হিন্দু ধর্মে স্বীকৃত হয়েছে পঞ্চমত বা পাঁচজনের পূজা । এই মত মূলতঃ হিন্দু ধর্মের একতার দিক টিকে ফুটিয়ে তোলে । আসুন এই বিষয়ে একটু আলোকপাত করা যাক –
হিন্দু ধর্মে পূজাগুলির মধ্যে পূজা শুরুর পর্বে প্রথমেই করা হয় গণেশের পূজো । শ্রীগণেশ মঙ্গলমূর্তি । তিনি সর্বাগ্রেপূজ্য । সে যে কোনো পূজাই হোক না কেন। গণ+ইশ্ – যিনি গণের মধ্যে অগ্রনায়ক বা গণের অধিপতি তাকেই গণেশ বা গণনায়ক বলা হয় । গন শব্দের এক অর্থ বহু লোকের সমাহার । অর্থাৎ সমস্ত লোক যদি বিভেদ ভুলে একত্র হয় সেই গণশক্তির প্রতীক গণেশ প্রকাশিত হন । গণেশ শ্রম
শক্তির প্রতীক । তাই সর্ব অগ্রে গণেশের পূজো। গণেশের উপাসক গাণপত্য ।
গণেশের ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং
সুন্দরং প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগন্ডস্থলম্ ।
দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং ,
বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্ ।।
গণেশের প্রণামঃ-
ওঁ দেবেন্দ্র- মৌলি- মন্দার মকরন্দ কণারুণাঃ ।
বিঘ্নং হরন্তু হেরম্বচরণাম্বুজরেণবঃ ।।
এরপর সূর্য দেবতার পূজা । সূর্য থেকেই সমস্ত জগত সংসার সৃষ্টি । সূর্য সৃষ্টির কারন । সূর্য আছেই বলে জীবজগৎ টিকে আছে । সূর্য অন্ধকার মোচোন করে । সূর্যের আলোকে জীবানু সকল নষ্ট হয় । প্রাতেঃ তাই সূর্য বন্দনা করা হয় । বর্তমানে সূর্যালোক থেকে তড়িৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয় । সূর্য সৃষ্টির বীজ । তাই সূর্যের নামে অর্ঘ প্রদান করা পূজায় একান্ত মাষ্ট কর্তব্য । নচেৎ পূজা অসম্পূর্ণ থেকে যায় । সূর্যের উপাসক সৌর ।
সূর্যের ধ্যান-
ওঁ রক্তাম্বুজাসনমশেষগুণৈসিন্ধুং ,
ভানুং সমস্তজগতামধিপং ভজামি ।
পদ্মদ্বয়াভয়বরান্ দধতং করাব্জৈ
- র্মাণিক্যমৌলিমরুণাঙ্গরুচিং ত্রিনেত্রম্ ।।
সূর্যের প্রণামঃ-
ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং – মহাদ্যুতিম ।
ধান্তারীং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ ।।
এরপর জগত পালক ভগবান নারায়নের পূজা । ভগবান নারায়ন বা ভগবান হরি এই জগতকে পালন করেন । এরজন্য তাঁকে বহুবার মনুষ্য রূপে ধরাতে অবতীর্ণ হতে হয় । তিনি জীবশিক্ষা প্রদান করেন ও অসুর ধ্বংস করে সৃষ্টি চালনার পথ নিষ্কণ্টক করেন । মুখ্য দশাবতার ছাড়াও আরোও আংশিক অবতার এমনকি হংস ও কপিল অবতারের কথা শাস্ত্রে আছে । খালি জন্ম দিলেই হয় না, তাকে যেমন লালন পালন করতে হয় তেমনি সৃষ্টি পালন করেন ভগবান নারায়ন। তাই ভগবান নারায়নের পূজা । ভগবান নারায়ন বা ভগবান হরির উপাসক বৈষ্ণব ।
ভগবান নারায়নের ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ ধ্যেয়ঃ সদা সবিতৃমণ্ডল মধ্যবর্তী
নারায়ণ সরসিজাসন সন্নিবিষ্টঃ ।
কেয়ূরবাণ কণককুণ্ডলবান্ কিরীটিহারী,
হিরণ্ময়বপুর্ধৃত শঙ্খ- চক্রঃ ।।
নারায়নের প্রনাম-
ওঁ নমো ব্রাহ্মণ্যদেবায় গো- ব্রাহ্মণ্যহিতায় চ ।
জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।
ওঁ নমঃ কমলনেত্রায় হরয়ে পরমাত্মনে ।
প্রণতঃ ক্লেশনাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।
এরপর আসে ভগবান শিবের পূজো । ভগবান শিব কে সংহার কর্তা বলা হলে- এই সংহার বলতে সংহরণ কে বোঝায় । ভগবান শিব জীবের পশুভাবকে ত্রিশূলে মোচোন করে নিজ সত্ত্বায় বিলীন করেন । তাই তাঁর হস্তে মৃগ মুদ্রা। শিকারী যেমন মৃগ অন্বেষণ করে তেমনি ভগবান শিব স্বীয় ভক্তদের অন্বেষণ করেন । তাছাড়া ধ্বংসের মধ্যে সৃষ্টির বীজ থাকে । ধ্বংসের পরেই সৃষ্টি হয় । একনাগারে সৃষ্টি হতে থাকলে পৃথিবীর ব্যালেন্স একদিকে চলে যাবে- তাই ধ্বংসের ও প্রয়োজন । বৈশাখের প্রচণ্ড তাপদাহের পর যেমন বর্ষার বৃষ্টি ধরিত্রীকে সিক্ত করে নতুন প্রান সঞ্চার করে তেমনি ধ্বংসের রুদ্রলীলার পর প্রানের সঞ্চার হয় । শিবের উপাসক হলেন শৈব ।
শিবের ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতসং ।
রত্নাকল্লোজ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্ ।।
পদ্মাসীনং সমস্তাৎ স্ততমমরগণৈ - র্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং ।
বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চাবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্ ।।
শিবের প্রনাম মন্ত্রঃ-
ওঁ নমস্তভ্যঃ বিরূপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুসে নমঃ ।
পিণাকহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নমঃ ।।
নমত্রিশূলহস্তায় দন্ড পাশাংসিপাণয়ে ।
নমঃ স্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ ।।
ওঁ বানেশ্বরায় নরকার্ণবতারনায় , জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায় ।
কর্পূরকুন্ডবলেন্দুজটাধরায় , দারিদ্রদুঃখদহনায় নমঃ শিবায় ।।
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে ।
নিবেদয়ানি চাত্মানংত্তৃংগতিপরমেশ্বরঃ ।।
এরপর আসে শক্তিদেবীর পূজা । ভগবান বিষ্ণু বা ভগবান শিব স্বীয় লীলা প্রদর্শন করেন । কিন্তু সেই লীলা প্রকাশের জন্য শক্তির প্রয়োজন । যেমন আপনি একটি চালের বস্তা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাবেন আপনাকে শক্তি প্রয়োগ করে সেটাকে ওঠাতে হবে । প্যারালাইসিস রোগী কিন্তু এটা পারবে না , কারন তাঁর অঙ্গ অসাড়, সেখানে কোনো শক্তি কাজ করছে না । এই শক্তিকেই আদ্যাশক্তি বলা হয় । তিনি ভগবান বিষ্ণুর শক্তিরূপে যোগমায়া আবার তিনি ভগবান শিবের শক্তি মহাকালী । এই দেবীই জগদ্ধাত্রী বা দুর্গা যিনি জগত ধারন করে আছেন । মাধ্যাকর্ষণ আব অভিকর্ষ শক্তি যা বলা হয় সব এই আদ্যাশক্তির প্রকাশ । তাই এই শক্তির পূজা আবশ্যক । শক্তির উপাসক দের শাক্ত বলে । এখানে দেবী পঞ্চমতে দেবীকে জয়দুর্গা রূপে পূজা করা হয় ।
জয়দুর্গার ধ্যানঃ-
ওঁ কালাভ্রাভাং কটাক্ষৈররিকুলভয়দাং মৌলীবন্ধেন্দুরেখাম্ ।
শঙ্খং চক্রং কৃপাণং ত্রিশিখমপি করৈরুদ্বহন্তীং ত্রিনেত্রাম্ ।
সিংহাস্কন্ধাধিরুঢ়াং ত্রিভুবন – মখিলং তেজসা পুরয়ন্তীম্ ।
ধ্যায়েদ্ দুর্গাং জয়াখ্যাং ত্রিদশপরিবৃতাং সেবিতাং সিদ্ধিকামৈঃ ।।
প্রনাম মন্ত্রঃ-
ওঁ সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সর্বাথসাধিকে ।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি ! নমোহস্তুতে ।।
এই হলো পঞ্চমতের পূজা বা হিন্দু ধর্মের পঞ্চ শাখার একত্র মিলন , বৃহৎ হিন্দু জাতির প্রতিষ্ঠা এই পঞ্চমত থেকেই শুরু । এবার নিরাকারের প্রসঙ্গ আসি । ঈশ্বর সাকার ও নিরাকার । যে তাকে যেভাবে নেয় । পূজাতে আমরা যে ঘট স্থাপন করি, তাতে কোনো দেব বা দেবীর অবয়ব দেখা যায় না । এটা ভগবানের নিরাকার সত্ত্বার প্রতীক । লক্ষ্য করলে দেখবেন এই ঘট কিন্তু সম্পূর্ণ লাল শালু বা শাটি বা ধুতি দিয়ে ঢেকে দেবার নিয়ম । বারোয়ারী পূজায় এই নিয়ম মাষ্ট। নিরাকার কে দেখা যায় না । ঘটকেউ আচ্ছাদিত করলে দেখা যায় না। এটি ভগবানের নিরাকার সত্ত্বার প্রতীক । আবার ভগবানের সাকার পূজার আগে ধ্যান মন্ত্র বলে পূজারী নিজের মাথায় পুস্প দিয়ে হৃদয়ে ভগবানের পূজা কল্পনা করে ধ্যান করেন । এটি ভগবানের সর্ব ব্যাপক ময় রূপকে তুলে ধরে । এটি নিরাকার সত্ত্বা ।
যে বা যারা পঞ্চমতকে পূজা না করে পূজায় বসে শাস্ত্র মতে সে পূজা নিস্ফল হয় । যারা এই পঞ্চমতকে স্বীকার না করে তাদের মা শীতলার হাতের বস্তু টি নিয়ে আঘাত করে হিন্দু সমাজ থেকে তাড়ানো উচিৎ । তবেই ঐক্যপূর্ণ হিন্দু জাতি গঠিত হবে । আবার যারা পঞ্চদেবতার স্থানে কল্পনা করে অনান্য দেবতার পূজা করেন – তাঁদের পূজাও নিস্ফল। অর্থাৎ শাস্ত্রকার গণ বহুমতের মধ্যে থেকেও বৃহৎ হিন্দু ঐক্য পূর্ণ সমাজের দৃষ্টান্ত দিয়ে গেছেন । আমাদের উচিৎ সেগুলি মেনে চলা ।
#Sumon Da
হিন্দু ধর্মে পূজাগুলির মধ্যে পূজা শুরুর পর্বে প্রথমেই করা হয় গণেশের পূজো । শ্রীগণেশ মঙ্গলমূর্তি । তিনি সর্বাগ্রেপূজ্য । সে যে কোনো পূজাই হোক না কেন। গণ+ইশ্ – যিনি গণের মধ্যে অগ্রনায়ক বা গণের অধিপতি তাকেই গণেশ বা গণনায়ক বলা হয় । গন শব্দের এক অর্থ বহু লোকের সমাহার । অর্থাৎ সমস্ত লোক যদি বিভেদ ভুলে একত্র হয় সেই গণশক্তির প্রতীক গণেশ প্রকাশিত হন । গণেশ শ্রম
শক্তির প্রতীক । তাই সর্ব অগ্রে গণেশের পূজো। গণেশের উপাসক গাণপত্য ।
গণেশের ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং
সুন্দরং প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগন্ডস্থলম্ ।
দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং ,
বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্ ।।
গণেশের প্রণামঃ-
ওঁ দেবেন্দ্র- মৌলি- মন্দার মকরন্দ কণারুণাঃ ।
বিঘ্নং হরন্তু হেরম্বচরণাম্বুজরেণবঃ ।।
এরপর সূর্য দেবতার পূজা । সূর্য থেকেই সমস্ত জগত সংসার সৃষ্টি । সূর্য সৃষ্টির কারন । সূর্য আছেই বলে জীবজগৎ টিকে আছে । সূর্য অন্ধকার মোচোন করে । সূর্যের আলোকে জীবানু সকল নষ্ট হয় । প্রাতেঃ তাই সূর্য বন্দনা করা হয় । বর্তমানে সূর্যালোক থেকে তড়িৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয় । সূর্য সৃষ্টির বীজ । তাই সূর্যের নামে অর্ঘ প্রদান করা পূজায় একান্ত মাষ্ট কর্তব্য । নচেৎ পূজা অসম্পূর্ণ থেকে যায় । সূর্যের উপাসক সৌর ।
সূর্যের ধ্যান-
ওঁ রক্তাম্বুজাসনমশেষগুণৈসিন্ধুং ,
ভানুং সমস্তজগতামধিপং ভজামি ।
পদ্মদ্বয়াভয়বরান্ দধতং করাব্জৈ
- র্মাণিক্যমৌলিমরুণাঙ্গরুচিং ত্রিনেত্রম্ ।।
সূর্যের প্রণামঃ-
ওঁ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং – মহাদ্যুতিম ।
ধান্তারীং সর্বপাপঘ্নং প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ ।।
এরপর জগত পালক ভগবান নারায়নের পূজা । ভগবান নারায়ন বা ভগবান হরি এই জগতকে পালন করেন । এরজন্য তাঁকে বহুবার মনুষ্য রূপে ধরাতে অবতীর্ণ হতে হয় । তিনি জীবশিক্ষা প্রদান করেন ও অসুর ধ্বংস করে সৃষ্টি চালনার পথ নিষ্কণ্টক করেন । মুখ্য দশাবতার ছাড়াও আরোও আংশিক অবতার এমনকি হংস ও কপিল অবতারের কথা শাস্ত্রে আছে । খালি জন্ম দিলেই হয় না, তাকে যেমন লালন পালন করতে হয় তেমনি সৃষ্টি পালন করেন ভগবান নারায়ন। তাই ভগবান নারায়নের পূজা । ভগবান নারায়ন বা ভগবান হরির উপাসক বৈষ্ণব ।
ভগবান নারায়নের ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ ধ্যেয়ঃ সদা সবিতৃমণ্ডল মধ্যবর্তী
নারায়ণ সরসিজাসন সন্নিবিষ্টঃ ।
কেয়ূরবাণ কণককুণ্ডলবান্ কিরীটিহারী,
হিরণ্ময়বপুর্ধৃত শঙ্খ- চক্রঃ ।।
নারায়নের প্রনাম-
ওঁ নমো ব্রাহ্মণ্যদেবায় গো- ব্রাহ্মণ্যহিতায় চ ।
জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।
ওঁ নমঃ কমলনেত্রায় হরয়ে পরমাত্মনে ।
প্রণতঃ ক্লেশনাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ।।
এরপর আসে ভগবান শিবের পূজো । ভগবান শিব কে সংহার কর্তা বলা হলে- এই সংহার বলতে সংহরণ কে বোঝায় । ভগবান শিব জীবের পশুভাবকে ত্রিশূলে মোচোন করে নিজ সত্ত্বায় বিলীন করেন । তাই তাঁর হস্তে মৃগ মুদ্রা। শিকারী যেমন মৃগ অন্বেষণ করে তেমনি ভগবান শিব স্বীয় ভক্তদের অন্বেষণ করেন । তাছাড়া ধ্বংসের মধ্যে সৃষ্টির বীজ থাকে । ধ্বংসের পরেই সৃষ্টি হয় । একনাগারে সৃষ্টি হতে থাকলে পৃথিবীর ব্যালেন্স একদিকে চলে যাবে- তাই ধ্বংসের ও প্রয়োজন । বৈশাখের প্রচণ্ড তাপদাহের পর যেমন বর্ষার বৃষ্টি ধরিত্রীকে সিক্ত করে নতুন প্রান সঞ্চার করে তেমনি ধ্বংসের রুদ্রলীলার পর প্রানের সঞ্চার হয় । শিবের উপাসক হলেন শৈব ।
শিবের ধ্যান মন্ত্র-
ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতসং ।
রত্নাকল্লোজ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্ ।।
পদ্মাসীনং সমস্তাৎ স্ততমমরগণৈ - র্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং ।
বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চাবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্ ।।
শিবের প্রনাম মন্ত্রঃ-
ওঁ নমস্তভ্যঃ বিরূপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুসে নমঃ ।
পিণাকহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নমঃ ।।
নমত্রিশূলহস্তায় দন্ড পাশাংসিপাণয়ে ।
নমঃ স্ত্রৈলোক্যনাথায় ভূতানাং পতয়ে নমঃ ।।
ওঁ বানেশ্বরায় নরকার্ণবতারনায় , জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায় ।
কর্পূরকুন্ডবলেন্দুজটাধরায় , দারিদ্রদুঃখদহনায় নমঃ শিবায় ।।
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে ।
নিবেদয়ানি চাত্মানংত্তৃংগতিপরমেশ্বরঃ ।।
এরপর আসে শক্তিদেবীর পূজা । ভগবান বিষ্ণু বা ভগবান শিব স্বীয় লীলা প্রদর্শন করেন । কিন্তু সেই লীলা প্রকাশের জন্য শক্তির প্রয়োজন । যেমন আপনি একটি চালের বস্তা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাবেন আপনাকে শক্তি প্রয়োগ করে সেটাকে ওঠাতে হবে । প্যারালাইসিস রোগী কিন্তু এটা পারবে না , কারন তাঁর অঙ্গ অসাড়, সেখানে কোনো শক্তি কাজ করছে না । এই শক্তিকেই আদ্যাশক্তি বলা হয় । তিনি ভগবান বিষ্ণুর শক্তিরূপে যোগমায়া আবার তিনি ভগবান শিবের শক্তি মহাকালী । এই দেবীই জগদ্ধাত্রী বা দুর্গা যিনি জগত ধারন করে আছেন । মাধ্যাকর্ষণ আব অভিকর্ষ শক্তি যা বলা হয় সব এই আদ্যাশক্তির প্রকাশ । তাই এই শক্তির পূজা আবশ্যক । শক্তির উপাসক দের শাক্ত বলে । এখানে দেবী পঞ্চমতে দেবীকে জয়দুর্গা রূপে পূজা করা হয় ।
জয়দুর্গার ধ্যানঃ-
ওঁ কালাভ্রাভাং কটাক্ষৈররিকুলভয়দাং মৌলীবন্ধেন্দুরেখাম্ ।
শঙ্খং চক্রং কৃপাণং ত্রিশিখমপি করৈরুদ্বহন্তীং ত্রিনেত্রাম্ ।
সিংহাস্কন্ধাধিরুঢ়াং ত্রিভুবন – মখিলং তেজসা পুরয়ন্তীম্ ।
ধ্যায়েদ্ দুর্গাং জয়াখ্যাং ত্রিদশপরিবৃতাং সেবিতাং সিদ্ধিকামৈঃ ।।
প্রনাম মন্ত্রঃ-
ওঁ সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সর্বাথসাধিকে ।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি ! নমোহস্তুতে ।।
এই হলো পঞ্চমতের পূজা বা হিন্দু ধর্মের পঞ্চ শাখার একত্র মিলন , বৃহৎ হিন্দু জাতির প্রতিষ্ঠা এই পঞ্চমত থেকেই শুরু । এবার নিরাকারের প্রসঙ্গ আসি । ঈশ্বর সাকার ও নিরাকার । যে তাকে যেভাবে নেয় । পূজাতে আমরা যে ঘট স্থাপন করি, তাতে কোনো দেব বা দেবীর অবয়ব দেখা যায় না । এটা ভগবানের নিরাকার সত্ত্বার প্রতীক । লক্ষ্য করলে দেখবেন এই ঘট কিন্তু সম্পূর্ণ লাল শালু বা শাটি বা ধুতি দিয়ে ঢেকে দেবার নিয়ম । বারোয়ারী পূজায় এই নিয়ম মাষ্ট। নিরাকার কে দেখা যায় না । ঘটকেউ আচ্ছাদিত করলে দেখা যায় না। এটি ভগবানের নিরাকার সত্ত্বার প্রতীক । আবার ভগবানের সাকার পূজার আগে ধ্যান মন্ত্র বলে পূজারী নিজের মাথায় পুস্প দিয়ে হৃদয়ে ভগবানের পূজা কল্পনা করে ধ্যান করেন । এটি ভগবানের সর্ব ব্যাপক ময় রূপকে তুলে ধরে । এটি নিরাকার সত্ত্বা ।
যে বা যারা পঞ্চমতকে পূজা না করে পূজায় বসে শাস্ত্র মতে সে পূজা নিস্ফল হয় । যারা এই পঞ্চমতকে স্বীকার না করে তাদের মা শীতলার হাতের বস্তু টি নিয়ে আঘাত করে হিন্দু সমাজ থেকে তাড়ানো উচিৎ । তবেই ঐক্যপূর্ণ হিন্দু জাতি গঠিত হবে । আবার যারা পঞ্চদেবতার স্থানে কল্পনা করে অনান্য দেবতার পূজা করেন – তাঁদের পূজাও নিস্ফল। অর্থাৎ শাস্ত্রকার গণ বহুমতের মধ্যে থেকেও বৃহৎ হিন্দু ঐক্য পূর্ণ সমাজের দৃষ্টান্ত দিয়ে গেছেন । আমাদের উচিৎ সেগুলি মেনে চলা ।
#Sumon Da
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন