০৭ জুলাই ২০১৩

“ওঁ-কার তত্ত্ব”


আমাদের সকল কাজের শুরুতেই “ওঁ তৎ সৎ ” উচ্চারণ করে শুরু করা উচিৎ।

ওঁ -প্রণব(ব্রহ্ম), তৎ-জীব, সৎ-জগৎ। ব্রহ্মের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ বেদ। জীবের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ ব্রহ্মজ্ঞ। জগত কর্মময়। কর্মের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ যজ্ঞ। সুতরাং, “ওঁ তৎ সৎ” মন্ত্রে বেদ, ব্রহ্মজ্ঞ ও যজ্ঞকে বোঝায়। তাই, আমাদের সকল কাজের শুরুতেই “ওঁ তৎ সৎ ” উচ্চারণ করে শুরু করা উচিৎ। এছাড়া আমাদের সনাতন ধর্মে ওঁ-কার কে বলা হয় পবিত্রতা ও মঙ্গলতার প্রতীক। প্রণব বা ওঁ-কারই বেদের নির্যাস ও ব্রহ্মবস্তু।

এই সম্পর্কে গীতায় (৭ অধ্যায় /৮ নং শ্লোক) ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,
“আমি জলের রস, চন্দ্র-সূর্যের কিরণ, বেদের ওঁ(প্রণব), আকাশে শব্দ ও মানুষের মধ্য পুরুষত্ব রূপে বিরাজ করি।”
 
যোগদর্শনের শ্রেষ্ঠ আচার্য পতঞ্জলি যোগসূত্রে সমাধিপাদে(১ম, ২৭-২৮) বলেছেন,
“তস্য বাচকঃ প্রণবঃ। তজ্জপস্তুদর্থভাবনম্।”- প্রণব ঈশ্বরের নাম। তাঁর জপ ও চিন্তা করনীয়।          

ওঁ বা প্রণব হচ্ছে মন্ত্রের প্রাণ। পূজা বা ধ্যানের সময় মন্ত্র উচ্চারণে “প্রণব” না থাকলে মন্ত্রের ক্রিয়া হয় না, প্রাণশক্তি নেই বলে। অথচ, পূজার সময় অনেক পুরোহিতরা মন্ত্রের শুরুতে “ওঁ” উচ্চারন না করে; “নমো” বলে মন্ত্র শুরু করান। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, একটি ভুল পদ্ধতি।    

অনেকেই জেনে বা না জেনে ওঁ এবং ঔঁ-কারের ভিন্ন অর্থ, ব্যাখ্যা প্রয়োগ করে থাকে। এদের মাঝে পার্থক্য কি? পার্থক্য শুধু বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায়। ওঁ- কার বাংলায় এবং ঔঁ-কার সংস্কৃতিতে। শ্রী শ্রী স্বামী স্বরুপানন্দ পরমহংসদেব বলেছেন- “ওঁ, ওম, ঔং, অউম, ঔঁ” এই পাঁচ প্রকার উচ্চারণের মধ্য বস্তুগত বা অর্থগত কোনো পার্থক্য নেই।
         
ওঁ-ই সৃষ্টির আদি শব্দ। নির্গুণ-নিস্ক্রিয় ব্রহ্মের এ সক্রিয় ভাব। এই সক্রিয় ভাব হতেই সৃষ্টির বিকাশ। তাই, যেকোনো কাজের শুরুতেই “ওঁ তৎ সৎ ” উচ্চারণ করুন এবং পূজার সময় প্রথমে “ওঁ” উচ্চারণ করে মন্ত্রপাঠ শুরু করুন। 
-----------------------------------
কৃতজ্ঞতাঃ শ্রী জয় রায়
# বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুনঃ
গীতাধ্যান- ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারী
জ্ঞানমঞ্জুরি- শ্রী শিবশঙ্কর চক্রবর্তী       



Share:

Total Pageviews

বিভাগ সমুহ

অন্যান্য (91) অবতারবাদ (7) অর্জুন (4) আদ্যশক্তি (68) আর্য (1) ইতিহাস (30) উপনিষদ (5) ঋগ্বেদ সংহিতা (10) একাদশী (10) একেশ্বরবাদ (1) কল্কি অবতার (3) কৃষ্ণভক্তগণ (11) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু (21) ক্ষুদিরাম (1) গায়ত্রী মন্ত্র (2) গীতার বানী (14) গুরু তত্ত্ব (6) গোমাতা (1) গোহত্যা (1) চাণক্য নীতি (3) জগন্নাথ (23) জয় শ্রী রাম (7) জানা-অজানা (7) জীবন দর্শন (68) জীবনাচরন (56) জ্ঞ (1) জ্যোতিষ শ্রাস্ত্র (4) তন্ত্রসাধনা (2) তীর্থস্থান (18) দেব দেবী (60) নারী (8) নিজেকে জানার জন্য সনাতন ধর্ম চর্চাক্ষেত্র (9) নীতিশিক্ষা (14) পরমেশ্বর ভগবান (25) পূজা পার্বন (43) পৌরানিক কাহিনী (8) প্রশ্নোত্তর (39) প্রাচীন শহর (19) বর্ন ভেদ (14) বাবা লোকনাথ (1) বিজ্ঞান ও সনাতন ধর্ম (39) বিভিন্ন দেশে সনাতন ধর্ম (11) বেদ (35) বেদের বানী (14) বৈদিক দর্শন (3) ভক্ত (4) ভক্তিবাদ (43) ভাগবত (14) ভোলানাথ (6) মনুসংহিতা (1) মন্দির (38) মহাদেব (7) মহাভারত (39) মূর্তি পুজা (5) যোগসাধনা (3) যোগাসন (3) যৌক্তিক ব্যাখ্যা (26) রহস্য ও সনাতন (1) রাধা রানি (8) রামকৃষ্ণ দেবের বানী (7) রামায়ন (14) রামায়ন কথা (211) লাভ জিহাদ (2) শঙ্করাচার্য (3) শিব (36) শিব লিঙ্গ (15) শ্রীকৃষ্ণ (67) শ্রীকৃষ্ণ চরিত (42) শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু (9) শ্রীমদ্ভগবদগীতা (40) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (4) শ্রীমদ্ভাগব‌ত (1) সংস্কৃত ভাষা (4) সনাতন ধর্ম (13) সনাতন ধর্মের হাজারো প্রশ্নের উত্তর (3) সফটওয়্যার (1) সাধু - মনীষীবৃন্দ (2) সামবেদ সংহিতা (9) সাম্প্রতিক খবর (21) সৃষ্টি তত্ত্ব (15) স্বামী বিবেকানন্দ (37) স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (14) স্মরনীয় যারা (67) হরিরাম কীর্ত্তন (6) হিন্দু নির্যাতনের চিত্র (23) হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র ও অন্যান্য অর্থের পরিচিতি (8) হিন্দুত্ববাদ. (83) shiv (4) shiv lingo (4)

আর্টিকেল সমুহ

অনুসরণকারী

" সনাতন সন্দেশ " ফেসবুক পেজ সম্পর্কে কিছু কথা

  • “সনাতন সন্দেশ-sanatan swandesh" এমন একটি পেজ যা সনাতন ধর্মের বিভিন্ন শাখা ও সনাতন সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য অসাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে গঠন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য নিজের ধর্মকে সঠিক ভাবে জানা, পাশাপাশি অন্য ধর্মকেও সম্মান দেওয়া। আমাদের লক্ষ্য সনাতন ধর্মের বর্তমান প্রজন্মের মাঝে সনাতনের চেতনা ও নেতৃত্ত্ব ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা কুসংষ্কারমুক্ত একটি বৈদিক সনাতন সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এ পথচলায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য । এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সনাতন ধর্মের যে কেউ লাইক দিয়ে এর সদস্য হতে পারে।