আমাদের সকল কাজের শুরুতেই “ওঁ তৎ সৎ ” উচ্চারণ করে শুরু
করা উচিৎ।
ওঁ -প্রণব(ব্রহ্ম), তৎ-জীব, সৎ-জগৎ। ব্রহ্মের শ্রেষ্ঠ
প্রকাশ বেদ। জীবের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ ব্রহ্মজ্ঞ। জগত কর্মময়। কর্মের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ
যজ্ঞ। সুতরাং, “ওঁ তৎ সৎ” মন্ত্রে বেদ, ব্রহ্মজ্ঞ ও যজ্ঞকে বোঝায়। তাই, আমাদের সকল
কাজের শুরুতেই “ওঁ তৎ সৎ ” উচ্চারণ করে শুরু করা উচিৎ। এছাড়া আমাদের সনাতন ধর্মে
ওঁ-কার কে বলা হয় পবিত্রতা ও মঙ্গলতার প্রতীক। প্রণব বা ওঁ-কারই বেদের নির্যাস ও
ব্রহ্মবস্তু।
এই সম্পর্কে গীতায় (৭ অধ্যায় /৮ নং শ্লোক) ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,
“আমি জলের রস, চন্দ্র-সূর্যের কিরণ, বেদের ওঁ(প্রণব),
আকাশে শব্দ ও মানুষের মধ্য পুরুষত্ব রূপে বিরাজ করি।”
যোগদর্শনের শ্রেষ্ঠ আচার্য পতঞ্জলি যোগসূত্রে
সমাধিপাদে(১ম, ২৭-২৮) বলেছেন,
“তস্য বাচকঃ প্রণবঃ। তজ্জপস্তুদর্থভাবনম্।”- প্রণব
ঈশ্বরের নাম। তাঁর জপ ও চিন্তা করনীয়।
ওঁ বা প্রণব হচ্ছে মন্ত্রের প্রাণ। পূজা বা ধ্যানের সময়
মন্ত্র উচ্চারণে “প্রণব” না থাকলে মন্ত্রের ক্রিয়া হয় না, প্রাণশক্তি নেই বলে।
অথচ, পূজার সময় অনেক পুরোহিতরা মন্ত্রের শুরুতে “ওঁ” উচ্চারন না করে; “নমো” বলে
মন্ত্র শুরু করান। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, একটি ভুল পদ্ধতি।
অনেকেই জেনে বা না জেনে ওঁ এবং ঔঁ-কারের ভিন্ন অর্থ,
ব্যাখ্যা প্রয়োগ করে থাকে। এদের মাঝে পার্থক্য কি? পার্থক্য শুধু বাংলা ও সংস্কৃত
ভাষায়। ওঁ- কার বাংলায় এবং ঔঁ-কার সংস্কৃতিতে। শ্রী শ্রী স্বামী স্বরুপানন্দ পরমহংসদেব
বলেছেন- “ওঁ, ওম, ঔং, অউম, ঔঁ” এই পাঁচ প্রকার উচ্চারণের মধ্য বস্তুগত বা অর্থগত
কোনো পার্থক্য নেই।
ওঁ-ই সৃষ্টির আদি শব্দ। নির্গুণ-নিস্ক্রিয় ব্রহ্মের এ
সক্রিয় ভাব। এই সক্রিয় ভাব হতেই সৃষ্টির বিকাশ। তাই, যেকোনো কাজের শুরুতেই “ওঁ তৎ
সৎ ” উচ্চারণ করুন এবং পূজার সময় প্রথমে “ওঁ” উচ্চারণ করে মন্ত্রপাঠ শুরু
করুন।
-----------------------------------
কৃতজ্ঞতাঃ শ্রী জয় রায়
# বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুনঃ
গীতাধ্যান- ড. মহানামব্রত ব্রহ্মচারী
জ্ঞানমঞ্জুরি- শ্রী শিবশঙ্কর চক্রবর্তী
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন