পাশ্চাত্য জগতে প্রথম ভগবান জগন্নাথদেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় আজ থেকে ৩৬ বছর আগে ১৯৬৭ সালে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে । এই সুন্দর উৎসবটির পূর্ব ইতিহাসও খুব সুন্দর এবং এর শুরুটা হয়েছিল ১৮৭০ এর দিকে । যখন ওড়িষ্যার প্রথম আইন গ্র্যাজুয়েট কেদারনাথ দত্ত যিনি সারাবিশ্বে বর্তমানে শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর নামে বিখ্যাত । পুরীর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ডেপুটি কালেক্টর হয়েছিলেন । আর তখন সরকারের পক্ষ থেকে তাকে জগন্নাথ মন্দিরের আনুষাঙ্গিক দেখাশোনার ভার গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানানো হয় । এতে তিনি খুবই খুশি হয়েছিলেন । ভক্তিবিনোদ ঠাকুর ছিলেন ভগবান শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভুর শিক্ষা ও মহিমা প্রচারের অগ্রদূত ।
এরপর খুব শীঘ্রই লন্ডনে রথযাত্রা পরিচিতি লাভ করে । যখন শ্রীল প্রভুপাদ এবং তার শিষ্যরা কোন নতুন স্থানে কৃষ্ণভাবনা নিয়ে আসে প্রথমে তারা সেখানে ভগবান জগন্নাথের পূজা পরিচিতি করান । ১৯৭০ এ জাপানের টোকিওতে প্রথম রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় । ১৯৭৭ পর্যন্ত শ্রীল প্রভুপাদ ব্যক্তিগতভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে লসএঞ্জেলেস, লন্ডন, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া, নিউইয়র্ক, নিউ জগন্নাথপুরী (সানফ্রান্সিসকো) অংশগ্রহণ করেন ।
১৯৭২ সালের গ্রীষ্মে ফিলাডেলফিয়াতে জগন্নাথের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত হয় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় । সেটি ছিল আমেরিকার পূর্ব উপকূলে প্রথম কোন রথযাত্রা এবং ফিলাডেলফিয়ার ভক্তগনের কাছে পরিচিতি পায় ‘নিউ নীলাচলধাম’ নামে । ১৯৭২ সালে আমষ্টারডামে জগন্নাথের বিগ্রহ প্রতিষ্টা করেন তিনি যেটি বর্তমানে বেলজিয়ামের রাধাদেশে পূজিত হচ্ছে ।
১৯৭৬ সালে বিশ্বের ১০টি প্রধান শহরে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় এবং মিডিয়াসহ সরকার কর্তৃক মন্তব্য করেন যে, বিশ্বের অন্যান্য উৎসবের তুলনায় এ রথযাত্রা উৎসব সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং সুব্যবস্থাকৃত ।
২০০৩ সালে মেক্সিকোতে প্রথমে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় । ব্রাজিলসহ সাউথ আমেরিকার অনেক দেশে এ রথযাত্রা উদযাপিত হয় ।
মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশে ইস্কনের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে সেই ১৯৮০ সাল থেকে । সুইজারল্যান্ডের জুরিখে জগন্নাথের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ঐ স্থান পরিচিত হয় ‘নিউ জগন্নাথ পুরী’ হিসেবে এবং নিয়মিতই সেখানে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় । স্পেনে তিনটি শহর মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও মালাগাতে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় । ইতালীর মিলানেও এবং অবশ্যই ভারতের বহু স্থানেও এটি অনুষ্ঠিত হয় ।
তথ্যসূত্রঃ ইস্কনের শ্রী জগন্নাথ রিসার্চ সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন
[courtesy: জয় রায়]
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন