মা আদিশক্তি দুর্গা পূজার মধ্য দিয়ে হিন্দু
জাতি ও হিন্দু সমাজের ও হিন্দু সংহতি শক্তি গঠনের ইঙ্গিত দেখা যায় । সংহতির ও ঐক্যের এক
বড় দৃষ্টান্ত মা দুর্গার মধ্যেই আছে । দেবী সুক্তে দেবী স্বয়ং বলেছেন-
অহং রাষ্ট্রী সংগমনী বসূনাং চিকিতুষী প্রথমা
যজ্ঞিয়নাম্ ।
তাং মা দেবা ব্যদধুঃ পুরত্রা ভূরিস্ত্রাতাং
ভূর্য্যাবেশয়ন্তীম্ ।।
( এর অর্থ – আমি রাষ্ট্রী , রাষ্ট্রের অধীশ্বরী , রাজ্য রক্ষার্থে যে সম্পদের প্রয়োজন আমি তাহার বিধান কর্তা
। সংসারে শান্তি লাভের
জন্য যে ব্রহ্মজ্ঞান প্রয়োজন ,আমি তাহাই জানি । আমি এক হইয়াও বহু
রুপা । সর্ব জীবে আমি প্রবিষ্ট
হইয়া আছি । দৈবী সম্পদ শালী দেবতারা যাহা সাধন করেন সকলই আমার উদ্দ্যেশে সম্পন্ন হয় )
মা দুর্গার দক্ষিণে লক্ষ্মী ও গণেশ ও বামে
সরস্বতী ও কার্ত্তিক । গণেশ হলেন গণশক্তির প্রতীক। গণেশ হলেন শূদ্র শক্তির প্রতীক । কর্মের তত্ত্ব এখানে বিদ্যমান । গণেশ বলতে শ্রম শক্তিকে
বোঝায় । গণেশ গণদেবতা বা জাতির সমষ্টির প্রতীক ।
মা লক্ষ্মী হলেন ধন শক্তির আধার । ইনি বৈশ্য শক্তির প্রতীক । ইনি ধন অর্থাৎ ধন শক্তির
পরিচায়ক । মা সরস্বতী স্বয়ং জ্ঞানের দেবী । সরস্বতী জাতির জ্ঞান শক্তির প্রতীক । প্রাচীন কাল হতে ব্রাহ্মণ গণ শাস্ত্র পাঠ
, পুথি অধ্যায়ন ও বেদান্ত জ্ঞানের সাথে যুক্ত । তাই সরস্বতী ব্রাহ্মণ্য
শক্তির প্রতীক । বেদান্ত জ্ঞানের ভান্ডার । দেবসেনাপতি কার্ত্তিক হলেন ক্ষত্রিয় শক্তির প্রতীক । কুমার কার্ত্তিক কে
অবিবাহিত বলা হয় । কার্ত্তিক সংযম ও ব্রহ্মচর্যের প্রতীক । গণশক্তি, ধনশক্তি, জ্ঞানশক্তি, ব্রহ্মচর্যশক্তি একত্র
হইলেই মহামিলন ও মহামুক্তি । এই চারিটির সমন্বয় ঘটিলেই জাতির জীবনে মহাশক্তির আবির্ভাব ও
লীলাবিকাশ ঘটে ।
দেবীর দক্ষিণে বিঘ্নেশ সিদ্ধিদাতা গণেশের
তাই উপস্থিতি । এর সাথে প্রয়োজন চারিত্রিক ও আত্মিক ঐশ্বর্যের প্রকাশ- তাই মা দুর্গার দক্ষিণে
দেবী লক্ষ্মী । আরও দরকার ব্রহ্মচর্য ও ইন্দ্রিয় দমন তাই দেবীর বামে কার্ত্তিক । প্রয়োজন উত্তম মেধা
ও ধীশক্তি । তাই দেবী দুর্গার বামে দেবী সরস্বতী । দুর্গা পূজা সেই মহাশক্তি ও মহাজাতির পূজা
written by : সুমন বসাক
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন