শ্রীধর আচার্য (আনুমানিকঃজন্ম, ৮৭০-মৃত্যু,৯৩০) একজন ভারতীয় গনিতবিদ,সংস্কৃত পণ্ডিত এবং দার্শনিক।
তার জন্ম দক্ষিন রাধা নামক জায়গার ভুরিশ্রেষ্টি(ভুরিসৃষ্টি বা ভুরশুত) গ্রামে যাকে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী বলে ধারনা করা হয়।অবশ্য কেউ কেউ বলেন তার জন্ম হয়েছিল দক্ষিন ভারতে। তার পিতার নাম ছিল বলদেব আচার্য এবং মাতার নাম ছিল অচ্ছকা।তার পিতাও একজন সংস্কৃত পণ্ডিত ছিলেন।
শ্রীধর দুটি বিখ্যাত গবেষণামুলক বই লেখেনঃত্রিশতিকা(পাটীগনিতসর নামেও পরিচিত) এবং পাটীগণিত । তার প্রধান কাজ পাটীগনিতসর কে ত্রিশতিকা বলা হয় কারণ এই বইটিতে তিনশ শ্লোক আছে। এই বইটিতে সংখ্যা গণনা,পরিমাপ,প্রকৃত সংখ্যা,গুন,ভাগ,শুন্য,বর্গ,ঘন ,ভগ্নাংশ,তিন এর নিয়ম বা রুল অফ থ্রি,সুদ হিসাব করা,অংশিদারিত্বের ব্যবসা,ক্ষেত্রফল ও আয়তন নির্ণয় সহ গনিতের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।
ধারনা করা হয় তিনি অন্তত আরও তিনটি কাজ করেন যেগুলোর নাম বীজগণিত,নবশতি এবং বরাহপতি। দ্বিতীয় ভাস্কর(১১৫০সালের কাছাকাছি) , মাক্কিভট্টের(১৩৭৭সালের কাছাকাছি) এবং রাঘবভট্টের (১৪৯৩ সালে)লেখা থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
• তিনি ‘শুন্য’ (০) সম্পর্কিত ব্যখ্যা প্রদান করেন।তিনি বলেন, “যদি কোন সঙ্খ্যার সাথে শুন্য যোগ করা হয় তাহলে যোগফল ওই সঙ্খ্যার সমান থাকবে;যদি কোন সংখ্যা থেকে শুন্য বিয়োগ করা হয় তাহলেও ওই সঙ্খ্যার কোন পরিবর্তন হবে না;যদি কোন সঙ্খ্যার সাথে শুন্য গুন করা হয় তাহলে তার ফলাফল শুন্য হবে”। কোন সঙ্খ্যাকে শুন্য দিয়ে ভাগ করলে কি হবে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।
• ভগ্নাংশের ভাগের ক্ষেত্রে তিনি লক্ষ্য করেন ভাজকের সাথে সাথে ভগ্নাংশটিও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
• তিনি বীজগণিত ও পাটিগণিতের ব্যবহারিক দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
• তিনি বীজগণিত ও পাটিগণিতের ব্যবহারিক দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
• গনিতের ইতিহাসে দ্বিঘাতসহ সমীকরণ সমাধানে তিনি প্রথম কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে একজন।
• তিনি নিচের গানিতিক সূত্রটি প্রতিপাদন করেন
• তিনি নিচের গানিতিক সূত্রটি প্রতিপাদন করেন
x=(-b±√(b^2-4ac))/2a
x=(-b±√(b^2-4ac))/2a
এটি শ্রীধর আচার্যের সমীকরণ নামে পরিচিত। দ্বিঘাত সমীকরণের মাত্রা নির্ণয়ের এই সূত্রটি ‘শ্রীধরাচার্যের উপপাদ্য’ নামেও প্রচলিত।
সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই এই প্রাচীন গনিতজ্ঞকে।
বিজ্ঞান বিশ্বে সভ্যতার আদি হতে অবদান রেখে চলেছে বৈদিক দার্শনিক ও বিজ্ঞানী গন।যখন ইউরোপে ভালভাবে কাপড় বোনার প্রযুক্তিও ভালভাবে রপ্ত হয়নি তখন প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানীরা পাই এর মান বের করেছেন,পৃথিবী সূর্যের দূরত্ব বের করেছেন,ত্রিকোণমিতির সুত্র বের করেছেন,ক্যালকুলাসের মৌলিক বিষয় নিয়ে চর্চা করেছেন,জ্যামিতির সুত্রপাত করেছেন,জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করেছেন।কিন্তু যখনই ভারত বিদেশি শাসনের অন্তরালে বন্দী হয়েছে তখন থেকেই শুরু হয়েছে অন্ধকার যুগের যার রেশ এখনও বয়ে চলেছে এই ভারতীয় উপমহাদেশ।কারণ বিদেশি শাসকেরা জ্ঞানবিজ্ঞান দর্শন চর্চার কেন্দ্র গুলোকে ধ্বংস করে ফেলে,হত্যা করে ফেলে যারা এগুলো চর্চা করত।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন