূল নির্ণয়েরপদ্ধতিও আর্যভট্টের আবিষ্কার।এসময়ের আরেকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হলেন
ব্রহ্মগুপ্ত।তিনি
পিরামিডফ্রাস্টাম এর আয়তন নির্নয়
সম্পর্কিত সূত্র আবিষ্কার করেন।যাঁর কথা না বললে এই লেখা অপূর্ণ থেকে
যাবে তিনি হলেন ভাষ্কর।তাঁর
লেখাবিখ্যাত গ্রন্থখানি হল চারখন্ডে
সমাপ্ত ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’।যার প্রথম ২টিখন্ড
লীলাবতি ও বীজগণিত এ পাটীগণিত ও বীজগণিত এর বিভিন্ন বিষয় আলোচিতহয়েছে।“একটি ঋণাত্মক রাশিকে অপর একটি ঋণাত্মক
রাশি দ্বারা গুণ করলে ধনাত্মকরাশি এবং
একটি ঋণাত্মক ও অপর একটি ধনাত্মক রাশি গুণ করলে ঋণাত্মক রাশিপাওয়া যায়”, বীজগনিতেরএই সিদ্ধান্ত ভাষ্কর এর আবিষ্কার। গণিত এর ছাত্রমানেই,“x=(-b±√(b^2-4ac))/2a” সূত্র সম্পর্কে অবগত। যার আবিষ্কারকের নামশ্রীধর।দ্বিঘাত
সমীকরণের মাত্রা নির্ণয়ের এই সূত্রটি ‘শ্রীধরাচার্যেরউপপাদ্য’ নামে প্রচলিত। এতো গেল পাটীগণিত ও জ্যামিতির কথা। এরপর ত্রিকোণমিতি। ত্রিকোণমিতিতেও হিন্দুদের সাফল্য অনস্বীকার্য।বরাহমিহির
‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’
গ্রন্থে
sin30 ও sin 60 এর মান নির্ণয় করে দেখিয়েছেন। বর্তমানত্রিকোণমিতিতে
ব্যবহৃত মূল সূত্রগুলিও বরাহমিহির এর আবিষ্কৃত।
এই হল আমাদের হিন্দুধর্ম; আমাদের গণিতশাস্ত্র; যার মাহাত্ম্য, যার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। হাজার
হাজার বছর আগে যখন পৃথিবীতে জ্ঞান ও ধর্মকে একত্রিত করা হয়েছিলঈশ্বরের
উপাসনার জন্য, ঠিক তখন থেকেই আমাদের ভারত উপমহাদেশেও জ্যামিতি, গণিত ওধর্মের
বিভিন্ন রীতির সংমিশ্রন ঘটেছিল। সেই সময় হিন্দুধর্ম তথা সনাতন ধর্ম এতটাই
সমৃদ্ধশালী ছিল যে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ভাবতেই অবাক লাগে যে সময়
পৃথিবীর অধিকাংশে মানবসভ্যতার ছোঁয়া পর্যন্ত লাগেনি তখনভারতবর্ষের
বিভিন্ন আশ্রমে ঋষিগণ নিমগ্ন ছিলেন বিজ্ঞানের মহাযজ্ঞে।এর
কারণ বৈদিক যুগেএদেশের সমাজ ব্যবস্থা মূলত ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। ধর্ম কর্মের জন্যপ্রয়োজন হত নানা ধরণের যজ্ঞাদি ক্রিয়া
কান্ড। এই যজ্ঞানুষ্ঠানের একটিঅপরিহার্য অঙ্গ ছিল যজ্ঞবেদী নির্মাণ। যার জন্যই সংখ্যা ও জ্যামিতিরবিভিন্ন বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্যই
গণিতবিদ ও পুরোহিতদের অনুপ্রাণিত করেছিল গণিতশাস্ত্রকে বিভিন্ন ধর্মবিষয়ক কাজে
ব্যবহার করার। আর সেই থেকেই শুরু হয় ভারতবর্ষে
হিন্দুদের গণিতচর্চা। এই লেখাটি লিখতে গিয়ে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য আমাকে
সংগ্রহ করতে হয়েছে। প্রতি মুহূর্তেই আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি গণিতশাস্ত্রে হিন্দু
মনীষীদের অতুলনীয় অবদান দেখে। আর এই জন্যই আমরা মাথা উঁচু করে বলতে পারি, সনাতন
ধর্মের প্রতিষ্ঠা হয়েছে জ্ঞানের পথে। ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুক, এই কামনায় এখানেই
শেষ করছি। জয়
সনাতন ধর্মের জয়।
পৃথিবী যখন দ্বন্দ্ব, সংঘাত, যুদ্ধ, সন্ত্রাসে বিক্ষুদ্ধ, তিমির রাত্রির অবসানে প্রভাতকিরণছটার প্রকাশের মতো অপ্রাকৃত জগতের বাণী বহন করে
নিয়ে এলেন চিন্ময় জগতের দূত শ্রীল প্রভুপাদ । ভগদ্বিমুখ অন্ধ জড়বাদী মানবসমাজের সৃষ্টি
করলেন এক পারমার্থিক নবজাগরণের ইতিহাস ।
গুরুদেবের আদেশ লাভ
শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী
প্রভুপাদ ১৮৯৬ সালে কোলকাতায় আবির্ভূত হয়েছিলেন । ১৯২২ সালে কোলকাতায় তিনি তাঁর গুরুদেব শ্রীল
ভক্তিসিধান্ত সরস্বতী গোস্বামী প্রভুপাদের সাক্ষাৎ লাভ করেন । শ্রীল ভক্তিসিধান্ত সরস্বতী ঠাকুর ছিলেন ভক্তিমার্গের
বিদগ্ধ পন্ডিত এবং ৬৪ টি গৌড়ীয় মঠের (বৈদিক সংঘের) প্রতিষ্ঠাতা । তিনি এই বুদ্ধিদীপ্ত,
তেজস্বী ও শিক্ষিত যুবকটি সারা বিশ্বে ইংরেজী ভাষায় বৈদিক জ্ঞান
প্রচারের কাজে জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেন । শ্রীল প্রভুপাদ এগার বছর ধরে তাঁর আনুগত্যে
বৈদিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে ১৯৩৩ সালে এলাহবাদে তাঁর কাছে দীক্ষা পাপ্ত হন ।
১৯২২ সালে শ্রীল ভক্তিসিধান্ত সরস্বতী ঠাকুর
শ্রীল প্রভুপাদকে ইংরেজী ভাষার মাধ্যমে বৈদিক জ্ঞান প্রচার করতে নির্দেশ দেন । পরবর্তীকালে শ্রীল
প্রভুপাদ ভগবদগীতার ভাষ্য লিখে গৌড়ীয় মঠের প্রচারের কাজে সহায়তা করেছিলেন । ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তিনি এককভাবে একটি ইংরেজী পাক্ষিক পত্রিকা ‘Back To
Godhead’ প্রকাশ করতে শুরু করেন । এমনকি তিনি নিজের হাতে পত্রিকাটি বিতরণও করতেন
। পত্রিকাটি এখনও সারা
পৃথিবীতে নানা ভাষায় তাঁর শিষ্যবৃন্দ কর্তৃক মুদ্রিত ও প্রকাশিত হচ্ছে ।
জীবনব্রত সাধনের প্রস্তুতি
১৯৪৭ সালে শ্রীল প্রভুপাদের দার্শনিক জ্ঞান
ও ভক্তির উৎকর্ষতার স্বীকৃতিরূপে ‘গৌড়িয় বৈষ্ণব সমাজ’
তাঁকে “ভক্তিবেদান্ত”
উপাধিতে ভূষিত করেন । ১৯৫০ সালে তাঁর ৫৪ বছর বয়সে শ্রীল প্রভুপাদ সংসার জীবন থেকে
অবসর গ্রহণ করে চার বছর পর ১৯৫৪ সালে বাণপ্রস্থ আশ্রম গ্রহণ করেন এবং শাস্ত্র অধ্যয়ন,
প্রচার ও গ্রন্থ রচনার কাজে মনোনিবেশ করেন । তিনি বৃন্দাবনে শ্রীশ্রীরাধা-দামোদর
মন্দিরে বসবাস করতে থাকেন এবং অতি সাধারণভাবে জীবনযাপন করতে শুরু করেন । ১৯৫৯ সালে তিনি সন্ন্যাস
গ্রহণ করেন ।
তাঁর গুরুদেবের আদেশ পালন-----
শ্রীশ্রীরাধা-দামোদর মন্দিরেই শ্রীল প্রভুপাদের
শ্রেষ্ঠ অবদানের সূত্রপাত হয় । এখানে বসেই তিনি অপ্রাকৃত মহাগ্রন্থ শ্রীমদভাগবতের অনুবাদ কর্মের
সূচনা করেন । এখন সেটি ১৮ টি বিপুলায়তন খন্ডে প্রকাশিত হয়ে সারা পৃথিবীতে বিতরিত হচ্ছে ও কৃষ্ণ
চেতনার উন্মেষ সাধন করছে ।
১৯৬০ সালে দিল্লীতে ‘পরলোকে সুগম যাত্রা’ নামক প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ ।
১৯৬২ সালে দিল্লীতে শ্রীমদভাগবতের ১ম স্কন্ধের
১ম খন্ড ইংরেজীতে প্রকাশ ।
১৯৬৫ সালে ৭০ বছর বয়সে তিনি প্রায় সম্পূর্ণ
কপর্দকহীন অবস্থায় আমেরিকায় নিউইয়র্ক শহরে পৌছান । প্রায় এক বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পর তিনি
১৯৬৬ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠা করেন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণাবনামৃত সংঘ বা ইসকন । তাঁর সযত্ন নির্দেশনায়
এক দশকের মধ্যে গড়ে ওঠে বিশ্বব্যাপী শতাধিক আশ্রম, বিদ্যালয়, মন্দির ও পল্লী-আশ্রম । বিশ্বের সমস্ত দেশের
বুদ্ধিশীল মেধাবী তরুন তরুনীরা এই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করতে থাকেন ।
১৯৬৬ সালের শেষে ইসকনের ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা
।
১৯৬৭ সালে ৯ জুলাই পাশ্চাত্যে (সানফ্রান্সিসকো)
প্রথম রথযাত্রা উৎসব পালন ।
১৯৬৮ সালে শ্রীল প্রভুপাদ পশ্চিম ভার্জিনিয়ার
পার্বত্য-ভূমিতে গড়ে তোলেন নব বৃন্দাবন, যা হল বৈদিক
সমাজের প্রতীক । এই সফলতায় উদ্ধুব্ধ হয়ে তাঁর শিষ্যবৃন্দ পরবর্তীকালে ইউরোপ ও আমেরিকায় আরও অনেক
পল্লী-আশ্রম গড়ে তোলেন ।
১৯৬৯ সালে ২৩ জুন লস এঞ্জেলেসে ১ম রাধাকৃষ্ণ
বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা, যা কয়েকটি টিভি চ্যান্যালে সরাসরি দেখানো
হয় যার মধ্যে অন্যতম বি.বি.সি ।
১৯৬৯ সালে ১৪ ডিসেম্বর লন্ডনে শ্রীশ্রী রাধা-লন্ডনেশ্বর
বিগ্রহ স্থাপন ও মন্দির উদ্বোধন ।
১৯৭০ সালে সমগ্র বিশ্বের ইসকন পরিচালনার জন্য
গভর্নিং বডি কমিশন (জিবিসি) গঠন ।
১৯৭১ সালে জুনে মস্কো পরিদর্শন এবং সেখানে
কৃষ্ণভাবনার বীজ রোপন ।
শ্রীল প্রভুপাদের অনবদ্য অবদান হল তাঁর গ্রন্থাবলী
। তাঁর রচনাশৈলী আধুনিক,
কিন্তু গাম্ভীর্যপূর্ণ ও প্রাঞ্জল এবং শাস্ত্রানুমোদিত । সেই কারনে বিদগ্ধ সমাজের
তাঁর রচনাবলী অত্যন্ত সমাদৃত এবং বহু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে আজ সেগুলি পাঠ্যরূপে ব্যবহৃত
হচ্ছে । বৈদিক দর্শনের এই গ্রন্থাবলী প্রকাশ করছেন তাঁরই প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ
গ্রন্থ প্রকাশনী সংস্থা ‘ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট’
। শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের
সপ্তদশ খন্ডের তাৎপর্যসহ ইংরেজী অনুবাদ আঠার মাসে সম্পূর্ণ করেছিলেন । বিশ্বের নানা ভাষায়
তা অনূদিত হয়েছে ।
১৯৭২ সালে আমেরিকার ডালাসে গুরুকুল বিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শ্রীল প্রভুপাদ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বৈদিক শিক্ষা-ব্যবস্থায়
প্রচলন করেন । ১৯৭২ সালে মাত্র তিনজন ছাত্র নিয়ে এই গুরুকুলের সূত্রপাত হয় এবং আজ সারা পৃথিবীর
১৫ টি গুরুকূল বিদ্যালয় ছাত্রের সংখ্যা প্রায় ২০০০ জন ।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শ্রীধাম মায়াপুরে
শ্রীল প্রভুপাদ সংস্থার বিশ্ব-মুখ্য কেন্দ্রটি স্থাপন করেন ১৯৭২ সালে । এখানে ৫০ হাজার ভক্ত
সমন্বিত এক বৈদিক নগরীর তিনি সূচনা করেন । এখানে বৈদিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য একটি বর্ণাশ্রম কলেজ
স্থাপনের পরিকল্পনাও তিনি দিয়ে গেছেন । শ্রীল প্রভুপাদের নির্দেশে বৈদিক ভাবধারার উপর প্রতিষ্ঠিত এই
রকম আর একটি আশ্রম গড়ে উঠেছে বৃন্দাবনের শ্রীশ্রীকৃষ্ণ-বলরাম মন্দিরে, যেখানে আজ দেশ-দেশান্তর থেকে আগত বহু পরমার্থী বৈদিক সংস্কৃতির
অনুশীলন করেছেন । তাঁর সবচেয়ে বিস্ময়কর পরিকল্পনা রূপায়িত হতে চলছে শ্রীমায়াপুরে । ৩৬ তলা সমান উঁচু বৈদিক
গ্রহমন্ডল মন্দির (বিশ্বের সবচেয়ে বড় মন্দির) হবে পৃথিবীর এক আশ্চর্য স্থাপত্যশৈলীর
নিদর্শন, (যা এখন কাজ চলছে শেষ হবে ২০১৫-১৬ সালে) এবং
পৃথিবীর মানুষকে মহাপ্রভুর বাণী গ্রহনে আকৃষ্ট করবে ।
১৯৭৫ সালে ইসকনের বিজ্ঞান গবেষণামূলক শাখা
‘ভক্তিবেদান্ত ইনিস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেন ।
১৯৭৭ সালে এই ধরাধাম থেকে অপ্রকট হওয়ার পূর্বে
শ্রীল প্রভুপাদ সমগ্র জগতের কাছে ভগবানের বাণী পৌছে দেবার জন্য তাঁর বৃ্দ্ধাবস্থাতেও
সমগ্র পৃথিবী ১৪ বার পরিক্রমা করেন । মানুষের মঙ্গলার্থে এই প্রচার-সূচীর পূর্ণতা সাধন করেও তিনি
বৈদিক দর্শন, সাহিত্য ধর্ম ও সংস্কৃতি সমন্বিত ৮০ টি গ্রন্থাবলী
রচনা করে গেছেন, যার মাধ্যমে এ জগতের মানুষ পূর্ণ আনন্দময়
এক দিব্য জগতের সন্ধান লাভ করবে । তিনি এই জড়বাদী ইন্দ্রিয়তৃপ্তি কেন্দ্রিক সভ্যতায় এক নতুন জীবন-প্রণালী,
এক পরিশুদ্ধ সুন্দর পবিত্র জীবনধারা সারা পৃথিবীতে প্রবর্তন
করে গিয়েছেন, যা আধুনিক বিশ্বে এক নতুন পারমার্থিক রেনেসাঁ
বা নবজাগরনের সূত্রপাত করেছে । এটি মহীরূহের আকার গ্রহণ করে পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত হবে,
পৃথিবীর মানুষ হবে প্রকৃতই সুখী – শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু স্বয়ং এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ।
শ্রীল প্রভুপাদের অবিস্মরণীয় অবদানের কিছু
দৃষ্টান্ত------
# সারা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের প্রধান
প্রধান শহর-সহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০০ এর বেশি কেন্দ্র, মন্দির, কৃষি খামার ।
# পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষ কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন
গ্রহণ করেছেন; কদাভ্যাস ত্যাগ করে ভক্তিযোগ অনুশীলন করছেন
। (আনন্দবাজার পত্রিকায়
প্রকাশিত একটি তথ্য অনুসারে শুধু আমেরিকাতেই এই সংখ্যা কয়েক লক্ষ, আর এখন সবচেয়ে বেশি প্রচার ও ভক্ত হচ্ছে রাশিয়াতে) ।
# নিউইয়র্কের ‘ভক্তিবেদান্ত আর্কাইভ্স’-এ সংগ্রহীত হয়েছে শ্রীল
প্রভুপাদের নানা সময় নানা দেশে প্রদত্ত ২৫০০ ঘন্টারও বেশি ইংরেজী অডিও ভাষণ,
৫০ ঘন্টা ভিডিও, ৩০ হাজারেরও
বেশি নানা শিল্পীর অংকিত কৃষ্ণভাবনাময় চিত্রকর্ম ছবি ।
# শ্রীল প্রভুপাদের অনবদ্য ভাষা-সমন্বিত ইংরেজী
ভগবদগীতা অ্যাজ ইট ইজ এখন ১০৫ টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়ে সারা পৃথিবীর প্রত্যেক অঞ্চলে
পৌছাচ্ছে । ১৯৯৬ সালের পূর্বেই পাঁচ কোটিরও বেশি সংখ্যায় বিতরিত হয়ে ইতিমধ্যেই 'ভগবদগীতা অ্যাজ ইট ইজ' পৃথিবীর বেস্
ট সেলার হিসেবে গিনেস বুকে স্থান করে নিয়েছে
। পৃথিবীর বহু নামী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে
বইটি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ।
# শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থাবলী প্রকাশিত হয়
‘ভক্তি বেদান্ত বুক ট্রাস্ট’ বা বি. বি. টি থেকে, সেটি এখন পৃথিবীর বৃহত্তম
প্রকাশনা সংস্থা । যা প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭০ সালে ।
সারা পৃথিবীতে ইসকন মন্দির, কেন্দ্র, কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের
সাম্প্রতিকতম খবরাখবর, তথ্যাদি জানতে ইন্টারনেটে
ইসকনের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট www.krishna.com দেখুন । এর থেকে ইসকনের আরও
অনেক আকর্ষণীয় ওয়েবসাইটর ঠিকানা পাওয়া যাবে ।
মহাদেবের ১০৮ নাম ( সুমেরু পর্বতে মহাকাল
শিব দেবী পার্বতী কে নিয়ে ভ্রমণে গেছিলেন । সেখানে তিনি নারদ মুনি ও অনান্য ঋষি মুনি দের কাছে নিজের ১০৮
নাম বর্ণিত করেন )
“সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।