
মহানির্বাণতন্ত্র মতে সব কটি মহাবিদ্যাই ভাগবতী ভুবনেশ্বরীর সেবায় সদাই নিরত থাকেন। সাত কোটী মহামন্ত্র সর্বদা এর আরাধনা করে। দশ মহাবিদ্যাই দশটী ধাপ। কালী তত্ত্ব থেকে সুরু করে কমলাতত্ত্ব পর্যন্ত দশটী স্থিতি আছে, যার থেকে অব্যক্ত ভুবনেশ্বরী ব্যক্তরুপে ব্রহ্মাণ্ডের রুপ ধারন করতে পারেন আবার প্রলয় কালে কমলার থেকে অর্থাৎ ব্যক্ত জগৎ থেকে ক্রমশ লয় হয়ে কালীরুপে প্রকৃতিতে অধিষ্ঠিতা হন। এইজন্য একে কাল এর জননীও বলা হয়।
শ্রীশ্রীচণ্ডীর একাদশ অধ্যায়ে মঙ্গলাচরণেও বলা হয়েছে যে ---- "আমি ভুবনেশ্বরী দেবীর ধ্যান করি। তার শ্রী অঙ্গের শোভা নবারুন সদৃশ অরুনাভ। তার শিরে ত্রিনয়না দেবীর শ্রীমুখে মৃদু হাসির আভা। তার হাতে পাশ, অঙ্কুশ, বরদ এবং অভয় মুদ্রা শোভা পায়।
বৃহন্নীলতন্ত্রের এই বিবরণ পুরানের বিবরণের দ্বারাও সমর্থিত যে প্রকারন্তরে কালী ভুবনেশ্বরী অভেদাত্মক। অব্যক্ত প্রকৃতি ভুবনেশ্বরীই রক্তবর্ণা কালী, দেবীভাগবত মতে দুর্গম নামক অসুরের অত্যাচারে সন্তপ্ত হয়ে দেবতা ও ব্রাহ্মণের একত্র হয়ে হিমালয়ে অবস্থিতা সর্বকারণস্বরুপা ভাগবতী ভুবনেশ্বীরই আরাধনা করেন। সেই আরাধনায় তুষ্ট হয়ে দেবী ভুবনেশ্বরী তৎক্ষণাৎ সেখানে আবির্ভূত হন।তার হাতে বান, পদ্মফুল ও শাকমূল ছিল, তিনি নিজের চোখ থেকে সহস্র অশ্রুধারা প্রবাহিত করেন। সেই জলে পৃথিবীর সব প্রানী তৃষ্ণা নিবারণ করে। নদ নদী, সমুদ্র অজস্ত্র জলে পূর্ণ হয় এবং সমস্ত ওষধি জলে সঞ্জীবিত হয়।তার হাতে ধরা শাক ও ফলমূলে প্রাণীদের পালন করার জন্য দেবী ভুবনেশ্বরীই 'শতাহ্মা' তথা 'শাকম্ভরী' নামে খ্যাত হন। ইনিই দুর্গমাসুরকে বধ করে তার দারা অপহৃত বেদগ্রন্থ দেবতাদের হাতে ফিরিয়ে দেন। এর ফলে দেবী ভুবনেশ্বরীর এক নাম হয় দুর্গা।
-
দেবী ভুবনেশ্বরীর উপাসনা পুত্রলাভের জন্য বিশেষ ফলপ্রদ।
Written by : Pritwsih Gosh
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন